সময়: শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

“মেয়ের খ্যাতি ও উপার্জনই কাল হয়ে দাঁড়াল: বাবার গুলিতে প্রাণ গেল ভারতীয় টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদবের”

ডিজিটাল ডেস্ক
  • Update Time : ০৭:৫৫:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
  • / ৫৪ Time View

BeFunky collage 2025 07 11T183712342 2507111238

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

BeFunky collage 2025 07 11T183712342 2507111238

ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের গুরগাঁওয়ে এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে প্রাণ হারালেন ২৫ বছর বয়সী জাতীয় পর্যায়ের টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদব। নিজের বাড়িতেই নিজের বাবার গুলিতে নিহত হন এই তরুণ ক্রীড়াবিদ। হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে পারিবারিক কলহ, মেয়ের আর্থিক সাফল্য ও স্বাধীনতা নিয়ে বাবার এক ধরনের হীনমন্যতা, এবং সম্প্রতি একটি মিউজিক ভিডিওতে অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে আরও জটিল হয়ে ওঠা পারিবারিক দ্বন্দ্ব।

হত্যাকাণ্ডের পটভূমি

রাধিকা যাদব ছিলেন প্রতিশ্রুতিশীল ও পরিচিত টেনিস খেলোয়াড়। জাতীয় ও রাজ্য পর্যায়ে বহু টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে সুনাম অর্জন করেন তিনি। পাশাপাশি, নিজের উদ্যোগে গুরগাঁওয়ের সেক্টর ৫৭-এ একটি টেনিস একাডেমিও চালু করেন, যেখানে তিনি নিজেই প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন। তার এই আর্থিক স্বাবলম্বিতা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয়তা তার পরিবারে, বিশেষ করে বাবার মধ্যে ঈর্ষা ও রাগের জন্ম দেয় বলে জানা গেছে।

হত্যার দিন কী ঘটেছিল?

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল আনুমানিক ১০টা ৩০ মিনিটে রাধিকা রান্নাঘরে সকালের নাশতার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেই সময় হঠাৎই তার পেছন থেকে তার বাবা, ৪৯ বছর বয়সী দীপক যাদব, লাইসেন্সপ্রাপ্ত .৩২ বোর রিভলভার থেকে পাঁচ রাউন্ড গুলি ছোঁড়েন। এর মধ্যে তিনটি গুলি সরাসরি রাধিকাকে আঘাত করে।

গুলির শব্দ শুনে নিচতলায় থাকা রাধিকার কাকা কুলদীপ যাদব দৌড়ে এসে দেখেন, ভাতিজি মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন এবং পাশের ঘরে পড়ে আছে খুনের অস্ত্র রিভলভারটি। দ্রুত তাকে গুরুতর অবস্থায় গুরগাঁওয়ের এশিয়া মারিঙ্গো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পারিবারিক উত্তেজনার উৎস

দীপক যাদব, যিনি একসময় একটি ব্যাংকে চাকরি করতেন, দীর্ঘদিন ধরেই মেয়ের সাফল্য এবং আর্থিক স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারছিলেন না। তার অভিযোগ, গ্রামে গেলে স্থানীয়রা বলত, “মেয়ের টাকায় দিন চলে তোমার!” এই ধরনের কটাক্ষ তাকে মানসিকভাবে দুর্বল করে তোলে। এমনকি মেয়ের চরিত্র নিয়েও গ্রামে গুঞ্জন উঠেছিল, যা তাকে আরও ক্ষিপ্ত করে তোলে।

পুলিশ জানায়, দীপক মেয়েকে একাধিকবার টেনিস একাডেমি বন্ধ করে ঘরোয়া জীবনযাপন করতে বলেছিলেন। কিন্তু রাধিকা আত্মবিশ্বাসী ও স্বাধীনচেতা মেয়ে হওয়ায় সে সব কথা মেনে নেননি। বরং একাডেমির কাজ চালিয়ে গেছেন, ইনস্টাগ্রামে সক্রিয় থেকেছেন এবং সম্প্রতি একটি মিউজিক ভিডিওতেও অংশ নিয়েছেন—যা ছিল দীপকের ক্রোধের চূড়ান্ত কারণ।

■ ‘কারওয়ানমিউজিক ভিডিও নিয়ে দ্বন্দ্ব

ঘটনার কয়েকদিন আগে রাধিকা একটি মিউজিক ভিডিওতে অংশ নেন, যেটির নাম ছিল কারওয়ান। গানটি গেয়েছেন ইনআম, প্রযোজনা করেছেন জিশান আহমেদ, এবং এটি প্রকাশিত হয় LLF Records ব্যানারে। ভিডিওতে রাধিকা ও শিল্পী ইনআমের একাধিক দৃশ্য রয়েছে, যা দীপক যাদবের মতে, তার পরিবারের মান-ইজ্জত নষ্ট করেছে।

পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, দীপক চেয়েছিলেন রাধিকা এই ভিডিওটি অনলাইন থেকে মুছে ফেলুন। কিন্তু রাধিকা তার পেশাগত সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। ওই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় লক্ষাধিক বার দেখা হয় এবং রাধিকাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসাও হয়। এই জনপ্রিয়তাই দীপকের ক্ষোভকে বাড়িয়ে তোলে বলে জানা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশের বিবরণ

রাধিকার কাকা কুলদীপ যাদব, যিনি ঘটনার সময় বাড়ির নিচতলায় ছিলেন, জানান, “সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে হঠাৎ গুলির শব্দ শুনে আমি দৌড়ে ওপরে যাই। রান্নাঘরের মেঝেতে রাধিকাকে পড়ে থাকতে দেখি। পাশে পড়ে ছিল রিভলভার। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাই, কিন্তু তখন আর কিছু করার ছিল না।”

রাধিকার মা, মঞ্জু যাদব, এসময় বাড়িতেই ছিলেন। তিনি পুলিশকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন, জ্বরে আক্রান্ত থাকায় নিজের ঘরে বিশ্রামে ছিলেন এবং ঘটনার কিছুই বুঝতে পারেননি। লিখিত বক্তব্য দিতে তিনি রাজি হননি।

একটি প্রতিভার নির্মম অবসান

রাধিকা যাদব কেবল খেলোয়াড়ই ছিলেন না, বরং তরুণীদের জন্য অনুপ্রেরণা ছিলেন। কাঁধে চোট পেয়ে খেলার বাইরে থাকাকালীনও তিনি তরুণদের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন এবং সামাজিক মাধ্যমে পজিটিভ কনটেন্ট শেয়ার করতেন। তার আকস্মিক ও নির্মম মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের ক্রীড়াঙ্গনের অনেকেই।

মামলা পরবর্তী ব্যবস্থা

পুলিশ দীপক যাদবকে ঘটনাস্থল থেকেই আটক করে। তিনি প্রাথমিকভাবে হত্যার দায় স্বীকার করেন এবং বলেন, “আমি অপমান সহ্য করতে পারিনি। বারবার বলেছিলাম, একাডেমি বন্ধ করো। আমার কথা কেউ শোনেনি।”

তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা (ইচ্ছাকৃত খুন) অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তদন্ত চলছে এবং ঘটনার সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 

রাধিকা যাদবের মতো প্রতিভাবান সাহসী মেয়েরা আমাদের সমাজের অগ্রগতির প্রতীক। কিন্তু এমন হতাশাজনক ঘটনাগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয়, স্বাধীনচেতা মেয়েদের পথ চলা এখনো কতটা চ্যালেঞ্জে ভরা।

সূত্র: NDTV, India Today, ANI

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Please Share This Post in Your Social Media

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

“মেয়ের খ্যাতি ও উপার্জনই কাল হয়ে দাঁড়াল: বাবার গুলিতে প্রাণ গেল ভারতীয় টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদবের”

Update Time : ০৭:৫৫:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
শেয়ার করুনঃ
Pin Share

BeFunky collage 2025 07 11T183712342 2507111238

ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের গুরগাঁওয়ে এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডে প্রাণ হারালেন ২৫ বছর বয়সী জাতীয় পর্যায়ের টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদব। নিজের বাড়িতেই নিজের বাবার গুলিতে নিহত হন এই তরুণ ক্রীড়াবিদ। হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে পারিবারিক কলহ, মেয়ের আর্থিক সাফল্য ও স্বাধীনতা নিয়ে বাবার এক ধরনের হীনমন্যতা, এবং সম্প্রতি একটি মিউজিক ভিডিওতে অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে আরও জটিল হয়ে ওঠা পারিবারিক দ্বন্দ্ব।

হত্যাকাণ্ডের পটভূমি

রাধিকা যাদব ছিলেন প্রতিশ্রুতিশীল ও পরিচিত টেনিস খেলোয়াড়। জাতীয় ও রাজ্য পর্যায়ে বহু টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে সুনাম অর্জন করেন তিনি। পাশাপাশি, নিজের উদ্যোগে গুরগাঁওয়ের সেক্টর ৫৭-এ একটি টেনিস একাডেমিও চালু করেন, যেখানে তিনি নিজেই প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন। তার এই আর্থিক স্বাবলম্বিতা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয়তা তার পরিবারে, বিশেষ করে বাবার মধ্যে ঈর্ষা ও রাগের জন্ম দেয় বলে জানা গেছে।

হত্যার দিন কী ঘটেছিল?

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল আনুমানিক ১০টা ৩০ মিনিটে রাধিকা রান্নাঘরে সকালের নাশতার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেই সময় হঠাৎই তার পেছন থেকে তার বাবা, ৪৯ বছর বয়সী দীপক যাদব, লাইসেন্সপ্রাপ্ত .৩২ বোর রিভলভার থেকে পাঁচ রাউন্ড গুলি ছোঁড়েন। এর মধ্যে তিনটি গুলি সরাসরি রাধিকাকে আঘাত করে।

গুলির শব্দ শুনে নিচতলায় থাকা রাধিকার কাকা কুলদীপ যাদব দৌড়ে এসে দেখেন, ভাতিজি মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন এবং পাশের ঘরে পড়ে আছে খুনের অস্ত্র রিভলভারটি। দ্রুত তাকে গুরুতর অবস্থায় গুরগাঁওয়ের এশিয়া মারিঙ্গো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পারিবারিক উত্তেজনার উৎস

দীপক যাদব, যিনি একসময় একটি ব্যাংকে চাকরি করতেন, দীর্ঘদিন ধরেই মেয়ের সাফল্য এবং আর্থিক স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারছিলেন না। তার অভিযোগ, গ্রামে গেলে স্থানীয়রা বলত, “মেয়ের টাকায় দিন চলে তোমার!” এই ধরনের কটাক্ষ তাকে মানসিকভাবে দুর্বল করে তোলে। এমনকি মেয়ের চরিত্র নিয়েও গ্রামে গুঞ্জন উঠেছিল, যা তাকে আরও ক্ষিপ্ত করে তোলে।

পুলিশ জানায়, দীপক মেয়েকে একাধিকবার টেনিস একাডেমি বন্ধ করে ঘরোয়া জীবনযাপন করতে বলেছিলেন। কিন্তু রাধিকা আত্মবিশ্বাসী ও স্বাধীনচেতা মেয়ে হওয়ায় সে সব কথা মেনে নেননি। বরং একাডেমির কাজ চালিয়ে গেছেন, ইনস্টাগ্রামে সক্রিয় থেকেছেন এবং সম্প্রতি একটি মিউজিক ভিডিওতেও অংশ নিয়েছেন—যা ছিল দীপকের ক্রোধের চূড়ান্ত কারণ।

■ ‘কারওয়ানমিউজিক ভিডিও নিয়ে দ্বন্দ্ব

ঘটনার কয়েকদিন আগে রাধিকা একটি মিউজিক ভিডিওতে অংশ নেন, যেটির নাম ছিল কারওয়ান। গানটি গেয়েছেন ইনআম, প্রযোজনা করেছেন জিশান আহমেদ, এবং এটি প্রকাশিত হয় LLF Records ব্যানারে। ভিডিওতে রাধিকা ও শিল্পী ইনআমের একাধিক দৃশ্য রয়েছে, যা দীপক যাদবের মতে, তার পরিবারের মান-ইজ্জত নষ্ট করেছে।

পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, দীপক চেয়েছিলেন রাধিকা এই ভিডিওটি অনলাইন থেকে মুছে ফেলুন। কিন্তু রাধিকা তার পেশাগত সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। ওই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় লক্ষাধিক বার দেখা হয় এবং রাধিকাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসাও হয়। এই জনপ্রিয়তাই দীপকের ক্ষোভকে বাড়িয়ে তোলে বলে জানা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশের বিবরণ

রাধিকার কাকা কুলদীপ যাদব, যিনি ঘটনার সময় বাড়ির নিচতলায় ছিলেন, জানান, “সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে হঠাৎ গুলির শব্দ শুনে আমি দৌড়ে ওপরে যাই। রান্নাঘরের মেঝেতে রাধিকাকে পড়ে থাকতে দেখি। পাশে পড়ে ছিল রিভলভার। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাই, কিন্তু তখন আর কিছু করার ছিল না।”

রাধিকার মা, মঞ্জু যাদব, এসময় বাড়িতেই ছিলেন। তিনি পুলিশকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন, জ্বরে আক্রান্ত থাকায় নিজের ঘরে বিশ্রামে ছিলেন এবং ঘটনার কিছুই বুঝতে পারেননি। লিখিত বক্তব্য দিতে তিনি রাজি হননি।

একটি প্রতিভার নির্মম অবসান

রাধিকা যাদব কেবল খেলোয়াড়ই ছিলেন না, বরং তরুণীদের জন্য অনুপ্রেরণা ছিলেন। কাঁধে চোট পেয়ে খেলার বাইরে থাকাকালীনও তিনি তরুণদের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন এবং সামাজিক মাধ্যমে পজিটিভ কনটেন্ট শেয়ার করতেন। তার আকস্মিক ও নির্মম মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের ক্রীড়াঙ্গনের অনেকেই।

মামলা পরবর্তী ব্যবস্থা

পুলিশ দীপক যাদবকে ঘটনাস্থল থেকেই আটক করে। তিনি প্রাথমিকভাবে হত্যার দায় স্বীকার করেন এবং বলেন, “আমি অপমান সহ্য করতে পারিনি। বারবার বলেছিলাম, একাডেমি বন্ধ করো। আমার কথা কেউ শোনেনি।”

তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা (ইচ্ছাকৃত খুন) অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তদন্ত চলছে এবং ঘটনার সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 

রাধিকা যাদবের মতো প্রতিভাবান সাহসী মেয়েরা আমাদের সমাজের অগ্রগতির প্রতীক। কিন্তু এমন হতাশাজনক ঘটনাগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয়, স্বাধীনচেতা মেয়েদের পথ চলা এখনো কতটা চ্যালেঞ্জে ভরা।

সূত্র: NDTV, India Today, ANI

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share