সময়: বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
1
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনীর তালিকা থেকে ছিটকে গেলেন বিল গেটস: দান-অনুদানেই আর্থিক পতন

ডিজিটাল ডেস্ক
  • Update Time : ০৬:৫২:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
  • / ৪৬ Time View

41 20250708234827

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

41 20250708234827

একসময় বিশ্বের শীর্ষ ধনী হিসেবে পরিচিত মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এবার আর বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনীর তালিকায় নেই। তার দীর্ঘদিনের অবস্থান এবার ভেঙে পড়েছে। ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্সের সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী, বিল গেটস এখন ১২তম অবস্থানে অবস্থান করছেন। সোমবার (৭ জুলাই) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানায়, সম্পদের সাম্প্রতিক পুনঃমূল্যায়নের পর গেটসের মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার, যেখানে আগে তা ছিল ১৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে তার সম্পদ হ্রাস পেয়েছে প্রায় ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলার।

বিশ্বব্যাপী ধনীদের সম্পদের ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতার মধ্যেও বিল গেটসের এই পতনের পেছনে রয়েছে এক অনন্য কারণ— উদার ও ধারাবাহিক দান-অনুদান। বিশেষ করে গেটস-মেলিন্ডা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি উন্নয়ন এবং করোনাভাইরাসের টিকা গবেষণায় তার বিপুল অঙ্কের অনুদান উল্লেখযোগ্য। এই ফাউন্ডেশনটির লক্ষ্য বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা খাতে বৈষম্য হ্রাস করা, এবং এটি বিশ্বের অন্যতম বড় বেসরকারি জনহিতকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত।

বিল গেটস সবসময়ই তার সম্পদের একটি বড় অংশ মানবকল্যাণে ব্যয় করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি এক সময় ঘোষণা দিয়েছিলেন যে জীবনের বেশিরভাগ সম্পদ জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যয় করে যাবেন। এই লক্ষ্যেই তিনি ও তার সাবেক স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন প্রকল্পে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে আসছেন। বিশেষ করে, আফ্রিকায় স্বাস্থ্যসেবা, বিশ্বব্যাপী পোলিও নির্মূল, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ এবং সম্প্রতি কোভিড-১৯ মোকাবিলায় তার ফাউন্ডেশনের অনুদান বৈশ্বিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, গেটসের এই অবস্থান পরিবর্তন একদিকে যেমন তার দানের পরিমাণের প্রতিফলন, অন্যদিকে বর্তমান বিশ্বের ধনীদের একটি নতুন প্রজন্মের উত্থানকেও চিহ্নিত করে। যেমন, টেসলার ইলন মাস্ক, আমাজনের জেফ বেজোস, ফরাসি বিলাসপণ্য কোম্পানি এলভিএমএইচ-এর বার্নার্ড আর্নল্ট এবং ফেসবুকের মার্ক জাকারবার্গসহ আরও অনেক নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তা ধনীদের তালিকায় এগিয়ে গেছেন প্রযুক্তি ও ব্যবসায়িক সাফল্যের মাধ্যমে।

তবে বিল গেটসের মতো একজন ধনকুবেরের এমন ‘অবনমন’ তার আর্থিক ব্যর্থতার প্রতিফলন নয়, বরং তা মানবকল্যাণে এক নিঃস্বার্থ আত্মনিবেদনের দৃষ্টান্ত। তার এই উদারতা বিশ্ববাসীর কাছে তাকে ধনী ব্যক্তি হিসেবে নয়, বরং মানবতার এক উজ্জ্বল প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

বিশ্বের ধনীদের তালিকায় নাম থাকা হয়তো এক ধরনের আর্থিক সম্মান, তবে বিল গেটস প্রমাণ করেছেন— সেই তালিকায় না থেকেও একজন মানুষ কিভাবে কোটি কোটি মানুষের জীবনে আলো ছড়াতে পারেন, কিভাবে সম্পদের প্রকৃত মূল্য মানুষের কল্যাণে কাজে লাগিয়ে পৃথিবীকে একটু ভালো জায়গা বানানো যায়।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Please Share This Post in Your Social Media

5 1 vote
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
1 Comment
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
1
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনীর তালিকা থেকে ছিটকে গেলেন বিল গেটস: দান-অনুদানেই আর্থিক পতন

Update Time : ০৬:৫২:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
শেয়ার করুনঃ
Pin Share

41 20250708234827

একসময় বিশ্বের শীর্ষ ধনী হিসেবে পরিচিত মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস এবার আর বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনীর তালিকায় নেই। তার দীর্ঘদিনের অবস্থান এবার ভেঙে পড়েছে। ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্সের সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী, বিল গেটস এখন ১২তম অবস্থানে অবস্থান করছেন। সোমবার (৭ জুলাই) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানায়, সম্পদের সাম্প্রতিক পুনঃমূল্যায়নের পর গেটসের মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার, যেখানে আগে তা ছিল ১৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে তার সম্পদ হ্রাস পেয়েছে প্রায় ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলার।

বিশ্বব্যাপী ধনীদের সম্পদের ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতার মধ্যেও বিল গেটসের এই পতনের পেছনে রয়েছে এক অনন্য কারণ— উদার ও ধারাবাহিক দান-অনুদান। বিশেষ করে গেটস-মেলিন্ডা ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি উন্নয়ন এবং করোনাভাইরাসের টিকা গবেষণায় তার বিপুল অঙ্কের অনুদান উল্লেখযোগ্য। এই ফাউন্ডেশনটির লক্ষ্য বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা খাতে বৈষম্য হ্রাস করা, এবং এটি বিশ্বের অন্যতম বড় বেসরকারি জনহিতকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত।

বিল গেটস সবসময়ই তার সম্পদের একটি বড় অংশ মানবকল্যাণে ব্যয় করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তিনি এক সময় ঘোষণা দিয়েছিলেন যে জীবনের বেশিরভাগ সম্পদ জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যয় করে যাবেন। এই লক্ষ্যেই তিনি ও তার সাবেক স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন প্রকল্পে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে আসছেন। বিশেষ করে, আফ্রিকায় স্বাস্থ্যসেবা, বিশ্বব্যাপী পোলিও নির্মূল, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ এবং সম্প্রতি কোভিড-১৯ মোকাবিলায় তার ফাউন্ডেশনের অনুদান বৈশ্বিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, গেটসের এই অবস্থান পরিবর্তন একদিকে যেমন তার দানের পরিমাণের প্রতিফলন, অন্যদিকে বর্তমান বিশ্বের ধনীদের একটি নতুন প্রজন্মের উত্থানকেও চিহ্নিত করে। যেমন, টেসলার ইলন মাস্ক, আমাজনের জেফ বেজোস, ফরাসি বিলাসপণ্য কোম্পানি এলভিএমএইচ-এর বার্নার্ড আর্নল্ট এবং ফেসবুকের মার্ক জাকারবার্গসহ আরও অনেক নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তা ধনীদের তালিকায় এগিয়ে গেছেন প্রযুক্তি ও ব্যবসায়িক সাফল্যের মাধ্যমে।

তবে বিল গেটসের মতো একজন ধনকুবেরের এমন ‘অবনমন’ তার আর্থিক ব্যর্থতার প্রতিফলন নয়, বরং তা মানবকল্যাণে এক নিঃস্বার্থ আত্মনিবেদনের দৃষ্টান্ত। তার এই উদারতা বিশ্ববাসীর কাছে তাকে ধনী ব্যক্তি হিসেবে নয়, বরং মানবতার এক উজ্জ্বল প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

বিশ্বের ধনীদের তালিকায় নাম থাকা হয়তো এক ধরনের আর্থিক সম্মান, তবে বিল গেটস প্রমাণ করেছেন— সেই তালিকায় না থেকেও একজন মানুষ কিভাবে কোটি কোটি মানুষের জীবনে আলো ছড়াতে পারেন, কিভাবে সম্পদের প্রকৃত মূল্য মানুষের কল্যাণে কাজে লাগিয়ে পৃথিবীকে একটু ভালো জায়গা বানানো যায়।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share