সময়: বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

আইফোনে কী নতুনত্ব আনছে অ্যাপল: অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ হলেও আশাবাদী ভক্তরা

নাবিল বিন বিল্লাল
  • Update Time : ০৩:২২:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
  • / ৫৬ Time View

152377 113

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

152377 113

 

প্রতিবছর নতুন আইফোন আসবে, থাকবে নতুন চমক—এ যেন অ্যাপলপ্রেমীদের চিরন্তন প্রত্যাশা। সেই সঙ্গে প্রযুক্তিপ্রেমী ও বিশ্লেষকদের আগ্রহও থাকে তুঙ্গে। তবে ২০২৫ সালের প্রজন্মের আইফোনে কোনো বড় ধরনের ডিজাইন পরিবর্তন বা নতুন যুগান্তকারী প্রযুক্তির সম্ভাবনা আপাতত খুব বেশি নেই বলেই জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো।

বিশ্বখ্যাত ডিসপ্লে প্রযুক্তি বিশ্লেষক এবং ডিসপ্লে সাপ্লাই চেইন কনসালট্যান্টসের (DSCC) প্রধান নির্বাহী রস ইয়ং-এর মতে, বহু প্রতীক্ষিত ‘হোল-ফ্রি’ বা সম্পূর্ণ ছিদ্রমুক্ত আইফোনের দেখা পেতে ভক্তদের অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছু বছর। বিশেষ করে, বেজেলহীন, পাঞ্চ-হোল ও হিডেন ফেস আইডি প্রযুক্তির আইফোন মডেল ২০২৬ সালের আগে বাজারে আসার সম্ভাবনা নেই।

বেজেলহীন আইফোনের স্বপ্ন

আগে থেকেই গুঞ্জন রয়েছে, আইফোনের ২০তম বার্ষিকীতে—অর্থাৎ ২০২৭ সালে—অ্যাপল একেবারে নতুন, তরুণধর্মী এবং ভবিষ্যতমুখী ডিজাইনের আইফোন বাজারে আনবে। সম্ভাব্য ওই মডেলে থাকবে প্রায় সম্পূর্ণ বেজেলহীন ডিসপ্লে, গ্লাস ব্যাক প্যানেল এবং রাউন্ডেড ফ্রেম। তবে এখনো এ ব্যাপারে অ্যাপলের পক্ষ থেকে নিশ্চিত কোনো ঘোষণা আসেনি।

রস ইয়ং জানাচ্ছেন, ভবিষ্যতের ওই আইফোনে ফেস আইডি সেন্সর এবং সেলফি ক্যামেরা পুরোপুরি অ্যামোলেড স্ক্রিনের নিচে স্থাপন করা হবে। এতে স্ক্রিনে কোনো কাটআউট বা পাঞ্চ-হোল দৃশ্যমান থাকবে না। তবে এমন প্রযুক্তি সম্পন্ন একটি ডিভাইস বাজারে আনতে অ্যাপলের আরও সময় লাগবে—কমপক্ষে ২০২৬ সাল পর্যন্ত।

090720256

হোলফ্রি ডিজাইনের পথে চ্যালেঞ্জ

বর্তমানে যে পিল-শেপড কাটআউট বা ‘ডায়নামিক আইল্যান্ড’ দেখা যায়, সেটি স্ক্রিনের ওপরে কিছু সেন্সর এবং সেলফি ক্যামেরা ধারণ করার জন্য রাখা হয়। বিশ্লেষকদের মতে, আগামী কয়েক বছরে অ্যাপল এই কাটআউট আরও ছোট করে ফেলতে পারে—যদিও পুরোপুরি ছিদ্রমুক্ত স্ক্রিন বাস্তবে ধরা দেবে না।

রস ইয়ং আরও বলেছেন, ২০২৮ সালের মধ্যে অ্যাপল থ্রিডি ফেস রিকগনিশন প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত সব সেন্সর স্ক্রিনের নিচে সরিয়ে নিতে সক্ষম হবে বলে তারা আশাবাদী। কিন্তু আন্ডার-ডিসপ্লে সেলফি ক্যামেরা প্রযুক্তি এখনো আশানুরূপ মানে পৌঁছায়নি। ফলে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সেলফি ক্যামেরা পাঞ্চ-হোলেই থাকতে পারে।

প্রযুক্তি আসবে ধাপে ধাপে

অ্যাপল বরাবরই নতুন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ধীর, কিন্তু নিখুঁত পথে অগ্রসর হয়। কোনো প্রযুক্তি পুরোপুরি পরিপক্ব না হওয়া পর্যন্ত অ্যাপল সাধারণত তা ব্যবহার করে না। আন্ডার-ডিসপ্লে ফেস আইডি ও ক্যামেরা প্রযুক্তি এখনো উন্নয়নের পথে রয়েছে। চীনভিত্তিক কয়েকটি কোম্পানি এই প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করলেও ছবি বা ভিডিওর গুণমান এখনও প্রত্যাশা পূরণে অক্ষম।

তবে অ্যাপল ইতোমধ্যে হিডেন ফেস আইডি ও স্ক্রিন-অন্তর্ভুক্ত ক্যামেরার গবেষণা চালাচ্ছে এবং এই রূপান্তরকে সময়োপযোগী করার পরিকল্পনায় রয়েছে। এজন্য চিপ ডিজাইন, সেন্সর স্থাপনা ও ডিসপ্লে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে একযোগে কাজ চলছে।

শেষ কথা

সার্বিকভাবে বলতে গেলে, নিকট ভবিষ্যতের আইফোনগুলোতে আমরা হয়তো বড় ধরনের ডিজাইন বিপ্লব দেখব না, কিন্তু প্রযুক্তির উন্নয়ন চলবে ধাপে ধাপে। ২০২৬ সালের আগে হোল-ফ্রি আইফোন বা হিডেন ফেস আইডির দেখা না মিললেও, ২০২৭ থেকে শুরু করে ২০২৮-৩০ সালের মধ্যে এসব প্রযুক্তি বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসতে পারে।

তবে আইফোনপ্রেমীদের জন্য একটাই আশার কথা—অ্যাপল ধীরে হলেও সবসময় নির্ভরযোগ্যতা, পারফরম্যান্স এবং অভিজ্ঞতার মানে একধাপ এগিয়ে থাকে। কাজেই অপেক্ষাটা বৃথা যাবে না বলেই আশাবাদী প্রযুক্তিবিশ্ব।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Please Share This Post in Your Social Media

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
About Author Information

নাবিল বিন বিল্লাল

নবিল বিন বিল্লাল একজন বিশিষ্ট আইটি বিশেষজ্ঞ এবং বিডিবো নিউজে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে নিবন্ধ লেখক হিসেবে খ্যাতিমান। তিনি তার প্রযুক্তিগত দক্ষতাকে একটি বৃহৎ পাঠকগোষ্ঠীর জন্য জটিল প্রযুক্তিগত ধারণাগুলি সহজভাবে উপস্থাপন করার আগ্রহের সাথে নিপুণভাবে মিশিয়ে দেন। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিস্তৃত অভিজ্ঞতা থাকার ফলে, তিনি টেক কমিউনিটিতে একটি প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন, উদীয়মান প্রবণতাগুলি নিয়ে গভীর বিশ্লেষণ ও অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করেন। বিডিবো নিউজে তার নিবন্ধগুলি তার তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে গভীর জ্ঞানের পরিচয় দেয় এবং জটিল বিষয়গুলিকে সহজবোধ্যভাবে প্রকাশ করার ক্ষমতা প্রতিফলিত করে। প্রযুক্তি এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করার জন্য তার অঙ্গীকার তাকে শিল্পের একজন চিন্তাশীল নেতা হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছে। নবিল বিন বিল্লাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান জগতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন, যা তাকে সর্বশেষ উন্নয়ন সম্পর্কে সচেতন থাকার জন্য একটি চাহিদাসম্পন্ন কণ্ঠস্বর করে তুলেছে।
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

আইফোনে কী নতুনত্ব আনছে অ্যাপল: অপেক্ষার প্রহর দীর্ঘ হলেও আশাবাদী ভক্তরা

Update Time : ০৩:২২:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
শেয়ার করুনঃ
Pin Share

152377 113

 

প্রতিবছর নতুন আইফোন আসবে, থাকবে নতুন চমক—এ যেন অ্যাপলপ্রেমীদের চিরন্তন প্রত্যাশা। সেই সঙ্গে প্রযুক্তিপ্রেমী ও বিশ্লেষকদের আগ্রহও থাকে তুঙ্গে। তবে ২০২৫ সালের প্রজন্মের আইফোনে কোনো বড় ধরনের ডিজাইন পরিবর্তন বা নতুন যুগান্তকারী প্রযুক্তির সম্ভাবনা আপাতত খুব বেশি নেই বলেই জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো।

বিশ্বখ্যাত ডিসপ্লে প্রযুক্তি বিশ্লেষক এবং ডিসপ্লে সাপ্লাই চেইন কনসালট্যান্টসের (DSCC) প্রধান নির্বাহী রস ইয়ং-এর মতে, বহু প্রতীক্ষিত ‘হোল-ফ্রি’ বা সম্পূর্ণ ছিদ্রমুক্ত আইফোনের দেখা পেতে ভক্তদের অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছু বছর। বিশেষ করে, বেজেলহীন, পাঞ্চ-হোল ও হিডেন ফেস আইডি প্রযুক্তির আইফোন মডেল ২০২৬ সালের আগে বাজারে আসার সম্ভাবনা নেই।

বেজেলহীন আইফোনের স্বপ্ন

আগে থেকেই গুঞ্জন রয়েছে, আইফোনের ২০তম বার্ষিকীতে—অর্থাৎ ২০২৭ সালে—অ্যাপল একেবারে নতুন, তরুণধর্মী এবং ভবিষ্যতমুখী ডিজাইনের আইফোন বাজারে আনবে। সম্ভাব্য ওই মডেলে থাকবে প্রায় সম্পূর্ণ বেজেলহীন ডিসপ্লে, গ্লাস ব্যাক প্যানেল এবং রাউন্ডেড ফ্রেম। তবে এখনো এ ব্যাপারে অ্যাপলের পক্ষ থেকে নিশ্চিত কোনো ঘোষণা আসেনি।

রস ইয়ং জানাচ্ছেন, ভবিষ্যতের ওই আইফোনে ফেস আইডি সেন্সর এবং সেলফি ক্যামেরা পুরোপুরি অ্যামোলেড স্ক্রিনের নিচে স্থাপন করা হবে। এতে স্ক্রিনে কোনো কাটআউট বা পাঞ্চ-হোল দৃশ্যমান থাকবে না। তবে এমন প্রযুক্তি সম্পন্ন একটি ডিভাইস বাজারে আনতে অ্যাপলের আরও সময় লাগবে—কমপক্ষে ২০২৬ সাল পর্যন্ত।

090720256

হোলফ্রি ডিজাইনের পথে চ্যালেঞ্জ

বর্তমানে যে পিল-শেপড কাটআউট বা ‘ডায়নামিক আইল্যান্ড’ দেখা যায়, সেটি স্ক্রিনের ওপরে কিছু সেন্সর এবং সেলফি ক্যামেরা ধারণ করার জন্য রাখা হয়। বিশ্লেষকদের মতে, আগামী কয়েক বছরে অ্যাপল এই কাটআউট আরও ছোট করে ফেলতে পারে—যদিও পুরোপুরি ছিদ্রমুক্ত স্ক্রিন বাস্তবে ধরা দেবে না।

রস ইয়ং আরও বলেছেন, ২০২৮ সালের মধ্যে অ্যাপল থ্রিডি ফেস রিকগনিশন প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত সব সেন্সর স্ক্রিনের নিচে সরিয়ে নিতে সক্ষম হবে বলে তারা আশাবাদী। কিন্তু আন্ডার-ডিসপ্লে সেলফি ক্যামেরা প্রযুক্তি এখনো আশানুরূপ মানে পৌঁছায়নি। ফলে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সেলফি ক্যামেরা পাঞ্চ-হোলেই থাকতে পারে।

প্রযুক্তি আসবে ধাপে ধাপে

অ্যাপল বরাবরই নতুন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ধীর, কিন্তু নিখুঁত পথে অগ্রসর হয়। কোনো প্রযুক্তি পুরোপুরি পরিপক্ব না হওয়া পর্যন্ত অ্যাপল সাধারণত তা ব্যবহার করে না। আন্ডার-ডিসপ্লে ফেস আইডি ও ক্যামেরা প্রযুক্তি এখনো উন্নয়নের পথে রয়েছে। চীনভিত্তিক কয়েকটি কোম্পানি এই প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করলেও ছবি বা ভিডিওর গুণমান এখনও প্রত্যাশা পূরণে অক্ষম।

তবে অ্যাপল ইতোমধ্যে হিডেন ফেস আইডি ও স্ক্রিন-অন্তর্ভুক্ত ক্যামেরার গবেষণা চালাচ্ছে এবং এই রূপান্তরকে সময়োপযোগী করার পরিকল্পনায় রয়েছে। এজন্য চিপ ডিজাইন, সেন্সর স্থাপনা ও ডিসপ্লে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে একযোগে কাজ চলছে।

শেষ কথা

সার্বিকভাবে বলতে গেলে, নিকট ভবিষ্যতের আইফোনগুলোতে আমরা হয়তো বড় ধরনের ডিজাইন বিপ্লব দেখব না, কিন্তু প্রযুক্তির উন্নয়ন চলবে ধাপে ধাপে। ২০২৬ সালের আগে হোল-ফ্রি আইফোন বা হিডেন ফেস আইডির দেখা না মিললেও, ২০২৭ থেকে শুরু করে ২০২৮-৩০ সালের মধ্যে এসব প্রযুক্তি বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসতে পারে।

তবে আইফোনপ্রেমীদের জন্য একটাই আশার কথা—অ্যাপল ধীরে হলেও সবসময় নির্ভরযোগ্যতা, পারফরম্যান্স এবং অভিজ্ঞতার মানে একধাপ এগিয়ে থাকে। কাজেই অপেক্ষাটা বৃথা যাবে না বলেই আশাবাদী প্রযুক্তিবিশ্ব।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share