সময়: রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
  • Copy Link
  • Facebook
  • X (Twitter)
  • LinkedIn
  • Email
  • Print
  • More Networks
Copy link

ফরাসি গোয়েন্দাদের অভিযোগ,ভারতীয় ব্যর্থতা: চীনের ‘অপপ্রচারে’ আন্তর্জাতিক বাজারে রাফালের বদনাম ছড়িয়ে বিশ্বব্যাপী বিক্রি বানচালের চেষ্টা

ডিজিটাল ডেস্ক
  • Update Time : ১০:০৯:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫
  • / ১৭ Time View

untitled 1 copy 20250706201556

untitled 1 copy 20250706201556

ফরাসি গোয়েন্দাদের অভিযোগ

ভারতীয় ব্যর্থতা:চীনেরঅপপ্রচারেআন্তর্জাতিক বাজারে রাফালের বদনাম ছড়িয়ে বিশ্বব্যাপী বিক্রি বানচালের চেষ্টা

বিশ্ববাজারে প্রতিরক্ষা খাতে ফ্রান্সের প্রধান যুদ্ধবিমান রাফালের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচারের অভিযোগ তুলেছে প্যারিস। ফরাসি সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের দাবি, গত মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চারদিনব্যাপী আকাশযুদ্ধের পর রাফালের সক্ষমতা নিয়ে সংশয় তৈরি করে বৈশ্বিক বাজারে রাফালের চাহিদা কমিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে চীন একটি সুপরিকল্পিত প্রচারণা চালাচ্ছে। এতে শুধু ভারতীয় প্রতিরক্ষা নীতিই নয়, ফরাসি অস্ত্রশিল্পের বাণিজ্যিক স্বার্থও হুমকির মুখে পড়েছে।

কূটনৈতিক মহলেনীরব যুদ্ধ’: রাফালকে পেছনে ফেলতে চীনের জোরালো প্রচেষ্টা

সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফরাসি সামরিক কর্মকর্তা জানান, চীন তার বিভিন্ন দেশের দূতাবাস, বিশেষ করে প্রতিরক্ষা অ্যাটাশেদের মাধ্যমে রাফালের বিরুদ্ধে ‘কৌশলী অপপ্রচার’ চালাচ্ছে। এসব দূতাবাসের কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট দেশের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা নীতিনির্ধারকদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে, ভারতের রাফাল জেটগুলো পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে পর্যাপ্ত সাফল্য দেখাতে পারেনি, বরং দুর্বল পারফরম্যান্সই প্রদর্শন করেছে।

ফরাসি কর্মকর্তারা আরও দাবি করেন, এই প্রচারের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়া, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, গ্রিস এবং ভারতের মতো রাফাল-ক্রেতা কিংবা সম্ভাব্য ক্রেতা দেশগুলোকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে চীন। চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে এসব দেশকে নিজেদের তৈরি যুদ্ধবিমান কেনার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে বলেও গোয়েন্দা তথ্য থেকে জানা গেছে।

ভারতীয় ব্যর্থতার সুযোগ নিচ্ছে বেইজিং?

গত মে মাসের ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ ছিল ২০২৫ সালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামরিক মুখোমুখি সংঘর্ষ। দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে চারদিনব্যাপী ওই সংঘর্ষে উভয় পক্ষই অর্ধশতাধিক যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে। পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে তিনটি রাফাল জেট ছিল। যদিও ভারত এই সংখ্যা নির্দিষ্ট করে জানায়নি, তবে তিনটি যুদ্ধবিমান হারানোর কথা স্বীকার করেছে — যার মধ্যে একটি রাফাল, একটি সুখোই এবং একটি মিরাজ ২০০০ জেট।

ফরাসি বিমান বাহিনীর প্রধান জেনারেল জেরোম বেলাঙ্গার স্বীকার করেছেন, রাফালের এটাই প্রথম যুদ্ধকালীন ধ্বংস। তিনি বলেন, “ফ্রান্স এই যুদ্ধবিমান আটটি দেশে রপ্তানি করেছে এবং এ ঘটনার পর সকল ক্রেতাই তাদের মূল্যায়নে নতুন করে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।”

অপপ্রচার কৌশল: এআই, ছবি বিকৃতি, ভাইরাল ভিডিও

ফরাসি কর্মকর্তারা আরও জানান, সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে রাফালের বিরুদ্ধে একটি সুসংগঠিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এখানে ব্যবহৃত হচ্ছে এআই-নির্মিত ভিডিও ও ভুয়া ছবি, যেখানে দেখা যাচ্ছে রাফালের ধ্বংসাবশেষ কিংবা রাডারে ধরা পড়া চিত্র, যা অধিকাংশই বিকৃত বা মনগড়া।

এছাড়া একাধিক ফেক অ্যাকাউন্ট এবং মিডিয়া চ্যানেল ব্যবহার করে রাফালের প্রযুক্তিগত ত্রুটি ও যুদ্ধকালীন ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে সন্দেহ ছড়ানো হচ্ছে। এই প্রচারের উদ্দেশ্য হলো — রাফালকে ‘অবিশ্বস্ত’ হিসেবে তুলে ধরে ক্রেতা দেশগুলোকে চীনের নিজস্ব যুদ্ধবিমান, যেমন J-10 বা FC-31-এর প্রতি আকৃষ্ট করা।

গোয়েন্দা তথ্য: লবিং চলছে সম্ভাব্য ক্রেতা দেশগুলোতে

ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, চীনা প্রতিরক্ষা অ্যাটাশেরা বিভিন্ন বৈঠকে অংশ নিয়ে রাফালের দুর্বলতার প্রসার ঘটাচ্ছেন এবং চীনা প্রযুক্তির শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরছেন। চীন যে শুধু রাফালের বদনাম ছড়াচ্ছে তা নয়, একই সঙ্গে তারা সম্ভাব্য ক্রেতা দেশগুলোর সাথে নিবিড়ভাবে লবিং চালিয়ে যাচ্ছে যাতে ওই দেশগুলো ফরাসি যুদ্ধবিমান বর্জন করে চীনা বিকল্পে আগ্রহী হয়।

ফরাসি প্রতিক্রিয়া: অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিরক্ষা

ফরাসি সশস্ত্র বাহিনী মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “রাফাল একটি সুপরীক্ষিত ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রমাণিত যুদ্ধবিমান। যে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চলছে তা কেবল একটি দেশের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষা করতে চালানো হচ্ছে। ফ্রান্স এর বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং আমাদের প্রতিটি মিত্র রাষ্ট্রকে সত্যতা অবহিত করছে।”

চীনের প্রতিক্রিয়া: ‘ভিত্তিহীন অপবাদ

এপি যখন এই বিষয় নিয়ে বেইজিংয়ের প্রতিক্রিয়া জানতে চায়, চীনের জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় জানায়, “এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন গুজব এবং অপপ্রচার। চীন সবসময় দায়িত্বশীল সামরিক রপ্তানি নীতি অনুসরণ করে এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি বজায় রাখতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে আসছে।”

রাফালের ভবিষ্যৎ: বাজারে প্রভাব পড়ছে কি?

ডাসল্ট এভিয়েশন এরই মধ্যে ৫৩৩টি রাফাল বিক্রি করেছে। এর মধ্যে ৩২৩টি যুদ্ধবিমান ভারত, মিশর, কাতার, ইন্দোনেশিয়া, গ্রিস, ক্রোয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সার্বিয়ায় রপ্তানি করা হয়েছে। শুধু ইন্দোনেশিয়াই ৪২টি রাফাল অর্ডার করেছে এবং আরও কেনার পরিকল্পনায় রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক বিতর্ক এবং প্রপাগান্ডা কতটা প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে।

এই বিতর্কে রাফালের প্রযুক্তিগত দক্ষতা নয়, বরং ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং প্রতিরক্ষা বাজারে প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা মূল নিয়ামক হয়ে উঠেছে। ভারত ও ফ্রান্সের কৌশলগত অংশীদারিত্ব এবং বিশ্ব প্রতিরক্ষা বাণিজ্যের গতিপথ নির্ধারণে এই বিতর্ক একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হয়ে থাকবে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
  • Copy Link
  • Facebook
  • X (Twitter)
  • LinkedIn
  • Email
  • Print
  • More Networks
Copy link

ফরাসি গোয়েন্দাদের অভিযোগ,ভারতীয় ব্যর্থতা: চীনের ‘অপপ্রচারে’ আন্তর্জাতিক বাজারে রাফালের বদনাম ছড়িয়ে বিশ্বব্যাপী বিক্রি বানচালের চেষ্টা

Update Time : ১০:০৯:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫

untitled 1 copy 20250706201556

ফরাসি গোয়েন্দাদের অভিযোগ

ভারতীয় ব্যর্থতা:চীনেরঅপপ্রচারেআন্তর্জাতিক বাজারে রাফালের বদনাম ছড়িয়ে বিশ্বব্যাপী বিক্রি বানচালের চেষ্টা

বিশ্ববাজারে প্রতিরক্ষা খাতে ফ্রান্সের প্রধান যুদ্ধবিমান রাফালের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচারের অভিযোগ তুলেছে প্যারিস। ফরাসি সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের দাবি, গত মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চারদিনব্যাপী আকাশযুদ্ধের পর রাফালের সক্ষমতা নিয়ে সংশয় তৈরি করে বৈশ্বিক বাজারে রাফালের চাহিদা কমিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে চীন একটি সুপরিকল্পিত প্রচারণা চালাচ্ছে। এতে শুধু ভারতীয় প্রতিরক্ষা নীতিই নয়, ফরাসি অস্ত্রশিল্পের বাণিজ্যিক স্বার্থও হুমকির মুখে পড়েছে।

কূটনৈতিক মহলেনীরব যুদ্ধ’: রাফালকে পেছনে ফেলতে চীনের জোরালো প্রচেষ্টা

সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফরাসি সামরিক কর্মকর্তা জানান, চীন তার বিভিন্ন দেশের দূতাবাস, বিশেষ করে প্রতিরক্ষা অ্যাটাশেদের মাধ্যমে রাফালের বিরুদ্ধে ‘কৌশলী অপপ্রচার’ চালাচ্ছে। এসব দূতাবাসের কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট দেশের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা নীতিনির্ধারকদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে, ভারতের রাফাল জেটগুলো পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে পর্যাপ্ত সাফল্য দেখাতে পারেনি, বরং দুর্বল পারফরম্যান্সই প্রদর্শন করেছে।

ফরাসি কর্মকর্তারা আরও দাবি করেন, এই প্রচারের মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়া, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিশর, গ্রিস এবং ভারতের মতো রাফাল-ক্রেতা কিংবা সম্ভাব্য ক্রেতা দেশগুলোকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে চীন। চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে এসব দেশকে নিজেদের তৈরি যুদ্ধবিমান কেনার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে বলেও গোয়েন্দা তথ্য থেকে জানা গেছে।

ভারতীয় ব্যর্থতার সুযোগ নিচ্ছে বেইজিং?

গত মে মাসের ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ ছিল ২০২৫ সালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামরিক মুখোমুখি সংঘর্ষ। দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে চারদিনব্যাপী ওই সংঘর্ষে উভয় পক্ষই অর্ধশতাধিক যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে। পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে তিনটি রাফাল জেট ছিল। যদিও ভারত এই সংখ্যা নির্দিষ্ট করে জানায়নি, তবে তিনটি যুদ্ধবিমান হারানোর কথা স্বীকার করেছে — যার মধ্যে একটি রাফাল, একটি সুখোই এবং একটি মিরাজ ২০০০ জেট।

ফরাসি বিমান বাহিনীর প্রধান জেনারেল জেরোম বেলাঙ্গার স্বীকার করেছেন, রাফালের এটাই প্রথম যুদ্ধকালীন ধ্বংস। তিনি বলেন, “ফ্রান্স এই যুদ্ধবিমান আটটি দেশে রপ্তানি করেছে এবং এ ঘটনার পর সকল ক্রেতাই তাদের মূল্যায়নে নতুন করে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।”

অপপ্রচার কৌশল: এআই, ছবি বিকৃতি, ভাইরাল ভিডিও

ফরাসি কর্মকর্তারা আরও জানান, সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে রাফালের বিরুদ্ধে একটি সুসংগঠিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এখানে ব্যবহৃত হচ্ছে এআই-নির্মিত ভিডিও ও ভুয়া ছবি, যেখানে দেখা যাচ্ছে রাফালের ধ্বংসাবশেষ কিংবা রাডারে ধরা পড়া চিত্র, যা অধিকাংশই বিকৃত বা মনগড়া।

এছাড়া একাধিক ফেক অ্যাকাউন্ট এবং মিডিয়া চ্যানেল ব্যবহার করে রাফালের প্রযুক্তিগত ত্রুটি ও যুদ্ধকালীন ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে সন্দেহ ছড়ানো হচ্ছে। এই প্রচারের উদ্দেশ্য হলো — রাফালকে ‘অবিশ্বস্ত’ হিসেবে তুলে ধরে ক্রেতা দেশগুলোকে চীনের নিজস্ব যুদ্ধবিমান, যেমন J-10 বা FC-31-এর প্রতি আকৃষ্ট করা।

গোয়েন্দা তথ্য: লবিং চলছে সম্ভাব্য ক্রেতা দেশগুলোতে

ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, চীনা প্রতিরক্ষা অ্যাটাশেরা বিভিন্ন বৈঠকে অংশ নিয়ে রাফালের দুর্বলতার প্রসার ঘটাচ্ছেন এবং চীনা প্রযুক্তির শ্রেষ্ঠত্ব তুলে ধরছেন। চীন যে শুধু রাফালের বদনাম ছড়াচ্ছে তা নয়, একই সঙ্গে তারা সম্ভাব্য ক্রেতা দেশগুলোর সাথে নিবিড়ভাবে লবিং চালিয়ে যাচ্ছে যাতে ওই দেশগুলো ফরাসি যুদ্ধবিমান বর্জন করে চীনা বিকল্পে আগ্রহী হয়।

ফরাসি প্রতিক্রিয়া: অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিরক্ষা

ফরাসি সশস্ত্র বাহিনী মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “রাফাল একটি সুপরীক্ষিত ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রমাণিত যুদ্ধবিমান। যে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চলছে তা কেবল একটি দেশের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষা করতে চালানো হচ্ছে। ফ্রান্স এর বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং আমাদের প্রতিটি মিত্র রাষ্ট্রকে সত্যতা অবহিত করছে।”

চীনের প্রতিক্রিয়া: ‘ভিত্তিহীন অপবাদ

এপি যখন এই বিষয় নিয়ে বেইজিংয়ের প্রতিক্রিয়া জানতে চায়, চীনের জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় জানায়, “এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন গুজব এবং অপপ্রচার। চীন সবসময় দায়িত্বশীল সামরিক রপ্তানি নীতি অনুসরণ করে এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি বজায় রাখতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে আসছে।”

রাফালের ভবিষ্যৎ: বাজারে প্রভাব পড়ছে কি?

ডাসল্ট এভিয়েশন এরই মধ্যে ৫৩৩টি রাফাল বিক্রি করেছে। এর মধ্যে ৩২৩টি যুদ্ধবিমান ভারত, মিশর, কাতার, ইন্দোনেশিয়া, গ্রিস, ক্রোয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সার্বিয়ায় রপ্তানি করা হয়েছে। শুধু ইন্দোনেশিয়াই ৪২টি রাফাল অর্ডার করেছে এবং আরও কেনার পরিকল্পনায় রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক বিতর্ক এবং প্রপাগান্ডা কতটা প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে।

এই বিতর্কে রাফালের প্রযুক্তিগত দক্ষতা নয়, বরং ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং প্রতিরক্ষা বাজারে প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতা মূল নিয়ামক হয়ে উঠেছে। ভারত ও ফ্রান্সের কৌশলগত অংশীদারিত্ব এবং বিশ্ব প্রতিরক্ষা বাণিজ্যের গতিপথ নির্ধারণে এই বিতর্ক একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হয়ে থাকবে।