জামায়াতের কেউ মবে জড়িত নয়, দাবি আমির শফিকুর রহমানের

- Update Time : ০৩:১৪:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫
- / ৭৯ Time View
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কোনো কর্মী বা সমর্থক ‘মব’ বা সহিংস জনতার কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয় বলে জোরালো দাবি করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “জামায়াতে ইসলামী সব সময় মব বা সংঘবদ্ধ সহিংসতার ঘোর বিরোধী। আমরা মব চাই না, আমাদের দলে মব সংস্কৃতির কোনো স্থান নেই। আপনারা খেয়াল করলে দেখবেন—যেসব মবের ঘটনা ঘটেছে, সেসবের সঙ্গে আমাদের দলের কেউ জড়িত নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমাদের রাজনীতি আদর্শভিত্তিক, নৈতিকতা-নির্ভর। কোনো ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি বা আইনবিরোধী কর্মকাণ্ডকে জামায়াতে ইসলামী কখনোই প্রশ্রয় দেয় না।”
নির্বাচন প্রসঙ্গে বক্তব্য
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়েও বক্তব্য দেন জামায়াত আমির। তিনি বলেন, “ভালো নির্বাচনের জন্য আগে পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সেই পরিবেশ তৈরির অংশ হিসেবে মৌলিক কিছু রাজনৈতিক সংস্কার প্রয়োজন। জনগণের আস্থা অর্জন করতে হলে এই সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন অপরিহার্য।”
তিনি বলেন, “এই সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। যদি-তবির কোনো সুযোগ নেই। এখন সময় সিদ্ধান্ত নেওয়ার। সংস্কার করতেই হবে এবং জনগণের অংশগ্রহণমূলক একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতেই হবে।”
উত্তরের জনপদে ১৭ বছর পর জনসভা
দীর্ঘ ১৭ বছর পর উত্তরবঙ্গের রংপুর অঞ্চলে বড় পরিসরে জনসভা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। শুক্রবার বিকেল ৩টায় রংপুরে এই জনসভা শুরু হওয়ার কথা। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে দুপুরে বিমানযোগে সৈয়দপুর পৌঁছান দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান।
জনসভাকে ঘিরে জামায়াতের স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। জনসভার মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে—“সংস্কার ও সহিংসতা বর্জন করে শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্রের পথে ফেরার আহ্বান।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষণ
বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াতের পক্ষ থেকে মব রাজনীতি ও সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অবস্থান নেওয়া দলটির ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের একটি কৌশল হতে পারে। বিগত সময়ে সংঘাত-সহিংসতার নানা ঘটনায় অভিযুক্ত হওয়ার কারণে জনমনে তৈরি হওয়া নেতিবাচক ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতেই এ ধরনের বার্তা প্রচার করছে দলটি।
অন্যদিকে নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা, সংস্কার এবং ঐকমত্যের যে আহ্বান উঠছে, জামায়াতও সেই প্রক্রিয়ার একটি অংশ হতে চায় বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সাম্প্রতিক মন্তব্যে দলের অবস্থান স্পষ্ট—তারা সহিংসতার বিরুদ্ধে এবং একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পক্ষে। এখন দেখার বিষয়, রাজনৈতিক সংস্কার এবং পরিবেশ তৈরির প্রক্রিয়ায় অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ নেয় এবং জামায়াত কতটা কার্যকরভাবে সেই প্রক্রিয়ায় নিজেদের যুক্ত করতে পারে।
Please Share This Post in Your Social Media

জামায়াতের কেউ মবে জড়িত নয়, দাবি আমির শফিকুর রহমানের

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কোনো কর্মী বা সমর্থক ‘মব’ বা সহিংস জনতার কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয় বলে জোরালো দাবি করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “জামায়াতে ইসলামী সব সময় মব বা সংঘবদ্ধ সহিংসতার ঘোর বিরোধী। আমরা মব চাই না, আমাদের দলে মব সংস্কৃতির কোনো স্থান নেই। আপনারা খেয়াল করলে দেখবেন—যেসব মবের ঘটনা ঘটেছে, সেসবের সঙ্গে আমাদের দলের কেউ জড়িত নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমাদের রাজনীতি আদর্শভিত্তিক, নৈতিকতা-নির্ভর। কোনো ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি বা আইনবিরোধী কর্মকাণ্ডকে জামায়াতে ইসলামী কখনোই প্রশ্রয় দেয় না।”
নির্বাচন প্রসঙ্গে বক্তব্য
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়েও বক্তব্য দেন জামায়াত আমির। তিনি বলেন, “ভালো নির্বাচনের জন্য আগে পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সেই পরিবেশ তৈরির অংশ হিসেবে মৌলিক কিছু রাজনৈতিক সংস্কার প্রয়োজন। জনগণের আস্থা অর্জন করতে হলে এই সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন অপরিহার্য।”
তিনি বলেন, “এই সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। যদি-তবির কোনো সুযোগ নেই। এখন সময় সিদ্ধান্ত নেওয়ার। সংস্কার করতেই হবে এবং জনগণের অংশগ্রহণমূলক একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতেই হবে।”
উত্তরের জনপদে ১৭ বছর পর জনসভা
দীর্ঘ ১৭ বছর পর উত্তরবঙ্গের রংপুর অঞ্চলে বড় পরিসরে জনসভা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। শুক্রবার বিকেল ৩টায় রংপুরে এই জনসভা শুরু হওয়ার কথা। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে দুপুরে বিমানযোগে সৈয়দপুর পৌঁছান দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান।
জনসভাকে ঘিরে জামায়াতের স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। জনসভার মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে—“সংস্কার ও সহিংসতা বর্জন করে শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্রের পথে ফেরার আহ্বান।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষণ
বিশ্লেষকদের মতে, জামায়াতের পক্ষ থেকে মব রাজনীতি ও সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অবস্থান নেওয়া দলটির ভাবমূর্তি পুনর্গঠনের একটি কৌশল হতে পারে। বিগত সময়ে সংঘাত-সহিংসতার নানা ঘটনায় অভিযুক্ত হওয়ার কারণে জনমনে তৈরি হওয়া নেতিবাচক ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতেই এ ধরনের বার্তা প্রচার করছে দলটি।
অন্যদিকে নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা, সংস্কার এবং ঐকমত্যের যে আহ্বান উঠছে, জামায়াতও সেই প্রক্রিয়ার একটি অংশ হতে চায় বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সাম্প্রতিক মন্তব্যে দলের অবস্থান স্পষ্ট—তারা সহিংসতার বিরুদ্ধে এবং একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পক্ষে। এখন দেখার বিষয়, রাজনৈতিক সংস্কার এবং পরিবেশ তৈরির প্রক্রিয়ায় অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ নেয় এবং জামায়াত কতটা কার্যকরভাবে সেই প্রক্রিয়ায় নিজেদের যুক্ত করতে পারে।