দাম কমলো ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের

- Update Time : ০৭:০১:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫
- / ৬৭ Time View
দাম কমলো ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের: ৭০০ টাকার প্যাকেজ এখন ৫০০ টাকা, নতুন যুগে প্রবেশ করছে সংযোগ সেবা
বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য আসছে বড় সুখবর। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মাসিক খরচ কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৭০০ টাকার প্রচলিত মাসিক প্যাকেজ এখন থেকে মাত্র ৫০০ টাকায় পাওয়া যাবে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে ১ জুলাই মঙ্গলবার থেকে।
আইএসপিএবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বর্তমানে কোনো আইএসপি (ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান) ৫ এমবিপিএস (Mbps) গতি সরবরাহ করে না। বাস্তবে গ্রাহকরা এখন কমপক্ষে ১০ এমবিপিএস গতি পাচ্ছেন। এই প্রেক্ষাপটে সংগঠনটি সর্বনিম্ন প্যাকেজ ৫০০ টাকা থেকে চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে এই গতির সেবাকে সাধারণ মানুষের নাগালে আনা যায়।
আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেছেন, “আমরা চাই বাংলাদেশের ইন্টারনেট সেবার মান ও খরচ উভয় দিক থেকেই আরও উন্নত হোক। সরকার যদি সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল (SOF) এবং রেভিনিউ শেয়ার প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে ভবিষ্যতে আইএসপিগুলো ব্রডব্যান্ড সংজ্ঞা অনুযায়ী প্রতিটি গ্রাহককে কমপক্ষে ২০ এমবিপিএস ব্যান্ডউইডথ দিতে সক্ষম হবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে বেশির ভাগ গ্রাহক মাসিক ইন্টারনেট বিলের সঙ্গে ৫ শতাংশ ভ্যাট পরিশোধ করতে চান না। অথচ আইএসপিগুলো এই ভ্যাট আদায় করে সরকারকে প্রদান করে থাকে। এই পরিস্থিতি আইএসপিদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ তারা একদিকে কমমূল্যে উচ্চগতির সেবা দিতে চাইছে, অন্যদিকে ভ্যাট-রেভিনিউয়ের বোঝা তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
মূল্য হ্রাসের প্রভাব কী হতে পারে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইন্টারনেট সেবার মূল্য হ্রাসের ফলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের আরও বেশি মানুষ ব্রডব্যান্ড সেবার আওতায় আসতে পারবেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে এটি হবে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। শিক্ষার্থী, উদ্যোক্তা, ফ্রিল্যান্সার ও গৃহস্থালী ব্যবহারকারীদের জন্য এটি হবে অনেকটাই স্বস্তির বিষয়।
বর্তমানে বাংলাদেশে ১ কোটির বেশি ব্রডব্যান্ড গ্রাহক রয়েছে, এবং শহরের তুলনায় গ্রামে এখনো এই সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। নতুন মূল্যের এই প্যাকেজ হয়তো ডিজিটাল বৈষম্য হ্রাসে ভূমিকা রাখবে।
সরকারের নীতি সমর্থন জরুরি
আইএসপিএবির দাবি, সরকারের পক্ষ থেকে যদি ব্রডব্যান্ড খাতে আরও বন্ধুত্বপূর্ণ নীতি নেওয়া হয়, যেমন—সোশ্যাল অবলিগেশন ফান্ড (SOF) ও রেভিনিউ শেয়ার প্রত্যাহার, তাহলে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো আরও কম খরচে, আরও ভালো মানের ইন্টারনেট দিতে পারবে। এতে দেশজুড়ে ই-লার্নিং, ই-কমার্স ও রিমোট ওয়ার্কের মতো ডিজিটাল কার্যক্রম আরও প্রসার পাবে।
আইএসপিএবির এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। ইন্টারনেট এখন আর বিলাসিতা নয়, বরং একটি মৌলিক চাহিদা ও অর্থনৈতিক বিকাশের হাতিয়ার। সেবার গতি ও গুণগত মান নিশ্চিত করার পাশাপাশি খরচ কমিয়ে আনতে পারলে—বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে ডিজিটাল সুবিধা। তবে এর জন্য সরকার ও বেসরকারি খাতের যৌথ উদ্যোগ এবং নীতিগত সহায়তাও একান্ত প্রয়োজন।
Please Share This Post in Your Social Media

দাম কমলো ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের

দাম কমলো ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের: ৭০০ টাকার প্যাকেজ এখন ৫০০ টাকা, নতুন যুগে প্রবেশ করছে সংযোগ সেবা
বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য আসছে বড় সুখবর। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের মাসিক খরচ কমিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৭০০ টাকার প্রচলিত মাসিক প্যাকেজ এখন থেকে মাত্র ৫০০ টাকায় পাওয়া যাবে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে ১ জুলাই মঙ্গলবার থেকে।
আইএসপিএবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বর্তমানে কোনো আইএসপি (ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান) ৫ এমবিপিএস (Mbps) গতি সরবরাহ করে না। বাস্তবে গ্রাহকরা এখন কমপক্ষে ১০ এমবিপিএস গতি পাচ্ছেন। এই প্রেক্ষাপটে সংগঠনটি সর্বনিম্ন প্যাকেজ ৫০০ টাকা থেকে চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে এই গতির সেবাকে সাধারণ মানুষের নাগালে আনা যায়।
আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেছেন, “আমরা চাই বাংলাদেশের ইন্টারনেট সেবার মান ও খরচ উভয় দিক থেকেই আরও উন্নত হোক। সরকার যদি সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল (SOF) এবং রেভিনিউ শেয়ার প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে ভবিষ্যতে আইএসপিগুলো ব্রডব্যান্ড সংজ্ঞা অনুযায়ী প্রতিটি গ্রাহককে কমপক্ষে ২০ এমবিপিএস ব্যান্ডউইডথ দিতে সক্ষম হবে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে বেশির ভাগ গ্রাহক মাসিক ইন্টারনেট বিলের সঙ্গে ৫ শতাংশ ভ্যাট পরিশোধ করতে চান না। অথচ আইএসপিগুলো এই ভ্যাট আদায় করে সরকারকে প্রদান করে থাকে। এই পরিস্থিতি আইএসপিদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ তারা একদিকে কমমূল্যে উচ্চগতির সেবা দিতে চাইছে, অন্যদিকে ভ্যাট-রেভিনিউয়ের বোঝা তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
মূল্য হ্রাসের প্রভাব কী হতে পারে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইন্টারনেট সেবার মূল্য হ্রাসের ফলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের আরও বেশি মানুষ ব্রডব্যান্ড সেবার আওতায় আসতে পারবেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে এটি হবে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। শিক্ষার্থী, উদ্যোক্তা, ফ্রিল্যান্সার ও গৃহস্থালী ব্যবহারকারীদের জন্য এটি হবে অনেকটাই স্বস্তির বিষয়।
বর্তমানে বাংলাদেশে ১ কোটির বেশি ব্রডব্যান্ড গ্রাহক রয়েছে, এবং শহরের তুলনায় গ্রামে এখনো এই সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। নতুন মূল্যের এই প্যাকেজ হয়তো ডিজিটাল বৈষম্য হ্রাসে ভূমিকা রাখবে।
সরকারের নীতি সমর্থন জরুরি
আইএসপিএবির দাবি, সরকারের পক্ষ থেকে যদি ব্রডব্যান্ড খাতে আরও বন্ধুত্বপূর্ণ নীতি নেওয়া হয়, যেমন—সোশ্যাল অবলিগেশন ফান্ড (SOF) ও রেভিনিউ শেয়ার প্রত্যাহার, তাহলে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো আরও কম খরচে, আরও ভালো মানের ইন্টারনেট দিতে পারবে। এতে দেশজুড়ে ই-লার্নিং, ই-কমার্স ও রিমোট ওয়ার্কের মতো ডিজিটাল কার্যক্রম আরও প্রসার পাবে।
আইএসপিএবির এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। ইন্টারনেট এখন আর বিলাসিতা নয়, বরং একটি মৌলিক চাহিদা ও অর্থনৈতিক বিকাশের হাতিয়ার। সেবার গতি ও গুণগত মান নিশ্চিত করার পাশাপাশি খরচ কমিয়ে আনতে পারলে—বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে ডিজিটাল সুবিধা। তবে এর জন্য সরকার ও বেসরকারি খাতের যৌথ উদ্যোগ এবং নীতিগত সহায়তাও একান্ত প্রয়োজন।