একযোগে ১৮ বিচারককে অবসরে পাঠানো ‘যুগান্তকারী সাহসী সিদ্ধান্ত’ — অ্যাডভোকেট শিশির মনির

- Update Time : ০৬:০৬:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
- / ৮ Time View

একসঙ্গে ১৮ জন বিচারককে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্তকে ‘যুগান্তকারী ও সাহসী’ বলে অভিহিত করেছেন সংবিধান ও ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি বলেছেন, এ সিদ্ধান্ত একটি বড় ধরনের বিচারিক সংস্কারের ইঙ্গিত দেয় এবং এটি সবার জন্য একটি শিক্ষণীয় বার্তা বহন করে।
সাহসী সিদ্ধান্তের প্রশংসা
শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে অ্যাডভোকেট শিশির মনির লেখেন—
“১৮ জন বিচারককে অবসরে পাঠানো হয়েছে।
যুগান্তকারী সাহসী সিদ্ধান্ত।
অনেক বড় সংস্কার।
সবার জন্যই শিক্ষা আছে।
সাধু সাবধান।”
তার মন্তব্যে স্পষ্ট, তিনি এই পদক্ষেপকে শুধু প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছেন না; বরং বিচার বিভাগের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা, পেশাগত জবাবদিহিতা এবং সংস্কারের অঙ্গীকার হিসেবেই দেখছেন।
প্রজ্ঞাপন ও আইনি ভিত্তি
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১৮ জন বিচারককে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর ঘোষণা দেয়। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, সংশ্লিষ্ট বিচারকদের সরকারি চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে এবং বাংলাদেশ সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ধারা ৫৪ অনুযায়ী তাদের অবসরে পাঠানো হয়েছে।
প্রেক্ষাপট ও প্রতিক্রিয়া
সরকারি চাকরির নিয়ম অনুযায়ী, চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হলে সরকার জনস্বার্থে কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে পূর্ব জানানো ছাড়াই বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাতে পারে। তবে বিচার বিভাগের মতো সংবেদনশীল ও মর্যাদাপূর্ণ খাতের এত সংখ্যক কর্মকর্তাকে একযোগে অবসরে পাঠানোর ঘটনা নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন অনেকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিচারব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও কর্মদক্ষতা নিশ্চিত করতেই এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়ে থাকতে পারে। তবে সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কেউ কেউ ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানালেও, বিচার বিভাগ ও বার কাউন্সিলে এ নিয়ে বিতর্ক এবং আলোচনা শুরু হয়েছে।
শিশির মনিরের পর্যবেক্ষণ
অ্যাডভোকেট শিশির মনির বিচার বিভাগের ভেতরকার শৃঙ্খলা, নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধের জায়গাগুলোতে বরাবরই সোচ্চার। তার মতে, এ সিদ্ধান্ত কেবল সংশ্লিষ্ট ১৮ বিচারকের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়—এটি পুরো বিচারিক কাঠামোর প্রতি একটি বার্তা বহন করে।
এটি হতে পারে একটি নীরব ইঙ্গিত—যেখানে ভবিষ্যতের জন্য সতর্কতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আরও জোরদার করা হবে।
একযোগে ১৮ জন বিচারকের বাধ্যতামূলক অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে এক ব্যতিক্রমী ঘটনা। এটি যেমন প্রশাসনিক সাহসের বহিঃপ্রকাশ, তেমনি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিচার বিভাগের সংস্কারপ্রয়াসের একটি অংশ বলেই মনে করছেন অনেকে। অ্যাডভোকেট শিশির মনিরের মতামত সেই আশঙ্কা বা প্রত্যাশাকেই জোরালো করে—এই সিদ্ধান্ত বিচার বিভাগকে আরও শক্তিশালী ও জবাবদিহিমূলক করে গড়ে তুলতে পারে, যদি এটি একটি সুনির্দিষ্ট ও নিয়মতান্ত্রিক সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হয়।
Please Share This Post in Your Social Media

একযোগে ১৮ বিচারককে অবসরে পাঠানো ‘যুগান্তকারী সাহসী সিদ্ধান্ত’ — অ্যাডভোকেট শিশির মনির


একসঙ্গে ১৮ জন বিচারককে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্তকে ‘যুগান্তকারী ও সাহসী’ বলে অভিহিত করেছেন সংবিধান ও ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি বলেছেন, এ সিদ্ধান্ত একটি বড় ধরনের বিচারিক সংস্কারের ইঙ্গিত দেয় এবং এটি সবার জন্য একটি শিক্ষণীয় বার্তা বহন করে।
সাহসী সিদ্ধান্তের প্রশংসা
শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে অ্যাডভোকেট শিশির মনির লেখেন—
“১৮ জন বিচারককে অবসরে পাঠানো হয়েছে।
যুগান্তকারী সাহসী সিদ্ধান্ত।
অনেক বড় সংস্কার।
সবার জন্যই শিক্ষা আছে।
সাধু সাবধান।”
তার মন্তব্যে স্পষ্ট, তিনি এই পদক্ষেপকে শুধু প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছেন না; বরং বিচার বিভাগের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা, পেশাগত জবাবদিহিতা এবং সংস্কারের অঙ্গীকার হিসেবেই দেখছেন।
প্রজ্ঞাপন ও আইনি ভিত্তি
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১৮ জন বিচারককে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর ঘোষণা দেয়। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, সংশ্লিষ্ট বিচারকদের সরকারি চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে এবং বাংলাদেশ সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ধারা ৫৪ অনুযায়ী তাদের অবসরে পাঠানো হয়েছে।
প্রেক্ষাপট ও প্রতিক্রিয়া
সরকারি চাকরির নিয়ম অনুযায়ী, চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হলে সরকার জনস্বার্থে কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে পূর্ব জানানো ছাড়াই বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাতে পারে। তবে বিচার বিভাগের মতো সংবেদনশীল ও মর্যাদাপূর্ণ খাতের এত সংখ্যক কর্মকর্তাকে একযোগে অবসরে পাঠানোর ঘটনা নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন অনেকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বিচারব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও কর্মদক্ষতা নিশ্চিত করতেই এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়ে থাকতে পারে। তবে সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কেউ কেউ ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানালেও, বিচার বিভাগ ও বার কাউন্সিলে এ নিয়ে বিতর্ক এবং আলোচনা শুরু হয়েছে।
শিশির মনিরের পর্যবেক্ষণ
অ্যাডভোকেট শিশির মনির বিচার বিভাগের ভেতরকার শৃঙ্খলা, নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধের জায়গাগুলোতে বরাবরই সোচ্চার। তার মতে, এ সিদ্ধান্ত কেবল সংশ্লিষ্ট ১৮ বিচারকের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য নয়—এটি পুরো বিচারিক কাঠামোর প্রতি একটি বার্তা বহন করে।
এটি হতে পারে একটি নীরব ইঙ্গিত—যেখানে ভবিষ্যতের জন্য সতর্কতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আরও জোরদার করা হবে।
একযোগে ১৮ জন বিচারকের বাধ্যতামূলক অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে এক ব্যতিক্রমী ঘটনা। এটি যেমন প্রশাসনিক সাহসের বহিঃপ্রকাশ, তেমনি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিচার বিভাগের সংস্কারপ্রয়াসের একটি অংশ বলেই মনে করছেন অনেকে। অ্যাডভোকেট শিশির মনিরের মতামত সেই আশঙ্কা বা প্রত্যাশাকেই জোরালো করে—এই সিদ্ধান্ত বিচার বিভাগকে আরও শক্তিশালী ও জবাবদিহিমূলক করে গড়ে তুলতে পারে, যদি এটি একটি সুনির্দিষ্ট ও নিয়মতান্ত্রিক সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হয়।