রংপুরের সমাবেশে ডা. শফিকুর রহমান: “সুষ্ঠু নির্বাচন কল্পনাও করা যায় না, মৌলিক সংস্কার ছাড়া ছাড় নেই”

- Update Time : ১১:১১:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫
- / ৯৪ Time View
রংপুরে অনুষ্ঠিত এক বিভাগীয় জনসভায় জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, “সারা বাংলাদেশকে আজ পাটগ্রাম বানিয়ে ফেলা হয়েছে।” তিনি অভিযোগ করেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরকারি দলের দমন-পীড়ন এবং রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে নির্বাচনের পরিবেশ ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে, এমন অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচনের কল্পনাও করা যায় না।
শুক্রবার (তারিখ উল্লিখিত নয়) রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জামায়াতে ইসলামীর বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন। এ আয়োজন করে রংপুর মহানগরী ও জেলা জামায়াত।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচন কেবল ইচ্ছার বিষয় নয়, এর জন্য দরকার গণতান্ত্রিক মৌলিক সংস্কার। আমরা সেই মৌলিক সংস্কারও আদায় করব, সুষ্ঠু নির্বাচনও আদায় করব। কেউ যদি আবার ফ্যাসিবাদী আমলের মতো ভুয়া নির্বাচন করার স্বপ্ন দেখেন, সেটিকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করব।”
তিনি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, “পত্রিকার পাতা খুললেই দেখি বীভৎসতার চিত্র। কখনও আমার মায়ের ইজ্জতের উপর, কখনও মানুষের জীবনের উপর থাবা পড়ছে। এখন এমন সময় এসেছে, যখন নিজের দলের লোককেও খুন করতে কুণ্ঠাবোধ করছে না একদল মানুষ।”
সরকারের সমালোচনা করে জামায়াত আমীর বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিক শিষ্টাচার জানতো না। জানতো না বলেই তারা বিদায় নিয়েছে। কিন্তু সেই একই পদ্ধতি যদি কেউ আবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে, তা হলে দেশের জন্য আরও ভয়ঙ্কর সময় অপেক্ষা করছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন একটি সমাজ চাই যেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না, থাকবে না রাজনৈতিক নিপীড়ন, গুম, খুন কিংবা নারীর নিরাপত্তাহীনতা। গণতন্ত্রের পথে ফিরে না আসলে জনগণের আন্দোলন তীব্রতর হবে।”
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য, বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারা। বক্তারা বলেন, দেশের রাজনৈতিক সংকটের একমাত্র সমাধান হলো একটি নির্দলীয়
প্রেক্ষাপট ও প্রভাব:
বর্তমানে বাংলাদেশে বিরোধীদলগুলোর অন্যতম দাবির বিষয় হলো নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা। আওয়ামী লীগের পতনের পর রাজনীতির মেরুকরণে জামায়াতে ইসলামীর মতো দলগুলো ফের সক্রিয় হয়ে উঠছে, জনসভা করছে, এবং গণতন্ত্র ও ন্যায়ের দাবিতে মাঠে নামছে। ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্যে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে একটি নতুন গণআন্দোলনের ছাপ, যার মূল লক্ষ্য বর্তমান ব্যবস্থার মৌলিক সংস্কার এবং জনগণের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
এই জনসভা শুধু একটি বক্তৃতা নয়—এটি ছিল দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক গতিপথ নির্ধারণে জামায়াতের অবস্থান স্পষ্ট করার একটি কৌশলগত পদক্ষেপ।
Please Share This Post in Your Social Media

রংপুরের সমাবেশে ডা. শফিকুর রহমান: “সুষ্ঠু নির্বাচন কল্পনাও করা যায় না, মৌলিক সংস্কার ছাড়া ছাড় নেই”

রংপুরে অনুষ্ঠিত এক বিভাগীয় জনসভায় জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, “সারা বাংলাদেশকে আজ পাটগ্রাম বানিয়ে ফেলা হয়েছে।” তিনি অভিযোগ করেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরকারি দলের দমন-পীড়ন এবং রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে নির্বাচনের পরিবেশ ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে, এমন অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচনের কল্পনাও করা যায় না।
শুক্রবার (তারিখ উল্লিখিত নয়) রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জামায়াতে ইসলামীর বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন। এ আয়োজন করে রংপুর মহানগরী ও জেলা জামায়াত।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচন কেবল ইচ্ছার বিষয় নয়, এর জন্য দরকার গণতান্ত্রিক মৌলিক সংস্কার। আমরা সেই মৌলিক সংস্কারও আদায় করব, সুষ্ঠু নির্বাচনও আদায় করব। কেউ যদি আবার ফ্যাসিবাদী আমলের মতো ভুয়া নির্বাচন করার স্বপ্ন দেখেন, সেটিকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করব।”
তিনি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, “পত্রিকার পাতা খুললেই দেখি বীভৎসতার চিত্র। কখনও আমার মায়ের ইজ্জতের উপর, কখনও মানুষের জীবনের উপর থাবা পড়ছে। এখন এমন সময় এসেছে, যখন নিজের দলের লোককেও খুন করতে কুণ্ঠাবোধ করছে না একদল মানুষ।”
সরকারের সমালোচনা করে জামায়াত আমীর বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিক শিষ্টাচার জানতো না। জানতো না বলেই তারা বিদায় নিয়েছে। কিন্তু সেই একই পদ্ধতি যদি কেউ আবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে, তা হলে দেশের জন্য আরও ভয়ঙ্কর সময় অপেক্ষা করছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এমন একটি সমাজ চাই যেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না, থাকবে না রাজনৈতিক নিপীড়ন, গুম, খুন কিংবা নারীর নিরাপত্তাহীনতা। গণতন্ত্রের পথে ফিরে না আসলে জনগণের আন্দোলন তীব্রতর হবে।”
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য, বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারা। বক্তারা বলেন, দেশের রাজনৈতিক সংকটের একমাত্র সমাধান হলো একটি নির্দলীয়
প্রেক্ষাপট ও প্রভাব:
বর্তমানে বাংলাদেশে বিরোধীদলগুলোর অন্যতম দাবির বিষয় হলো নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা। আওয়ামী লীগের পতনের পর রাজনীতির মেরুকরণে জামায়াতে ইসলামীর মতো দলগুলো ফের সক্রিয় হয়ে উঠছে, জনসভা করছে, এবং গণতন্ত্র ও ন্যায়ের দাবিতে মাঠে নামছে। ডা. শফিকুর রহমানের বক্তব্যে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে একটি নতুন গণআন্দোলনের ছাপ, যার মূল লক্ষ্য বর্তমান ব্যবস্থার মৌলিক সংস্কার এবং জনগণের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
এই জনসভা শুধু একটি বক্তৃতা নয়—এটি ছিল দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক গতিপথ নির্ধারণে জামায়াতের অবস্থান স্পষ্ট করার একটি কৌশলগত পদক্ষেপ।