সময়: শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

গাজ্জার তরুণদের মাদকের ফাঁদে ফেলে সহযোগী বানাচ্ছে ইসরাইল: হামাসের অভিযোগ

ডিজিটাল ডেস্ক
  • Update Time : ১১:২১:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫
  • / ৭০ Time View

4 20250704095405

4 20250704095405

গাজ্জায় তরুণদের মাদকের ফাঁদে ফেলে তাদের ইসরাইলি মিশনে জড়ানোর গুরুতর অভিযোগ তুলেছে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। সংগঠনটি দাবি করেছে, ইহুদিবাদী সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইল পরিকল্পিতভাবে গাজ্জার তরুণদের নৈতিকভাবে ভেঙে দিয়ে তাদের গুপ্তচরবৃত্তি ও সামরিক মিশনে সহযোগী হিসেবে ব্যবহার করছে।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) হামাসের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে জানান, ইসরাইল দীর্ঘমেয়াদে এমন এক সামাজিক ও নিরাপত্তাহীন পরিবেশ তৈরি করতে চায়, যাতে গাজ্জার ভেতর অপরাধী চক্র গড়ে ওঠে এবং ভেতর থেকেই ভাঙন শুরু হয়।

মাদককে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার
তিনি বলেন, “ইসরাইল শুধু সামরিক দমনেই থেমে নেই। তারা এখন তরুণদের মাদকাসক্ত করার মাধ্যমে তাদের মানসিক ও নৈতিকভাবে দুর্বল করে তুলছে। এরপর সেই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে তাদের গুপ্তচর বা সহযোগী হিসেবে ব্যবহার করছে।”

গুপ্তচর যন্ত্রপাতি মোবাইল ফোন পাচারের চেষ্টা ব্যর্থ
হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সম্প্রতি তারা ইসরাইলের একটি বড়সড় ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করেছে। এতে দেখা গেছে, ইসরাইল তাদের নিয়ন্ত্রিত কিছু দালাল বা স্থানীয় সহযোগীদের মাধ্যমে গাজ্জায় উচ্চ প্রযুক্তির মোবাইল ফোন, ট্র্যাকিং ডিভাইস ও গুপ্তচরবৃত্তির সরঞ্জাম প্রবেশ করানোর চেষ্টা করছিল। এই যন্ত্রপাতিগুলো মূলত তরুণদের হাতে পৌঁছে দিয়ে তথ্য আদান-প্রদান এবং লক্ষ্য নির্ধারণের কাজে ব্যবহারের পরিকল্পনা ছিল।

ত্রাণ কেন্দ্রকে রিক্রুটমেন্ট হাব হিসেবে ব্যবহার
হামাস কর্মকর্তা আরও বলেন, গাজ্জায় পরিচালিত বিভিন্ন তথাকথিত ‘মানবিক ত্রাণ কার্যক্রম’ আসলে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থার নিয়ন্ত্রণে চলছে। এই কেন্দ্রগুলো থেকে মাদক পাচার এবং স্থানীয় সহযোগী নিয়োগ—এই দুই কাজ একইসঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

তার ভাষায়, “ইসরাইলি গোয়েন্দারা ত্রাণকেন্দ্রের আড়ালে গাজ্জায় বিপুল পরিমাণ মাদক সরবরাহ করেছে এবং এই কেন্দ্রগুলোকে তারা রিক্রুটমেন্ট হাব হিসেবে ব্যবহার করছে। যারা মাদক গ্রহণ করছে, পরে তারাই হয়ে উঠছে টার্গেট।”

সামাজিক নিরাপত্তা ধ্বংসের

সুপরিকল্পিত চক্রান্ত
হামাস দাবি করে, এই অপতৎপরতা শুধু নিরাপত্তা বিঘ্ন করার জন্য নয়, বরং পুরো ফিলিস্তিনি সমাজের কাঠামো ধ্বংসের একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ। এর ফলে তরুণ প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে, নেতৃত্ব তৈরি হবে না, এবং প্রতিরোধ আন্দোলন দুর্বল হয়ে পড়বে—এটাই ইসরাইলের কৌশল।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতায় উদ্বেগ
হামাস আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ও জাতিসংঘকে আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা এই বিষয়ের ওপর নজর দেয় এবং ইসরাইলি তৎপরতা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়।

সংগঠনটির মতে, “ইসরাইল শুধু বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে নয়—মানসিক, সামাজিক ও নৈতিকভাবেও ফিলিস্তিনিদের ধ্বংস করতে চায়। এটি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।”

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা

 

Please Share This Post in Your Social Media

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

গাজ্জার তরুণদের মাদকের ফাঁদে ফেলে সহযোগী বানাচ্ছে ইসরাইল: হামাসের অভিযোগ

Update Time : ১১:২১:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫

4 20250704095405

গাজ্জায় তরুণদের মাদকের ফাঁদে ফেলে তাদের ইসরাইলি মিশনে জড়ানোর গুরুতর অভিযোগ তুলেছে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। সংগঠনটি দাবি করেছে, ইহুদিবাদী সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইল পরিকল্পিতভাবে গাজ্জার তরুণদের নৈতিকভাবে ভেঙে দিয়ে তাদের গুপ্তচরবৃত্তি ও সামরিক মিশনে সহযোগী হিসেবে ব্যবহার করছে।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) হামাসের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে জানান, ইসরাইল দীর্ঘমেয়াদে এমন এক সামাজিক ও নিরাপত্তাহীন পরিবেশ তৈরি করতে চায়, যাতে গাজ্জার ভেতর অপরাধী চক্র গড়ে ওঠে এবং ভেতর থেকেই ভাঙন শুরু হয়।

মাদককে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার
তিনি বলেন, “ইসরাইল শুধু সামরিক দমনেই থেমে নেই। তারা এখন তরুণদের মাদকাসক্ত করার মাধ্যমে তাদের মানসিক ও নৈতিকভাবে দুর্বল করে তুলছে। এরপর সেই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে তাদের গুপ্তচর বা সহযোগী হিসেবে ব্যবহার করছে।”

গুপ্তচর যন্ত্রপাতি মোবাইল ফোন পাচারের চেষ্টা ব্যর্থ
হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সম্প্রতি তারা ইসরাইলের একটি বড়সড় ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করেছে। এতে দেখা গেছে, ইসরাইল তাদের নিয়ন্ত্রিত কিছু দালাল বা স্থানীয় সহযোগীদের মাধ্যমে গাজ্জায় উচ্চ প্রযুক্তির মোবাইল ফোন, ট্র্যাকিং ডিভাইস ও গুপ্তচরবৃত্তির সরঞ্জাম প্রবেশ করানোর চেষ্টা করছিল। এই যন্ত্রপাতিগুলো মূলত তরুণদের হাতে পৌঁছে দিয়ে তথ্য আদান-প্রদান এবং লক্ষ্য নির্ধারণের কাজে ব্যবহারের পরিকল্পনা ছিল।

ত্রাণ কেন্দ্রকে রিক্রুটমেন্ট হাব হিসেবে ব্যবহার
হামাস কর্মকর্তা আরও বলেন, গাজ্জায় পরিচালিত বিভিন্ন তথাকথিত ‘মানবিক ত্রাণ কার্যক্রম’ আসলে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থার নিয়ন্ত্রণে চলছে। এই কেন্দ্রগুলো থেকে মাদক পাচার এবং স্থানীয় সহযোগী নিয়োগ—এই দুই কাজ একইসঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

তার ভাষায়, “ইসরাইলি গোয়েন্দারা ত্রাণকেন্দ্রের আড়ালে গাজ্জায় বিপুল পরিমাণ মাদক সরবরাহ করেছে এবং এই কেন্দ্রগুলোকে তারা রিক্রুটমেন্ট হাব হিসেবে ব্যবহার করছে। যারা মাদক গ্রহণ করছে, পরে তারাই হয়ে উঠছে টার্গেট।”

সামাজিক নিরাপত্তা

ধ্বংসের সুপরিকল্পিত চক্রান্ত
হামাস দাবি করে, এই অপতৎপরতা শুধু নিরাপত্তা বিঘ্ন করার জন্য নয়, বরং পুরো ফিলিস্তিনি সমাজের কাঠামো ধ্বংসের একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ। এর ফলে তরুণ প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে, নেতৃত্ব তৈরি হবে না, এবং প্রতিরোধ আন্দোলন দুর্বল হয়ে পড়বে—এটাই ইসরাইলের কৌশল।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতায় উদ্বেগ
হামাস আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ও জাতিসংঘকে আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা এই বিষয়ের ওপর নজর দেয় এবং ইসরাইলি তৎপরতা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়।

সংগঠনটির মতে, “ইসরাইল শুধু বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে নয়—মানসিক, সামাজিক ও নৈতিকভাবেও ফিলিস্তিনিদের ধ্বংস করতে চায়। এটি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।”

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা