গুমের অভিযোগে সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা সেনাবাহিনীর

- Update Time : ০৬:০৪:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫
- / ৪৩ Time View

গুমের অভিযোগে জড়িত সেনাবাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনা সদর স্পষ্ট করেছে, যেসব সেনা সদস্য প্রেষণে অন্য সংস্থায় কর্মরত ছিলেন বা আছেন, তাদের কার্যক্রমের জন্য দায় সেনাবাহিনী বহন করে না। তবে যেসব সদস্যের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ এসেছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই ঘোষণা দেন সেনা সদরের মিলিটারি অপারেশন্স ডিরেক্টরেটের (কর্নেল স্টাফ) কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম।
প্রেস ব্রিফিংয়ে কর্নেল শফিকুল ইসলাম জানান, “সেনাবাহিনী সংবিধান অনুযায়ী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করে থাকে। কিন্তু কিছু সেনা সদস্য যখন প্রেষণে অন্যান্য সংস্থায় কাজ করেন, তখন তারা সেই প্রতিষ্ঠানের অধীনেই থাকেন। অতীতে কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে গুমের মতো গুরুতর অভিযোগ এসেছে। আমরা তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি এবং আইনানুগ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও জানান, জুলাই আন্দোলনের সময় সেনা মেডিকেল সেন্টারসমূহে মোট ৪ হাজার ৭৯০ জন আহত আন্দোলনকারী ও নিরাপত্তাকর্মীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে বর্তমানে ২২ জন ঢাকা সিএমএইচে ভর্তি রয়েছেন।
সাম্প্রতিক সময়ের অন্যান্য অভিযানের বিষয়েও ব্রিফিংয়ে তথ্য তুলে ধরা হয়। কর্নেল শফিকুল ইসলাম জানান, রথযাত্রা উপলক্ষে সেনাবাহিনী নিরাপত্তা প্রদানে দায়িত্ব পালন করেছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রায় ৪০০ কিশোর গ্যাং সদস্যকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
এছাড়া পার্বত্য এলাকায় সেনা অভিযানের কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন, “সম্প্রতি পরিচালিত এক অভিযানে ২৩ জন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এ সময় দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের এক সদস্য নিহত হয়েছেন।”
সাম্প্রতিক সময়ে গুম, অপহরণ এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সমালোচনার মুখে সেনাবাহিনীর এই বক্তব্যকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষত, জুলাই গণ-আন্দোলনের সময় যেভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে, সেসব প্রেক্ষাপটে সেনাবাহিনীর অবস্থান স্পষ্ট করা একটি রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক বার্তা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সেনা সদর জানিয়েছে, ভবিষ্যতেও তারা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নীতিতে অটল থাকবে, এবং কারও ব্যক্তিগত অপকর্মে পুরো প্রতিষ্ঠান দায়ী হবে না। গুমের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে যা যা প্রয়োজন তা করা হবে বলেও আশ্বস্ত করা হয়।
Please Share This Post in Your Social Media

গুমের অভিযোগে সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা সেনাবাহিনীর


গুমের অভিযোগে জড়িত সেনাবাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনা সদর স্পষ্ট করেছে, যেসব সেনা সদস্য প্রেষণে অন্য সংস্থায় কর্মরত ছিলেন বা আছেন, তাদের কার্যক্রমের জন্য দায় সেনাবাহিনী বহন করে না। তবে যেসব সদস্যের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ এসেছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই ঘোষণা দেন সেনা সদরের মিলিটারি অপারেশন্স ডিরেক্টরেটের (কর্নেল স্টাফ) কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম।
প্রেস ব্রিফিংয়ে কর্নেল শফিকুল ইসলাম জানান, “সেনাবাহিনী সংবিধান অনুযায়ী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করে থাকে। কিন্তু কিছু সেনা সদস্য যখন প্রেষণে অন্যান্য সংস্থায় কাজ করেন, তখন তারা সেই প্রতিষ্ঠানের অধীনেই থাকেন। অতীতে কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে গুমের মতো গুরুতর অভিযোগ এসেছে। আমরা তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি এবং আইনানুগ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও জানান, জুলাই আন্দোলনের সময় সেনা মেডিকেল সেন্টারসমূহে মোট ৪ হাজার ৭৯০ জন আহত আন্দোলনকারী ও নিরাপত্তাকর্মীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে বর্তমানে ২২ জন ঢাকা সিএমএইচে ভর্তি রয়েছেন।
সাম্প্রতিক সময়ের অন্যান্য অভিযানের বিষয়েও ব্রিফিংয়ে তথ্য তুলে ধরা হয়। কর্নেল শফিকুল ইসলাম জানান, রথযাত্রা উপলক্ষে সেনাবাহিনী নিরাপত্তা প্রদানে দায়িত্ব পালন করেছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রায় ৪০০ কিশোর গ্যাং সদস্যকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
এছাড়া পার্বত্য এলাকায় সেনা অভিযানের কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন, “সম্প্রতি পরিচালিত এক অভিযানে ২৩ জন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এ সময় দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের এক সদস্য নিহত হয়েছেন।”
সাম্প্রতিক সময়ে গুম, অপহরণ এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সমালোচনার মুখে সেনাবাহিনীর এই বক্তব্যকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষত, জুলাই গণ-আন্দোলনের সময় যেভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে, সেসব প্রেক্ষাপটে সেনাবাহিনীর অবস্থান স্পষ্ট করা একটি রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক বার্তা বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সেনা সদর জানিয়েছে, ভবিষ্যতেও তারা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নীতিতে অটল থাকবে, এবং কারও ব্যক্তিগত অপকর্মে পুরো প্রতিষ্ঠান দায়ী হবে না। গুমের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে যা যা প্রয়োজন তা করা হবে বলেও আশ্বস্ত করা হয়।