আওয়ামী লীগকে নিয়ে তীব্র স্ট্যাটাস প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের: “আপনারা কখনো শান্তি পাবেন না”

- Update Time : ০৬:২৩:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫
- / ৪৩ Time View
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় সমালোচনামূলক স্ট্যাটাস দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ১ জুলাই (মঙ্গলবার) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন—আওয়ামী লীগ যতদিন পর্যন্ত না জুলাই বিপ্লবে শহীদ ও আহতদের প্রতি সম্মান জানাবে, দুঃখ প্রকাশ করবে, ততদিন তাদের শান্তি মিলবে না।
শফিকুল আলম লিখেছেন, “আমরা অপেক্ষা করেছি প্রায় দশ মাস। চেয়েছি—আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব, তাদের সদস্য এবং সমর্থকরা অন্তত একবার নিজেদের ভুল স্বীকার করুক, আমাদের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাক, বৈষম্যহীন একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের লড়াইয়ে আমাদের পাশে দাঁড়াক। কিন্তু তারা করেছে ঠিক উল্টোটা। শহীদদের নিয়ে ব্যঙ্গ করেছে, সংগ্রামকে অবমূল্যায়ন করেছে, পুরো জাতিকে ‘জঙ্গি’ তকমা দিয়ে কলঙ্কিত করেছে—এই আশায় যে, তাদের ঔপনিবেশিক প্রভুরা আবার এসে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেবে।”
তিনি সোজাসাপটা বলেন, “দুঃখিত, এবার আর তা হবে না। জুলাই আমাদের সাহস দিয়েছে। জুলাই আমাদের শিখিয়েছে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে। জুলাই আমাদের ডিএনএ-তে সাহসের এক স্থায়ী জিন ঢুকিয়ে দিয়েছে। আমরা আর আগের মতো নেই।”
জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ করে শফিকুল আলম বলেন, “জুলাই আমাদের ভুলতে দেয় না তাদের, যাদের আপনারা নির্মমভাবে হত্যা করেছেন। চোখ উপড়ে নিয়েছেন, আত্মা পর্যন্ত ছিন্নভিন্ন করেছেন। কিন্তু আমরা হার মানিনি। ঝড়ো গুলির মাঝেও দাঁড়িয়ে থেকেছি, মাথা নত করিনি।”
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি লেখেন, “আপনাদের সঙ্গে কখনো শান্তি হবে না, যতক্ষণ না আপনারা ‘দুঃখিত’ বলেন, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের হাতে লেগে থাকা রক্ত দেখেন। যতক্ষণ না শহীদদের প্রতি সম্মান দেখান, ততক্ষণ শান্তি অসম্ভব।”
পোস্টের শেষাংশে এসে তিনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, “আমরা লড়ব—নদীতে, পাহাড়ে, জমিতে, ভার্চুয়াল স্পেসেও। আপনারা মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত, গণহত্যার সহযোগী, মানবাধিকারের ডাকাত। আমরা আপনাদের মুখোশ খুলে ফেলব। আপনাদের কুৎসিত প্রভাব মাটি থেকে মুছে ফেলব এবং সেই মাটি রক্ত দিয়ে শুদ্ধ করব।”
রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন
শফিকুল আলমের এই পোস্ট প্রকাশের পর সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্ক। কেউ কেউ একে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তার কাছ থেকে অত্যন্ত স্পষ্ট ও সাহসী অবস্থান বলে প্রশংসা করছেন, আবার অনেকেই বলছেন, এটি রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দেবে।
তবে এ কথা স্পষ্ট, জুলাই অভ্যুত্থান এবং সে সময়ের ঘটনার বিচার ও স্বীকৃতি নিয়ে দেশে যে জনমত গড়ে উঠছে, শফিকুল আলমের স্ট্যাটাস তারই প্রতিফলন। সরকারের তরফে এই স্ট্যাটাসের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি।
Please Share This Post in Your Social Media

আওয়ামী লীগকে নিয়ে তীব্র স্ট্যাটাস প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের: “আপনারা কখনো শান্তি পাবেন না”

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় সমালোচনামূলক স্ট্যাটাস দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ১ জুলাই (মঙ্গলবার) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন—আওয়ামী লীগ যতদিন পর্যন্ত না জুলাই বিপ্লবে শহীদ ও আহতদের প্রতি সম্মান জানাবে, দুঃখ প্রকাশ করবে, ততদিন তাদের শান্তি মিলবে না।
শফিকুল আলম লিখেছেন, “আমরা অপেক্ষা করেছি প্রায় দশ মাস। চেয়েছি—আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব, তাদের সদস্য এবং সমর্থকরা অন্তত একবার নিজেদের ভুল স্বীকার করুক, আমাদের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাক, বৈষম্যহীন একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের লড়াইয়ে আমাদের পাশে দাঁড়াক। কিন্তু তারা করেছে ঠিক উল্টোটা। শহীদদের নিয়ে ব্যঙ্গ করেছে, সংগ্রামকে অবমূল্যায়ন করেছে, পুরো জাতিকে ‘জঙ্গি’ তকমা দিয়ে কলঙ্কিত করেছে—এই আশায় যে, তাদের ঔপনিবেশিক প্রভুরা আবার এসে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেবে।”
তিনি সোজাসাপটা বলেন, “দুঃখিত, এবার আর তা হবে না। জুলাই আমাদের সাহস দিয়েছে। জুলাই আমাদের শিখিয়েছে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে। জুলাই আমাদের ডিএনএ-তে সাহসের এক স্থায়ী জিন ঢুকিয়ে দিয়েছে। আমরা আর আগের মতো নেই।”
জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ করে শফিকুল আলম বলেন, “জুলাই আমাদের ভুলতে দেয় না তাদের, যাদের আপনারা নির্মমভাবে হত্যা করেছেন। চোখ উপড়ে নিয়েছেন, আত্মা পর্যন্ত ছিন্নভিন্ন করেছেন। কিন্তু আমরা হার মানিনি। ঝড়ো গুলির মাঝেও দাঁড়িয়ে থেকেছি, মাথা নত করিনি।”
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি লেখেন, “আপনাদের সঙ্গে কখনো শান্তি হবে না, যতক্ষণ না আপনারা ‘দুঃখিত’ বলেন, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের হাতে লেগে থাকা রক্ত দেখেন। যতক্ষণ না শহীদদের প্রতি সম্মান দেখান, ততক্ষণ শান্তি অসম্ভব।”
পোস্টের শেষাংশে এসে তিনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, “আমরা লড়ব—নদীতে, পাহাড়ে, জমিতে, ভার্চুয়াল স্পেসেও। আপনারা মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত, গণহত্যার সহযোগী, মানবাধিকারের ডাকাত। আমরা আপনাদের মুখোশ খুলে ফেলব। আপনাদের কুৎসিত প্রভাব মাটি থেকে মুছে ফেলব এবং সেই মাটি রক্ত দিয়ে শুদ্ধ করব।”
রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন
শফিকুল আলমের এই পোস্ট প্রকাশের পর সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্ক। কেউ কেউ একে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তার কাছ থেকে অত্যন্ত স্পষ্ট ও সাহসী অবস্থান বলে প্রশংসা করছেন, আবার অনেকেই বলছেন, এটি রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দেবে।
তবে এ কথা স্পষ্ট, জুলাই অভ্যুত্থান এবং সে সময়ের ঘটনার বিচার ও স্বীকৃতি নিয়ে দেশে যে জনমত গড়ে উঠছে, শফিকুল আলমের স্ট্যাটাস তারই প্রতিফলন। সরকারের তরফে এই স্ট্যাটাসের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি।