সময়: বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ শূন্য, সর্বোচ্চ ঘাটতি তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে

ডিজিটাল ডেস্ক
  • Update Time : ১০:৪৮:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
  • / ৮৩ Time View

1751301329 a4b09049fc5b9cbcf401de9b2830e8c3

1751301329 a4b09049fc5b9cbcf401de9b2830e8c3

বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ২২০টি পদ শূন্য রয়েছে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সোমবার (৩০ জুন) প্রকাশিত ২০২৪ সালের সরকারি কর্মচারীদের পরিসংখ্যানে এই তথ্য উঠে এসেছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে সরকারি চাকরির জন্য মোট অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১৯ লাখ ১৯ হাজার ১১১টি। এর বিপরীতে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৮৯১ জন। ফলে মোট ২৪ শতাংশ পদ শূন্য রয়েছে।

গত কয়েক বছরের তুলনামূলক চিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৭টি পদ ফাঁকা ছিল। ২০১৯ সালে তা দাঁড়ায় ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৩৩৮টিতে। এরপর ২০২০ সালে ৩ লাখ ৮০ হাজার ৯৫৫টি, ২০২১ সালে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১২৫টি এবং ২০২২ সালে সর্বোচ্চ ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৯৭৬টি পদ ফাঁকা ছিল। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৭৩ হাজার।

বর্তমানে সবচেয়ে বেশি শূন্যপদ রয়েছে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের মধ্যে। তৃতীয় শ্রেণি (গ্রেড ১৩-১৬) পর্যায়ে অনুমোদিত ৭ লাখ ৬০ হাজার ৬৩৪টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৬ লাখ ১৩ হাজার ৮৩৫ জন। অর্থাৎ এখানে শূন্য রয়েছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৯টি পদ। একইভাবে চতুর্থ শ্রেণি (গ্রেড ১৭-২০) পর্যায়ে অনুমোদিত ৫ লাখ ১৯ হাজার ৮১২টি পদের বিপরীতে কর্মরত ৪ লাখ ৪ হাজার ৫৭৭ জন। ফলে শূন্য রয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার ২৩৫টি পদ।

গেজেটেড ক্যাডার (গ্রেড ১-১২) পর্যায়ে শূন্যপদের সংখ্যাও কম নয়। প্রথম থেকে নবম গ্রেডে (সাবেক প্রথম শ্রেণি) অনুমোদিত ২ লাখ ৫৯ হাজার ৬৫৭টি পদের মধ্যে কর্মরত ১ লাখ ৯০ হাজার ৭৭৩ জন। এখানে শূন্য রয়েছে ৬৮ হাজার ৮৮৪টি পদ। অন্যদিকে ১০ থেকে ১২তম গ্রেডে (সাবেক দ্বিতীয় শ্রেণি) ৩ লাখ ৬২ হাজার ২৮৯টি পদের মধ্যে ২ লাখ ৩৩ হাজার ৭২৬ জন কর্মরত, ফলে শূন্য রয়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার ১৬৬টি পদ।

অতিরিক্ত একটি তথ্য অনুযায়ী, নির্ধারিত ও অন্যান্য কাজের জন্য থাকা ১৬ হাজার ১১৬টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৭ হাজার ৮৯০ জন। এখানে ৮ হাজার ১৩৬টি পদ ফাঁকা রয়েছে।

নিয়োগ ব্যবস্থাপনার দিক থেকে দেখা যায়, প্রথম থেকে ১২তম গ্রেড পর্যন্ত গেজেটেড পদের নিয়োগ দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। তবে ১৩ থেকে ২০তম গ্রেডের পদের নিয়োগ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো।

সরকারি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে শূন্যপদের সংখ্যায়ও রয়েছে বৈচিত্র্য। মন্ত্রণালয় ও বিভাগে মোট ৬ হাজার ৬৪টি পদ ফাঁকা রয়েছে, অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরে ২ লাখ ৯৬ হাজার ১১২টি পদ খালি। বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ফাঁকা রয়েছে ১৫ হাজার ২৯টি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও করপোরেশনসমূহে শূন্য রয়েছে ১ লাখ ৫১ হাজার ১৫টি পদ।

এই বিপুল শূন্যপদ সরকার পরিচালনার দক্ষতা, জনসেবা প্রদান এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও গতিশীলতার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত না হলে প্রশাসনিক ভারসাম্যে বড় সংকট দেখা দিতে পারে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ শূন্য, সর্বোচ্চ ঘাটতি তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে

Update Time : ১০:৪৮:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

1751301329 a4b09049fc5b9cbcf401de9b2830e8c3

বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ২২০টি পদ শূন্য রয়েছে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সোমবার (৩০ জুন) প্রকাশিত ২০২৪ সালের সরকারি কর্মচারীদের পরিসংখ্যানে এই তথ্য উঠে এসেছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে সরকারি চাকরির জন্য মোট অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১৯ লাখ ১৯ হাজার ১১১টি। এর বিপরীতে বর্তমানে কর্মরত রয়েছেন ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৮৯১ জন। ফলে মোট ২৪ শতাংশ পদ শূন্য রয়েছে।

গত কয়েক বছরের তুলনামূলক চিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৭টি পদ ফাঁকা ছিল। ২০১৯ সালে তা দাঁড়ায় ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৩৩৮টিতে। এরপর ২০২০ সালে ৩ লাখ ৮০ হাজার ৯৫৫টি, ২০২১ সালে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১২৫টি এবং ২০২২ সালে সর্বোচ্চ ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৯৭৬টি পদ ফাঁকা ছিল। ২০২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৭৩ হাজার।

বর্তমানে সবচেয়ে বেশি শূন্যপদ রয়েছে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের মধ্যে। তৃতীয় শ্রেণি (গ্রেড ১৩-১৬) পর্যায়ে অনুমোদিত ৭ লাখ ৬০ হাজার ৬৩৪টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৬ লাখ ১৩ হাজার ৮৩৫ জন। অর্থাৎ এখানে শূন্য রয়েছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৯টি পদ। একইভাবে চতুর্থ শ্রেণি (গ্রেড ১৭-২০) পর্যায়ে অনুমোদিত ৫ লাখ ১৯ হাজার ৮১২টি পদের বিপরীতে কর্মরত ৪ লাখ ৪ হাজার ৫৭৭ জন। ফলে শূন্য রয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার ২৩৫টি পদ।

গেজেটেড ক্যাডার (গ্রেড ১-১২) পর্যায়ে শূন্যপদের সংখ্যাও কম নয়। প্রথম থেকে নবম গ্রেডে (সাবেক প্রথম শ্রেণি) অনুমোদিত ২ লাখ ৫৯ হাজার ৬৫৭টি পদের মধ্যে কর্মরত ১ লাখ ৯০ হাজার ৭৭৩ জন। এখানে শূন্য রয়েছে ৬৮ হাজার ৮৮৪টি পদ। অন্যদিকে ১০ থেকে ১২তম গ্রেডে (সাবেক দ্বিতীয় শ্রেণি) ৩ লাখ ৬২ হাজার ২৮৯টি পদের মধ্যে ২ লাখ ৩৩ হাজার ৭২৬ জন কর্মরত, ফলে শূন্য রয়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার ১৬৬টি পদ।

অতিরিক্ত একটি তথ্য অনুযায়ী, নির্ধারিত ও অন্যান্য কাজের জন্য থাকা ১৬ হাজার ১১৬টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৭ হাজার ৮৯০ জন। এখানে ৮ হাজার ১৩৬টি পদ ফাঁকা রয়েছে।

নিয়োগ ব্যবস্থাপনার দিক থেকে দেখা যায়, প্রথম থেকে ১২তম গ্রেড পর্যন্ত গেজেটেড পদের নিয়োগ দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। তবে ১৩ থেকে ২০তম গ্রেডের পদের নিয়োগ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো।

সরকারি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে শূন্যপদের সংখ্যায়ও রয়েছে বৈচিত্র্য। মন্ত্রণালয় ও বিভাগে মোট ৬ হাজার ৬৪টি পদ ফাঁকা রয়েছে, অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরে ২ লাখ ৯৬ হাজার ১১২টি পদ খালি। বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ফাঁকা রয়েছে ১৫ হাজার ২৯টি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও করপোরেশনসমূহে শূন্য রয়েছে ১ লাখ ৫১ হাজার ১৫টি পদ।

এই বিপুল শূন্যপদ সরকার পরিচালনার দক্ষতা, জনসেবা প্রদান এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও গতিশীলতার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত না হলে প্রশাসনিক ভারসাম্যে বড় সংকট দেখা দিতে পারে।