ট্রাম্প ‘মানসিক ও মিডিয়া গেইম’ খেলছেন: ইরানের কড়া প্রতিক্রিয়া

- Update Time : ০৬:২৩:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
- / ৫৩ Time View
তেহরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সংক্রান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থান পরিবর্তনকে ‘খেলা’ হিসেবে বর্ণনা করেছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইমাইল বাঘেই এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে কেবল “মানসিক ও মিডিয়া গেম” বলে অভিহিত করেন।
ইমাইল বাঘেই বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন বক্তব্য ও অবস্থান কোনোভাবেই দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর প্রকৃত সমাধানে আন্তরিক প্রচেষ্টার প্রতিফলন নয়। বরং এটি শুধু গণমাধ্যমের সামনে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর একটি প্রচেষ্টা।” তিনি আরও বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসন প্রকৃত আলোচনা কিংবা কূটনৈতিক সমাধানে আগ্রহী নয়, তারা আন্তর্জাতিক মনোযোগ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে মিডিয়া নির্ভর মানসিক যুদ্ধ চালাচ্ছে।”
শুক্রবার এক বিবৃতিতে ট্রাম্প ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেইকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে বলেন, তিনি আর ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পরিকল্পনায় আগ্রহী নন। বরং তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি তেহরান আবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়ায়, তাহলে তিনি আবারও ইরানকে সামরিক হামলার হুমকি বিবেচনা করবেন।
এই মন্তব্যে তেহরানসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ইরান মনে করছে, যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছাকৃতভাবে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে এবং ইরানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলছে। তেহরানের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতিগত অসামঞ্জস্যই মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতার বড় উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই ধরনের ‘জিগ-জ্যাগ’ কূটনীতি বিশ্ব রাজনীতিতে অনিশ্চয়তা বাড়াচ্ছে। একদিকে তারা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আভাস দিচ্ছে, অন্যদিকে হঠাৎ তা থেকে সরে এসে সামরিক হুমকি দিচ্ছে। এর ফলে কেবল ইরান নয়, বরং পুরো অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনিশ্চিত হয়ে উঠছে।
ইরানের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করে জানানো হয়েছে যে, তারা আলোচনায় বসতে চায়—কিন্তু সেটি হতে হবে সম্মানের ভিত্তিতে এবং শর্তহীন। আরোপিত চাপ ও হুমকি তাদের কণ্ঠরোধ করতে পারবে না বলেই জানিয়ে দিয়েছে তেহরান।
বিশ্ব রাজনীতির বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই প্রেক্ষাপটে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানো ও জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে। না হলে এই ‘মিডিয়া গেইম’ কেবল বাকযুদ্ধেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, তা বাস্তব যুদ্ধের দিকে গড়াতেও পারে।
Please Share This Post in Your Social Media

ট্রাম্প ‘মানসিক ও মিডিয়া গেইম’ খেলছেন: ইরানের কড়া প্রতিক্রিয়া

তেহরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সংক্রান্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থান পরিবর্তনকে ‘খেলা’ হিসেবে বর্ণনা করেছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইমাইল বাঘেই এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে কেবল “মানসিক ও মিডিয়া গেম” বলে অভিহিত করেন।
ইমাইল বাঘেই বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন বক্তব্য ও অবস্থান কোনোভাবেই দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর প্রকৃত সমাধানে আন্তরিক প্রচেষ্টার প্রতিফলন নয়। বরং এটি শুধু গণমাধ্যমের সামনে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর একটি প্রচেষ্টা।” তিনি আরও বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসন প্রকৃত আলোচনা কিংবা কূটনৈতিক সমাধানে আগ্রহী নয়, তারা আন্তর্জাতিক মনোযোগ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে মিডিয়া নির্ভর মানসিক যুদ্ধ চালাচ্ছে।”
শুক্রবার এক বিবৃতিতে ট্রাম্প ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেইকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে বলেন, তিনি আর ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পরিকল্পনায় আগ্রহী নন। বরং তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি তেহরান আবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়ায়, তাহলে তিনি আবারও ইরানকে সামরিক হামলার হুমকি বিবেচনা করবেন।
এই মন্তব্যে তেহরানসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ইরান মনে করছে, যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছাকৃতভাবে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে এবং ইরানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলছে। তেহরানের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতিগত অসামঞ্জস্যই মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতার বড় উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই ধরনের ‘জিগ-জ্যাগ’ কূটনীতি বিশ্ব রাজনীতিতে অনিশ্চয়তা বাড়াচ্ছে। একদিকে তারা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আভাস দিচ্ছে, অন্যদিকে হঠাৎ তা থেকে সরে এসে সামরিক হুমকি দিচ্ছে। এর ফলে কেবল ইরান নয়, বরং পুরো অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনিশ্চিত হয়ে উঠছে।
ইরানের পক্ষ থেকে পরিষ্কার করে জানানো হয়েছে যে, তারা আলোচনায় বসতে চায়—কিন্তু সেটি হতে হবে সম্মানের ভিত্তিতে এবং শর্তহীন। আরোপিত চাপ ও হুমকি তাদের কণ্ঠরোধ করতে পারবে না বলেই জানিয়ে দিয়েছে তেহরান।
বিশ্ব রাজনীতির বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই প্রেক্ষাপটে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ানো ও জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে। না হলে এই ‘মিডিয়া গেইম’ কেবল বাকযুদ্ধেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, তা বাস্তব যুদ্ধের দিকে গড়াতেও পারে।