বন্ধুর সঙ্গে বিছানায় যেতে চাপ’, প্রাক্তন স্বামী সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ কারিশমা কাপুরের!

- Update Time : ১২:৪৯:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫
- / ৪৬ Time View
বলিউড অভিনেত্রী কারিশমা কাপুরের প্রাক্তন স্বামী, ভারতের আলোচিত ও বিত্তশালী ব্যবসায়ী সঞ্জয় কাপুর আর নেই। ১২ জুন, বুধবার ভারতের রাজধানী দিল্লিতে একটি বেসরকারি পোলো ক্লাবে খেলার সময় হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। খবরটি নিশ্চিত হওয়ার পর বলিউড অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
কারিশমা কাপুরও সাবেক স্বামীর এই আকস্মিক প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন। বিচ্ছেদের পর তাদের সম্পর্কে নানা টানাপোড়েন থাকলেও, পরবর্তীতে তারা এক ধরনের বন্ধুত্বপূর্ণ সহাবস্থানে পৌঁছেছিলেন। তবে তাদের দাম্পত্য জীবনের অন্ধকার দিক এক সময় সামনে এনেছিলেন কারিশমা নিজেই।
গভীর ক্ষত: শারীরিক নির্যাতন ও অমানবিক চাপের অভিযোগ
২০০৩ সালে ধুমধাম করে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন কারিশমা কাপুর ও সঞ্জয় কাপুর। কিন্তু বিয়ের পর খুব দ্রুতই সেই সম্পর্ক বিষাক্ত হয়ে ওঠে। কারিশমা একাধিক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, মধুচন্দ্রিমার সময় থেকেই তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ছিল—সঞ্জয় তাকে তার এক বন্ধুর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে চাপ দেন। শুধু তাই নয়, সেই বন্ধুর কাছে কারিশমার ‘মূল্য’ নির্ধারণ করেও দেন বলে দাবি করেন তিনি।
এহেন অমানবিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সঞ্জয় নাকি তাকে বেধড়ক মারধর করেন। কারিশমার অভিযোগ অনুযায়ী, শুধুমাত্র স্বামীই নয়, সঞ্জয়ের মা-ও নিয়মিত তাকে গৃহবন্দী করে নির্যাতন করতেন। এই দাম্পত্যে সঞ্জয়ের অন্য এক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল বলেও তিনি জানতে পারেন। সেই সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
গর্ভাবস্থায়ও ছিল নির্যাতন
অভিনেত্রীর অভিযোগ অনুযায়ী, গর্ভাবস্থায় ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণে একটি পোশাক ঠিকভাবে পরতে না পারায়, সঞ্জয় তার মাকে নির্দেশ দেন—কারিশমাকে চড় মারতে! এই ধরণের অপমানজনক ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে বলে জানান তিনি।
এতোসব নির্যাতনের পর অবশেষে ২০১4 সালে বিচ্ছেদের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হন কারিশমা। ২০১৬ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ সম্পন্ন হয়।
বিচ্ছেদের শর্ত ও সন্তানের দায়িত্ব
বিচ্ছেদের পর কারিশমার নামে মুম্বাইয়ের খারে এলাকায় একটি বাড়ি লিখে দেন সঞ্জয় কাপুর। পাশাপাশি, তাদের দুই সন্তানের নামে ১৪ কোটি টাকার স্থায়ী আমানত করেন তিনি। সেই স্থায়ী আমানতের সুদ থেকে সন্তানরা মাসে প্রায় ১০ লাখ টাকা করে পান।
কারিশমার বাবা, প্রখ্যাত অভিনেতা রণধীর কাপুর এক সাক্ষাৎকারে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “উনি একজন তৃতীয় শ্রেণির মানুষ। আমি কখনোই এই বিয়েতে সম্মত ছিলাম না।”
তৃতীয়বার বিয়ে, পিতৃত্বের দায়িত্ব
কারিশমার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর সঞ্জয় তৃতীয়বার বিয়ে করেন প্রিয়া সচদেব নামে এক মডেল ও উদ্যোক্তাকে। সেই সংসারে রয়েছে একটি ছেলে। যদিও সন্তানদের প্রয়োজনে মাঝে মধ্যে কারিশমার সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতেন তিনি।
অকাল প্রয়াণ: হৃদয় ভাঙা বলিউড
১২ জুন ২০২৫, বুধবার, দিল্লির পোলো ক্লাবে খেলতে গিয়ে হঠাৎ বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন সঞ্জয় কাপুর। তাৎক্ষণিকভাবে তার অবস্থার অবনতি ঘটে এবং হাসপাতালে নেয়ার আগেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ৫৩ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ীর অকাল প্রয়াণে মুম্বাইয়ের ব্যবসায়ী ও বলিউড মহলে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এক সময় যিনি বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন, তিনিই আজ সকলের কাছে একটি চিরচেনা অতীত। তার জীবনের ওঠানামা, বিতর্কিত সম্পর্ক ও ট্র্যাজিক মৃত্যু আজও প্রশ্ন তোলে—খ্যাতি, অর্থ আর গ্ল্যামারের আড়ালে কতটা গভীর হতে পারে এক মানুষের ব্যক্তিগত বেদনার কাহিনি।
Please Share This Post in Your Social Media

বন্ধুর সঙ্গে বিছানায় যেতে চাপ’, প্রাক্তন স্বামী সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ কারিশমা কাপুরের!

বলিউড অভিনেত্রী কারিশমা কাপুরের প্রাক্তন স্বামী, ভারতের আলোচিত ও বিত্তশালী ব্যবসায়ী সঞ্জয় কাপুর আর নেই। ১২ জুন, বুধবার ভারতের রাজধানী দিল্লিতে একটি বেসরকারি পোলো ক্লাবে খেলার সময় হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। খবরটি নিশ্চিত হওয়ার পর বলিউড অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
কারিশমা কাপুরও সাবেক স্বামীর এই আকস্মিক প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন। বিচ্ছেদের পর তাদের সম্পর্কে নানা টানাপোড়েন থাকলেও, পরবর্তীতে তারা এক ধরনের বন্ধুত্বপূর্ণ সহাবস্থানে পৌঁছেছিলেন। তবে তাদের দাম্পত্য জীবনের অন্ধকার দিক এক সময় সামনে এনেছিলেন কারিশমা নিজেই।
গভীর ক্ষত: শারীরিক নির্যাতন ও অমানবিক চাপের অভিযোগ
২০০৩ সালে ধুমধাম করে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন কারিশমা কাপুর ও সঞ্জয় কাপুর। কিন্তু বিয়ের পর খুব দ্রুতই সেই সম্পর্ক বিষাক্ত হয়ে ওঠে। কারিশমা একাধিক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, মধুচন্দ্রিমার সময় থেকেই তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ছিল—সঞ্জয় তাকে তার এক বন্ধুর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে চাপ দেন। শুধু তাই নয়, সেই বন্ধুর কাছে কারিশমার ‘মূল্য’ নির্ধারণ করেও দেন বলে দাবি করেন তিনি।
এহেন অমানবিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সঞ্জয় নাকি তাকে বেধড়ক মারধর করেন। কারিশমার অভিযোগ অনুযায়ী, শুধুমাত্র স্বামীই নয়, সঞ্জয়ের মা-ও নিয়মিত তাকে গৃহবন্দী করে নির্যাতন করতেন। এই দাম্পত্যে সঞ্জয়ের অন্য এক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল বলেও তিনি জানতে পারেন। সেই সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
গর্ভাবস্থায়ও ছিল নির্যাতন
অভিনেত্রীর অভিযোগ অনুযায়ী, গর্ভাবস্থায় ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণে একটি পোশাক ঠিকভাবে পরতে না পারায়, সঞ্জয় তার মাকে নির্দেশ দেন—কারিশমাকে চড় মারতে! এই ধরণের অপমানজনক ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে বলে জানান তিনি।
এতোসব নির্যাতনের পর অবশেষে ২০১4 সালে বিচ্ছেদের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হন কারিশমা। ২০১৬ সালে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ সম্পন্ন হয়।
বিচ্ছেদের শর্ত ও সন্তানের দায়িত্ব
বিচ্ছেদের পর কারিশমার নামে মুম্বাইয়ের খারে এলাকায় একটি বাড়ি লিখে দেন সঞ্জয় কাপুর। পাশাপাশি, তাদের দুই সন্তানের নামে ১৪ কোটি টাকার স্থায়ী আমানত করেন তিনি। সেই স্থায়ী আমানতের সুদ থেকে সন্তানরা মাসে প্রায় ১০ লাখ টাকা করে পান।
কারিশমার বাবা, প্রখ্যাত অভিনেতা রণধীর কাপুর এক সাক্ষাৎকারে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “উনি একজন তৃতীয় শ্রেণির মানুষ। আমি কখনোই এই বিয়েতে সম্মত ছিলাম না।”
তৃতীয়বার বিয়ে, পিতৃত্বের দায়িত্ব
কারিশমার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর সঞ্জয় তৃতীয়বার বিয়ে করেন প্রিয়া সচদেব নামে এক মডেল ও উদ্যোক্তাকে। সেই সংসারে রয়েছে একটি ছেলে। যদিও সন্তানদের প্রয়োজনে মাঝে মধ্যে কারিশমার সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতেন তিনি।
অকাল প্রয়াণ: হৃদয় ভাঙা বলিউড
১২ জুন ২০২৫, বুধবার, দিল্লির পোলো ক্লাবে খেলতে গিয়ে হঠাৎ বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন সঞ্জয় কাপুর। তাৎক্ষণিকভাবে তার অবস্থার অবনতি ঘটে এবং হাসপাতালে নেয়ার আগেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ৫৩ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ীর অকাল প্রয়াণে মুম্বাইয়ের ব্যবসায়ী ও বলিউড মহলে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এক সময় যিনি বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন, তিনিই আজ সকলের কাছে একটি চিরচেনা অতীত। তার জীবনের ওঠানামা, বিতর্কিত সম্পর্ক ও ট্র্যাজিক মৃত্যু আজও প্রশ্ন তোলে—খ্যাতি, অর্থ আর গ্ল্যামারের আড়ালে কতটা গভীর হতে পারে এক মানুষের ব্যক্তিগত বেদনার কাহিনি।