আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ, প্রজ্ঞাপন জারি: নিবন্ধনও স্থগিত করলো নির্বাচন কমিশন

- Update Time : ১২:২৫:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
- / ৮০ Time View
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সোমবার, ১২ মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপন জারি করে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধিত) অধ্যাদেশ অনুযায়ী এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. জিয়াউদ্দিন আহমেদ বিকেলে সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তা, সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং বিচার কার্যক্রমের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও এর অধীনস্থ সব সংগঠনের নেতা-কর্মীদের যেকোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যমে প্রচার, অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কার্যক্রম, মিছিল-মিটিং, সভা-সমাবেশ, রাজনৈতিক সম্মেলন এবং সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে।
আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করলো নির্বাচন কমিশন
এই নিষেধাজ্ঞার ধারাবাহিকতায় সোমবার রাতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নিবন্ধন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আখতার আহমেদ রাত সোয়া ৯টার দিকে নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক জরুরি ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গ ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নিবন্ধন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা গেজেট প্রকাশ করেছি এবং তা বিজি প্রেস থেকে সংগ্রহ করা যাবে।”
তিনি আরও জানান, “নির্বাচন কমিশন সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী কাজ করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে করে রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় থাকে এবং বিচার প্রক্রিয়ায় কোনো প্রকার বাধা না আসে।”
জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া
সরকারের এই পদক্ষেপে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে সময়োপযোগী এবং প্রয়োজনীয় হিসেবে দেখছেন।দুর্নীতি, রাজনৈতিক সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত একটি বড় রাজনৈতিক দলের ওপর এমন কঠোর সিদ্ধান্তকে তারা স্বাগত জানিয়েছেন।
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাধারণ মানুষ সরকারের এই পদক্ষেপকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছেন। অনেকেই মনে করছেন, দীর্ঘদিন ধরে দায়মুক্তির সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক সহিংসতায় জর্জরিত বাংলাদেশে এই পদক্ষেপ একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। তারা আশা করছেন, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সরকার আরও কঠোর ও নিরপেক্ষ অবস্থান নেবে।
Please Share This Post in Your Social Media

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ, প্রজ্ঞাপন জারি: নিবন্ধনও স্থগিত করলো নির্বাচন কমিশন

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সোমবার, ১২ মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপন জারি করে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধিত) অধ্যাদেশ অনুযায়ী এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. জিয়াউদ্দিন আহমেদ বিকেলে সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তা, সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং বিচার কার্যক্রমের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও এর অধীনস্থ সব সংগঠনের নেতা-কর্মীদের যেকোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যমে প্রচার, অনলাইন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কার্যক্রম, মিছিল-মিটিং, সভা-সমাবেশ, রাজনৈতিক সম্মেলন এবং সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে।
আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করলো নির্বাচন কমিশন
এই নিষেধাজ্ঞার ধারাবাহিকতায় সোমবার রাতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নিবন্ধন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আখতার আহমেদ রাত সোয়া ৯টার দিকে নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক জরুরি ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গ ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নিবন্ধন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা গেজেট প্রকাশ করেছি এবং তা বিজি প্রেস থেকে সংগ্রহ করা যাবে।”
তিনি আরও জানান, “নির্বাচন কমিশন সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী কাজ করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে করে রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় থাকে এবং বিচার প্রক্রিয়ায় কোনো প্রকার বাধা না আসে।”
জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া
সরকারের এই পদক্ষেপে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে সময়োপযোগী এবং প্রয়োজনীয় হিসেবে দেখছেন।দুর্নীতি, রাজনৈতিক সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত একটি বড় রাজনৈতিক দলের ওপর এমন কঠোর সিদ্ধান্তকে তারা স্বাগত জানিয়েছেন।
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাধারণ মানুষ সরকারের এই পদক্ষেপকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছেন। অনেকেই মনে করছেন, দীর্ঘদিন ধরে দায়মুক্তির সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক সহিংসতায় জর্জরিত বাংলাদেশে এই পদক্ষেপ একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। তারা আশা করছেন, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সরকার আরও কঠোর ও নিরপেক্ষ অবস্থান নেবে।