দুর্নীতির তথ্য জানতে চাওয়ায় শাস্তির মুখে কালের কণ্ঠের সাংবাদিক

- Update Time : ০৬:০৩:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
- / ৮৫ Time View

সাতক্ষীরার তালা উপজেলা থেকে কালের কণ্ঠের প্রতিনিধি রোকনুজ্জামান টিপুকে ১০ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এই ঘটনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ)। সংগঠনের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর অভিযোগ করেছেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ রায় তথ্য অধিকার আইনের চরম লঙ্ঘন, যা দুর্নীতি রক্ষার প্রয়াস বলে বিবেচিত হতে পারে।
ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার দুপুরে, যখন তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মো. রাসেল আদালতের এই আদেশ দেন। জানা গেছে, তালা উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের ৯ কোটি টাকার নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তথ্য সংগ্রহে যান সাংবাদিক টিপু। তথ্য চাওয়ায় প্রকৌশল বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী এম এম মামুন আলম উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়, যা পরে সংঘর্ষে রূপ নেয়।
এরপর ঘটনাটি জানানো হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে সাংবাদিক টিপুকে ‘হাতাহাতির’ দায়ে সাজা দেন। তবে বিএমএসএফ এই ঘটনাকে সাজানো নাটক বলে উল্লেখ করেছে। সংগঠনটি দাবি করেছে, ঘটনাস্থলে উপস্থিত ব্যক্তিদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ, কারণ তারা সবাই প্রকল্প সংশ্লিষ্ট পক্ষের লোক ছিলেন।
সাংবাদিক রোকনুজ্জামান টিপুর ভাষ্যে, “নির্মাণকাজে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে আমাকে ‘তুই জানার কে’ বলে অপমান করা হয় এবং ছাতা দিয়ে মারধর করা হয়।” অন্যদিকে উপজেলা প্রকৌশলী রথীন্দ্র নাথ হালদার জানান, ঘটনার সময় তিনি অফিসে ছিলেন না এবং পরে শুনেছেন তাঁর সহকর্মীকে আক্রমণ করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো. রাসেল জানান, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিকদের সাক্ষ্য অনুযায়ী সাংবাদিককে ১৭৬ ধারায় ১০ দিনের সাজা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় তালা প্রেস ক্লাবসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং সাংবাদিক সমাজ থেকে ঘটনার তীব্র নিন্দা এসেছে। তালা উপজেলা বিএমএসএফ শাখা আজ বুধবার মানববন্ধনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তালা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এম এম হাকিম বলেন, “দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ করা একজন সাংবাদিকের দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শাস্তি পাওয়াটা অনভিপ্রেত এবং অগ্রহণযোগ্য।” সাধারণ সম্পাদক জোয়ার্দ্দার ফারুক হোসেনও একইভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তারা দাবি করেছেন, প্রকৃতপক্ষে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাতেই রোকনুজ্জামান টিপুকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, যা সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।
Please Share This Post in Your Social Media

দুর্নীতির তথ্য জানতে চাওয়ায় শাস্তির মুখে কালের কণ্ঠের সাংবাদিক


সাতক্ষীরার তালা উপজেলা থেকে কালের কণ্ঠের প্রতিনিধি রোকনুজ্জামান টিপুকে ১০ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এই ঘটনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ)। সংগঠনের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর অভিযোগ করেছেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ রায় তথ্য অধিকার আইনের চরম লঙ্ঘন, যা দুর্নীতি রক্ষার প্রয়াস বলে বিবেচিত হতে পারে।
ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার দুপুরে, যখন তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মো. রাসেল আদালতের এই আদেশ দেন। জানা গেছে, তালা উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের ৯ কোটি টাকার নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তথ্য সংগ্রহে যান সাংবাদিক টিপু। তথ্য চাওয়ায় প্রকৌশল বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী এম এম মামুন আলম উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়, যা পরে সংঘর্ষে রূপ নেয়।
এরপর ঘটনাটি জানানো হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে সাংবাদিক টিপুকে ‘হাতাহাতির’ দায়ে সাজা দেন। তবে বিএমএসএফ এই ঘটনাকে সাজানো নাটক বলে উল্লেখ করেছে। সংগঠনটি দাবি করেছে, ঘটনাস্থলে উপস্থিত ব্যক্তিদের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ, কারণ তারা সবাই প্রকল্প সংশ্লিষ্ট পক্ষের লোক ছিলেন।
সাংবাদিক রোকনুজ্জামান টিপুর ভাষ্যে, “নির্মাণকাজে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে আমাকে ‘তুই জানার কে’ বলে অপমান করা হয় এবং ছাতা দিয়ে মারধর করা হয়।” অন্যদিকে উপজেলা প্রকৌশলী রথীন্দ্র নাথ হালদার জানান, ঘটনার সময় তিনি অফিসে ছিলেন না এবং পরে শুনেছেন তাঁর সহকর্মীকে আক্রমণ করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো. রাসেল জানান, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিকদের সাক্ষ্য অনুযায়ী সাংবাদিককে ১৭৬ ধারায় ১০ দিনের সাজা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় তালা প্রেস ক্লাবসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং সাংবাদিক সমাজ থেকে ঘটনার তীব্র নিন্দা এসেছে। তালা উপজেলা বিএমএসএফ শাখা আজ বুধবার মানববন্ধনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তালা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এম এম হাকিম বলেন, “দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ করা একজন সাংবাদিকের দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শাস্তি পাওয়াটা অনভিপ্রেত এবং অগ্রহণযোগ্য।” সাধারণ সম্পাদক জোয়ার্দ্দার ফারুক হোসেনও একইভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তারা দাবি করেছেন, প্রকৃতপক্ষে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাতেই রোকনুজ্জামান টিপুকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, যা সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।