জামায়াতের দেশব্যাপী বিক্ষোভ-সমাবেশ আজ

- Update Time : ১১:২৪:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ৭৮ Time View
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে আজ মঙ্গলবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের ডাক দিয়েছে দলটি। সংগঠনের পক্ষ থেকে নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের জনগণকে এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল, সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে মিয়া গোলাম পরওয়ার জানান, আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগরীসহ দেশের সব মহানগরী এবং জেলা পর্যায়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। বিশেষ করে বিকেল ৪টায় পল্টন মোড়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশ ও মিছিলের নেতৃত্ব দেবেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।
কারাবন্দি এটিএম আজহারুল ইসলামের পরিস্থিতি:
বিবৃতিতে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম ১৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাগারে বন্দি। তাকে একাধিকবার রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। দীর্ঘদিন কারাবন্দি থাকার ফলে তিনি কয়েকবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন, তবে যথাযথ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার তার চিকিৎসার দাবি জানানো হলেও প্রশাসন সে বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
তিনি আরও বলেন, “দেশবাসী আশা করেছিল যে, চরম জুলুম-নির্যাতনের শিকার এ টি এম আজহারুল ইসলাম স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশে মুক্তিলাভ করবেন। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের ছয় মাস ৯ দিন পার হয়ে গেলেও তাকে মুক্ত করা হয়নি।”
বিচারিক প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন:
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলের বিচারিক কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধ এবং অনেকাংশে প্রত্যাখ্যাত। স্বৈরাচারী সরকারের আমলে আটক এ টি এম আজহারুল ইসলামকে কারাগারে আটকে রাখা সম্পূর্ণ অন্যায় এবং তার ওপর চরম জুলুমের শামিল। মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইতোমধ্যে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও বিষয়টি তুলে ধরার আহ্বান জানানো হয়েছে।
জামায়াত নেতারা অভিযোগ করেছেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে এ টি এম আজহারুল ইসলামকে আটক রাখা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ।
সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি:
আজকের কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহসহ দেশের প্রতিটি বিভাগ ও জেলা শহরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। স্থানীয় জামায়াত নেতারা ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন এবং কর্মসূচিকে সফল করার লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ব্যাপক জনসমাগম হবে এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করা হবে, যাতে অবিলম্বে এ টি এম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দেওয়া হয়।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি:
বিক্ষোভ-সমাবেশ কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং সম্ভাব্য অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেকোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, জামায়াত নেতারা আশ্বস্ত করেছেন যে, তাদের কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে এবং তারা কোনো ধরনের সহিংসতায় লিপ্ত হবে না।
সকলের প্রতি আহ্বান:
এই পরিস্থিতিতে এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল সর্বাত্মকভাবে সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল। তিনি জামায়াতে ইসলামীর সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও দেশবাসীকে এই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
Please Share This Post in Your Social Media

জামায়াতের দেশব্যাপী বিক্ষোভ-সমাবেশ আজ

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে আজ মঙ্গলবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের ডাক দিয়েছে দলটি। সংগঠনের পক্ষ থেকে নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের জনগণকে এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল, সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে মিয়া গোলাম পরওয়ার জানান, আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগরীসহ দেশের সব মহানগরী এবং জেলা পর্যায়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। বিশেষ করে বিকেল ৪টায় পল্টন মোড়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশ ও মিছিলের নেতৃত্ব দেবেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।
কারাবন্দি এটিএম আজহারুল ইসলামের পরিস্থিতি:
বিবৃতিতে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম ১৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাগারে বন্দি। তাকে একাধিকবার রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। দীর্ঘদিন কারাবন্দি থাকার ফলে তিনি কয়েকবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন, তবে যথাযথ চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার তার চিকিৎসার দাবি জানানো হলেও প্রশাসন সে বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
তিনি আরও বলেন, “দেশবাসী আশা করেছিল যে, চরম জুলুম-নির্যাতনের শিকার এ টি এম আজহারুল ইসলাম স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশে মুক্তিলাভ করবেন। কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের ছয় মাস ৯ দিন পার হয়ে গেলেও তাকে মুক্ত করা হয়নি।”
বিচারিক প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন:
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলের বিচারিক কার্যক্রম বিশ্বব্যাপী বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধ এবং অনেকাংশে প্রত্যাখ্যাত। স্বৈরাচারী সরকারের আমলে আটক এ টি এম আজহারুল ইসলামকে কারাগারে আটকে রাখা সম্পূর্ণ অন্যায় এবং তার ওপর চরম জুলুমের শামিল। মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইতোমধ্যে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও বিষয়টি তুলে ধরার আহ্বান জানানো হয়েছে।
জামায়াত নেতারা অভিযোগ করেছেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে এ টি এম আজহারুল ইসলামকে আটক রাখা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ।
সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি:
আজকের কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহসহ দেশের প্রতিটি বিভাগ ও জেলা শহরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। স্থানীয় জামায়াত নেতারা ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন এবং কর্মসূচিকে সফল করার লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ব্যাপক জনসমাগম হবে এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করা হবে, যাতে অবিলম্বে এ টি এম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দেওয়া হয়।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি:
বিক্ষোভ-সমাবেশ কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং সম্ভাব্য অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যেকোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, জামায়াত নেতারা আশ্বস্ত করেছেন যে, তাদের কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে এবং তারা কোনো ধরনের সহিংসতায় লিপ্ত হবে না।
সকলের প্রতি আহ্বান:
এই পরিস্থিতিতে এ টি এম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল সর্বাত্মকভাবে সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল। তিনি জামায়াতে ইসলামীর সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও দেশবাসীকে এই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।