“সংস্কার ছাড়া বাংলাদেশে সুষ্ঠু, অবাধ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়: জামায়াতে ইসলামী”

- Update Time : ০২:৩৯:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ৭২ Time View
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তার নির্বাচনী অবস্থান পরিষ্কার করে বলছে, নির্বাচন সংক্রান্ত জরুরি সংস্কারগুলো সম্পন্ন না হলে দেশে সুষ্ঠু, অবাধ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। দলটির নেতারা জানিয়েছেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সংশোধন ও সংস্কার ছাড়া, কোনো নির্বাচন করা হলে তা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটাতে পারবে না এবং দেশের জনগণের আস্থা অর্জনেও ব্যর্থ হবে। জামায়াতে ইসলামী মনে করে, রাজনৈতিক দল এবং জনগণের কাছে নির্বাচনী প্রক্রিয়া গ্রহণযোগ্য করতে হলে, তা নিরপেক্ষ ও স্বাধীন হতে হবে, যা শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমেই সম্ভব।
আজ বৃহস্পতিবার, জামায়াতে ইসলামী সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব মন্তব্য করেছেন। তিনি জানান, “নো ইলেকশন উইদাউট রিফর্মস”, অর্থাৎ কোনো ধরনের সংস্কার ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা স্বচ্ছ এবং গণমুখী হবে না।
গোলাম পারওয়ার আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন কমিশনসহ নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান এবং অর্গানগুলোর সংস্কারের দাবিতে এককথায় দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। তিনি নিশ্চিত করেছেন, নির্বাচনকে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ করার জন্য, সংস্থাগুলোর কাঠামো এবং কার্যক্রমের পুনর্গঠন করা জরুরি। তিনি আরো বলছেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া সুষ্ঠু করতে যদি আরও সময় লাগে, তাহলে সেই সময় দেয়া উচিৎ এবং যথাযথ সময় কাটিয়ে নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে।
গোলাম পারওয়ার জানান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে এবং প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। দলটি নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক করার ব্যাপারে আলোচনা করেছে এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে তারা তাদের দলীয় প্রার্থীদের প্রতি পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেছে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যেসব কার্যকরী পদক্ষেপ প্রয়োজন, সে বিষয়ে মতবিনিময় করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী ২৩ দফা দাবি জানিয়ে বলেছে, সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না, যা দেশের জনগণের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা আনতে সক্ষম হবে। গোলাম পারওয়ার মনে করেন, বাংলাদেশে জনগণের অধিকারের সুরক্ষা এবং সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠিক রাখার জন্য সংস্কার অপরিহার্য।
গোলাম পারওয়ার বলেন, “সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন কখনোই অবাধ ও সুষ্ঠু হতে পারে না। জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত, তবে সেটা সংস্কারিত নির্বাচনী প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই হবে।” তিনি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনী পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দেন। জামায়াত মনে করে, এটি বাংলাদেশের সংসদীয় ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করবে এবং নির্বাচনে সকল জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে।
একইসাথে, জামায়াতে ইসলামী প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বলেন, “প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পাবে, এটি হতে হবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার অন্যতম অংশ।” গোলাম পারওয়ার বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং তাদের মতামতও গণনাতে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
তিনি আদালতে জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধন মামলার বিষয়ে উল্লেখ করে আশা প্রকাশ করেন যে, তারা সেখানে ন্যায়বিচার পাবেন এবং দলের নিবন্ধন বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত সঠিকভাবে প্রদান হবে। এছাড়া, জামায়াত বিশ্বাস করে, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন সংক্রান্ত আইনগুলোর কঠোরতা শিথিল করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, “সবার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করার অধিকার রয়েছে, সেই অধিকার ক্ষুণ্ণ করা উচিত নয়।”
জামায়াতে ইসলামী আরও দাবি করেছে যে, বাংলাদেশের জনগণের চাহিদা হলো, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজন আগে করা হোক, যা দেশের মানুষের প্রকৃত আকাঙ্ক্ষা এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতির অঙ্গীকার।
সংক্ষেপে, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশে একটি যুগান্তকারী সংস্কারের পক্ষে দাঁড়িয়ে রয়েছে, যা কেবল নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত নয়, বরং দেশের সার্বিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও মজবুত ও কার্যকর করবে। নির্বাচনী সংস্কার ছাড়া জামায়াতে ইসলামী বিশ্বাস করে না যে একটি সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব, এবং এটি দেশের ভবিষ্যতের জন্য একান্ত প্রয়োজনীয়।
Please Share This Post in Your Social Media

“সংস্কার ছাড়া বাংলাদেশে সুষ্ঠু, অবাধ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়: জামায়াতে ইসলামী”

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তার নির্বাচনী অবস্থান পরিষ্কার করে বলছে, নির্বাচন সংক্রান্ত জরুরি সংস্কারগুলো সম্পন্ন না হলে দেশে সুষ্ঠু, অবাধ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। দলটির নেতারা জানিয়েছেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সংশোধন ও সংস্কার ছাড়া, কোনো নির্বাচন করা হলে তা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটাতে পারবে না এবং দেশের জনগণের আস্থা অর্জনেও ব্যর্থ হবে। জামায়াতে ইসলামী মনে করে, রাজনৈতিক দল এবং জনগণের কাছে নির্বাচনী প্রক্রিয়া গ্রহণযোগ্য করতে হলে, তা নিরপেক্ষ ও স্বাধীন হতে হবে, যা শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমেই সম্ভব।
আজ বৃহস্পতিবার, জামায়াতে ইসলামী সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার সঙ্গে বৈঠক শেষে এসব মন্তব্য করেছেন। তিনি জানান, “নো ইলেকশন উইদাউট রিফর্মস”, অর্থাৎ কোনো ধরনের সংস্কার ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা স্বচ্ছ এবং গণমুখী হবে না।
গোলাম পারওয়ার আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী নির্বাচন কমিশনসহ নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান এবং অর্গানগুলোর সংস্কারের দাবিতে এককথায় দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। তিনি নিশ্চিত করেছেন, নির্বাচনকে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ করার জন্য, সংস্থাগুলোর কাঠামো এবং কার্যক্রমের পুনর্গঠন করা জরুরি। তিনি আরো বলছেন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া সুষ্ঠু করতে যদি আরও সময় লাগে, তাহলে সেই সময় দেয়া উচিৎ এবং যথাযথ সময় কাটিয়ে নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে।
গোলাম পারওয়ার জানান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে এবং প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে। দলটি নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক করার ব্যাপারে আলোচনা করেছে এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে তারা তাদের দলীয় প্রার্থীদের প্রতি পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেছে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যেসব কার্যকরী পদক্ষেপ প্রয়োজন, সে বিষয়ে মতবিনিময় করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী ২৩ দফা দাবি জানিয়ে বলেছে, সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না, যা দেশের জনগণের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা আনতে সক্ষম হবে। গোলাম পারওয়ার মনে করেন, বাংলাদেশে জনগণের অধিকারের সুরক্ষা এবং সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠিক রাখার জন্য সংস্কার অপরিহার্য।
গোলাম পারওয়ার বলেন, “সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন কখনোই অবাধ ও সুষ্ঠু হতে পারে না। জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত, তবে সেটা সংস্কারিত নির্বাচনী প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই হবে।” তিনি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনী পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দেন। জামায়াত মনে করে, এটি বাংলাদেশের সংসদীয় ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করবে এবং নির্বাচনে সকল জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে।
একইসাথে, জামায়াতে ইসলামী প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বলেন, “প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পাবে, এটি হতে হবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার অন্যতম অংশ।” গোলাম পারওয়ার বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং তাদের মতামতও গণনাতে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
তিনি আদালতে জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধন মামলার বিষয়ে উল্লেখ করে আশা প্রকাশ করেন যে, তারা সেখানে ন্যায়বিচার পাবেন এবং দলের নিবন্ধন বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত সঠিকভাবে প্রদান হবে। এছাড়া, জামায়াত বিশ্বাস করে, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচন সংক্রান্ত আইনগুলোর কঠোরতা শিথিল করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, “সবার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করার অধিকার রয়েছে, সেই অধিকার ক্ষুণ্ণ করা উচিত নয়।”
জামায়াতে ইসলামী আরও দাবি করেছে যে, বাংলাদেশের জনগণের চাহিদা হলো, স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজন আগে করা হোক, যা দেশের মানুষের প্রকৃত আকাঙ্ক্ষা এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতির অঙ্গীকার।
সংক্ষেপে, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশে একটি যুগান্তকারী সংস্কারের পক্ষে দাঁড়িয়ে রয়েছে, যা কেবল নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত নয়, বরং দেশের সার্বিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও মজবুত ও কার্যকর করবে। নির্বাচনী সংস্কার ছাড়া জামায়াতে ইসলামী বিশ্বাস করে না যে একটি সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব, এবং এটি দেশের ভবিষ্যতের জন্য একান্ত প্রয়োজনীয়।