ধানমন্ডি ৩২ নিয়ে এবার সাংবাদিক ইলিয়াসের স্ট্যাটাস

- Update Time : ১১:২৭:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ১০৫ Time View
গত কয়েকদিনে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর পর প্রবাসী সাংবাদিক ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ইলিয়াস হোসাইনের ফেসবুক স্ট্যাটাস ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ৫ ফেব্রুয়ারি, বুধবার, তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন, যেখানে তিনি বলেন, “ভাইয়েরা আমার, ৩২ নম্বরে একটা ইটও যেন অবশিষ্ট না থাকে।” এর মাধ্যমে তিনি দেশে চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনা ও আন্দোলনের প্রতি নিজের অবস্থান ব্যক্ত করেন। তার এই স্ট্যাটাসের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন আলোচনা শুরু হয়েছে, যা দেশব্যাপী রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
ধানমন্ডি ৩২–এ কী ঘটেছিল?
৫ ফেব্রুয়ারি রাতে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দলের নেতাকর্মীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে প্রতিবাদের জন্য জড়ো হতে শুরু করেন। এই প্রতিবাদের কেন্দ্রবিন্দু ছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক অনলাইন বক্তব্য। আগেই জানানো হয়েছিল যে, শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল মাধ্যমে ছাত্রসমাজের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেবেন এবং সেই বক্তব্যকে কেন্দ্র করেই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।
স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, রাত ৮টার দিকে এই ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির দিকে অগ্রসর হতে থাকে। তারা জানিয়ে দিয়েছিল যে, তারা যদি শেখ হাসিনার বক্তব্য শোনার জন্য ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে কোনো ধরনের ক্ষতিকর প্রতিবাদী কার্যক্রম না করেও চলে যান, তবে তারা এতে সমর্থন জানাবে না। কিন্তু মিছিলে যুক্ত হওয়া কিছু আন্দোলনকারী একপর্যায়ে সেখানে পৌঁছানোর পর বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। সেখানে একাধিক ভাঙচুর ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর অভিযোগ উঠে।
আন্দোলনের ঘোষণা ও উত্তেজনা
এর আগে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ঘোষণা দিয়েছিলেন, “শেখ হাসিনা যদি কোনো বক্তব্য দেন, তবে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরকে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।” আন্দোলনের নেতাদের এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় যে, রাজনৈতিক পরিবেশে বিশেষত ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ক্ষোভ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তারা সরাসরি প্রতিবাদে নেমে এসেছে। ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে এ আন্দোলনটি নতুন মাত্রা পায় যখন তারা সন্ধ্যার পরই ধানমন্ডি ৩২ এর এলাকায় জড়ো হতে শুরু করে এবং রাত ৮টার দিকে স্লোগান দিয়ে বাড়ির দিকে অগ্রসর হতে থাকে।
ইলিয়াস হোসাইনের স্ট্যাটাস
এই ঘটনার পর সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন তার ফেসবুক পেজে একটি উত্তেজনাপূর্ণ স্ট্যাটাস দেন। তিনি লিখেন, “ভাইয়েরা আমার, ৩২ নম্বরে একটা ইটও যেন অবশিষ্ট না থাকে।” তার এই মন্তব্যে তিনি সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও আন্দোলনের প্রতি একধরনের সমর্থন জানালেন এবং জনগণের বিপ্লবী মনোভাবের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। তার স্ট্যাটাসে যেমন ছিল প্রতিবাদের স্পষ্ট সমর্থন, তেমনি ছিল সরকার ও ক্ষমতার বিরুদ্ধে আন্দোলনকে উস্কে দেয়ার কথা। তবে, তার বক্তব্যে এই বিষয়টি স্পষ্ট যে, তিনি দেশে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতি এক ধরনের তীব্র অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
ছাত্র–জনতার প্রতিবাদ এবং স্লোগান
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, ছাত্র-জনতা ধানমন্ডি ৩২ এলাকায় ব্যাপক স্লোগান দিতে থাকে। তারা “ফ্যাসিবাদবিরোধী” এবং “শেখ হাসিনার বিচার চাই” স্লোগান দিয়ে সরকারবিরোধী মনোভাব ব্যক্ত করে। তাদের দাবির মধ্যে ছিল শেখ হাসিনার বক্তব্য বন্ধ করা এবং সরকারের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো।
এই পরিস্থিতি ধানমন্ডি ৩২ এলাকার জনসমাগম এবং উত্তেজনা বৃদ্ধি করে এবং পরবর্তী সময়ে ছাত্র-জনতা বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালাতে শুরু করে। জানা গেছে, তারা জানালার কাচ ভেঙে ফেলে, দরজা খুলে ফেলে এবং ভিতরের মূল্যবান সম্পত্তি নষ্ট করে। পুরো এলাকা অস্থির হয়ে ওঠে এবং আন্দোলনের সাথে জড়িত ছাত্ররা ক্রমাগত বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ চালিয়ে যায়।
রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যৎ
এই ঘটনার পর ইলিয়াস হোসাইনের স্ট্যাটাস ও ছাত্র আন্দোলনের কার্যক্রম পুরোপুরি রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। রাজনীতি, অর্থনীতি, এবং দেশের সাধারণ পরিস্থিতি যখন এইভাবে উত্তাল হয়ে ওঠে, তখন সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভাজন এবং বিশৃঙ্খলা আরও প্রকট হতে পারে। এই মুহূর্তে দেশে চলমান বিক্ষোভ ও আন্দোলন হয়তো একমাত্র উপায় হয়ে উঠতে পারে জনগণের ক্ষোভ ও দাবি জানানোর।
পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবেলা করা হবে, তা নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে, কিন্তু এই ধরনের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি জাতীয় নিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এখন, দেশের সর্বস্তরের রাজনৈতিক নেতৃত্বের উচিত দায়িত্বশীল মনোভাব নিয়ে পরিস্থিতি সমাধানে এগিয়ে আসা।
Please Share This Post in Your Social Media

ধানমন্ডি ৩২ নিয়ে এবার সাংবাদিক ইলিয়াসের স্ট্যাটাস

গত কয়েকদিনে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর পর প্রবাসী সাংবাদিক ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ইলিয়াস হোসাইনের ফেসবুক স্ট্যাটাস ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ৫ ফেব্রুয়ারি, বুধবার, তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন, যেখানে তিনি বলেন, “ভাইয়েরা আমার, ৩২ নম্বরে একটা ইটও যেন অবশিষ্ট না থাকে।” এর মাধ্যমে তিনি দেশে চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনা ও আন্দোলনের প্রতি নিজের অবস্থান ব্যক্ত করেন। তার এই স্ট্যাটাসের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন আলোচনা শুরু হয়েছে, যা দেশব্যাপী রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
ধানমন্ডি ৩২–এ কী ঘটেছিল?
৫ ফেব্রুয়ারি রাতে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দলের নেতাকর্মীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে প্রতিবাদের জন্য জড়ো হতে শুরু করেন। এই প্রতিবাদের কেন্দ্রবিন্দু ছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক অনলাইন বক্তব্য। আগেই জানানো হয়েছিল যে, শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল মাধ্যমে ছাত্রসমাজের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেবেন এবং সেই বক্তব্যকে কেন্দ্র করেই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।
স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, রাত ৮টার দিকে এই ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির দিকে অগ্রসর হতে থাকে। তারা জানিয়ে দিয়েছিল যে, তারা যদি শেখ হাসিনার বক্তব্য শোনার জন্য ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে কোনো ধরনের ক্ষতিকর প্রতিবাদী কার্যক্রম না করেও চলে যান, তবে তারা এতে সমর্থন জানাবে না। কিন্তু মিছিলে যুক্ত হওয়া কিছু আন্দোলনকারী একপর্যায়ে সেখানে পৌঁছানোর পর বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। সেখানে একাধিক ভাঙচুর ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর অভিযোগ উঠে।
আন্দোলনের ঘোষণা ও উত্তেজনা
এর আগে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ঘোষণা দিয়েছিলেন, “শেখ হাসিনা যদি কোনো বক্তব্য দেন, তবে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরকে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।” আন্দোলনের নেতাদের এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় যে, রাজনৈতিক পরিবেশে বিশেষত ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ক্ষোভ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তারা সরাসরি প্রতিবাদে নেমে এসেছে। ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে এ আন্দোলনটি নতুন মাত্রা পায় যখন তারা সন্ধ্যার পরই ধানমন্ডি ৩২ এর এলাকায় জড়ো হতে শুরু করে এবং রাত ৮টার দিকে স্লোগান দিয়ে বাড়ির দিকে অগ্রসর হতে থাকে।
ইলিয়াস হোসাইনের স্ট্যাটাস
এই ঘটনার পর সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন তার ফেসবুক পেজে একটি উত্তেজনাপূর্ণ স্ট্যাটাস দেন। তিনি লিখেন, “ভাইয়েরা আমার, ৩২ নম্বরে একটা ইটও যেন অবশিষ্ট না থাকে।” তার এই মন্তব্যে তিনি সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও আন্দোলনের প্রতি একধরনের সমর্থন জানালেন এবং জনগণের বিপ্লবী মনোভাবের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। তার স্ট্যাটাসে যেমন ছিল প্রতিবাদের স্পষ্ট সমর্থন, তেমনি ছিল সরকার ও ক্ষমতার বিরুদ্ধে আন্দোলনকে উস্কে দেয়ার কথা। তবে, তার বক্তব্যে এই বিষয়টি স্পষ্ট যে, তিনি দেশে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতি এক ধরনের তীব্র অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
ছাত্র–জনতার প্রতিবাদ এবং স্লোগান
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, ছাত্র-জনতা ধানমন্ডি ৩২ এলাকায় ব্যাপক স্লোগান দিতে থাকে। তারা “ফ্যাসিবাদবিরোধী” এবং “শেখ হাসিনার বিচার চাই” স্লোগান দিয়ে সরকারবিরোধী মনোভাব ব্যক্ত করে। তাদের দাবির মধ্যে ছিল শেখ হাসিনার বক্তব্য বন্ধ করা এবং সরকারের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো।
এই পরিস্থিতি ধানমন্ডি ৩২ এলাকার জনসমাগম এবং উত্তেজনা বৃদ্ধি করে এবং পরবর্তী সময়ে ছাত্র-জনতা বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালাতে শুরু করে। জানা গেছে, তারা জানালার কাচ ভেঙে ফেলে, দরজা খুলে ফেলে এবং ভিতরের মূল্যবান সম্পত্তি নষ্ট করে। পুরো এলাকা অস্থির হয়ে ওঠে এবং আন্দোলনের সাথে জড়িত ছাত্ররা ক্রমাগত বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ চালিয়ে যায়।
রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যৎ
এই ঘটনার পর ইলিয়াস হোসাইনের স্ট্যাটাস ও ছাত্র আন্দোলনের কার্যক্রম পুরোপুরি রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। রাজনীতি, অর্থনীতি, এবং দেশের সাধারণ পরিস্থিতি যখন এইভাবে উত্তাল হয়ে ওঠে, তখন সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভাজন এবং বিশৃঙ্খলা আরও প্রকট হতে পারে। এই মুহূর্তে দেশে চলমান বিক্ষোভ ও আন্দোলন হয়তো একমাত্র উপায় হয়ে উঠতে পারে জনগণের ক্ষোভ ও দাবি জানানোর।
পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবেলা করা হবে, তা নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে, কিন্তু এই ধরনের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি জাতীয় নিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এখন, দেশের সর্বস্তরের রাজনৈতিক নেতৃত্বের উচিত দায়িত্বশীল মনোভাব নিয়ে পরিস্থিতি সমাধানে এগিয়ে আসা।