জুলাই গণহত্যার বিচার নির্বাচনের আগেই সম্ভব: আইন উপদেষ্টা

- Update Time : ০৪:৫৯:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৭৭ Time View

জুলাই গণহত্যার বিচারের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে উল্লেখ করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, “আশা করছি, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই ট্রায়াল কোর্ট তথা বিচারিক আদালতে এই বিচারকাজ শেষ করা সম্ভব হবে।“
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। গণহত্যার বিচারের সর্বশেষ অগ্রগতি এবং সরকারের পরিকল্পনা নিয়ে এদিন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।
বিচারের প্রক্রিয়া ও অগ্রগতি
অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানান, জুলাই গণহত্যার বিচার অত্যন্ত সাবলীলভাবে এগিয়ে চলছে। তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, আগামী মার্চ থেকে আন্তর্জাতিক বিচার ট্রাইব্যুনালে এই মামলার শুনানি শুরু হবে। বিচার প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের গাফিলতি নেই।“
সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে এই গণহত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে যে নির্মম ও অমানবিক গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে, তার বিচারকাজ অবশ্যই শেষ করা হবে। এটি আমাদের সরকারের নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব।“
অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য
অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়ন নিয়েও কথা বলেন আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার কমিশনগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতকে গুরুত্ব দেবে। এটি আমাদের জাতীয় ঐক্যের প্রতিফলন হিসেবে কাজ করবে।“
এ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, “জাতীয় স্বার্থে অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে ন্যায়বিচারের পথে এগিয়ে যাওয়া।“ তিনি আরও জানান, বিচার প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ রাখতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপস্থিত উপদেষ্টাদের বক্তব্য
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “বিচার
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, “দেশের জনগণ এই বিচারের দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে, কোনো অপরাধী যেন বিচারের বাইরে না থাকে।“
বিচার প্রক্রিয়ায় সরকারের অঙ্গীকার
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জুলাই গণহত্যার বিচারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করা হবে। অপরাধীদের শনাক্ত করতে এবং বিচার প্রক্রিয়া আরও দ্রুত সম্পন্ন করতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাও নেওয়া হতে পারে।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, “আমাদের সরকারের প্রতিশ্রুতি, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, তাদের বিচার অবশ্যই হবে।“
তিনি আরও বলেন, “গণহত্যার বিচার শুধু আইনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এটি আমাদের জাতীয় স্মৃতির অংশ। আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে একটি ন্যায়বিচারপ্রাপ্ত ও মানবিক বাংলাদেশ উপহার দিতে চাই।“
জনগণের প্রত্যাশা
জুলাই গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়াকে ঘিরে জনগণের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো আশা করছে, দ্রুততম সময়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। সরকারের এই অঙ্গীকারকে তারা ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে।
অনেকেই মনে করেন, এই বিচারের মাধ্যমে শুধু অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া হবে না; এটি দেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা বাড়াবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিচারের সঠিক ও স্বচ্ছ বাস্তবায়ন বাংলাদেশের আইনের শাসনকে আরও শক্তিশালী করবে এবং দেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুনভাবে উপস্থাপন করবে।
জুলাই গণহত্যার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে অন্তর্বর্তী সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা জনগণের মধ্যে আশার আলো জাগিয়েছে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে যে, সরকার বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিচার প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হলে এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে। এটি কেবল বিচার নয়, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
Please Share This Post in Your Social Media

জুলাই গণহত্যার বিচার নির্বাচনের আগেই সম্ভব: আইন উপদেষ্টা


জুলাই গণহত্যার বিচারের কার্যক্রম অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার হিসেবে উল্লেখ করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, “আশা করছি, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই ট্রায়াল কোর্ট তথা বিচারিক আদালতে এই বিচারকাজ শেষ করা সম্ভব হবে।“
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। গণহত্যার বিচারের সর্বশেষ অগ্রগতি এবং সরকারের পরিকল্পনা নিয়ে এদিন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।
বিচারের প্রক্রিয়া ও অগ্রগতি
অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানান, জুলাই গণহত্যার বিচার অত্যন্ত সাবলীলভাবে এগিয়ে চলছে। তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, আগামী মার্চ থেকে আন্তর্জাতিক বিচার ট্রাইব্যুনালে এই মামলার শুনানি শুরু হবে। বিচার প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের গাফিলতি নেই।“
সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে এই গণহত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে যে নির্মম ও অমানবিক গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে, তার বিচারকাজ অবশ্যই শেষ করা হবে। এটি আমাদের সরকারের নৈতিক ও আইনগত দায়িত্ব।“
অন্তর্বর্তী সরকারের লক্ষ্য
অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়ন নিয়েও কথা বলেন আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার কমিশনগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতকে গুরুত্ব দেবে। এটি আমাদের জাতীয় ঐক্যের প্রতিফলন হিসেবে কাজ করবে।“
এ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, “জাতীয় স্বার্থে অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে ন্যায়বিচারের পথে এগিয়ে যাওয়া।“ তিনি আরও জানান, বিচার প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ রাখতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপস্থিত উপদেষ্টাদের বক্তব্য
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “বিচার
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, “দেশের জনগণ এই বিচারের দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে, কোনো অপরাধী যেন বিচারের বাইরে না থাকে।“
বিচার প্রক্রিয়ায় সরকারের অঙ্গীকার
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জুলাই গণহত্যার বিচারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করা হবে। অপরাধীদের শনাক্ত করতে এবং বিচার প্রক্রিয়া আরও দ্রুত সম্পন্ন করতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাও নেওয়া হতে পারে।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, “আমাদের সরকারের প্রতিশ্রুতি, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, তাদের বিচার অবশ্যই হবে।“
তিনি আরও বলেন, “গণহত্যার বিচার শুধু আইনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এটি আমাদের জাতীয় স্মৃতির অংশ। আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে একটি ন্যায়বিচারপ্রাপ্ত ও মানবিক বাংলাদেশ উপহার দিতে চাই।“
জনগণের প্রত্যাশা
জুলাই গণহত্যার বিচার প্রক্রিয়াকে ঘিরে জনগণের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো আশা করছে, দ্রুততম সময়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। সরকারের এই অঙ্গীকারকে তারা ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে।
অনেকেই মনে করেন, এই বিচারের মাধ্যমে শুধু অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া হবে না; এটি দেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা বাড়াবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিচারের সঠিক ও স্বচ্ছ বাস্তবায়ন বাংলাদেশের আইনের শাসনকে আরও শক্তিশালী করবে এবং দেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুনভাবে উপস্থাপন করবে।
জুলাই গণহত্যার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে অন্তর্বর্তী সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা জনগণের মধ্যে আশার আলো জাগিয়েছে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে যে, সরকার বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিচার প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হলে এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হবে। এটি কেবল বিচার নয়, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।