ভারতে পালানোর সময় ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ নেত্রী সুস্মিতা গ্রেপ্তার

- Update Time : ০৬:৫৩:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৮১ Time View
যশোর, বাংলাদেশ —
ভারতে পালানোর চেষ্টাকালে যশোরের বেনাপোল ইমিগ্রেশন ভবন থেকে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুস্মিতা পান্ডে ও তার ভাই সত্যজিত পান্ডেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে তাদের আটক করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল ইমিগ্রেশন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমতিয়াজ আহসানুল কাদের ভূঁইয়া।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশজুড়ে হওয়া বিক্ষোভ ও সহিংসতার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় দায়ের করা একাধিক মামলায় তাদের নাম উল্লেখ রয়েছে।
৫ আগস্টের ঘটনার পর থেকে নজরদারিতে ছিলেন সুস্মিতা
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর থেকেই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে।
সুস্মিতা পান্ডে ছিলেন ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী। তার নাম ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে সংঘটিত সহিংস ঘটনার তদন্তে উঠে আসে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ওই সময় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংঘর্ষ ও বিশৃঙ্খলা তৈরিতে তার ভূমিকা ছিল।
গ্রেপ্তার এড়াতে পালানোর চেষ্টা
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সুস্মিতা ও তার ভাই সত্যজিত পান্ডে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তাদের কাছে ভুয়া পাসপোর্ট ও ভারতীয় মুদ্রা পাওয়া গেছে। পুলিশ ধারণা করছে, তারা রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন।
ওসি ইমতিয়াজ আহসানুল কাদের ভূঁইয়া বলেন,
“তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং দেশে দায়ের হওয়া মামলার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।“
ইডেন ছাত্রলীগের অন্যান্য নেত্রীদের গ্রেপ্তার
সুস্মিতার গ্রেপ্তারের আগে আরও দুইজন ছাত্রলীগ নেত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
- ১৫ ডিসেম্বর: ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভাকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
- ১৪ ডিসেম্বর: বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ছাত্রলীগ নেত্রী নিশিতা ইকবাল নদীকে।
তাদের বিরুদ্ধেও সহিংসতায় উসকানি দেওয়া এবং দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ফাটল ও বিতর্ক
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে সহিংসতা, চাঁদাবাজি এবং দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ছাত্রলীগের এই নেত্রীরা সরকারের পতনের পর নিজেকে রক্ষা করতে বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গ্রেপ্তারে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
সুস্মিতার গ্রেপ্তারের পর রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে যে, আরও কতজন প্রভাবশালী নেতাকর্মী পালানোর চেষ্টা করছেন এবং তাদের গ্রেপ্তার কতটা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
আসন্ন পরিস্থিতি
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। সুস্মিতাকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
তবে গ্রেপ্তার এড়াতে ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মী গোপনে আত্মগোপন করেছে এবং তাদের কেউ কেউ দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে।
Please Share This Post in Your Social Media

ভারতে পালানোর সময় ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ নেত্রী সুস্মিতা গ্রেপ্তার

যশোর, বাংলাদেশ —
ভারতে পালানোর চেষ্টাকালে যশোরের বেনাপোল ইমিগ্রেশন ভবন থেকে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুস্মিতা পান্ডে ও তার ভাই সত্যজিত পান্ডেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে তাদের আটক করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল ইমিগ্রেশন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমতিয়াজ আহসানুল কাদের ভূঁইয়া।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশজুড়ে হওয়া বিক্ষোভ ও সহিংসতার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় দায়ের করা একাধিক মামলায় তাদের নাম উল্লেখ রয়েছে।
৫ আগস্টের ঘটনার পর থেকে নজরদারিতে ছিলেন সুস্মিতা
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর থেকেই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে।
সুস্মিতা পান্ডে ছিলেন ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী। তার নাম ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে সংঘটিত সহিংস ঘটনার তদন্তে উঠে আসে। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ওই সময় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংঘর্ষ ও বিশৃঙ্খলা তৈরিতে তার ভূমিকা ছিল।
গ্রেপ্তার এড়াতে পালানোর চেষ্টা
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সুস্মিতা ও তার ভাই সত্যজিত পান্ডে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তাদের কাছে ভুয়া পাসপোর্ট ও ভারতীয় মুদ্রা পাওয়া গেছে। পুলিশ ধারণা করছে, তারা রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন।
ওসি ইমতিয়াজ আহসানুল কাদের ভূঁইয়া বলেন,
“তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং দেশে দায়ের হওয়া মামলার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।“
ইডেন ছাত্রলীগের অন্যান্য নেত্রীদের গ্রেপ্তার
সুস্মিতার গ্রেপ্তারের আগে আরও দুইজন ছাত্রলীগ নেত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
- ১৫ ডিসেম্বর: ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভাকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
- ১৪ ডিসেম্বর: বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ছাত্রলীগ নেত্রী নিশিতা ইকবাল নদীকে।
তাদের বিরুদ্ধেও সহিংসতায় উসকানি দেওয়া এবং দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ফাটল ও বিতর্ক
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে সহিংসতা, চাঁদাবাজি এবং দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ছাত্রলীগের এই নেত্রীরা সরকারের পতনের পর নিজেকে রক্ষা করতে বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গ্রেপ্তারে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
সুস্মিতার গ্রেপ্তারের পর রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে যে, আরও কতজন প্রভাবশালী নেতাকর্মী পালানোর চেষ্টা করছেন এবং তাদের গ্রেপ্তার কতটা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
আসন্ন পরিস্থিতি
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। সুস্মিতাকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
তবে গ্রেপ্তার এড়াতে ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মী গোপনে আত্মগোপন করেছে এবং তাদের কেউ কেউ দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে।