ব্যারিস্টার আরমানের স্ত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম আসছে আলোচনায়

- Update Time : ০৫:১৪:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৮৫ Time View
লন্ডন, ৮ জানুয়ারি ২০২৫:
২০১৬ সালে নিখোঁজ জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আরমানের গুম এবং তার স্ত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ নিয়ে নতুন তথ্য সামনে এসেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, টিউলিপ সিদ্দিকের ক্ষমতা ও প্রভাব ব্যবহারের কারণে ব্যারিস্টার আরমানের পরিবারকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছিল।
ব্যারিস্টার আরমানের গুম এবং ফিরে আসা
২০১৬ সালের ৯ আগস্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ব্যারিস্টার আরমানকে তার নিজ বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর দীর্ঘ আট বছর তার কোনো খোঁজ মেলেনি। অবশেষে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর বাড়ি ফেরেন তিনি।
টিউলিপ সিদ্দিক ও চ্যানেল–৪ এর বিতর্ক
২০১৭ সালে ব্রিটিশ গণমাধ্যম চ্যানেল–৪-এর এক সাংবাদিক টিউলিপ সিদ্দিকের কাছে ব্যারিস্টার আরমানের বিষয়ে জানতে চান। টিউলিপ তখন ব্রিটেনের লেবার পার্টির এমপি ছিলেন এবং শেখ হাসিনার ভাগ্নি। সাংবাদিকের প্রশ্নে ক্ষিপ্ত হয়ে টিউলিপ তাকে বলেন, “আমি ব্রিটিশ এমপি। আমাকে বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ বলার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।”
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই সাক্ষাত্কারের কয়েক ঘণ্টা পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরমানের বাসায় অভিযান চালায় এবং তার স্ত্রীকে ভয়ভীতি দেখায়।
আরমানের বক্তব্য
ব্যারিস্টার আরমান ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, “আমার স্ত্রীর ওপর এমন আচরণ করা হয়েছিল যেন তিনি কোনো সন্ত্রাসী। চ্যানেল-৪ এর সাংবাদিক টিউলিপকে আমার বিষয়ে প্রশ্ন করায় এই ঘটনা ঘটে। শেখ পরিবারের কেউ এ প্রশ্নকে অপমান হিসেবে নিয়েছিল।”
ব্রিটিশ আইনজীবীর প্রতিক্রিয়া
আরমানের আইনজীবী মাইকেল পলক মন্তব্য করেছেন, “চ্যানেল-৪ যখন প্রতিবেদনটি প্রকাশ করতে যাচ্ছিল, তখন আরমানের স্ত্রীকে র্যাবের মাধ্যমে হুমকি দেওয়া হয়। এটি প্রমাণ করে যে একজন ব্রিটিশ এমপির সঙ্গে প্রশ্ন করার পর কীভাবে বাংলাদেশি প্রশাসন প্রতিক্রিয়া দেখায়।”
টিউলিপ সিদ্দিক ও লেবার পার্টির নীরবতা
প্রতিবেদন প্রকাশের পর টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার দল লেবার পার্টির কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তারা কোনো মন্তব্য করেননি। তবে টিউলিপের এক সহযোগী জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে আরমানের বিষয়ে ব্রিটিশ ফরেন অফিসে একটি পত্র পাঠানো হয়েছিল।
পরিস্থিতির গুরুত্ব
ব্যারিস্টার আরমানের গুম এবং তার স্ত্রীকে হেনস্তার ঘটনা শুধু বাংলাদেশ নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আলোচনা সৃষ্টি করেছে। এটি ব্রিটেন ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক সম্পর্কের একটি সংবেদনশীল অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।
এখন দেখার বিষয়, এ নিয়ে নতুন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় কি না।
Please Share This Post in Your Social Media

ব্যারিস্টার আরমানের স্ত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে টিউলিপ সিদ্দিকের নাম আসছে আলোচনায়

লন্ডন, ৮ জানুয়ারি ২০২৫:
২০১৬ সালে নিখোঁজ জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আরমানের গুম এবং তার স্ত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ নিয়ে নতুন তথ্য সামনে এসেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, টিউলিপ সিদ্দিকের ক্ষমতা ও প্রভাব ব্যবহারের কারণে ব্যারিস্টার আরমানের পরিবারকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছিল।
ব্যারিস্টার আরমানের গুম এবং ফিরে আসা
২০১৬ সালের ৯ আগস্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ব্যারিস্টার আরমানকে তার নিজ বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর দীর্ঘ আট বছর তার কোনো খোঁজ মেলেনি। অবশেষে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর বাড়ি ফেরেন তিনি।
টিউলিপ সিদ্দিক ও চ্যানেল–৪ এর বিতর্ক
২০১৭ সালে ব্রিটিশ গণমাধ্যম চ্যানেল–৪-এর এক সাংবাদিক টিউলিপ সিদ্দিকের কাছে ব্যারিস্টার আরমানের বিষয়ে জানতে চান। টিউলিপ তখন ব্রিটেনের লেবার পার্টির এমপি ছিলেন এবং শেখ হাসিনার ভাগ্নি। সাংবাদিকের প্রশ্নে ক্ষিপ্ত হয়ে টিউলিপ তাকে বলেন, “আমি ব্রিটিশ এমপি। আমাকে বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ বলার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।”
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই সাক্ষাত্কারের কয়েক ঘণ্টা পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরমানের বাসায় অভিযান চালায় এবং তার স্ত্রীকে ভয়ভীতি দেখায়।
আরমানের বক্তব্য
ব্যারিস্টার আরমান ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, “আমার স্ত্রীর ওপর এমন আচরণ করা হয়েছিল যেন তিনি কোনো সন্ত্রাসী। চ্যানেল-৪ এর সাংবাদিক টিউলিপকে আমার বিষয়ে প্রশ্ন করায় এই ঘটনা ঘটে। শেখ পরিবারের কেউ এ প্রশ্নকে অপমান হিসেবে নিয়েছিল।”
ব্রিটিশ আইনজীবীর প্রতিক্রিয়া
আরমানের আইনজীবী মাইকেল পলক মন্তব্য করেছেন, “চ্যানেল-৪ যখন প্রতিবেদনটি প্রকাশ করতে যাচ্ছিল, তখন আরমানের স্ত্রীকে র্যাবের মাধ্যমে হুমকি দেওয়া হয়। এটি প্রমাণ করে যে একজন ব্রিটিশ এমপির সঙ্গে প্রশ্ন করার পর কীভাবে বাংলাদেশি প্রশাসন প্রতিক্রিয়া দেখায়।”
টিউলিপ সিদ্দিক ও লেবার পার্টির
প্রতিবেদন প্রকাশের পর টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার দল লেবার পার্টির কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তারা কোনো মন্তব্য করেননি। তবে টিউলিপের এক সহযোগী জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে আরমানের বিষয়ে ব্রিটিশ ফরেন অফিসে একটি পত্র পাঠানো হয়েছিল।
পরিস্থিতির গুরুত্ব
ব্যারিস্টার আরমানের গুম এবং তার স্ত্রীকে হেনস্তার ঘটনা শুধু বাংলাদেশ নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আলোচনা সৃষ্টি করেছে। এটি ব্রিটেন ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক সম্পর্কের একটি সংবেদনশীল অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।
এখন দেখার বিষয়, এ নিয়ে নতুন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় কি না।