সময়: বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আজারবাইজানের উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার আগে শোনা গিয়েছিল ‘আঘাতের জোরালো’ শব্দ

ডিজিটাল ডেস্ক
  • Update Time : ১২:১৭:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৭০ Time View

prothomalo bangla 2024 12 28 2fmtxkot Plane crash

আজারবাইজানের উড়োজাহাজটি বুধবার কাজাখস্তানের আকতাউ শহরের কাছে বিধ্বস্ত হয় ছবি: রয়টার্স

 

কাজাখস্তানে আজারবাইজান এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার আগে অন্তত একটি ‘জোরালো শব্দ’ শোনা গিয়েছিল। উড়োজাহাজটি রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের গ্রোজনি শহরের পথে ছিল।

বিধ্বস্ত উড়োজাহাজ থেকে বেঁচে ফেরা দুই যাত্রী ও একজন ক্রু বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, গত বুধবার আকতাউ শহরের কাছে ফ্লাইট জে২-৮২৪৩ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে ৩৮ জন নিহত হন এবং ২৯ জন বেঁচে যান। উড়োজাহাজটিতে যাত্রী ও ক্রু মিলিয়ে মোট ৬৭ জন আরোহী ছিলেন।

ঘন কুয়াশার কারণে গ্রোজনিতে অবতরণ করতে না পেরে উড়োজাহাজটি মাঝ আকাশে চক্কর দিচ্ছিল। ঠিক তখনই বাইরের অংশে একটি ‘জোরালো শব্দ’ শোনা যায় বলে জানিয়েছেন ক্রু জুলফুগার আসাদোভ।

দুর্ঘটনার মুহূর্তের বর্ণনা
বেঁচে যাওয়া যাত্রী শুভোনকুল রাখিমভ রয়টার্সকে জানান, শব্দ শোনার পর তিনি প্রার্থনা শুরু করেন এবং ধারণা করেন যে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হতে চলেছে। আরেক যাত্রী ভাফা শাবানোভা বলেন, তিনি দুটি শব্দ শুনেছিলেন এবং এক ক্রু তাকে উড়োজাহাজের পেছনের দিকে চলে যেতে বলেন।

দুর্ঘটনার পর উড়োজাহাজটিতে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায় বলে জানান বেঁচে ফেরা দুই যাত্রী। উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার আগে ভিডিওতে দেখা গেছে, যাত্রীরা অক্সিজেন মাস্ক ব্যবহার করছেন এবং লাইফ জ্যাকেট পরছেন।

তদন্তের অগ্রগতি
আজারবাইজান দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করছে। সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভুলবশত উড়োজাহাজটিকে ভূপাতিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রও এ ধরনের ‘প্রাথমিক ইঙ্গিত’ পাওয়ার দাবি করেছে। তবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করা হবে না।

পাইলটের সিদ্ধান্ত
ক্রু আসাদোভ জানান, পাইলটকে কাস্পিয়ান সাগরে অবতরণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তবে পাইলট আকতাউ শহরের দিকে উড়োজাহাজ নিয়ে যান এবং ভূমিতে অবতরণ করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি যাত্রীদের দ্রুতগতির অবতরণের জন্য প্রস্তুত হতে বলেন।

পরবর্তী পদক্ষেপ
উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার পর আজারবাইজান কর্তৃপক্ষ রাশিয়ার শহরগুলোয় তাদের কয়েকটি উড়োজাহাজের চলাচল বন্ধ রেখেছে। তারা বলেছে, কোনো কাঠামোগত বা কারিগরি হস্তক্ষেপের ফলে এ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে এ বিষয়ে বিশদ তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

দুর্ঘটনার ভয়াবহতা কাটিয়ে ওঠা যাত্রীদের অভিজ্ঞতা ও তদন্ত সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলো এ মর্মান্তিক ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে সহায়তা করবে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আজারবাইজানের উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার আগে শোনা গিয়েছিল ‘আঘাতের জোরালো’ শব্দ

Update Time : ১২:১৭:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
আজারবাইজানের উড়োজাহাজটি বুধবার কাজাখস্তানের আকতাউ শহরের কাছে বিধ্বস্ত হয় ছবি: রয়টার্স

 

কাজাখস্তানে আজারবাইজান এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার আগে অন্তত একটি ‘জোরালো শব্দ’ শোনা গিয়েছিল। উড়োজাহাজটি রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের গ্রোজনি শহরের পথে ছিল।

বিধ্বস্ত উড়োজাহাজ থেকে বেঁচে ফেরা দুই যাত্রী ও একজন ক্রু বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, গত বুধবার আকতাউ শহরের কাছে ফ্লাইট জে২-৮২৪৩ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে ৩৮ জন নিহত হন এবং ২৯ জন বেঁচে যান। উড়োজাহাজটিতে যাত্রী ও ক্রু মিলিয়ে মোট ৬৭ জন আরোহী ছিলেন।

ঘন কুয়াশার কারণে গ্রোজনিতে অবতরণ করতে না পেরে উড়োজাহাজটি মাঝ আকাশে চক্কর দিচ্ছিল। ঠিক তখনই বাইরের অংশে একটি ‘জোরালো শব্দ’ শোনা যায় বলে জানিয়েছেন ক্রু জুলফুগার আসাদোভ।

দুর্ঘটনার মুহূর্তের বর্ণনা
বেঁচে যাওয়া যাত্রী শুভোনকুল রাখিমভ রয়টার্সকে জানান, শব্দ শোনার পর তিনি প্রার্থনা শুরু করেন এবং ধারণা করেন যে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হতে চলেছে। আরেক যাত্রী ভাফা শাবানোভা বলেন, তিনি দুটি শব্দ শুনেছিলেন এবং এক ক্রু তাকে উড়োজাহাজের পেছনের দিকে চলে যেতে বলেন।

দুর্ঘটনার পর উড়োজাহাজটিতে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায় বলে জানান বেঁচে ফেরা দুই যাত্রী। উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার আগে ভিডিওতে দেখা গেছে, যাত্রীরা অক্সিজেন মাস্ক ব্যবহার করছেন এবং লাইফ জ্যাকেট পরছেন।

তদন্তের অগ্রগতি
আজারবাইজান দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করছে। সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভুলবশত উড়োজাহাজটিকে ভূপাতিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রও এ ধরনের ‘প্রাথমিক ইঙ্গিত’ পাওয়ার দাবি করেছে। তবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করা হবে না।

পাইলটের সিদ্ধান্ত
ক্রু আসাদোভ জানান, পাইলটকে কাস্পিয়ান সাগরে অবতরণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তবে পাইলট আকতাউ শহরের দিকে উড়োজাহাজ নিয়ে যান এবং ভূমিতে অবতরণ করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি যাত্রীদের দ্রুতগতির অবতরণের জন্য প্রস্তুত হতে বলেন।

পরবর্তী পদক্ষেপ
উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার পর আজারবাইজান কর্তৃপক্ষ রাশিয়ার শহরগুলোয় তাদের কয়েকটি উড়োজাহাজের চলাচল বন্ধ রেখেছে। তারা বলেছে, কোনো কাঠামোগত বা কারিগরি হস্তক্ষেপের ফলে এ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে এ বিষয়ে বিশদ তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

দুর্ঘটনার ভয়াবহতা কাটিয়ে ওঠা যাত্রীদের অভিজ্ঞতা ও তদন্ত সংশ্লিষ্ট তথ্যগুলো এ মর্মান্তিক ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে সহায়তা করবে।