সময়: বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিডিআর হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ: যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া

ডিজিটাল ডেস্ক
  • Update Time : ০৯:০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৬৩ Time View

e714f298a90006fb96b12c2f18d55deb 676530da6487c

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল

 

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সাম্প্রতিক ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে। মার্কিন স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত এ ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দপ্তরের উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল।

ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন প্রতিক্রিয়া

একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনাসহ ৫৭ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো মন্তব্য আছে কি?”

জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, এই অভিযোগের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে আমরা এখনো অবগত নই। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য আমাদের দল কাজ করবে। আপনাদের কোনো সহায়তা করতে পারলে আমরা আনন্দিত হবো।

গুম নিয়ে আগের মন্তব্য

এর আগে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) একই ব্রিফিংয়ে শেখ হাসিনার গুমের ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা ও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে প্রশ্ন করা হয়েছিল। সাংবাদিকরা উল্লেখ করেন, নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশে গুম কমিশনের তদন্তে শেখ হাসিনার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

বেদান্ত প্যাটেল এ প্রসঙ্গে বলেন, গত দুই দশকে বাংলাদেশে শত শত জোরপূর্বক গুমের ঘটনা ঘটেছে। এটি মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন, যা ভুক্তভোগী তাদের পরিবারের জন্য চরম ট্রমার কারণ। আমরা বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের এই অপরাধের তদন্ত প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই। ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচারের সুযোগ তৈরিতে ন্যায্য স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে আমরা উৎসাহিত করছি।

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপট

২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। এই ঘটনাকে বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নিহত সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা এই অভিযোগ নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

গুম মানবাধিকারের ইস্যু

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন এবং মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে এই গুমের ঘটনাগুলো আবারও আন্তর্জাতিক আলোচনায় উঠে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এবং গুমের শিকার পরিবারগুলোকে ন্যায়বিচার দিতে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

রাজনৈতিক প্রভাব

এই ঘটনাগুলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের জন্য একটি বড় কৌশল হয়ে উঠতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।

মার্কিন প্রতিক্রিয়া এবং এর প্রেক্ষাপট ইঙ্গিত দিচ্ছে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও মনোযোগ আকর্ষণ করবে।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

বিডিআর হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ: যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া

Update Time : ০৯:০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল

 

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সাম্প্রতিক ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে। মার্কিন স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত এ ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দপ্তরের উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল।

ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন প্রতিক্রিয়া

একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনাসহ ৫৭ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো মন্তব্য আছে কি?”

জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, এই অভিযোগের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে আমরা এখনো অবগত নই। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য আমাদের দল কাজ করবে। আপনাদের কোনো সহায়তা করতে পারলে আমরা আনন্দিত হবো।

গুম নিয়ে আগের মন্তব্য

এর আগে বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) একই ব্রিফিংয়ে শেখ হাসিনার গুমের ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা ও মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ইস্যুতে প্রশ্ন করা হয়েছিল। সাংবাদিকরা উল্লেখ করেন, নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশে গুম কমিশনের তদন্তে শেখ হাসিনার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

বেদান্ত প্যাটেল এ প্রসঙ্গে বলেন, গত দুই দশকে বাংলাদেশে শত শত জোরপূর্বক গুমের ঘটনা ঘটেছে। এটি মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন, যা ভুক্তভোগী তাদের পরিবারের জন্য চরম ট্রমার কারণ। আমরা বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের এই অপরাধের তদন্ত প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই। ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচারের সুযোগ তৈরিতে ন্যায্য স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে আমরা উৎসাহিত করছি।

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপট

২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। এই ঘটনাকে বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। নিহত সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা এই অভিযোগ নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

গুম মানবাধিকারের ইস্যু

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন এবং মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে এই গুমের ঘটনাগুলো আবারও আন্তর্জাতিক আলোচনায় উঠে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এবং গুমের শিকার পরিবারগুলোকে ন্যায়বিচার দিতে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

রাজনৈতিক প্রভাব

এই ঘটনাগুলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের জন্য একটি বড় কৌশল হয়ে উঠতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।

মার্কিন প্রতিক্রিয়া এবং এর প্রেক্ষাপট ইঙ্গিত দিচ্ছে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও মনোযোগ আকর্ষণ করবে।