বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবি সমমনা ইসলামী দলগুলোর

- Update Time : ০৪:৪৩:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
- / ৮৩ Time View
আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন)-কে উগ্র সাম্প্রদায়িক সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে সমমনা ইসলামী দলগুলো। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহসভাপতি আব্দুর রব ইউসুফী। তিনি বলেন, “ইসকনের বিরুদ্ধে কথা বলা মানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে কথা বলা নয়। হিন্দু ভাই–বোনদের সতর্ক থাকতে হবে, যেন ইসকনের ফাঁদে কেউ পা না দেয়। ইসকন দেশে সাম্প্রদায়িক সংঘাত ছড়িয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এটি একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক সংগঠন।“
তিনি অভিযোগ করেন, “বর্তমানে অনলাইন জগতে যে ধর্ম অবমাননা হয়, তার ৯০ শতাংশ ইসকন সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত।“
সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ড ও ইসকনের ভূমিকা
সংবাদ সম্মেলনে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডসহ ইসকন সংঘটিত সব অপরাধের সুষ্ঠু বিচার এবং সাম্প্রদায়িক উসকানি বা দাঙ্গা পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।
আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, “ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কিন্তু ভারতের ওই বিবৃতির পাল্টা বিবৃতিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে নির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটি নিয়ে কিছু মহল ভুল তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে।“
তিনি আরও বলেন, “এই ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রচারণা সত্যের অপলাপ এবং দুই প্রতিবেশী দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পরিপন্থী।“
সরকারের বিবৃতিকে সমর্থন
সংবাদ সম্মেলনে সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করে আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, “সরকারের সাম্প্রতিক বিবৃতিকে আমরা স্বাগত জানাই। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি না হওয়ার জন্য সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। দেশি–বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের সুযোগ দেওয়া যাবে না।“
উপস্থিত নেতারা
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশ্রাফ, নেজামে ইসলামী পার্টির সিনিয়র নায়েবে আমির আবদুল মাজেদ, খেলাফত মজলিসের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসাইন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহসভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুসসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বিশ্লেষণ
ইসকন নিয়ে সাম্প্রতিক উত্তেজনা এবং উভয় ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে উদ্ভূত বিতর্ক দুই দেশের অভ্যন্তরীণ এবং কূটনৈতিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলছে। সরকারের সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া ও জনগণের মধ্যে সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা এখন সবচেয়ে বেশি।
Please Share This Post in Your Social Media

বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবি সমমনা ইসলামী দলগুলোর

আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন)-কে উগ্র সাম্প্রদায়িক সংগঠন হিসেবে আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে সমমনা ইসলামী দলগুলো। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহসভাপতি আব্দুর রব ইউসুফী। তিনি বলেন, “ইসকনের বিরুদ্ধে কথা বলা মানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে কথা বলা নয়। হিন্দু ভাই–বোনদের সতর্ক থাকতে হবে, যেন ইসকনের ফাঁদে কেউ পা না দেয়। ইসকন দেশে সাম্প্রদায়িক সংঘাত ছড়িয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এটি একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক সংগঠন।“
তিনি অভিযোগ করেন, “বর্তমানে অনলাইন জগতে যে ধর্ম অবমাননা হয়, তার ৯০ শতাংশ ইসকন সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত।“
সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ড ও ইসকনের ভূমিকা
সংবাদ সম্মেলনে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডসহ ইসকন সংঘটিত সব অপরাধের সুষ্ঠু বিচার এবং সাম্প্রদায়িক উসকানি বা দাঙ্গা পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।
আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, “ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কিন্তু ভারতের ওই বিবৃতির পাল্টা বিবৃতিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে নির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটি নিয়ে কিছু মহল ভুল তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে।“
তিনি আরও বলেন, “এই ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রচারণা সত্যের অপলাপ এবং দুই প্রতিবেশী দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পরিপন্থী।“
সরকারের বিবৃতিকে সমর্থন
সংবাদ সম্মেলনে সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করে আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, “সরকারের সাম্প্রতিক বিবৃতিকে আমরা স্বাগত জানাই। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি না হওয়ার জন্য সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। দেশি–বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের সুযোগ দেওয়া যাবে না।“
উপস্থিত নেতারা
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশ্রাফ, নেজামে ইসলামী পার্টির সিনিয়র নায়েবে আমির আবদুল মাজেদ, খেলাফত মজলিসের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসাইন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহসভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুসসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বিশ্লেষণ
ইসকন নিয়ে সাম্প্রতিক উত্তেজনা এবং উভয় ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে উদ্ভূত বিতর্ক দুই দেশের অভ্যন্তরীণ এবং কূটনৈতিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলছে। সরকারের সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া ও জনগণের মধ্যে সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা এখন সবচেয়ে বেশি।