তারল্য সংকট: সঞ্চয়পত্রের মুনাফা দিচ্ছে না এস আলমের ব্যাংকগুলো

- Update Time : ১১:৪০:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪
- / ১৭২ Time View
অনেক বিনিয়োগকারী সঞ্চয়পত্র নিয়ে সংকটে পড়েছেন। তারা মুনাফার অর্থ তুলতে পারছেন না এবং মূল বিনিয়োগও ফেরত পাওয়ার অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। বিশেষ করে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যাংকগুলোতে এই সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে, যেখানে সঞ্চয়পত্রধারী গ্রাহকরা মুনাফা তো তুলতেই পারছেন না, বরং আসল টাকা ফেরত পাওয়া নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এছাড়াও, কিছু দুর্বল বেসরকারি ব্যাংকের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ উঠেছে, যেখানে গ্রাহকদের সঙ্গে এ ধরনের অনিয়ম করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে গত এক মাস ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি), এবং জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের মধ্যে নিয়মিত চিঠি চালাচালি হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত সমস্যা সমাধানের কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলো। এর ফলে মুনাফা বা মূলধন ফেরত না পেয়ে হতাশ গ্রাহকেরা ব্যাংকগুলোতে গিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন।
এই সমস্যাটি সঞ্চয় অধিদপ্তরের অধীনে থাকা চার ধরনের সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে ঘটছে, যার মধ্যে রয়েছে পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পরিবার সঞ্চয়পত্র, এবং পেনশনার সঞ্চয়পত্র।
গতকাল মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন সচিবালয়ে তাঁর অসন্তোষ ও বঞ্চনার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তিনি জানান, এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন একটি ব্যাংকে তাঁর সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ রয়েছে, যার মুনাফা দিয়ে তিনি মাসিক বাজার-খরচ চালাতেন। কিন্তু বর্তমানে ওই ব্যাংক তাঁকে মুনাফার টাকা দিচ্ছে না, যা তাঁর জীবিকার উপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে।
এদিকে, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে অনেককেই গতকাল ব্যাংকের শাখা পরিবর্তনের জন্য আবেদন করতে দেখা গেছে। একজন আবেদনকারী, যিনি সরকারের একজন সাবেক অতিরিক্ত সচিব, প্রথম আলোকে জানান যে, তিনি তাঁর টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, “আমার নিজের অর্থ ফেরত পাচ্ছি না। শুধু সঞ্চয় অধিদপ্তর নয়, বাংলাদেশ ব্যাংককেও এ ব্যাপারে দায়িত্ব নেওয়া উচিত।”
যাঁদের মুনাফার টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাংকে জমা হলেও তা তুলতে পারছেন না এবং যাঁদের সঞ্চয়পত্র শিগগিরই মেয়াদ পূর্ণ করবে, তাঁদের মধ্যে অনেকেই ব্যাংকের শাখা ও হিসাব পরিবর্তনের জন্য জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরে আবেদন করেছেন। গত দুই মাসে অধিদপ্তরে এমন ২৭০টি আবেদন জমা হয়েছে, যা বছরের অন্য সময়ের তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে বেশি। এই আবেদনকারীদের মধ্যে সরকারের সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম সচিবের মতো উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও রয়েছেন বলে অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে।
বিতর্কিত এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ৯টি বেসরকারি ব্যাংক ছিল, যেগুলোর পরিচালনা পর্ষদ শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এই ব্যাংকগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নাম-বেনামে তুলে নেওয়া হয়েছে, যার ফলে ব্যাংকগুলোতে তীব্র তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে। অনেক আমানতকারী তাঁদের গচ্ছিত অর্থ চাহিদামতো তুলতে পারছেন না। এমনকি ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা বাদে অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও বেতন তুলতে পারছেন না। পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে বিশেষ তারল্য সহায়তা দিয়ে এসব ব্যাংককে সচল রাখা হলেও বর্তমানে পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে পড়েছে।
সঞ্চয়পত্রের টাকা উত্তোলনের সমস্যার সমাধানে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর গতকাল অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে (আইআরডি) একটি চিঠি পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে আইআরডির সচিব মো. আবদুর রহমান খান প্রথম আলোকে মুঠোফোনে জানিয়েছেন, “বিষয়টি এখনো আমার কাছে আসেনি। আমি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।”
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকও সম্প্রতি একই সমস্যার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকদের ব্যাংক হিসাব পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সমন্বিত বাজেট ও হিসাবরক্ষণ পদ্ধতি (আইবাস++) ব্যবহার করা হয়। এটি একটি ইন্টারনেটভিত্তিক সফটওয়্যার, যার মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন এবং হিসাবরক্ষণ পরিচালিত হয়।
অর্থ বিভাগের “স্ট্রেংদেনিং পাবলিক ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম টু এনাবল সার্ভিস ডেলিভারি” (এসপিএফএমএস) প্রকল্পের মাধ্যমে সঞ্চয়পত্র সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এই কর্মসূচির জাতীয় পরিচালক ছিলেন অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, যাঁকে সরকার সম্প্রতি পদোন্নতি দিয়ে জ্বালানি সচিব হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক এক চিঠিতে মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের কাছে ১১৫ জন গ্রাহকের ব্যাংক ও ব্যাংকের শাখা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানায়। তবে, তিনি এখনো এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেননি। এর মধ্যে ব্যাংক ও শাখা পরিবর্তনের আবেদন জমা দেওয়ার সংখ্যা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে জানান যে, এসপিএফএমএস প্রকল্প থেকে শুধুমাত্র কারিগরি দিকগুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, গ্রাহকদের বিষয়গুলো দেখার দায়িত্ব সঞ্চয় অধিদপ্তরের। তবে তিনি সতর্ক করেন যে, ব্যাংক হিসাব পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়া হলে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে, যেমন গ্রাহকদের অজান্তে টাকা আত্মসাতের ঝুঁকি।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, যা এস আলম গ্রুপের মালিকানায় ছিল, বর্তমানে এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিশিষ্ট ব্যাংকার নুরুল আমিন। তিনি নিশ্চিত করেছেন যে সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকদের মুনাফা না পাওয়ার বিষয়টি ব্যাংকের তারল্য সংকটের সঙ্গে সম্পর্কিত।এদিকে, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন যে, ব্যাংকের শাখা পরিবর্তনের আবেদনের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। গতকালই ৩২টি নতুন আবেদন জমা পড়েছে।আবেদনকারীদের চাহিদা অনুযায়ী ব্যাংক পরিবর্তনের পদক্ষেপ অধিদপ্তর থেকে নেওয়া হচ্ছে। এতে আইনি কোনো বাধা নেই।
সুত্রঃ প্রথম আলো
Please Share This Post in Your Social Media

তারল্য সংকট: সঞ্চয়পত্রের মুনাফা দিচ্ছে না এস আলমের ব্যাংকগুলো

অনেক বিনিয়োগকারী সঞ্চয়পত্র নিয়ে সংকটে পড়েছেন। তারা মুনাফার অর্থ তুলতে পারছেন না এবং মূল বিনিয়োগও ফেরত পাওয়ার অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। বিশেষ করে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যাংকগুলোতে এই সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে, যেখানে সঞ্চয়পত্রধারী গ্রাহকরা মুনাফা তো তুলতেই পারছেন না, বরং আসল টাকা ফেরত পাওয়া নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এছাড়াও, কিছু দুর্বল বেসরকারি ব্যাংকের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ উঠেছে, যেখানে গ্রাহকদের সঙ্গে এ ধরনের অনিয়ম করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে গত এক মাস ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি), এবং জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের মধ্যে নিয়মিত চিঠি চালাচালি হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত সমস্যা সমাধানের কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারেনি সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলো। এর ফলে মুনাফা বা মূলধন ফেরত না পেয়ে হতাশ গ্রাহকেরা ব্যাংকগুলোতে গিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন।
এই সমস্যাটি সঞ্চয় অধিদপ্তরের অধীনে থাকা চার ধরনের সঞ্চয়পত্রের ক্ষেত্রে ঘটছে, যার মধ্যে রয়েছে পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র, পরিবার সঞ্চয়পত্র, এবং পেনশনার সঞ্চয়পত্র।
গতকাল মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন সচিবালয়ে তাঁর অসন্তোষ ও বঞ্চনার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তিনি জানান, এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন একটি ব্যাংকে তাঁর সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ রয়েছে, যার মুনাফা দিয়ে তিনি মাসিক বাজার-খরচ চালাতেন। কিন্তু বর্তমানে ওই ব্যাংক তাঁকে মুনাফার টাকা দিচ্ছে না, যা তাঁর জীবিকার উপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে।
এদিকে, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে অনেককেই গতকাল ব্যাংকের শাখা পরিবর্তনের জন্য আবেদন করতে দেখা গেছে। একজন আবেদনকারী, যিনি সরকারের একজন সাবেক অতিরিক্ত সচিব, প্রথম আলোকে জানান যে, তিনি তাঁর টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, “আমার নিজের অর্থ ফেরত পাচ্ছি না। শুধু সঞ্চয় অধিদপ্তর নয়, বাংলাদেশ ব্যাংককেও এ ব্যাপারে দায়িত্ব নেওয়া উচিত।”
যাঁদের মুনাফার টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাংকে জমা হলেও তা তুলতে পারছেন না এবং যাঁদের সঞ্চয়পত্র শিগগিরই মেয়াদ পূর্ণ করবে, তাঁদের মধ্যে অনেকেই ব্যাংকের শাখা ও হিসাব পরিবর্তনের জন্য জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরে আবেদন করেছেন। গত দুই মাসে অধিদপ্তরে এমন ২৭০টি আবেদন জমা হয়েছে, যা বছরের অন্য সময়ের তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে বেশি। এই আবেদনকারীদের মধ্যে সরকারের সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম সচিবের মতো উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও রয়েছেন বলে অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে।
বিতর্কিত এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ৯টি বেসরকারি ব্যাংক ছিল, যেগুলোর পরিচালনা পর্ষদ শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এই ব্যাংকগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নাম-বেনামে তুলে নেওয়া হয়েছে, যার ফলে ব্যাংকগুলোতে তীব্র তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে। অনেক আমানতকারী তাঁদের গচ্ছিত অর্থ চাহিদামতো তুলতে পারছেন না। এমনকি ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা বাদে অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও বেতন তুলতে পারছেন না। পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে বিশেষ তারল্য সহায়তা দিয়ে এসব ব্যাংককে সচল রাখা হলেও বর্তমানে পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে পড়েছে।
সঞ্চয়পত্রের টাকা উত্তোলনের সমস্যার সমাধানে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর গতকাল অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে (আইআরডি) একটি চিঠি পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে আইআরডির সচিব মো. আবদুর রহমান খান প্রথম আলোকে মুঠোফোনে জানিয়েছেন, “বিষয়টি এখনো আমার কাছে আসেনি। আমি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।”
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকও সম্প্রতি একই সমস্যার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকদের ব্যাংক হিসাব পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সমন্বিত বাজেট ও হিসাবরক্ষণ পদ্ধতি (আইবাস++) ব্যবহার করা হয়। এটি একটি ইন্টারনেটভিত্তিক সফটওয়্যার, যার মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন এবং হিসাবরক্ষণ পরিচালিত হয়।
অর্থ বিভাগের “স্ট্রেংদেনিং পাবলিক ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম টু এনাবল সার্ভিস ডেলিভারি” (এসপিএফএমএস) প্রকল্পের মাধ্যমে সঞ্চয়পত্র সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এই কর্মসূচির জাতীয় পরিচালক ছিলেন অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, যাঁকে সরকার সম্প্রতি পদোন্নতি দিয়ে জ্বালানি সচিব হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক এক চিঠিতে মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের কাছে ১১৫ জন গ্রাহকের ব্যাংক ও ব্যাংকের শাখা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানায়। তবে, তিনি এখনো এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেননি। এর মধ্যে ব্যাংক ও শাখা পরিবর্তনের আবেদন জমা দেওয়ার সংখ্যা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে জানান যে, এসপিএফএমএস প্রকল্প থেকে শুধুমাত্র কারিগরি দিকগুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, গ্রাহকদের বিষয়গুলো দেখার দায়িত্ব সঞ্চয় অধিদপ্তরের। তবে তিনি সতর্ক করেন যে, ব্যাংক হিসাব পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়া হলে কিছু জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে, যেমন গ্রাহকদের অজান্তে টাকা আত্মসাতের ঝুঁকি।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, যা এস আলম গ্রুপের মালিকানায় ছিল, বর্তমানে এর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিশিষ্ট ব্যাংকার নুরুল আমিন। তিনি নিশ্চিত করেছেন যে সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকদের মুনাফা না পাওয়ার বিষয়টি ব্যাংকের তারল্য সংকটের সঙ্গে সম্পর্কিত।এদিকে, জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন যে, ব্যাংকের শাখা পরিবর্তনের আবেদনের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। গতকালই ৩২টি নতুন আবেদন জমা পড়েছে।আবেদনকারীদের চাহিদা অনুযায়ী ব্যাংক পরিবর্তনের পদক্ষেপ অধিদপ্তর থেকে নেওয়া হচ্ছে। এতে আইনি কোনো বাধা নেই।
সুত্রঃ প্রথম আলো