সময়: বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অর্থের বিনিময়ে ‘প্লেজার ম্যারেজ’, সমালোচনার ঝড়

ডিজিটাল ডেস্ক
  • Update Time : ০২:৫৩:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪
  • / ১৯৩ Time View
প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

ইন্দোনেশিয়ায় পর্যটকরা অর্থের বিনিময়ে অস্থায়ীভাবে নারীদের বিয়ে করতে পারছেন! এমন চমকপ্রদ ঘটনা নিয়ে ইতোমধ্যে অনলাইনে তুমুল আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে আসে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের পুনাকাক এলাকাটি আরব পর্যটকদের জন্য বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সেখানে অর্থের বিনিময়ে স্থানীয় দরিদ্র নারীদের পর্যটকদের সাথে অস্থায়ীভাবে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

পাহাড়ি রিসোর্ট কোটা বুঙ্গা

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের মতে, পুনাকাকের পাহাড়ি রিসোর্ট কোটা বুঙ্গায় বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে পর্যটকদের সঙ্গে স্থানীয় নারীদের পরিচয় করানো হয়। উভয় পক্ষ সম্মত হলে, দ্রুত এবং ঘরোয়া আয়োজনে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। পুরুষ পর্যটকদের বিয়ের জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে অর্থ প্রদান করতে হয়।

বিয়ের পর তারা স্বামী-স্ত্রীর মতো সময় কাটায়, এবং স্ত্রীকে ঘরের কাজ করতে হয়। পর্যটকের সফর শেষে, তিনি তার দেশে ফিরে গেলে বিয়েটিও বাতিল হয়। এই বিয়াকে ‘প্লেজার ম্যারেজ’ বলা হচ্ছে। লস এঞ্জেলস টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই প্রক্রিয়া পুনাকাকের পর্যটন খাতকে বেগবান করছে এবং স্থানীয় অর্থনীতিও চাঙ্গা হয়েছে।

প্রথমদিকে পরিবারের সদস্যরা মেয়েদেরকে পর্যটকদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেন, তবে বর্তমানে বিভিন্ন এজেন্সি এটি নিয়ন্ত্রণ করছে। কাহায়া নামে এক তরুণী জানিয়েছেন, তিনি ১৫ বারের বেশি বিয়ে করেছেন, প্রতিটি বিয়েই ছিল মধ্যপ্রাচ্যের পর্যটকদের সঙ্গে। প্রথমবার তিনি ৫০ বছর বয়সী এক সৌদি পর্যটককে বিয়ে করেছিলেন, যিনি বিয়ের জন্য ৮৫০ ডলার খরচ করেন। কাহায়া এই অর্থের অর্ধেক পান, এবং এজেন্ট বাকি অর্ধেক নিয়ে নেয়। পাঁচ দিন পর ওই পর্যটক সৌদিতে ফিরে গেলে তাদের তালাক হয়।

নিকাহ মুত’আ বা ‘প্লেজার ম্যারেজ’ মূলত শিয়াদের সংস্কৃতির অংশ হলেও বেশিরভাগ শিয়া স্কলার এই ধরনের বিয়ে পদ্ধতিকে অগ্রহণযোগ্য মনে করেন। ইন্দোনেশিয়ার আইনেও এই বিয়ের কোনো স্বীকৃতি নেই, এবং আইন লঙ্ঘনের জন্য জেল কিংবা জরিমানার বিধান রয়েছে।

চীনের মিডিয়ায় খবরটি প্রকাশিত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মতামত দিয়েছেন, এই সাময়িক বিয়ের প্রক্রিয়া অঞ্চলটির অর্থনীতি এবং পর্যটনকে লাভবান করছে, তাই ইন্দোনেশিয়ার সরকার হয়তো এটি বন্ধ করতে অক্ষম।

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

অর্থের বিনিময়ে ‘প্লেজার ম্যারেজ’, সমালোচনার ঝড়

Update Time : ০২:৫৩:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪
প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

ইন্দোনেশিয়ায় পর্যটকরা অর্থের বিনিময়ে অস্থায়ীভাবে নারীদের বিয়ে করতে পারছেন! এমন চমকপ্রদ ঘটনা নিয়ে ইতোমধ্যে অনলাইনে তুমুল আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে আসে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের পুনাকাক এলাকাটি আরব পর্যটকদের জন্য বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সেখানে অর্থের বিনিময়ে স্থানীয় দরিদ্র নারীদের পর্যটকদের সাথে অস্থায়ীভাবে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

পাহাড়ি রিসোর্ট কোটা বুঙ্গা

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের মতে, পুনাকাকের পাহাড়ি রিসোর্ট কোটা বুঙ্গায় বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে পর্যটকদের সঙ্গে স্থানীয় নারীদের পরিচয় করানো হয়। উভয় পক্ষ সম্মত হলে, দ্রুত এবং ঘরোয়া আয়োজনে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। পুরুষ পর্যটকদের বিয়ের জন্য ক্ষতিপূরণ হিসেবে অর্থ প্রদান করতে হয়।

বিয়ের পর তারা স্বামী-স্ত্রীর মতো সময় কাটায়, এবং স্ত্রীকে ঘরের কাজ করতে হয়। পর্যটকের সফর শেষে, তিনি তার দেশে ফিরে গেলে বিয়েটিও বাতিল হয়। এই বিয়াকে ‘প্লেজার ম্যারেজ’ বলা হচ্ছে। লস এঞ্জেলস টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই প্রক্রিয়া পুনাকাকের পর্যটন খাতকে বেগবান করছে এবং স্থানীয় অর্থনীতিও চাঙ্গা হয়েছে।

প্রথমদিকে পরিবারের সদস্যরা মেয়েদেরকে পর্যটকদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেন, তবে বর্তমানে বিভিন্ন এজেন্সি এটি নিয়ন্ত্রণ করছে। কাহায়া নামে এক তরুণী জানিয়েছেন, তিনি ১৫ বারের বেশি বিয়ে করেছেন, প্রতিটি বিয়েই ছিল মধ্যপ্রাচ্যের পর্যটকদের সঙ্গে। প্রথমবার তিনি ৫০ বছর বয়সী এক সৌদি পর্যটককে বিয়ে করেছিলেন, যিনি বিয়ের জন্য ৮৫০ ডলার খরচ করেন। কাহায়া এই অর্থের অর্ধেক পান, এবং এজেন্ট বাকি অর্ধেক নিয়ে নেয়। পাঁচ দিন পর ওই পর্যটক সৌদিতে ফিরে গেলে তাদের তালাক হয়।

নিকাহ মুত’আ বা ‘প্লেজার ম্যারেজ’ মূলত শিয়াদের সংস্কৃতির অংশ হলেও বেশিরভাগ শিয়া স্কলার এই ধরনের বিয়ে পদ্ধতিকে অগ্রহণযোগ্য মনে করেন। ইন্দোনেশিয়ার আইনেও এই বিয়ের কোনো স্বীকৃতি নেই, এবং আইন লঙ্ঘনের জন্য জেল কিংবা জরিমানার বিধান রয়েছে।

চীনের মিডিয়ায় খবরটি প্রকাশিত হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মতামত দিয়েছেন, এই সাময়িক বিয়ের প্রক্রিয়া অঞ্চলটির অর্থনীতি এবং পর্যটনকে লাভবান করছে, তাই ইন্দোনেশিয়ার সরকার হয়তো এটি বন্ধ করতে অক্ষম।