কারাগারে হাসিনা সরকারের ভিআইপি বন্দিদের বর্তমান অবস্থা

- Update Time : ০৪:৫৯:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪
- / ১০৩ Time View
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে অনেক উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গণহত্যা এবং অন্যান্য অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ৬৬ জন ভিআইপি মর্যাদার ব্যক্তি গ্রেপ্তার করেছে। এই তালিকায় আছেন সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, এবং অন্যান্য সরকারি প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।
কারাগারে থাকা ভিআইপিরা
বুধবার (২ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত বিশেষ বন্দিদের সংখ্যা ৬৬ জন। এর মধ্যে ৩৭ জন ডিভিশন পেয়েছেন এবং তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বর্তমানে ডিভিশনপ্রাপ্ত বিশেষ বন্দিরা হলেন:
– দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব শাহ কামাল
– সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন
– সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান
– সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান
– এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান
– সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক
– সাবেক হুইপ আ স ম ফিরোজ
– সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক
– সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামছুল হক টুকু
– সাবেক উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়
– সাবেক সংসদ সদস্য আহম্মেদ হোসাইন
– সাবেক রিয়াল অ্যাডমিরাল এম সোহাইল
– সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি
– সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সোবহান গোলাপ
– হাজী মো. সেলিম
– সাবেক নৌপরিবহণমন্ত্রী শাজাহান খান
– সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু
– সাবেক আইজিপি একেএম শহীদুল হক
– চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন
– সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী
– সাবেক প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর
– সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী
– সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান চৌধুরী
– সাবেক বিচারপতি আবুল হোসেন মোহাম্মদ শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক
– সাবেক পুলিশ পরিদর্শক আরাফাত হোসেন
– সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন
– সাবেক সংসদ সদস্য শাহে আলম
– ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া
– সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন
– সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম
– সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফি
– আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ
– কুষ্টিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জজ
– ডিআইজি মিজানুর রহমান
– পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম
– সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন
– যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান
এই বিশেষ বন্দিরা কারাগারে নিজেদের জন্য নির্ধারিত সুবিধা নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন।
ভিআইপি বন্দিদের খাবার ও সুবিধা
সকালে বিশেষ বন্দিরা রুটি ও সবজির সঙ্গে জেলি পান। সাধারণ বন্দিদের জন্য চায়ের ব্যবস্থা না থাকলেও ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের চা প্রদান করা হয়। সাধারণ বন্দিরা একবেলা মাছ বা মাংস পান, কিন্তু ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিরা দুই বেলা মাছ বা মাংস গ্রহণ করেন। তবে, খাবারের পরিমাণ সবার জন্য সমান।
সূত্র জানায়, ভিআইপি বন্দিরা কারাগারে কাজের লোকও পান, যারা তাদের জন্য সেবক হিসেবে কাজ করেন। এই সেবকরা ভিআইপি বন্দিদের কাপড় ধোয়া, খাবার সংগ্রহ করা এবং প্লেট ধোয়ার মতো আনুষঙ্গিক কাজ করে দেন।
তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম
কারাগারে থাকা বিশেষ বন্দিরা সময় কাটানোর জন্য নানা কার্যক্রমে লিপ্ত থাকছেন। সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, সকালে ঘুম থেকে উঠেই কেউ কেউ নামাজ পড়েন, আবার কেউ দেরিতে ঘুম থেকে উঠছেন। অধিকাংশই নামাজের জন্য সময় বের করছেন। চা ও নাশতা খাওয়ার পর তাঁরা কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করেন, গল্প-গুজব করেন এবং পত্রিকা পড়েন। কিছু বন্দি কারাগারের লাইব্রেরি থেকে বইও নিয়ে পড়ছেন।
দুপুর ১২টার পর তাঁরা গোসলে যান। গোসল শেষে কেউ কোরআন তেলাওয়াত করেন এবং নামাজ পড়েন। বিকালে নির্ধারিত প্যালেসে হাঁটার সুযোগ পান।
গণ্যমান্য বন্দিদের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরতে গিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিরা খাট, চেয়ার এবং টেবিলের সুবিধা পান। কারাগারের লাইব্রেরিতে সকলের জন্য পত্রিকা পড়ার সুযোগ রয়েছে। তবে সাধারণ বন্দিরা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে নিজ খরচে পত্রিকা রুমে নিয়ে পড়তে পারেন। কিন্তু ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের জন্য কারা কর্তৃপক্ষ পত্রিকা পড়ার সুযোগ প্রদান করে। তাঁরা টেলিভিশন দেখার সুবিধাও পান।
কারাসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভিআইপি বন্দিরা কারাগারে বিশেষ সুবিধা দাবি করলেও তা দেওয়া হচ্ছে না। তাঁদের জন্য যে সুবিধাগুলি বিধিমালা অনুযায়ী প্রাপ্য, সেগুলোই তাঁদের প্রদান করা হচ্ছে। বিধি অনুসারে, প্রতি ১৫ দিন পর নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে বন্দিদের দেখা করার সুযোগ থাকে। তবে বর্তমানে ভিআইপি বন্দিদের সাথে কোনও নিকটাত্মীয় সাক্ষাৎ করতে পারছেন না। এই সাক্ষাতের জন্য একজন ম্যানেজার টাইপের ব্যক্তি এসে তাঁদের সঙ্গে দেখা করছেন এবং মামলার খোঁজ-খবর রাখছেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, একজন বন্দি প্রতি ১০ দিন পর নির্ধারিত মোবাইল নম্বরে কারাগারের ভেতর থেকে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান, তবে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই সুযোগ এখনও ভিআইপি বন্দিদের মধ্যে কেউ পাননি।
বিশেষ সুবিধা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা
ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের জন্য নির্ধারিত ঘরে খাট, চেয়ার-টেবিলের ব্যবস্থা রয়েছে। তারা লাইব্রেরি থেকে পত্রিকা পড়ার সুযোগ পান, এবং টেলিভিশন দেখার সুবিধাও রয়েছে। তবে কারাগারের ভেতরে বা বাইরে অতিরিক্ত কোনো বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। প্রত্যেক ১৫ দিন পর নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ থাকলেও, অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিবারের পরিবর্তে ম্যানেজার বা আইনজীবী সাক্ষাৎ করছেন।
যা বললেন জেল সুপার
কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী যারা ডিভিশন পেয়েছেন, তাঁরা তা পেয়েছেন। এর বাইরে কিছু বন্দি ডিভিশনের জন্য আবেদন করেছেন; আদালত যদি সিদ্ধান্ত দেয়, তবে তাঁরা তা পাবেন।” তিনি জানান, ভিআইপি বন্দিরা কারাগারের সাধারণ খাবারই গ্রহণ করছেন। তবে, যেকোনো ব্যক্তি যদি বাড়তি খাবার নিতে চান, তাহলে তাঁরা তা নিতে পারেন।
সুরাইয়া আক্তার আরও উল্লেখ করেন যে, বাহির থেকে তাঁদের বাসার রান্না করা কোনো খাবার গ্রহণের অনুমতি নেই। সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া সকলকে পৃথক কক্ষে রাখা হয়েছে। কারণ, সাধারণ সেলগুলোতে অন্য বন্দিদের সঙ্গে রাখলে তাঁদের জন্য সমস্যা হতে পারে। এর পাশাপাশি নিরাপত্তার স্বার্থে একই জায়গায় তাঁদের রাখা হয়নি।
Please Share This Post in Your Social Media

কারাগারে হাসিনা সরকারের ভিআইপি বন্দিদের বর্তমান অবস্থা

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে অনেক উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্বকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গণহত্যা এবং অন্যান্য অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ৬৬ জন ভিআইপি মর্যাদার ব্যক্তি গ্রেপ্তার করেছে। এই তালিকায় আছেন সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, এবং অন্যান্য সরকারি প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।
কারাগারে থাকা ভিআইপিরা
বুধবার (২ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত বিশেষ বন্দিদের সংখ্যা ৬৬ জন। এর মধ্যে ৩৭ জন ডিভিশন পেয়েছেন এবং তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বর্তমানে ডিভিশনপ্রাপ্ত বিশেষ বন্দিরা হলেন:
– দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব শাহ কামাল
– সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন
– সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান
– সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান
– এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান
– সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক
– সাবেক হুইপ আ স ম ফিরোজ
– সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক
– সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামছুল হক টুকু
– সাবেক উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়
– সাবেক সংসদ সদস্য আহম্মেদ হোসাইন
– সাবেক রিয়াল অ্যাডমিরাল এম সোহাইল
– সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি
– সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সোবহান গোলাপ
– হাজী মো. সেলিম
– সাবেক নৌপরিবহণমন্ত্রী শাজাহান খান
– সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু
– সাবেক আইজিপি একেএম শহীদুল হক
– চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন
– সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী
– সাবেক প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর
– সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী
– সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান চৌধুরী
– সাবেক বিচারপতি আবুল হোসেন মোহাম্মদ শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক
– সাবেক পুলিশ পরিদর্শক আরাফাত হোসেন
– সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন
– সাবেক সংসদ সদস্য শাহে আলম
– ডিএমপির সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া
– সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন
– সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম
– সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফি
– আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ
– কুষ্টিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জজ
– ডিআইজি মিজানুর রহমান
– পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম
– সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন
– যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান
এই বিশেষ বন্দিরা কারাগারে নিজেদের জন্য নির্ধারিত সুবিধা নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন।
ভিআইপি বন্দিদের খাবার ও সুবিধা
সকালে বিশেষ বন্দিরা রুটি ও সবজির সঙ্গে জেলি পান। সাধারণ বন্দিদের জন্য চায়ের ব্যবস্থা না থাকলেও ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের চা প্রদান করা হয়। সাধারণ বন্দিরা একবেলা মাছ বা মাংস পান, কিন্তু ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিরা দুই বেলা মাছ বা মাংস গ্রহণ করেন। তবে, খাবারের পরিমাণ সবার জন্য সমান।
সূত্র জানায়, ভিআইপি বন্দিরা কারাগারে কাজের লোকও পান, যারা তাদের জন্য সেবক হিসেবে কাজ করেন। এই সেবকরা ভিআইপি বন্দিদের কাপড় ধোয়া, খাবার সংগ্রহ করা এবং প্লেট ধোয়ার মতো আনুষঙ্গিক কাজ করে দেন।
তাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম
কারাগারে থাকা বিশেষ বন্দিরা সময় কাটানোর জন্য নানা কার্যক্রমে লিপ্ত থাকছেন। সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, সকালে ঘুম থেকে উঠেই কেউ কেউ নামাজ পড়েন, আবার কেউ দেরিতে ঘুম থেকে উঠছেন। অধিকাংশই নামাজের জন্য সময় বের করছেন। চা ও নাশতা খাওয়ার পর তাঁরা কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করেন, গল্প-গুজব করেন এবং পত্রিকা পড়েন। কিছু বন্দি কারাগারের লাইব্রেরি থেকে বইও নিয়ে পড়ছেন।
দুপুর ১২টার পর তাঁরা গোসলে যান। গোসল শেষে কেউ কোরআন তেলাওয়াত করেন এবং নামাজ পড়েন। বিকালে নির্ধারিত প্যালেসে হাঁটার সুযোগ পান।
গণ্যমান্য বন্দিদের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরতে গিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিরা খাট, চেয়ার এবং টেবিলের সুবিধা পান। কারাগারের লাইব্রেরিতে সকলের জন্য পত্রিকা পড়ার সুযোগ রয়েছে। তবে সাধারণ বন্দিরা কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে নিজ খরচে পত্রিকা রুমে নিয়ে পড়তে পারেন। কিন্তু ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের জন্য কারা কর্তৃপক্ষ পত্রিকা পড়ার সুযোগ প্রদান করে। তাঁরা টেলিভিশন দেখার সুবিধাও পান।
কারাসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভিআইপি বন্দিরা কারাগারে বিশেষ সুবিধা দাবি করলেও তা দেওয়া হচ্ছে না। তাঁদের জন্য যে সুবিধাগুলি বিধিমালা অনুযায়ী প্রাপ্য, সেগুলোই তাঁদের প্রদান করা হচ্ছে। বিধি অনুসারে, প্রতি ১৫ দিন পর নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে বন্দিদের দেখা করার সুযোগ থাকে। তবে বর্তমানে ভিআইপি বন্দিদের সাথে কোনও নিকটাত্মীয় সাক্ষাৎ করতে পারছেন না। এই সাক্ষাতের জন্য একজন ম্যানেজার টাইপের ব্যক্তি এসে তাঁদের সঙ্গে দেখা করছেন এবং মামলার খোঁজ-খবর রাখছেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, একজন বন্দি প্রতি ১০ দিন পর নির্ধারিত মোবাইল নম্বরে কারাগারের ভেতর থেকে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান, তবে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই সুযোগ এখনও ভিআইপি বন্দিদের মধ্যে কেউ পাননি।
বিশেষ সুবিধা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা
ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দিদের জন্য নির্ধারিত ঘরে খাট, চেয়ার-টেবিলের ব্যবস্থা রয়েছে। তারা লাইব্রেরি থেকে পত্রিকা পড়ার সুযোগ পান, এবং টেলিভিশন দেখার সুবিধাও রয়েছে। তবে কারাগারের ভেতরে বা বাইরে অতিরিক্ত কোনো বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। প্রত্যেক ১৫ দিন পর নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ থাকলেও, অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিবারের পরিবর্তে ম্যানেজার বা আইনজীবী সাক্ষাৎ করছেন।
যা বললেন জেল সুপার
কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী যারা ডিভিশন পেয়েছেন, তাঁরা তা পেয়েছেন। এর বাইরে কিছু বন্দি ডিভিশনের জন্য আবেদন করেছেন; আদালত যদি সিদ্ধান্ত দেয়, তবে তাঁরা তা পাবেন।” তিনি জানান, ভিআইপি বন্দিরা কারাগারের সাধারণ খাবারই গ্রহণ করছেন। তবে, যেকোনো ব্যক্তি যদি বাড়তি খাবার নিতে চান, তাহলে তাঁরা তা নিতে পারেন।
সুরাইয়া আক্তার আরও উল্লেখ করেন যে, বাহির থেকে তাঁদের বাসার রান্না করা কোনো খাবার গ্রহণের অনুমতি নেই। সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া সকলকে পৃথক কক্ষে রাখা হয়েছে। কারণ, সাধারণ সেলগুলোতে অন্য বন্দিদের সঙ্গে রাখলে তাঁদের জন্য সমস্যা হতে পারে। এর পাশাপাশি নিরাপত্তার স্বার্থে একই জায়গায় তাঁদের রাখা হয়নি।