প্রতি গিগাবাইট মোবাইল ইন্টারনেটের গড় ব্যয় ৪ টাকা, বিক্রয় ২৫-৩৫ টাকা

- Update Time : ০৫:১৯:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / ৩০৪ Time View

মোবাইল ইন্টারনেটের প্রতি গিগাবাইটে প্রাথমিক গড় ব্যয় প্রায় ৪ টাকা, অথচ তা বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩৫ টাকায়। দেশের প্রধান সেলফোন অপারেটররা—গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক—মোবাইল ইন্টারনেটের ডাটা বিক্রি থেকে উল্লেখযোগ্য মুনাফা করছে। আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতি গিগাবাইট ডাটা সরবরাহে ব্যয় হয় ২.২৫ থেকে ৫.২৫ টাকা পর্যন্ত, গড় ব্যয় ৪ টাকার মতো। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের ব্যয় ২ টাকা ২৬ পয়সা, আর রবির ব্যয় ৫ টাকা ২৮ পয়সা। যদিও বাংলালিংকের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ করা হয়নি, তবে খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিষ্ঠানটির ব্যয় রবির সমান।
অপারেটরদের দাবি, ৪ টাকার যে হিসাব দেওয়া হচ্ছে, তা আসলে তাদের প্রকৃত ব্যয়কে পুরোপুরি তুলে ধরে না। এর সঙ্গে রয়েছে রেগুলেটরি ফি, সরকারকে প্রদেয় ভ্যাট, ট্যাক্স, স্পেকট্রাম ক্রয় খরচ, সেবা বিক্রয়, মার্কেটিং, বিজ্ঞাপন খরচ, বিটিআরসির সঙ্গে রেভিনিউ শেয়ারিং এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলে প্রদত্ত অর্থ। সব মিলিয়ে ইন্টারনেট সরবরাহের প্রকৃত ব্যয় অনেক বেশি হয় বলে তারা দাবি করছে।
গত কয়েক বছরে দেশে ইন্টারনেট সেবার সম্প্রসারণে আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) থেকে কেনা ব্যান্ডউইডথের মূল্য ধারাবাহিকভাবে কমেছে, যার ফলে ডাটার ব্যবহারও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। পাশাপাশি ব্রডব্যান্ড সংযোগের জন্য আইএসপি অপারেটরদের গ্রাহকসংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও বেশিরভাগ গ্রাহক এখনো সেলফোন অপারেটরদের ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করছে। ফোরজি প্রযুক্তির মাধ্যমে অপারেটরদের ডাটাভিত্তিক সেবার পরিসর আরও বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে। যদিও অপারেটররা এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়িক মুনাফা অর্জন করছে, তবুও গ্রাহকরা মনে করছেন তারা পর্যাপ্ত সেবা পাচ্ছেন না এবং বঞ্চিত হচ্ছেন।
মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের ২০২৩ সালের আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তাদের নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনায় সাত ধরনের ব্যয় হয়। এর মধ্যে ট্রাফিক চার্জ, বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও সেবা খাতে ব্যয়, বেতন-ভাতা, সেবা ব্যবস্থাপনা, গাড়ি ব্যবস্থাপনা, অন্যান্য কার্যক্রম ও ব্যবস্থাপনা, তেল ও জ্বালানি খরচ অন্তর্ভুক্ত। মূলত ইন্টারনেট ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত এই সেবাগুলোর মোট খরচ ছিল ৩,১০৪ কোটি ৭ লাখ টাকা।
গ্রামীণফোনের ২০২৩ সালের আর্থিক বিবরণীতে দেখা যায়, নেটওয়ার্ক ট্রাফিক চার্জ বাবদ ব্যয় হয়েছে ৮৩০ কোটি ১৩ লাখ টাকা। বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও সেবা খাতে ব্যয় হয়েছে ১৬৫ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। বেতন-ভাতায় খরচ হয়েছে ৮৪৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা, সেবা ব্যবস্থাপনায় ২৯৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, গাড়ি ব্যবস্থাপনায় ৩২ কোটি ১০ লাখ টাকা, অন্যান্য কার্যক্রম ও ব্যবস্থাপনায় ২৯৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা এবং জ্বালানির জন্য খরচ হয়েছে ৬৩১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
পুরো বছরে কোম্পানিটি সাবস্ক্রিপশন ও ট্রাফিক রেভিনিউ থেকে আয় করেছে ১৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। এই আয়ের মধ্যে ভয়েস, ডাটা এবং মেসেজিং সেবার মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে এই অর্থ আদায় করা হয়েছে। এর বিপরীতে কোম্পানিটির মোট খরচ ছিল ৩ হাজার ১০৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। ১৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকার মধ্যে ডাটা বিক্রি থেকে আয় ছিল ৪ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা, এবং নন-ডাটা রেভিনিউ বাবদ আয় ছিল ১১ হাজার ৯২ কোটি টাকা।
গ্রামীণফোনের মোট আয়ের ৩০.২১ শতাংশ ডাটা রেভিনিউ থেকে এসেছে। কোম্পানিটির মোট ব্যয়ের ২৯ শতাংশ ব্যয় করা হয়েছে ডাটা সেবায়, যা ৯৩১ কোটি ৪১ লাখ টাকা। বর্তমানে গ্রামীণফোনের ৪ কোটি ৬৬ লাখ গ্রাহক রয়েছে, প্রতিটি গ্রাহক মাসে গড়ে ৭.৪ জিবি ডাটা ব্যবহার করেন। এর ফলে, এক বছরে মোট ৪১৩ কোটি ৮০ লাখ ৮০ হাজার জিবি ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়। প্রতি গিগাবাইট ডাটার মূল্য ২ টাকা ২৬ পয়সা।
সেলফোন অপারেটররা আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) থেকে প্রতি মেগাবিট পার সেকেন্ড (এমবিপিএস) ব্যান্ডউইডথ ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় কেনে। অপারেটররা এই স্পিডের ক্যাপাসিটি আকারে গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করে। একটি এমবিপিএস গতির সংযোগে মাস শেষে ডাটা ব্যবহারের পরিমাণ সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫৯২ গিগাবাইট (জিবি) হতে পারে। এ হিসাবে, প্রতি গিগাবাইট ডাটা কেনার জন্য অপারেটরদের ব্যয় হয় ৫-৬ পয়সা। সংযোগ বিচ্ছিন্নতা ও অন্যান্য অপচয় সমন্বয়ের পর, প্রতি গিগাবাইট ডাটা কেনার জন্য অপারেটরদের ব্যয় দাঁড়ায় ৭-৯ পয়সা, এর সঙ্গে অন্যান্য খরচ যুক্ত হয়।
আরেক মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেডের আর্থিক বিবরণী অনুসারে, কোম্পানিটির বিভিন্ন খাতে ব্যয় বিশ্লেষণ করা হয়েছে। কোম্পানিটি বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও সেবা খাতে ২৬৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, ইন্টারকানেকশন ও রোমিং চার্জে ৪৮৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা, নেটওয়ার্ক অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণে ১ হাজার ৭৮৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা, বেতন-ভাতায় ৪৫৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, গাড়ি ব্যবস্থাপনায় ২২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণে ১০২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা এবং ভবন ব্যবস্থাপনায় ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিটি মোট ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকা ব্যয় করেছে।
রবি আজিয়াটা লিমিটেড ২০২৩ সালে গ্রাহকদের কাছ থেকে মোট ৯ হাজার ২১৭ কোটি টাকা আয় করেছে, যার মধ্যে ডাটা রেভিনিউ বাবদ আয় হয়েছে ৩ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। বাকি ৫ হাজার ২২৭ কোটি টাকা এসেছে নন-ডাটা সেবার মাধ্যমে, যেমন ভয়েস কল, মেসেজিং ইত্যাদি। এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কোম্পানির মোট আয়ের ৪৩.২৮ শতাংশ ডাটাভিত্তিক সেবা থেকে এসেছে। মোট ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকার মধ্যে ১ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকা ডাটাভিত্তিক সেবায় ব্যয় করা হয়েছে।
২০২৩ সালে রবি আজিয়াটা ২৫৫ কোটি ৫৫ লাখ ২০ হাজার জিবি ডাটা গ্রাহকদের সরবরাহ করেছে, যার ফলে প্রতি গিগাবাইট ডাটার প্রত্যক্ষ ব্যয় দাঁড়ায় ৫ টাকা ২৮ পয়সা।
এই দুই কোম্পানির ব্যয়ের বড় একটি অংশ সরকারকে দিতে হয়। এতে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, সিম কার্ড প্রতি ৩০০ টাকা কর, ৪৫ শতাংশ করপোরেট কর, টেলিকম পণ্য আমদানিতে ৫ শতাংশ শুল্ক অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া, বিটিআরসির কাছ থেকে স্পেকট্রাম বরাদ্দ নিতে হয়, যা ২০২২ সালের ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত সর্বশেষ নিলামে ১০ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকায় বরাদ্দ দেওয়া হয়। বিটিআরসি এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলে অর্থ প্রদানও অপারেটরদের জন্য বাধ্যতামূলক
বাংলালিংকের ২০২৩ সালের আয় ছিল ৬ হাজার ৫৪ কোটি টাকা, এর মধ্যে ডাটা রেভিনিউ ছিল ২ হাজার ১৭১ কোটি টাকা এবং নন-ডাটা খাতে আয় হয়েছে ৩ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা। বর্তমানে বাংলালিংকের ডাটা গ্রাহক সংখ্যা ২ কোটি ৬২ লাখ। এই বছর অপারেটরটি ১৬৬ কোটি ৯৫ লাখ জিবি ডাটা বিক্রি করেছে।
ব্যয় ও ইন্টারনেটের দাম নির্ধারণ বিষয়ে জানতে চাইলে রবি আজিয়াটা লিমিটেডের মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন ম্যানেজার শামীম আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এ ধরনের অযৌক্তিক প্রশ্নে রবি কোনো মন্তব্য করবে না।’
প্রতি গিগাবাইট ডাটার ব্যয়ের সঙ্গে সেলফোন অপারেটরদের বিক্রয়মূল্যের ব্যবধান সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. বিএম মইনুল হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, “আমাদের এ বিষয়গুলো জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। ডাটা সরবরাহে অপারেটররা গ্রাহকের কাছ থেকে যে মূল্য গ্রহণ করে তা তাদের ব্যয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া উচিত। তবে, এই মূল্য নির্ধারণ অবশ্যই যৌক্তিক হতে হবে। এজন্য অপারেটরদের তাদের ব্যয়ের তথ্য জনগণের কাছে প্রকাশ করতে হবে। ব্যবসা করতে বিনিয়োগকারীরা আসবেন, কিন্তু সেখানে কোনো লুকোচুরি থাকলে চলবে না। অপারেটরদের ব্যয়ের তথ্য প্রকাশ করা উচিত এবং আমাদের নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে বিষয়টি পরিষ্কার করা দরকার। প্রয়োজনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিজেই দাম নির্ধারণ করতে পারে।”
গত এক বছরে সেলফোন টকটাইম ব্যবহারে কমেছে, কারণ মানুষ এখন ডাটাভিত্তিক যোগাযোগ অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করছে। মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, স্কাইপি, ইমো, জুম, মিট, লিংকডইনের মতো ডিজিটাল মাধ্যমগুলো ব্যবহারকারীদের জন্য সহজ যোগাযোগের সুযোগ দিয়েছে। টেক্সট, ভয়েস কল, ছবি-ভিডিও আদান-প্রদান এসব অ্যাপে সহজেই করা যায় এবং এইসব এনক্রিপ্টেড অ্যাপে অর্থেরও সাশ্রয় হয়। ফলে টকটাইম ও এসএমএসের তুলনায় এসব অ্যাপকেই ব্যবহারকারীরা বেশি পছন্দ করছে।
বিডিজবস ডটকমের সিইও ও প্রতিষ্ঠাতা এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ফাহিম মাশরুর বণিক বার্তাকে জানান, “মোবাইল ইন্টারনেট ডাটার মূল্য নিয়ে আমরা ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি এবং মন্ত্রণালয়কে একটি অনানুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিয়েছি। আমরা এ খাতকে কীভাবে আরো ভালোভাবে ঢেলে সাজানো যায়, সে বিষয়ে কথা বলছি। বর্তমানে কোম্পানিগুলো উচ্চমূল্য নির্ধারণের মাধ্যমে অতিরিক্ত মুনাফা আদায় করছে। এই মূল্য কমিয়ে আনতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “অপারেটররা শহরকেন্দ্রিক মনোযোগ বেশি দেয় এবং গ্রাম অঞ্চলে তাদের মনোযোগ কম। এর ফলে গ্রামাঞ্চলে ফোরজি সেবা পর্যাপ্ত নয়। এই অবস্থায় প্রচুর ডাটা অব্যবহৃত থাকে, যা গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া অতিরিক্ত অর্থে পূরণ করা হয়।”
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিটিআরসি) এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে অপারেটররা ১৫ হাজার ৫৩৩ কোটি মিনিট ‘অন-নেট কল মিনিট’ বিক্রি করেছে। এর আগের বছর ১৬ হাজার ৩৭৪ কোটি মিনিট বিক্রি হয়েছিল। অর্থাৎ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৮৪১ কোটি ৫১ লাখ মিনিট বেশি বিক্রি হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে গ্রাহকদের ব্যবহৃত টকটাইম ছিল ১৬ হাজার ৭৯৯ কোটি মিনিট। এই হিসেবে ২০২১-২২ অর্থবছরে টকটাইম ব্যবহার কমেছে ৪২৪ কোটি ৩ লাখ মিনিট।
অন্যদিকে এসএমএস ব্যবহারে কমেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণভাবে ১ হাজার ৮৯০ কোটি ৬৬ লাখ এসএমএস ব্যবহৃত হয়েছে, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরে ছিল ২ হাজার ৫৯৯ কোটি ৬২ লাখ। এক অর্থবছরের ব্যবধানে ৭০৮ কোটি ৯৫ লাখ এসএমএস কমেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে এই পরিমাণ আরও বেশি ছিল—৩ হাজার ৩৯ কোটি ৫৮ লাখ এসএমএস আদান-প্রদান হয়েছে, যা পরবর্তী বছর তুলনায় ৪৩৯ কোটি ৯৫ লাখ বেশি এসএমএস।
এ তিন অর্থবছরে ইন্টারনেট গ্রাহক বেড়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৯৪ লাখ, যা ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ১২ কোটি ৬২ লাখ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ছিল ১২ কোটি ৯ লাখ।
সার্বিক বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, “টেলিকম অপারেটরদের ডাটা প্রাইস এবং টকটাইম প্রাইস নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে। বেশি দামে ইন্টারনেট ক্রয় নিয়ে আমাদের সাধারণ গ্রাহকরাও বিরক্ত। আমরা শিগগিরই ইন্টারনেটের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ নিয়ে কাজ শুরু করব।”
সুত্রঃ বণিক বার্তা
Please Share This Post in Your Social Media

প্রতি গিগাবাইট মোবাইল ইন্টারনেটের গড় ব্যয় ৪ টাকা, বিক্রয় ২৫-৩৫ টাকা


মোবাইল ইন্টারনেটের প্রতি গিগাবাইটে প্রাথমিক গড় ব্যয় প্রায় ৪ টাকা, অথচ তা বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩৫ টাকায়। দেশের প্রধান সেলফোন অপারেটররা—গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক—মোবাইল ইন্টারনেটের ডাটা বিক্রি থেকে উল্লেখযোগ্য মুনাফা করছে। আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রতি গিগাবাইট ডাটা সরবরাহে ব্যয় হয় ২.২৫ থেকে ৫.২৫ টাকা পর্যন্ত, গড় ব্যয় ৪ টাকার মতো। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের ব্যয় ২ টাকা ২৬ পয়সা, আর রবির ব্যয় ৫ টাকা ২৮ পয়সা। যদিও বাংলালিংকের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ করা হয়নি, তবে খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রতিষ্ঠানটির ব্যয় রবির সমান।
অপারেটরদের দাবি, ৪ টাকার যে হিসাব দেওয়া হচ্ছে, তা আসলে তাদের প্রকৃত ব্যয়কে পুরোপুরি তুলে ধরে না। এর সঙ্গে রয়েছে রেগুলেটরি ফি, সরকারকে প্রদেয় ভ্যাট, ট্যাক্স, স্পেকট্রাম ক্রয় খরচ, সেবা বিক্রয়, মার্কেটিং, বিজ্ঞাপন খরচ, বিটিআরসির সঙ্গে রেভিনিউ শেয়ারিং এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলে প্রদত্ত অর্থ। সব মিলিয়ে ইন্টারনেট সরবরাহের প্রকৃত ব্যয় অনেক বেশি হয় বলে তারা দাবি করছে।
গত কয়েক বছরে দেশে ইন্টারনেট সেবার সম্প্রসারণে আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) থেকে কেনা ব্যান্ডউইডথের মূল্য ধারাবাহিকভাবে কমেছে, যার ফলে ডাটার ব্যবহারও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। পাশাপাশি ব্রডব্যান্ড সংযোগের জন্য আইএসপি অপারেটরদের গ্রাহকসংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও বেশিরভাগ গ্রাহক এখনো সেলফোন অপারেটরদের ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করছে। ফোরজি প্রযুক্তির মাধ্যমে অপারেটরদের ডাটাভিত্তিক সেবার পরিসর আরও বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে। যদিও অপারেটররা এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়িক মুনাফা অর্জন করছে, তবুও গ্রাহকরা মনে করছেন তারা পর্যাপ্ত সেবা পাচ্ছেন না এবং বঞ্চিত হচ্ছেন।
মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের ২০২৩ সালের আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তাদের নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনায় সাত ধরনের ব্যয় হয়। এর মধ্যে ট্রাফিক চার্জ, বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও সেবা খাতে ব্যয়, বেতন-ভাতা, সেবা ব্যবস্থাপনা, গাড়ি ব্যবস্থাপনা, অন্যান্য কার্যক্রম ও ব্যবস্থাপনা, তেল ও জ্বালানি খরচ অন্তর্ভুক্ত। মূলত ইন্টারনেট ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত এই সেবাগুলোর মোট খরচ ছিল ৩,১০৪ কোটি ৭ লাখ টাকা।
গ্রামীণফোনের ২০২৩ সালের আর্থিক বিবরণীতে দেখা যায়, নেটওয়ার্ক ট্রাফিক চার্জ বাবদ ব্যয় হয়েছে ৮৩০ কোটি ১৩ লাখ টাকা। বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও সেবা খাতে ব্যয় হয়েছে ১৬৫ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। বেতন-ভাতায় খরচ হয়েছে ৮৪৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা, সেবা ব্যবস্থাপনায় ২৯৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, গাড়ি ব্যবস্থাপনায় ৩২ কোটি ১০ লাখ টাকা, অন্যান্য কার্যক্রম ও ব্যবস্থাপনায় ২৯৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা এবং জ্বালানির জন্য খরচ হয়েছে ৬৩১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
পুরো বছরে কোম্পানিটি সাবস্ক্রিপশন ও ট্রাফিক রেভিনিউ থেকে আয় করেছে ১৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। এই আয়ের মধ্যে ভয়েস, ডাটা এবং মেসেজিং সেবার মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে এই অর্থ আদায় করা হয়েছে। এর বিপরীতে কোম্পানিটির মোট খরচ ছিল ৩ হাজার ১০৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। ১৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকার মধ্যে ডাটা বিক্রি থেকে আয় ছিল ৪ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা, এবং নন-ডাটা রেভিনিউ বাবদ আয় ছিল ১১ হাজার ৯২ কোটি টাকা।
গ্রামীণফোনের মোট আয়ের ৩০.২১ শতাংশ ডাটা রেভিনিউ থেকে এসেছে। কোম্পানিটির মোট ব্যয়ের ২৯ শতাংশ ব্যয় করা হয়েছে ডাটা সেবায়, যা ৯৩১ কোটি ৪১ লাখ টাকা। বর্তমানে গ্রামীণফোনের ৪ কোটি ৬৬ লাখ গ্রাহক রয়েছে, প্রতিটি গ্রাহক মাসে গড়ে ৭.৪ জিবি ডাটা ব্যবহার করেন। এর ফলে, এক বছরে মোট ৪১৩ কোটি ৮০ লাখ ৮০ হাজার জিবি ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়। প্রতি গিগাবাইট ডাটার মূল্য ২ টাকা ২৬ পয়সা।
সেলফোন অপারেটররা আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) থেকে প্রতি মেগাবিট পার সেকেন্ড (এমবিপিএস) ব্যান্ডউইডথ ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় কেনে। অপারেটররা এই স্পিডের ক্যাপাসিটি আকারে গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করে। একটি এমবিপিএস গতির সংযোগে মাস শেষে ডাটা ব্যবহারের পরিমাণ সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫৯২ গিগাবাইট (জিবি) হতে পারে। এ হিসাবে, প্রতি গিগাবাইট ডাটা কেনার জন্য অপারেটরদের ব্যয় হয় ৫-৬ পয়সা। সংযোগ বিচ্ছিন্নতা ও অন্যান্য অপচয় সমন্বয়ের পর, প্রতি গিগাবাইট ডাটা কেনার জন্য অপারেটরদের ব্যয় দাঁড়ায় ৭-৯ পয়সা, এর সঙ্গে অন্যান্য খরচ যুক্ত হয়।
আরেক মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়াটা লিমিটেডের আর্থিক বিবরণী অনুসারে, কোম্পানিটির বিভিন্ন খাতে ব্যয় বিশ্লেষণ করা হয়েছে। কোম্পানিটি বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও সেবা খাতে ২৬৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা, ইন্টারকানেকশন ও রোমিং চার্জে ৪৮৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা, নেটওয়ার্ক অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণে ১ হাজার ৭৮৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা, বেতন-ভাতায় ৪৫৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, গাড়ি ব্যবস্থাপনায় ২২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার রক্ষণাবেক্ষণে ১০২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা এবং ভবন ব্যবস্থাপনায় ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিটি মোট ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকা ব্যয় করেছে।
রবি আজিয়াটা লিমিটেড ২০২৩ সালে গ্রাহকদের কাছ থেকে মোট ৯ হাজার ২১৭ কোটি টাকা আয় করেছে, যার মধ্যে ডাটা রেভিনিউ বাবদ আয় হয়েছে ৩ হাজার ৯৯০ কোটি টাকা। বাকি ৫ হাজার ২২৭ কোটি টাকা এসেছে নন-ডাটা সেবার মাধ্যমে, যেমন ভয়েস কল, মেসেজিং ইত্যাদি। এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কোম্পানির মোট আয়ের ৪৩.২৮ শতাংশ ডাটাভিত্তিক সেবা থেকে এসেছে। মোট ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকার মধ্যে ১ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকা ডাটাভিত্তিক সেবায় ব্যয় করা হয়েছে।
২০২৩ সালে রবি আজিয়াটা ২৫৫ কোটি ৫৫ লাখ ২০ হাজার জিবি ডাটা গ্রাহকদের সরবরাহ করেছে, যার ফলে প্রতি গিগাবাইট ডাটার প্রত্যক্ষ ব্যয় দাঁড়ায় ৫ টাকা ২৮ পয়সা।
এই দুই কোম্পানির ব্যয়ের বড় একটি অংশ সরকারকে দিতে হয়। এতে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, সিম কার্ড প্রতি ৩০০ টাকা কর, ৪৫ শতাংশ করপোরেট কর, টেলিকম পণ্য আমদানিতে ৫ শতাংশ শুল্ক অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া, বিটিআরসির কাছ থেকে স্পেকট্রাম বরাদ্দ নিতে হয়, যা ২০২২ সালের ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত সর্বশেষ নিলামে ১০ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকায় বরাদ্দ দেওয়া হয়। বিটিআরসি এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলে অর্থ প্রদানও অপারেটরদের জন্য বাধ্যতামূলক
বাংলালিংকের ২০২৩ সালের আয় ছিল ৬ হাজার ৫৪ কোটি টাকা, এর মধ্যে ডাটা রেভিনিউ ছিল ২ হাজার ১৭১ কোটি টাকা এবং নন-ডাটা খাতে আয় হয়েছে ৩ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা। বর্তমানে বাংলালিংকের ডাটা গ্রাহক সংখ্যা ২ কোটি ৬২ লাখ। এই বছর অপারেটরটি ১৬৬ কোটি ৯৫ লাখ জিবি ডাটা বিক্রি করেছে।
ব্যয় ও ইন্টারনেটের দাম নির্ধারণ বিষয়ে জানতে চাইলে রবি আজিয়াটা লিমিটেডের মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন ম্যানেজার শামীম আহমেদ বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এ ধরনের অযৌক্তিক প্রশ্নে রবি কোনো মন্তব্য করবে না।’
প্রতি গিগাবাইট ডাটার ব্যয়ের সঙ্গে সেলফোন অপারেটরদের বিক্রয়মূল্যের ব্যবধান সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. বিএম মইনুল হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, “আমাদের এ বিষয়গুলো জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। ডাটা সরবরাহে অপারেটররা গ্রাহকের কাছ থেকে যে মূল্য গ্রহণ করে তা তাদের ব্যয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া উচিত। তবে, এই মূল্য নির্ধারণ অবশ্যই যৌক্তিক হতে হবে। এজন্য অপারেটরদের তাদের ব্যয়ের তথ্য জনগণের কাছে প্রকাশ করতে হবে। ব্যবসা করতে বিনিয়োগকারীরা আসবেন, কিন্তু সেখানে কোনো লুকোচুরি থাকলে চলবে না। অপারেটরদের ব্যয়ের তথ্য প্রকাশ করা উচিত এবং আমাদের নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে বিষয়টি পরিষ্কার করা দরকার। প্রয়োজনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিজেই দাম নির্ধারণ করতে পারে।”
গত এক বছরে সেলফোন টকটাইম ব্যবহারে কমেছে, কারণ মানুষ এখন ডাটাভিত্তিক যোগাযোগ অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করছে। মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, স্কাইপি, ইমো, জুম, মিট, লিংকডইনের মতো ডিজিটাল মাধ্যমগুলো ব্যবহারকারীদের জন্য সহজ যোগাযোগের সুযোগ দিয়েছে। টেক্সট, ভয়েস কল, ছবি-ভিডিও আদান-প্রদান এসব অ্যাপে সহজেই করা যায় এবং এইসব এনক্রিপ্টেড অ্যাপে অর্থেরও সাশ্রয় হয়। ফলে টকটাইম ও এসএমএসের তুলনায় এসব অ্যাপকেই ব্যবহারকারীরা বেশি পছন্দ করছে।
বিডিজবস ডটকমের সিইও ও প্রতিষ্ঠাতা এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ফাহিম মাশরুর বণিক বার্তাকে জানান, “মোবাইল ইন্টারনেট ডাটার মূল্য নিয়ে আমরা ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি এবং মন্ত্রণালয়কে একটি অনানুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিয়েছি। আমরা এ খাতকে কীভাবে আরো ভালোভাবে ঢেলে সাজানো যায়, সে বিষয়ে কথা বলছি। বর্তমানে কোম্পানিগুলো উচ্চমূল্য নির্ধারণের মাধ্যমে অতিরিক্ত মুনাফা আদায় করছে। এই মূল্য কমিয়ে আনতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “অপারেটররা শহরকেন্দ্রিক মনোযোগ বেশি দেয় এবং গ্রাম অঞ্চলে তাদের মনোযোগ কম। এর ফলে গ্রামাঞ্চলে ফোরজি সেবা পর্যাপ্ত নয়। এই অবস্থায় প্রচুর ডাটা অব্যবহৃত থাকে, যা গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া অতিরিক্ত অর্থে পূরণ করা হয়।”
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিটিআরসি) এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে অপারেটররা ১৫ হাজার ৫৩৩ কোটি মিনিট ‘অন-নেট কল মিনিট’ বিক্রি করেছে। এর আগের বছর ১৬ হাজার ৩৭৪ কোটি মিনিট বিক্রি হয়েছিল। অর্থাৎ, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৮৪১ কোটি ৫১ লাখ মিনিট বেশি বিক্রি হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে গ্রাহকদের ব্যবহৃত টকটাইম ছিল ১৬ হাজার ৭৯৯ কোটি মিনিট। এই হিসেবে ২০২১-২২ অর্থবছরে টকটাইম ব্যবহার কমেছে ৪২৪ কোটি ৩ লাখ মিনিট।
অন্যদিকে এসএমএস ব্যবহারে কমেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণভাবে ১ হাজার ৮৯০ কোটি ৬৬ লাখ এসএমএস ব্যবহৃত হয়েছে, যা পূর্ববর্তী অর্থবছরে ছিল ২ হাজার ৫৯৯ কোটি ৬২ লাখ। এক অর্থবছরের ব্যবধানে ৭০৮ কোটি ৯৫ লাখ এসএমএস কমেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে এই পরিমাণ আরও বেশি ছিল—৩ হাজার ৩৯ কোটি ৫৮ লাখ এসএমএস আদান-প্রদান হয়েছে, যা পরবর্তী বছর তুলনায় ৪৩৯ কোটি ৯৫ লাখ বেশি এসএমএস।
এ তিন অর্থবছরে ইন্টারনেট গ্রাহক বেড়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৯৪ লাখ, যা ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ১২ কোটি ৬২ লাখ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ছিল ১২ কোটি ৯ লাখ।
সার্বিক বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, “টেলিকম অপারেটরদের ডাটা প্রাইস এবং টকটাইম প্রাইস নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চলছে। বেশি দামে ইন্টারনেট ক্রয় নিয়ে আমাদের সাধারণ গ্রাহকরাও বিরক্ত। আমরা শিগগিরই ইন্টারনেটের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ নিয়ে কাজ শুরু করব।”
সুত্রঃ বণিক বার্তা