সময়: বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

ভিভিআইপি-ভিআইপি লাগেজ স্ক্রিনিংয়ে বাড়তি নজরদারি

ডিজিটাল ডেস্ক
  • Update Time : ০৬:৫০:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫
  • / ৭২ Time View

3fccd30749a8c84d95a220b1dec227fc 6862ea1d9cc7d

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

3fccd30749a8c84d95a220b1dec227fc 6862ea1d9cc7d

 

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে ছয়টি অতিরিক্ত ও কৌশলগত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ। দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক প্রবেশদ্বার হিসেবে এই বিমানবন্দরকে সর্বোচ্চ নিরাপদ রাখতে এবং যাত্রীসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নেওয়া হয়েছে এসব কঠোর পদক্ষেপ। বিশেষত, ভিভিআইপি ও ভিআইপি শ্রেণির যাত্রীদের ব্যাগেজ স্ক্রিনিংয়ে এবার থেকে অধিকতর মনোযোগ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

সর্বশেষ নিরাপত্তা পর্যালোচনায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সম্প্রতি একটি গোপন নিরাপত্তা মূল্যায়ন সভায় সিদ্ধান্ত হয়, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোথাও যেন কোনো ফাঁক না থাকে। অতীতের কিছু ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রোটোকলধারী যাত্রীদের ব্যাগেজ স্ক্রিনিংয়ে কিছুটা শিথিলতা ছিল। আর সেই জায়গাতেই বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

বিশেষ করে যেসব যাত্রী রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিআইপি) হিসেবে বিবেচিত, তাদের ব্যাগ স্ক্যানিং আগের তুলনায় আরও বেশি কঠোরভাবে সম্পন্ন করা হবে। এর ফলে প্রোটোকলের আওতায় থাকলেও কেউ যাতে নিয়মের বাইরে কোনো কিছু বহন করতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করা হবে।

গৃহীত ছয়টি বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা:

১. ভিভিআইপি

ভিআইপি ব্যাগ স্ক্রিনিংয়ে অধিক মনোযোগ বিশেষ নজরদারি:
এখন থেকে বিশেষ শ্রেণির যাত্রীরাও হবেন বাড়তি নজরদারির আওতায়। প্রোটোকল ছাড়পত্র থাকলেও ব্যাগ স্ক্যানিং হবে পূর্ণাঙ্গ ও বিস্তারিতভাবে।

  1. এভিয়েশন সিকিউরিটি (AVSEC) সদস্যদের নিয়মিত সচেতনতামূলক ব্রিফিং নির্দেশনা প্রদান:
    নিরাপত্তা সদস্যদের সতর্কতা, পেশাদারিত্ব এবং নিয়মিত আপডেট থাকা নিশ্চিত করতে নিয়মিতভাবে তাদের ব্রিফিং ও ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে।
  2. সিসিটিভি মনিটরিং টিমকে বিশেষ নজরদারির নির্দেশনা:
    বিমানবন্দরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে থাকা ক্যামেরাগুলোর লাইভ ফিড সার্বক্ষণিক মনিটর করতে আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে। সন্দেহজনক কোনো আচরণ বা ব্যাগেজ চলাচল মুহূর্তেই চিহ্নিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
  3. হাই রিস্কব্যাগের ক্ষেত্রে স্ক্যানিংয়ের পর বাধ্যতামূলক ম্যানুয়াল তল্লাশি:
    এক্স-রে বা মেটাল ডিটেক্টরে সন্দেহজনক কিছু ধরা পড়লে সেই ব্যাগগুলো হাত দিয়ে খোলাসা করে তল্লাশি করা হবে। এই ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
  4. অস্ত্র বহনের অনুমতি রেকর্ড বাধ্যতামূলক:
    কোনো ব্যক্তি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে চাইলে তার অবশ্যই পূর্বানুমতি থাকতে হবে এবং সেটির লিখিত নথি বিমানবন্দর নিরাপত্তা শাখায় সংরক্ষিত থাকবে।
  5. সিকিউরিটি ব্রিচ ঘটলে তাৎক্ষণিক তদন্ত ব্যবস্থা:
    নিরাপত্তা ভাঙার যেকোনো ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সমন্বয়ে দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

একটুও শিথিলতা নয়’—সতর্কবার্তা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের

এনিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে অবস্থান একদমই পরিষ্কার—এখানে কোনো শিথিলতা চলবে না। ভিভিআইপি হোক বা সাধারণ যাত্রী—নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবার জন্য একই নিয়ম প্রযোজ্য। প্রত্যেকটি স্তরে তদারকি আরও জোরদার করা হয়েছে।”

বিশ্বমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে শৃঙ্খলা ও নিরপেক্ষতা সবচেয়ে বড় উপাদান। ভিভিআইপি বা প্রটোকলধারী যাত্রীরাও যেন নিরাপত্তার বাইরে না পড়েন, সেই চেষ্টাই করছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আরও বেশি নিরাপদ হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশের ভাবমূর্তি রক্ষা ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত হতে হলে এমন কঠোর, বাস্তবমুখী পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Please Share This Post in Your Social Media

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

ভিভিআইপি-ভিআইপি লাগেজ স্ক্রিনিংয়ে বাড়তি নজরদারি

Update Time : ০৬:৫০:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫
শেয়ার করুনঃ
Pin Share

3fccd30749a8c84d95a220b1dec227fc 6862ea1d9cc7d

 

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে ছয়টি অতিরিক্ত ও কৌশলগত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ। দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক প্রবেশদ্বার হিসেবে এই বিমানবন্দরকে সর্বোচ্চ নিরাপদ রাখতে এবং যাত্রীসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নেওয়া হয়েছে এসব কঠোর পদক্ষেপ। বিশেষত, ভিভিআইপি ও ভিআইপি শ্রেণির যাত্রীদের ব্যাগেজ স্ক্রিনিংয়ে এবার থেকে অধিকতর মনোযোগ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

সর্বশেষ নিরাপত্তা পর্যালোচনায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সম্প্রতি একটি গোপন নিরাপত্তা মূল্যায়ন সভায় সিদ্ধান্ত হয়, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোথাও যেন কোনো ফাঁক না থাকে। অতীতের কিছু ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, প্রোটোকলধারী যাত্রীদের ব্যাগেজ স্ক্রিনিংয়ে কিছুটা শিথিলতা ছিল। আর সেই জায়গাতেই বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

বিশেষ করে যেসব যাত্রী রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিভিআইপি) বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিআইপি) হিসেবে বিবেচিত, তাদের ব্যাগ স্ক্যানিং আগের তুলনায় আরও বেশি কঠোরভাবে সম্পন্ন করা হবে। এর ফলে প্রোটোকলের আওতায় থাকলেও কেউ যাতে নিয়মের বাইরে কোনো কিছু বহন করতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করা হবে।

গৃহীত ছয়টি বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা:

১. ভিভিআইপি

ভিআইপি ব্যাগ স্ক্রিনিংয়ে অধিক মনোযোগ বিশেষ নজরদারি:
এখন থেকে বিশেষ শ্রেণির যাত্রীরাও হবেন বাড়তি নজরদারির আওতায়। প্রোটোকল ছাড়পত্র থাকলেও ব্যাগ স্ক্যানিং হবে পূর্ণাঙ্গ ও বিস্তারিতভাবে।

  1. এভিয়েশন সিকিউরিটি (AVSEC) সদস্যদের নিয়মিত সচেতনতামূলক ব্রিফিং নির্দেশনা প্রদান:
    নিরাপত্তা সদস্যদের সতর্কতা, পেশাদারিত্ব এবং নিয়মিত আপডেট থাকা নিশ্চিত করতে নিয়মিতভাবে তাদের ব্রিফিং ও ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে।
  2. সিসিটিভি মনিটরিং টিমকে বিশেষ নজরদারির নির্দেশনা:
    বিমানবন্দরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে থাকা ক্যামেরাগুলোর লাইভ ফিড সার্বক্ষণিক মনিটর করতে আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে। সন্দেহজনক কোনো আচরণ বা ব্যাগেজ চলাচল মুহূর্তেই চিহ্নিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
  3. হাই রিস্কব্যাগের ক্ষেত্রে স্ক্যানিংয়ের পর বাধ্যতামূলক ম্যানুয়াল তল্লাশি:
    এক্স-রে বা মেটাল ডিটেক্টরে সন্দেহজনক কিছু ধরা পড়লে সেই ব্যাগগুলো হাত দিয়ে খোলাসা করে তল্লাশি করা হবে। এই ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
  4. অস্ত্র বহনের অনুমতি রেকর্ড বাধ্যতামূলক:
    কোনো ব্যক্তি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে চাইলে তার অবশ্যই পূর্বানুমতি থাকতে হবে এবং সেটির লিখিত নথি বিমানবন্দর নিরাপত্তা শাখায় সংরক্ষিত থাকবে।
  5. সিকিউরিটি ব্রিচ ঘটলে তাৎক্ষণিক তদন্ত ব্যবস্থা:
    নিরাপত্তা ভাঙার যেকোনো ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সমন্বয়ে দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

একটুও শিথিলতা নয়’—সতর্কবার্তা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের

এনিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে অবস্থান একদমই পরিষ্কার—এখানে কোনো শিথিলতা চলবে না। ভিভিআইপি হোক বা সাধারণ যাত্রী—নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবার জন্য একই নিয়ম প্রযোজ্য। প্রত্যেকটি স্তরে তদারকি আরও জোরদার করা হয়েছে।”

বিশ্বমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে শৃঙ্খলা ও নিরপেক্ষতা সবচেয়ে বড় উপাদান। ভিভিআইপি বা প্রটোকলধারী যাত্রীরাও যেন নিরাপত্তার বাইরে না পড়েন, সেই চেষ্টাই করছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আরও বেশি নিরাপদ হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশের ভাবমূর্তি রক্ষা ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উন্নীত হতে হলে এমন কঠোর, বাস্তবমুখী পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে হবে।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share