আসিফ মাহমুদের বিচার হওয়া জরুরি: সাবেক এমপি নিলুফার মনি

- Update Time : ১২:৪৭:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫
- / ৭৪ Time View

বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নিলুফার চৌধুরী মনি বলেছেন, আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ শুধু নৈতিক বিচ্যুতিই নয়, বরং আইনগত অপরাধ। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া এবং তাকে বিচারের আওতায় আনা এখন সময়ের দাবি। তিনি বলেন, সরকারের উচিত এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
নিলুফার মনি বলেন, “আসিফ মাহমুদ নামের যিনি এখন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বে আছেন, তিনি অস্ত্র রাখার মাধ্যমে শুধু দেশের আইন নয়, আন্তর্জাতিক আইনও লঙ্ঘন করেছেন। তার কাছে যে অস্ত্র পাওয়া গেছে, তা ছিল গুলিভর্তি—হোক সেটা ৪৭ বা ম্যাগাজিন। এ ধরনের অস্ত্র সাধারণ কোনো নাগরিকের কাছে থাকার প্রশ্নই ওঠে না। আমি নিজেও যখন সংসদ সদস্য ছিলাম, তখন নিজের জন্য লাইসেন্স করতে যেয়ে শর্তগুলো দেখে পিছিয়ে এসেছিলাম। কারণ সেটা ছিল জটিল এবং কঠোর প্রক্রিয়া।”
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “একজন ব্যক্তি যিনি মাত্র ১০ মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সাধারণ ছাত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তার পিতাও একজন স্কুলশিক্ষক—সে কীভাবে এই সময়ে অস্ত্রের লাইসেন্স পেলেন? তার কি TIN (Taxpayer Identification Number) সার্টিফিকেট ছিল? আমি তো সন্দেহ করি, বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় তার টিন ছিল না। আর টিন না থাকলে লাইসেন্সের তো প্রশ্নই আসে না। টিন থাকলেও টানা তিন বছর ফি জমা দিতে হয়, সেটাও কি সে করেছে?”
এছাড়া, আসিফ মাহমুদের এপিএস সম্পর্কেও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “তার ব্যক্তিগত সহকারী (এপিএস)-এর বিরুদ্ধেও কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং একটি পরিকল্পিত দুর্নীতির চিত্র। এমন অপরাধের বিরুদ্ধে চুপ থাকা মানে হলো দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া।”
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমগুলোর ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করে নিলুফার মনি বলেন, “গতকাল যা ঘটেছে, সেটি নিয়ে কয়টা পত্রিকা প্রতিবেদন ছাপিয়েছে? কয়টা বিবৃতি এসেছে? আমাদের দেশের সংবাদপত্রগুলো যদি এখনো মেরুদণ্ড সোজা করে কথা বলতে না পারে, তাহলে ভবিষ্যত আরও অন্ধকার।”
তিনি আরও বলেন, “আমি হলে থেকেছি, জানি এক সাধারণ ছাত্র বা ছাত্রীকে কিভাবে মাসের শেষে কষ্ট করে চলতে হয়। সেই বাস্তবতা থেকে আসা একজন ব্যক্তি কিভাবে মাত্র ১০ মাসে এমন অবস্থানে উঠে এলো এবং অস্ত্র রাখার মতো ক্ষমতা অর্জন করল, সেটা জনগণের জানার অধিকার।”
সবশেষে নিলুফার মনি বলেন, “আসিফ মাহমুদের এখনই পদত্যাগ করা উচিত এবং তার বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার শুরু করা উচিত। সরকার যদি প্রকৃত অর্থে সুশাসনে বিশ্বাস করে, তাহলে এ বিষয়ে নিরপেক্ষ ও কঠোর তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।”
এই বক্তব্যে নিলুফার মনি শুধু একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করেননি, বরং সরকারের দায়িত্ব ও গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তার মতে, দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা না নিলে এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে আরও ব্যাপক দুর্নীতির জন্ম দেবে।
Please Share This Post in Your Social Media

আসিফ মাহমুদের বিচার হওয়া জরুরি: সাবেক এমপি নিলুফার মনি


বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নিলুফার চৌধুরী মনি বলেছেন, আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ শুধু নৈতিক বিচ্যুতিই নয়, বরং আইনগত অপরাধ। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া এবং তাকে বিচারের আওতায় আনা এখন সময়ের দাবি। তিনি বলেন, সরকারের উচিত এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
নিলুফার মনি বলেন, “আসিফ মাহমুদ নামের যিনি এখন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বে আছেন, তিনি অস্ত্র রাখার মাধ্যমে শুধু দেশের আইন নয়, আন্তর্জাতিক আইনও লঙ্ঘন করেছেন। তার কাছে যে অস্ত্র পাওয়া গেছে, তা ছিল গুলিভর্তি—হোক সেটা ৪৭ বা ম্যাগাজিন। এ ধরনের অস্ত্র সাধারণ কোনো নাগরিকের কাছে থাকার প্রশ্নই ওঠে না। আমি নিজেও যখন সংসদ সদস্য ছিলাম, তখন নিজের জন্য লাইসেন্স করতে যেয়ে শর্তগুলো দেখে পিছিয়ে এসেছিলাম। কারণ সেটা ছিল জটিল এবং কঠোর প্রক্রিয়া।”
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “একজন ব্যক্তি যিনি মাত্র ১০ মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সাধারণ ছাত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তার পিতাও একজন স্কুলশিক্ষক—সে কীভাবে এই সময়ে অস্ত্রের লাইসেন্স পেলেন? তার কি TIN (Taxpayer Identification Number) সার্টিফিকেট ছিল? আমি তো সন্দেহ করি, বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় তার টিন ছিল না। আর টিন না থাকলে লাইসেন্সের তো প্রশ্নই আসে না। টিন থাকলেও টানা তিন বছর ফি জমা দিতে হয়, সেটাও কি সে করেছে?”
এছাড়া, আসিফ মাহমুদের এপিএস সম্পর্কেও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “তার ব্যক্তিগত সহকারী (এপিএস)-এর বিরুদ্ধেও কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং একটি পরিকল্পিত দুর্নীতির চিত্র। এমন অপরাধের বিরুদ্ধে চুপ থাকা মানে হলো দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া।”
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমগুলোর ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করে নিলুফার মনি বলেন, “গতকাল যা ঘটেছে, সেটি নিয়ে কয়টা পত্রিকা প্রতিবেদন ছাপিয়েছে? কয়টা বিবৃতি এসেছে? আমাদের দেশের সংবাদপত্রগুলো যদি এখনো মেরুদণ্ড সোজা করে কথা বলতে না পারে, তাহলে ভবিষ্যত আরও অন্ধকার।”
তিনি আরও বলেন, “আমি হলে থেকেছি, জানি এক সাধারণ ছাত্র বা ছাত্রীকে কিভাবে মাসের শেষে কষ্ট করে চলতে হয়। সেই বাস্তবতা থেকে আসা একজন ব্যক্তি কিভাবে মাত্র ১০ মাসে এমন অবস্থানে উঠে এলো এবং অস্ত্র রাখার মতো ক্ষমতা অর্জন করল, সেটা জনগণের জানার অধিকার।”
সবশেষে নিলুফার মনি বলেন, “আসিফ মাহমুদের এখনই পদত্যাগ করা উচিত এবং তার বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার শুরু করা উচিত। সরকার যদি প্রকৃত অর্থে সুশাসনে বিশ্বাস করে, তাহলে এ বিষয়ে নিরপেক্ষ ও কঠোর তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।”
এই বক্তব্যে নিলুফার মনি শুধু একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করেননি, বরং সরকারের দায়িত্ব ও গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তার মতে, দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা না নিলে এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে আরও ব্যাপক দুর্নীতির জন্ম দেবে।