এনবিআরে আজও ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, শুল্ক-কর আদায়ে স্থবিরতা-রাষ্ট্রের এ ক্ষতির দায় নেবে কে?

- Update Time : ১১:১৪:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
- / ১৫৮ Time View
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আবারও কার্যত অচল। গতকালের মতো আজ রবিবারও চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি। ফলে চট্টগ্রাম বন্দর, বেনাপোল বন্দর, ঢাকা কাস্টম হাউসসহ দেশের সকল কাস্টমস ও শুল্ক অফিসে কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ। এর ফলে শুল্ক ও কর আদায় সম্পূর্ণভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে। মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম, যা সরাসরি দেশের রাজস্ব আয়ে এক ভয়াবহ ধস নামিয়েছে।
অর্থনীতিবিদদের ভাষায়, প্রতিদিনের রাজস্ব আদায়ের এই স্থবিরতা সরকারের জন্য আর্থিক ক্ষতির সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনিক দুর্বলতাকেও নগ্নভাবে প্রকাশ করছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান যদি দিনের পর দিন অচল থাকে, তবে এই ক্ষতির দায় আসলে কে নেবে?
আন্দোলনের মূল সূত্রপাত ও বর্তমান প্রেক্ষাপট
গত ১২ মে সরকার একটি গেজেট জারি করে এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ এবং ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ নামে দুটি পৃথক বিভাগ গঠন করে। সরকারের যুক্তি—নীতিনির্ধারণ ও বাস্তবায়নকে আলাদা করলে স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বাড়বে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর দেওয়া ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের শর্তেও এই সংস্কার ছিল একটি প্রধান শর্ত।
কিন্তু এনবিআর-এর অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই পুনর্গঠনের মাধ্যমে প্রশাসন ক্যাডারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে এবং রাজস্ব ক্যাডারের অভিজ্ঞদের উপেক্ষা করা হচ্ছে। তারও চেয়ে বড় অভিযোগ, বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যান সংস্কার প্রক্রিয়ায় কর্মকর্তাদের মতামতকে উপেক্ষা করছেন এবং আন্দোলনকারীদের দমন-পীড়ন করছেন।
এই প্রেক্ষাপটেই শুরু হয় দেশব্যাপী কর্মবিরতি, ‘শাটডাউন’ এবং ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি। আন্দোলনকারীরা স্পষ্টভাবে বলেছেন—বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ না করা পর্যন্ত কোনো আলোচনা সম্ভব নয়।
কী ঘটছে মাঠে?
গতকাল সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়ো হন ঢাকার এনবিআর ভবনের সামনে। নিজ নিজ দপ্তর ছেড়ে তারা অবস্থান নেন প্রধান ফটকে। আন্দোলনের অংশ হিসেবে সারাদিন চলে স্লোগান, নেতাদের বক্তব্য, ব্যানার-প্ল্যাকার্ডসহ কর্মসূচি। এ সময় এনবিআর ভবনের সব ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়, ভেতরে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, এমনকি কেউ বের হতেও পারেননি।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পুরো ভবন ঘিরে রাখে, মোতায়েন ছিল জলকামানসহ শক্তিশালী নিরাপত্তা সরঞ্জাম। এর ফলে সেবা নিতে আসা সাধারণ করদাতা, ব্যবসায়ী, আমদানি-রপ্তানিকারকরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
রাজস্ব আহরণ যেহেতু জাতীয় অর্থনীতির প্রাণ, তাই এর স্থবিরতা ভয়ানক সংকটের দিকে ইঙ্গিত দেয়। চলতি অর্থবছরের শেষ সময় হওয়ায় এনবিআর আগে থেকেই ঘোষণা দিয়েছিল যে ২১ ও ২৮ জুন, দুইটি শুক্রবারও এনবিআর খোলা থাকবে। কিন্তু এই ঘোষণার বাস্তবায়ন রুদ্ধ হয়েছে আন্দোলনের মুখে।
ব্যবসায়ী মহলের উদ্বেগ
দেশের শীর্ষ ১৩টি ব্যবসায়ী সংগঠনের বর্তমান ও সাবেক নেতারা এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এনবিআরের চলমান অচলাবস্থা নিয়ে উদ্বেগ জানান। তারা বলেন, রাজস্ব খাতে সংস্কার প্রয়োজন—তা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে তারা এনবিআর চেয়ারম্যান অপসারণের দাবি সমর্থন করেন না। বরং তারা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানান।
আন্দোলনকারীদের বক্তব্য
সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার বলেন, “বর্তমান চেয়ারম্যান থাকলে কোনো সংস্কার সম্ভব নয়। উনি নিজেই সমস্যা।”
তিনি আরও বলেন, সরকার যদি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেয়, তাহলে তারা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত, তবে শর্ত সাপেক্ষে—চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে।
সরকারের অবস্থান
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ গতকাল রাতে জানান, তিনি আগামী ১ জুলাই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বসার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে শর্ত রেখেছেন—তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করতে হবে। তিনি বলেন, “দেশের স্বার্থ আগে দেখতে হবে। রাজস্ব আদায় যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়টি মাথায় রাখা জরুরি।”
বৃহত্তর প্রেক্ষাপট ও ভবিষ্যৎ শঙ্কা
বর্তমান সংকট কেবল এনবিআরের অভ্যন্তরীণ নয়, এটি বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ওপর বড় প্রশ্নচিহ্ন টানছে। বাজেট বাস্তবায়ন, সরকারি প্রকল্পে অর্থ ছাড়, আমদানি শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর, আয়করসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়ছে।
এনবিআরের প্রতিদিনের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য প্রায় ৭০০-৮০০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে প্রতিদিনের শাটডাউনে সরকারের ক্ষতি দাঁড়াচ্ছে হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। কেবল অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, এতে বিনিয়োগ পরিবেশ, ব্যবসায়িক আস্থা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগীদের দৃষ্টিভঙ্গিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সরকার যদি দ্রুত কোনো সমঝোতায় না পৌঁছায়, তবে এই আন্দোলন দীর্ঘায়িত হয়ে দেশের অর্থনীতিকে চরম দুর্বল করে তুলবে। অপরদিকে, আন্দোলনকারীরাও যদি সমঝোতার পথ না খোঁজেন, তাহলে তাদের নৈতিক অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে।
রাজস্ব বিভাগ কোনো রাজনৈতিক দলের নয়—এটি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ভিত্তি। এই ভিত্তি যখন টালমাটাল, তখন প্রশ্ন ওঠে—রাষ্ট্র কীভাবে পরিচালিত হচ্ছে? এনবিআরে চলমান অচলাবস্থার সমাধান জরুরি। এর দায় সরকার এড়াতে পারে না, আবার আন্দোলনকারীদেরও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করা চলবে না।
দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে, এবং একটি কার্যকর ও জনবান্ধব রাজস্ব ব্যবস্থার স্বার্থে অবিলম্বে সংলাপ ও সমঝোতার মাধ্যমে একটি স্থায়ী সমাধানে পৌঁছানো এখন সময়ের দাবি। রাষ্ট্রের প্রতি, জনগণের প্রতি—এই ক্ষতির দায় অবশেষে ইতিহাসে লেখা থাকবে কার নামে?
Please Share This Post in Your Social Media

এনবিআরে আজও ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, শুল্ক-কর আদায়ে স্থবিরতা-রাষ্ট্রের এ ক্ষতির দায় নেবে কে?

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আবারও কার্যত অচল। গতকালের মতো আজ রবিবারও চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি। ফলে চট্টগ্রাম বন্দর, বেনাপোল বন্দর, ঢাকা কাস্টম হাউসসহ দেশের সকল কাস্টমস ও শুল্ক অফিসে কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ। এর ফলে শুল্ক ও কর আদায় সম্পূর্ণভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে। মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম, যা সরাসরি দেশের রাজস্ব আয়ে এক ভয়াবহ ধস নামিয়েছে।
অর্থনীতিবিদদের ভাষায়, প্রতিদিনের রাজস্ব আদায়ের এই স্থবিরতা সরকারের জন্য আর্থিক ক্ষতির সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনিক দুর্বলতাকেও নগ্নভাবে প্রকাশ করছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান যদি দিনের পর দিন অচল থাকে, তবে এই ক্ষতির দায় আসলে কে নেবে?
আন্দোলনের মূল সূত্রপাত ও বর্তমান প্রেক্ষাপট
গত ১২ মে সরকার একটি গেজেট জারি করে এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ এবং ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ নামে দুটি পৃথক বিভাগ গঠন করে। সরকারের যুক্তি—নীতিনির্ধারণ ও বাস্তবায়নকে আলাদা করলে স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বাড়বে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর দেওয়া ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের শর্তেও এই সংস্কার ছিল একটি প্রধান শর্ত।
কিন্তু এনবিআর-এর অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই পুনর্গঠনের মাধ্যমে প্রশাসন ক্যাডারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে এবং রাজস্ব ক্যাডারের অভিজ্ঞদের উপেক্ষা করা হচ্ছে। তারও চেয়ে বড় অভিযোগ, বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যান সংস্কার প্রক্রিয়ায় কর্মকর্তাদের মতামতকে উপেক্ষা করছেন এবং আন্দোলনকারীদের দমন-পীড়ন করছেন।
এই প্রেক্ষাপটেই শুরু হয় দেশব্যাপী কর্মবিরতি, ‘শাটডাউন’ এবং ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি। আন্দোলনকারীরা স্পষ্টভাবে বলেছেন—বর্তমান চেয়ারম্যানকে অপসারণ না করা পর্যন্ত কোনো আলোচনা সম্ভব নয়।
কী ঘটছে মাঠে?
গতকাল সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়ো হন ঢাকার এনবিআর ভবনের সামনে। নিজ নিজ দপ্তর ছেড়ে তারা অবস্থান নেন প্রধান ফটকে। আন্দোলনের অংশ হিসেবে সারাদিন চলে স্লোগান, নেতাদের বক্তব্য, ব্যানার-প্ল্যাকার্ডসহ কর্মসূচি। এ সময় এনবিআর ভবনের সব ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়, ভেতরে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, এমনকি কেউ বের হতেও পারেননি।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পুরো ভবন ঘিরে রাখে, মোতায়েন ছিল জলকামানসহ শক্তিশালী নিরাপত্তা সরঞ্জাম। এর ফলে সেবা নিতে আসা সাধারণ করদাতা, ব্যবসায়ী, আমদানি-রপ্তানিকারকরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
রাজস্ব আহরণ যেহেতু জাতীয় অর্থনীতির প্রাণ, তাই এর স্থবিরতা ভয়ানক সংকটের দিকে ইঙ্গিত দেয়। চলতি অর্থবছরের শেষ সময় হওয়ায় এনবিআর আগে থেকেই ঘোষণা দিয়েছিল যে ২১ ও ২৮ জুন, দুইটি শুক্রবারও এনবিআর খোলা থাকবে। কিন্তু এই ঘোষণার বাস্তবায়ন রুদ্ধ হয়েছে আন্দোলনের মুখে।
ব্যবসায়ী মহলের উদ্বেগ
দেশের শীর্ষ ১৩টি ব্যবসায়ী সংগঠনের বর্তমান ও সাবেক নেতারা এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এনবিআরের চলমান অচলাবস্থা নিয়ে উদ্বেগ জানান। তারা বলেন, রাজস্ব খাতে সংস্কার প্রয়োজন—তা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে তারা এনবিআর চেয়ারম্যান অপসারণের দাবি সমর্থন করেন না। বরং তারা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানান।
আন্দোলনকারীদের বক্তব্য
সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার বলেন, “বর্তমান চেয়ারম্যান থাকলে কোনো সংস্কার সম্ভব নয়। উনি নিজেই সমস্যা।”
তিনি আরও বলেন, সরকার যদি আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেয়, তাহলে তারা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত, তবে শর্ত সাপেক্ষে—চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে।
সরকারের অবস্থান
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ গতকাল রাতে জানান, তিনি আগামী ১ জুলাই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বসার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে শর্ত রেখেছেন—তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করতে হবে। তিনি বলেন, “দেশের স্বার্থ আগে দেখতে হবে। রাজস্ব আদায় যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়টি মাথায় রাখা জরুরি।”
বৃহত্তর প্রেক্ষাপট ও ভবিষ্যৎ শঙ্কা
বর্তমান সংকট কেবল এনবিআরের অভ্যন্তরীণ নয়, এটি বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ওপর বড় প্রশ্নচিহ্ন টানছে। বাজেট বাস্তবায়ন, সরকারি প্রকল্পে অর্থ ছাড়, আমদানি শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর, আয়করসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়ছে।
এনবিআরের প্রতিদিনের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য প্রায় ৭০০-৮০০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে প্রতিদিনের শাটডাউনে সরকারের ক্ষতি দাঁড়াচ্ছে হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। কেবল অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, এতে বিনিয়োগ পরিবেশ, ব্যবসায়িক আস্থা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগীদের দৃষ্টিভঙ্গিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সরকার যদি দ্রুত কোনো সমঝোতায় না পৌঁছায়, তবে এই আন্দোলন দীর্ঘায়িত হয়ে দেশের অর্থনীতিকে চরম দুর্বল করে তুলবে। অপরদিকে, আন্দোলনকারীরাও যদি সমঝোতার পথ না খোঁজেন, তাহলে তাদের নৈতিক অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে।
রাজস্ব বিভাগ কোনো রাজনৈতিক দলের নয়—এটি রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ভিত্তি। এই ভিত্তি যখন টালমাটাল, তখন প্রশ্ন ওঠে—রাষ্ট্র কীভাবে পরিচালিত হচ্ছে? এনবিআরে চলমান অচলাবস্থার সমাধান জরুরি। এর দায় সরকার এড়াতে পারে না, আবার আন্দোলনকারীদেরও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করা চলবে না।
দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে, এবং একটি কার্যকর ও জনবান্ধব রাজস্ব ব্যবস্থার স্বার্থে অবিলম্বে সংলাপ ও সমঝোতার মাধ্যমে একটি স্থায়ী সমাধানে পৌঁছানো এখন সময়ের দাবি। রাষ্ট্রের প্রতি, জনগণের প্রতি—এই ক্ষতির দায় অবশেষে ইতিহাসে লেখা থাকবে কার নামে?