আবারও রহস্যজনক বার্তা দিলেন ট্রাম্প: ইরান ইস্যুতে ধোঁয়াশা অব্যাহত

- Update Time : ১০:০৭:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫
- / ৮৪ Time View
সূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা
ইরান প্রসঙ্গে আবারও এক রহস্যময় ও দ্ব্যর্থপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি প্রতিবেদন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, “ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ইরান বিষয়ে আমার চিন্তাভাবনা সম্পর্কে কিছুই জানে না!” তিনি এই মন্তব্য করেছেন তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, ট্রাম্প নাকি ইরানে একটি সামরিক হামলার পরিকল্পনায় ব্যক্তিগতভাবে সম্মতি দিয়েছেন, তবে সেটির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত রেখেছেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সূত্র অনুযায়ী, ট্রাম্প আশা করেছিলেন— এই চাপের মুখে ইরান হয়তো তার পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সরে আসবে। কিন্তু রিপোর্টটি প্রকাশের পর ট্রাম্প এর কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এই সংবাদমাধ্যম তার অভ্যন্তরীণ চিন্তা বা কৌশল সম্পর্কে কোনো ধারণাই রাখে না।
এই মন্তব্যে ট্রাম্পের অবস্থান যেন আরও বেশি অস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বুধবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, “দেখা যাক কী হয়। সবাই আমাকে এটা নিয়ে প্রশ্ন করছে, কিন্তু আমি এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি।”
এ ধরনের অস্পষ্ট মন্তব্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। অনেক বিশ্লেষকের মতে, এই ধরনের ‘ধোঁয়াশাপূর্ণ বার্তা’ একদিকে যেমন ট্রাম্পের রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হতে পারে, অন্যদিকে তা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা বাড়াতেও সহায়ক হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরান ইস্যুতে ট্রাম্প অতীতেও কৌশলী ও চাপে রাখার স্ট্র্যাটেজি অবলম্বন করেছেন। ২০১৮ সালে তিনি একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ইরান পারমাণবিক চুক্তি (JCPOA) থেকে প্রত্যাহার করেন এবং এরপর থেকেই ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। সেই সময়েও তার বিবৃতি ও সিদ্ধান্ত ছিল অনেকটাই অপ্রত্যাশিত ও বিতর্কিত।
এই পরিপ্রেক্ষিতে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন এবং ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক যেখানে উত্তেজনার এক চরম অবস্থানে, সেখানে একজন সাবেক প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্য ভবিষ্যতের মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির ইঙ্গিতও হতে পারে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।
তবে এটাও ঠিক যে, ট্রাম্প সবসময়ই গণমাধ্যমের প্রতিবেদনকে সন্দেহের চোখে দেখেন এবং প্রথাগত সংবাদমাধ্যমকে ‘ভুয়া সংবাদ’ হিসেবে অভিযুক্ত করে থাকেন। তার ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টটিও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।
পরবর্তীতে কী হবে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে কোনও সামরিক পদক্ষেপ নেবে কিনা— সে প্রশ্ন এখনো উন্মুক্ত। তবে ট্রাম্পের এই রহস্যজনক বার্তা নতুন করে উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে, এবং বিশ্লেষকদের মতে, এর মাধ্যমে ট্রাম্প রাজনৈতিকভাবে নিজের প্রভাব পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন, বিশেষ করে আগামী নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে।
Please Share This Post in Your Social Media

আবারও রহস্যজনক বার্তা দিলেন ট্রাম্প: ইরান ইস্যুতে ধোঁয়াশা অব্যাহত

সূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা
ইরান প্রসঙ্গে আবারও এক রহস্যময় ও দ্ব্যর্থপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি প্রতিবেদন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, “ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ইরান বিষয়ে আমার চিন্তাভাবনা সম্পর্কে কিছুই জানে না!” তিনি এই মন্তব্য করেছেন তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, ট্রাম্প নাকি ইরানে একটি সামরিক হামলার পরিকল্পনায় ব্যক্তিগতভাবে সম্মতি দিয়েছেন, তবে সেটির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত রেখেছেন। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সূত্র অনুযায়ী, ট্রাম্প আশা করেছিলেন— এই চাপের মুখে ইরান হয়তো তার পারমাণবিক কর্মসূচি থেকে সরে আসবে। কিন্তু রিপোর্টটি প্রকাশের পর ট্রাম্প এর কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এই সংবাদমাধ্যম তার অভ্যন্তরীণ চিন্তা বা কৌশল সম্পর্কে কোনো ধারণাই রাখে না।
এই মন্তব্যে ট্রাম্পের অবস্থান যেন আরও বেশি অস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বুধবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, “দেখা যাক কী হয়। সবাই আমাকে এটা নিয়ে প্রশ্ন করছে, কিন্তু আমি এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি।”
এ ধরনের অস্পষ্ট মন্তব্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। অনেক বিশ্লেষকের মতে, এই ধরনের ‘ধোঁয়াশাপূর্ণ বার্তা’ একদিকে যেমন ট্রাম্পের রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হতে পারে, অন্যদিকে তা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা বাড়াতেও সহায়ক হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরান ইস্যুতে ট্রাম্প অতীতেও কৌশলী ও চাপে রাখার স্ট্র্যাটেজি অবলম্বন করেছেন। ২০১৮ সালে তিনি একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে ইরান পারমাণবিক চুক্তি (JCPOA) থেকে প্রত্যাহার করেন এবং এরপর থেকেই ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। সেই সময়েও তার বিবৃতি ও সিদ্ধান্ত ছিল অনেকটাই অপ্রত্যাশিত ও বিতর্কিত।
এই পরিপ্রেক্ষিতে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন এবং ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক যেখানে উত্তেজনার এক চরম অবস্থানে, সেখানে একজন সাবেক প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্য ভবিষ্যতের মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির ইঙ্গিতও হতে পারে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।
তবে এটাও ঠিক যে, ট্রাম্প সবসময়ই গণমাধ্যমের প্রতিবেদনকে সন্দেহের চোখে দেখেন এবং প্রথাগত সংবাদমাধ্যমকে ‘ভুয়া সংবাদ’ হিসেবে অভিযুক্ত করে থাকেন। তার ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টটিও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।
পরবর্তীতে কী হবে, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে কোনও সামরিক পদক্ষেপ নেবে কিনা— সে প্রশ্ন এখনো উন্মুক্ত। তবে ট্রাম্পের এই রহস্যজনক বার্তা নতুন করে উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে, এবং বিশ্লেষকদের মতে, এর মাধ্যমে ট্রাম্প রাজনৈতিকভাবে নিজের প্রভাব পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন, বিশেষ করে আগামী নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে।