সময়: বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

দক্ষিণ এশিয়ায় ধীর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি: বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে হাইলাইটেড

ডিজিটাল ডেস্ক
  • Update Time : ১২:৪৮:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
  • / ১০৫ Time View

world bangk 20250611185357 20250611222651

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

world bangk 20250611185357 20250611222651

বিশ্বব্যাংকের জুন ২০২৫ সংখ্যার Global Economic Prospects প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক চিত্রকে উদ্বেগজনক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের প্রত্যাশার চেয়েও দুর্বল অর্থনৈতিক পারফরম্যান্সের পর দক্ষিণ এশিয়ায় অর্থনৈতিক কার্যক্রম আরও হ্রাস পেয়েছে। বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা, নীতিগত অনিশ্চয়তা ও আর্থিক বাজারের অস্থিরতা ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর অর্থনৈতিক গতি মন্থর করে দিয়েছে। বিশেষভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতাকে দেশের অর্থনৈতিক মন্দার একটি বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে বিশ্বব্যাংক।

দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক প্রবৃদ্ধি ধীরগতির

প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় অর্থনীতি ভারতের প্রবৃদ্ধিতে কিছুটা মন্দার কথা বলা হয়েছে। বিনিয়োগ কার্যক্রমে স্থবিরতা ও শিল্প উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় এ ধীরগতি ঘটেছে, যার পেছনে চাহিদা হ্রাস এবং সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতা দায়ী। তবে নির্মাণ ও পরিষেবা খাত স্থিতিশীল রয়েছে এবং গ্রামীণ চাহিদা বৃদ্ধির কারণে কৃষিতে পুনরুদ্ধার লক্ষ্য করা গেছে।

ভারতের বাইরে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে প্রবৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকলেও তা নিম্নমুখী মাত্রায় সীমাবদ্ধ। পাকিস্তানে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে ২.৭ শতাংশে পৌঁছেছে, যার পেছনে কৃষি ও শিল্প খাতের ক্ষুদ্র প্রসার দায়ী। ভুটান, মালদ্বীপ এবং শ্রীলঙ্কায় ২০২৫ সালের শুরুতে পর্যটনের অগ্রগতি অর্থনীতিকে কিছুটা চাঙা করেছে। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কায় ২০২৪ সালে শিল্প উৎপাদনের ক্ষেত্রে পুনরুদ্ধার লক্ষ করা যায়।

ভুটানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্ত পারাপারের বিদ্যুৎ বিক্রি ও সরকারী আয় বেড়েছে। নেপালেও একইভাবে হাইড্রোপাওয়ার উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে শিল্প খাতকে সহায়তা করেছে।

বাংলাদেশ: রাজনৈতিক অস্থিরতায় থমকে গেছে প্রবৃদ্ধি

বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে বিশ্বব্যাংকের বিশ্লেষণ অনেকটা হতাশাজনক। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩.৩ শতাংশে। ২০২৪ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতাকে এই সংকোচনের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির কারণে বেসরকারি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হয়েছে, পাশাপাশি মূলধনী পণ্যের আমদানি কমে গিয়ে শিল্প উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

তবে ভবিষ্যতের জন্য একটি সতর্ক আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিও দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। তাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪.৯ শতাংশে পৌঁছাতে পারে এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরে তা আরও বাড়বে ৫.৭ শতাংশে। এই পুনরুদ্ধার নির্ভর করবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতি এবং কর্মসংস্থানমুখী সংস্কারের কার্যকর বাস্তবায়নের উপর। রেমিট্যান্স প্রবাহ ও মুদ্রাস্ফীতির নিয়ন্ত্রণে আসা ব্যক্তিগত ভোগব্যয়কে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে প্রধান বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোর দুর্বল চাহিদা এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতার কারণে রপ্তানি খাত চাপের মধ্যে থাকতে পারে।

মুদ্রাস্ফীতি আর্থিক নীতির চ্যালেঞ্জ

প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার মুদ্রাস্ফীতির গতিধারাও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, অঞ্চলটিতে গড় মুদ্রাস্ফীতি ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে এবং অধিকাংশ দেশ এখন তাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত টার্গেট রেঞ্জের মধ্যে কাজ করছে অথবা তার নিচে অবস্থান করছে। এর ফলে কিছু দেশ সুদের হার হ্রাসের সুযোগ পেয়েছে। যেমন: ভারত ২০২৫ সালের শুরুতে নীতিগত সুদের হার কমিয়েছে। পাকিস্তানে শিরোনামভিত্তিক মুদ্রাস্ফীতি ২ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে এবং শ্রীলঙ্কায় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডিফ্লেশন অব্যাহত রয়েছে।

কিন্তু বাংলাদেশ ব্যতিক্রম। গত এক বছরে কয়েক দফা সুদের হার বাড়ানোর পরেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও উচ্চমাত্রায় কোর ইনফ্লেশন বিরাজ করছে। এই স্থায়ী মুদ্রাস্ফীতির চাপ мак্রোইকোনমিক ব্যবস্থাপনা এবং সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।

আঞ্চলিক দৃষ্টিভঙ্গি কর্মসংস্থানের সংকট

বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস বলছে, ২০২৫ সালে দক্ষিণ এশিয়ার সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি ৫.৮ শতাংশে নেমে আসবে, যা পূর্ববর্তী পূর্বাভাসের চেয়ে কম। এর পেছনে প্রধানত বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা, ব্যবসায়িক আস্থার হ্রাস এবং বিনিয়োগ কার্যক্রমের দুর্বলতা দায়ী। এসব চ্যালেঞ্জ বিশেষত তরুণ জনসংখ্যা সমৃদ্ধ দেশগুলোর কর্মসংস্থান সংকট আরও বাড়িয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তবে আশার কথা হলো, যদি স্থিতিশীলতা বজায় থাকে এবং সমর্থনযোগ্য নীতিমালা প্রয়োগ করা যায়, তাহলে ২০২৬-২৭ অর্থবছরে দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধি আবার ৬.২ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সামাজিক নিরাপত্তা বলয় ও টেকসই বিনিয়োগ নিশ্চিত করাই হবে এই অঞ্চলের প্রধান নীতি চ্যালেঞ্জ।

বিশ্বব্যাংকের জুন ২০২৫-এর মূল্যায়ন স্পষ্টভাবে দেখিয়ে দেয়, দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি বৈশ্বিক ঝুঁকি ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতি কতটা সংবেদনশীল। বিশেষ করে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সুসংগঠিত নীতিগত সংস্কার ছাড়া অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, বিনিয়োগ আকর্ষণ, শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধি এবং স্থায়ী প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এই মুহূর্তে, নীতিনির্ধারকদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা ও দিকনির্দেশনা।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Please Share This Post in Your Social Media

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

দক্ষিণ এশিয়ায় ধীর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি: বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে হাইলাইটেড

Update Time : ১২:৪৮:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
শেয়ার করুনঃ
Pin Share

world bangk 20250611185357 20250611222651

বিশ্বব্যাংকের জুন ২০২৫ সংখ্যার Global Economic Prospects প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক চিত্রকে উদ্বেগজনক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের প্রত্যাশার চেয়েও দুর্বল অর্থনৈতিক পারফরম্যান্সের পর দক্ষিণ এশিয়ায় অর্থনৈতিক কার্যক্রম আরও হ্রাস পেয়েছে। বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা, নীতিগত অনিশ্চয়তা ও আর্থিক বাজারের অস্থিরতা ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর অর্থনৈতিক গতি মন্থর করে দিয়েছে। বিশেষভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতাকে দেশের অর্থনৈতিক মন্দার একটি বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে বিশ্বব্যাংক।

দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক প্রবৃদ্ধি ধীরগতির

প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় অর্থনীতি ভারতের প্রবৃদ্ধিতে কিছুটা মন্দার কথা বলা হয়েছে। বিনিয়োগ কার্যক্রমে স্থবিরতা ও শিল্প উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় এ ধীরগতি ঘটেছে, যার পেছনে চাহিদা হ্রাস এবং সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধকতা দায়ী। তবে নির্মাণ ও পরিষেবা খাত স্থিতিশীল রয়েছে এবং গ্রামীণ চাহিদা বৃদ্ধির কারণে কৃষিতে পুনরুদ্ধার লক্ষ্য করা গেছে।

ভারতের বাইরে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে প্রবৃদ্ধি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকলেও তা নিম্নমুখী মাত্রায় সীমাবদ্ধ। পাকিস্তানে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে ২.৭ শতাংশে পৌঁছেছে, যার পেছনে কৃষি ও শিল্প খাতের ক্ষুদ্র প্রসার দায়ী। ভুটান, মালদ্বীপ এবং শ্রীলঙ্কায় ২০২৫ সালের শুরুতে পর্যটনের অগ্রগতি অর্থনীতিকে কিছুটা চাঙা করেছে। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কায় ২০২৪ সালে শিল্প উৎপাদনের ক্ষেত্রে পুনরুদ্ধার লক্ষ করা যায়।

ভুটানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্ত পারাপারের বিদ্যুৎ বিক্রি ও সরকারী আয় বেড়েছে। নেপালেও একইভাবে হাইড্রোপাওয়ার উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে শিল্প খাতকে সহায়তা করেছে।

বাংলাদেশ: রাজনৈতিক অস্থিরতায় থমকে গেছে প্রবৃদ্ধি

বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে বিশ্বব্যাংকের বিশ্লেষণ অনেকটা হতাশাজনক। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩.৩ শতাংশে। ২০২৪ সালের রাজনৈতিক অস্থিরতাকে এই সংকোচনের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির কারণে বেসরকারি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হয়েছে, পাশাপাশি মূলধনী পণ্যের আমদানি কমে গিয়ে শিল্প উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

তবে ভবিষ্যতের জন্য একটি সতর্ক আশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিও দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। তাদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪.৯ শতাংশে পৌঁছাতে পারে এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরে তা আরও বাড়বে ৫.৭ শতাংশে। এই পুনরুদ্ধার নির্ভর করবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতি এবং কর্মসংস্থানমুখী সংস্কারের কার্যকর বাস্তবায়নের উপর। রেমিট্যান্স প্রবাহ ও মুদ্রাস্ফীতির নিয়ন্ত্রণে আসা ব্যক্তিগত ভোগব্যয়কে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে প্রধান বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোর দুর্বল চাহিদা এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতার কারণে রপ্তানি খাত চাপের মধ্যে থাকতে পারে।

মুদ্রাস্ফীতি আর্থিক নীতির চ্যালেঞ্জ

প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার মুদ্রাস্ফীতির গতিধারাও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, অঞ্চলটিতে গড় মুদ্রাস্ফীতি ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে এবং অধিকাংশ দেশ এখন তাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত টার্গেট রেঞ্জের মধ্যে কাজ করছে অথবা তার নিচে অবস্থান করছে। এর ফলে কিছু দেশ সুদের হার হ্রাসের সুযোগ পেয়েছে। যেমন: ভারত ২০২৫ সালের শুরুতে নীতিগত সুদের হার কমিয়েছে। পাকিস্তানে শিরোনামভিত্তিক মুদ্রাস্ফীতি ২ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে এবং শ্রীলঙ্কায় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডিফ্লেশন অব্যাহত রয়েছে।

কিন্তু বাংলাদেশ ব্যতিক্রম। গত এক বছরে কয়েক দফা সুদের হার বাড়ানোর পরেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও উচ্চমাত্রায় কোর ইনফ্লেশন বিরাজ করছে। এই স্থায়ী মুদ্রাস্ফীতির চাপ мак্রোইকোনমিক ব্যবস্থাপনা এবং সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।

আঞ্চলিক দৃষ্টিভঙ্গি কর্মসংস্থানের সংকট

বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস বলছে, ২০২৫ সালে দক্ষিণ এশিয়ার সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি ৫.৮ শতাংশে নেমে আসবে, যা পূর্ববর্তী পূর্বাভাসের চেয়ে কম। এর পেছনে প্রধানত বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা, ব্যবসায়িক আস্থার হ্রাস এবং বিনিয়োগ কার্যক্রমের দুর্বলতা দায়ী। এসব চ্যালেঞ্জ বিশেষত তরুণ জনসংখ্যা সমৃদ্ধ দেশগুলোর কর্মসংস্থান সংকট আরও বাড়িয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তবে আশার কথা হলো, যদি স্থিতিশীলতা বজায় থাকে এবং সমর্থনযোগ্য নীতিমালা প্রয়োগ করা যায়, তাহলে ২০২৬-২৭ অর্থবছরে দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধি আবার ৬.২ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সামাজিক নিরাপত্তা বলয় ও টেকসই বিনিয়োগ নিশ্চিত করাই হবে এই অঞ্চলের প্রধান নীতি চ্যালেঞ্জ।

বিশ্বব্যাংকের জুন ২০২৫-এর মূল্যায়ন স্পষ্টভাবে দেখিয়ে দেয়, দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতি বৈশ্বিক ঝুঁকি ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রতি কতটা সংবেদনশীল। বিশেষ করে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সুসংগঠিত নীতিগত সংস্কার ছাড়া অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, বিনিয়োগ আকর্ষণ, শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধি এবং স্থায়ী প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এই মুহূর্তে, নীতিনির্ধারকদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা ও দিকনির্দেশনা।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share