১ জুলাই ২০২৫ থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ‘বিশেষ সুবিধা’, প্রজ্ঞাপন জারি করলো অর্থ বিভাগ

- Update Time : ০৩:০৫:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫
- / ১৫৮ Time View
সরকারি চাকরিজীবী, পেনশনভোগী ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের জন্য বিশেষ আর্থিক সুবিধার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। আগামী ১ জুলাই ২০২৫ থেকে এটি কার্যকর হবে। সরকারি-বেসামরিক দপ্তর, স্বশাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং পুলিশ বাহিনীতে কর্মরতরা এই সুবিধার আওতায় আসবেন।
মঙ্গলবার (৩ জুন) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগের ‘প্রবিধি-৩’ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে অতিরিক্ত সচিব দিলরুবা শাহীনা স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ১৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জাতীয় বেতনস্কেলের আওতাভুক্ত বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, স্বশাসিত সংস্থা এবং আর্থিক খাত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের জন্য নতুনভাবে ‘বিশেষ সুবিধা’ চালু করা হলো। এ সুবিধা ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
এতে বলা হয়, গ্রেড ১ থেকে গ্রেড ৯ পর্যন্ত বেতনধারী কর্মচারীরা মূল বেতনের উপর ১০ শতাংশ হারে এবং গ্রেড ১০ থেকে গ্রেড ২০ পর্যন্ত কর্মচারীরা ১৫ শতাংশ হারে এ ‘বিশেষ সুবিধা’ পাবেন। চাকরিতে থাকা কর্মীদের ক্ষেত্রে এই অর্থের পরিমাণ ন্যূনতম ১,০০০ টাকা এবং পেনশনপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জন্য তা ন্যূনতম ৫০০ টাকা নির্ধারিত হয়েছে।
বিশেষ সুবিধা প্রাপ্তির বিস্তারিত বিবরণ:
(ক) ১ জুলাই ২০২৫ থেকে প্রতিবছর ১ জুলাই তারিখে সরকারি কর্মচারীরা তাদের প্রযোজ্য গ্রেড অনুযায়ী মূল বেতনের ওপর ‘বিশেষ সুবিধা’ পাবেন। গ্রেড ১ থেকে ৯ পর্যন্ত কর্মচারীদের জন্য হার হবে ১০ শতাংশ এবং গ্রেড ১০ থেকে ২০ পর্যন্ত কর্মচারীদের জন্য হবে ১৫ শতাংশ।
(খ) অবসর-উত্তর ছুটিতে (PRL) থাকা কর্মচারীরা তাদের অবসরের পূর্বে যেই মূল বেতন পেতেন, সেই বেতনের ভিত্তিতে উল্লিখিত গ্রেড অনুযায়ী সুবিধা পাবেন।
(গ) যারা সরকার থেকে পেনশন গ্রহণ করছেন, তারা বর্তমানে যে পরিমাণ পেনশন পাচ্ছেন তার ওপর ভিত্তি করে উল্লিখিত হারে (গ্রেড অনুসারে) এই বিশেষ আর্থিক সুবিধা পাবেন।
(ঘ) অবসর গ্রহণের সময় যারা সম্পূর্ণ গ্রস পেনশনের শতভাগ অর্থ এককালীন আনুতোষিক হিসেবে তুলে নিয়েছেন এবং এখনো পেনশন পুনঃস্থাপনের আওতায় আসেননি, তারা এই বিশেষ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।
(ঙ) কোনো সরকারি কর্মচারী চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত হলে এবং তার পূর্ববর্তী চাকরির মেয়াদে প্রাপ্ত মূল বেতনের ভিত্তিতে সুবিধা নির্ধারণযোগ্য হয়, তাহলে সেই হিসাবেই সুবিধা প্রযোজ্য হবে। তবে তিনি যদি পেনশনভোগীও হন, সেক্ষেত্রে বেছে নিতে পারবেন – বর্তমান পেনশনের অংশ অথবা পূর্ববর্তী চাকরির মূল বেতনের মধ্যে যেকোনো একটির ভিত্তিতে সুবিধা গ্রহণ।
(চ) যেসব কর্মচারী বর্তমানে সাময়িক বরখাস্ত রয়েছেন, তারা বরখাস্ত হওয়ার পূর্বে যেই মূল বেতন পেতেন, তার ৫০ শতাংশ অংশের ওপর ভিত্তি করে উল্লিখিত হারে বিশেষ সুবিধা পাবেন।
(ছ) যারা বর্তমানে ‘Leave Without Pay’ অর্থাৎ বিনা বেতনের ছুটিতে রয়েছেন, তারা এই সুবিধা পাবেন না।
অর্থায়ন ও প্রযোজ্যতা:
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যেসব স্বশাসিত সংস্থা ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ জাতীয় বেতনস্কেল ২০১৫ অনুসরণ করে কিন্তু সরকারের রাজস্ব বাজেট থেকে পরিচালিত নয়, তাদের কর্মচারীদের জন্য এই বিশেষ সুবিধার ব্যয় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের বাজেট থেকেই বহন করতে হবে।
এছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের পূর্বে জারি করা আদেশ (নং ০৭.০০.০০০০.১৬১.৯৯.০১০.২৩-১৩২, তারিখ: ১৮/০৭/২০২৩) বাতিল করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, জনস্বার্থে এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে এবং ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে এটি কার্যকর হবে।
Please Share This Post in Your Social Media

১ জুলাই ২০২৫ থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ‘বিশেষ সুবিধা’, প্রজ্ঞাপন জারি করলো অর্থ বিভাগ

সরকারি চাকরিজীবী, পেনশনভোগী ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের জন্য বিশেষ আর্থিক সুবিধার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। আগামী ১ জুলাই ২০২৫ থেকে এটি কার্যকর হবে। সরকারি-বেসামরিক দপ্তর, স্বশাসিত সংস্থা, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং পুলিশ বাহিনীতে কর্মরতরা এই সুবিধার আওতায় আসবেন।
মঙ্গলবার (৩ জুন) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগের ‘প্রবিধি-৩’ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে অতিরিক্ত সচিব দিলরুবা শাহীনা স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ১৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জাতীয় বেতনস্কেলের আওতাভুক্ত বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, স্বশাসিত সংস্থা এবং আর্থিক খাত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের জন্য নতুনভাবে ‘বিশেষ সুবিধা’ চালু করা হলো। এ সুবিধা ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
এতে বলা হয়, গ্রেড ১ থেকে গ্রেড ৯ পর্যন্ত বেতনধারী কর্মচারীরা মূল বেতনের উপর ১০ শতাংশ হারে এবং গ্রেড ১০ থেকে গ্রেড ২০ পর্যন্ত কর্মচারীরা ১৫ শতাংশ হারে এ ‘বিশেষ সুবিধা’ পাবেন। চাকরিতে থাকা কর্মীদের ক্ষেত্রে এই অর্থের পরিমাণ ন্যূনতম ১,০০০ টাকা এবং পেনশনপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জন্য তা ন্যূনতম ৫০০ টাকা নির্ধারিত হয়েছে।
বিশেষ সুবিধা প্রাপ্তির বিস্তারিত বিবরণ:
(ক) ১ জুলাই ২০২৫ থেকে প্রতিবছর ১ জুলাই তারিখে সরকারি কর্মচারীরা তাদের প্রযোজ্য গ্রেড অনুযায়ী মূল বেতনের ওপর ‘বিশেষ সুবিধা’ পাবেন। গ্রেড ১ থেকে ৯ পর্যন্ত কর্মচারীদের জন্য হার হবে ১০ শতাংশ এবং গ্রেড ১০ থেকে ২০ পর্যন্ত কর্মচারীদের জন্য হবে ১৫ শতাংশ।
(খ) অবসর-উত্তর ছুটিতে (PRL) থাকা কর্মচারীরা তাদের অবসরের পূর্বে যেই মূল বেতন পেতেন, সেই বেতনের ভিত্তিতে উল্লিখিত গ্রেড অনুযায়ী সুবিধা পাবেন।
(গ) যারা সরকার থেকে পেনশন গ্রহণ করছেন, তারা বর্তমানে যে পরিমাণ পেনশন পাচ্ছেন তার ওপর ভিত্তি করে উল্লিখিত হারে (গ্রেড অনুসারে) এই বিশেষ আর্থিক সুবিধা পাবেন।
(ঘ) অবসর গ্রহণের সময় যারা সম্পূর্ণ গ্রস পেনশনের শতভাগ অর্থ এককালীন আনুতোষিক হিসেবে তুলে নিয়েছেন এবং এখনো পেনশন পুনঃস্থাপনের আওতায় আসেননি, তারা এই বিশেষ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।
(ঙ) কোনো সরকারি কর্মচারী চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত হলে এবং তার পূর্ববর্তী চাকরির মেয়াদে প্রাপ্ত মূল বেতনের ভিত্তিতে সুবিধা নির্ধারণযোগ্য হয়, তাহলে সেই হিসাবেই সুবিধা প্রযোজ্য হবে। তবে তিনি যদি পেনশনভোগীও হন, সেক্ষেত্রে বেছে নিতে পারবেন – বর্তমান পেনশনের অংশ অথবা পূর্ববর্তী চাকরির মূল বেতনের মধ্যে যেকোনো একটির ভিত্তিতে সুবিধা গ্রহণ।
(চ) যেসব কর্মচারী বর্তমানে সাময়িক বরখাস্ত রয়েছেন, তারা বরখাস্ত হওয়ার পূর্বে যেই মূল বেতন পেতেন, তার ৫০ শতাংশ অংশের ওপর ভিত্তি করে উল্লিখিত হারে বিশেষ সুবিধা পাবেন।
(ছ) যারা বর্তমানে ‘Leave Without Pay’ অর্থাৎ বিনা বেতনের ছুটিতে রয়েছেন, তারা এই সুবিধা পাবেন না।
অর্থায়ন ও প্রযোজ্যতা:
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যেসব স্বশাসিত সংস্থা ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ জাতীয় বেতনস্কেল ২০১৫ অনুসরণ করে কিন্তু সরকারের রাজস্ব বাজেট থেকে পরিচালিত নয়, তাদের কর্মচারীদের জন্য এই বিশেষ সুবিধার ব্যয় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের বাজেট থেকেই বহন করতে হবে।
এছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের পূর্বে জারি করা আদেশ (নং ০৭.০০.০০০০.১৬১.৯৯.০১০.২৩-১৩২, তারিখ: ১৮/০৭/২০২৩) বাতিল করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, জনস্বার্থে এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে এবং ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে এটি কার্যকর হবে।