বাংলাদেশসহ ১৪ দেশের নাগরিকদের জন্য সৌদির ‘ওয়ার্ক ভিসা’ স্থগিত, হজ মৌসুম পর্যন্ত বহাল থাকবে নিষেধাজ্ঞা

- Update Time : ১০:৫০:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫
- / ১২৮ Time View
সৌদি আরব সরকার বাংলাদেশসহ মোট ১৪টি দেশের নাগরিকদের জন্য ‘ওয়ার্ক ভিসা’ প্রদান সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। সৌদি হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট মন্ত্রণালয়ের বরাতে আরব টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত আগামী মাস, অর্থাৎ জুন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। হজ মৌসুম শেষ হওয়ার পর এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে হাজার হাজার বিদেশি কর্মী এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ীরা চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বহু বিদেশি শ্রমিক যারা ইতিমধ্যেই সৌদি আরবে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তাদের ভিসা কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যাওয়ায় অর্থনৈতিক ও পেশাগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সৌদিতে শ্রমনির্ভর নানা খাত ও বিদেশি বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম।
সৌদির নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা দেশগুলো হলো: বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, নাইজেরিয়া, জর্ডান, আলজেরিয়া, সুদান, ইথিওপিয়া, তিউনিসিয়া, ইয়েমেন এবং মরক্কো। এই দেশগুলো থেকে আসা নতুন কর্মীদের জন্য ওয়ার্ক ভিসা আপাতত প্রদান করা হবে না।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ মূলত হজ মৌসুমের সময় সৌদিতে অতিরিক্ত বিদেশি উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তাজনিত ও প্রশাসনিক কারণেই নেওয়া হয়ে থাকতে পারে। সৌদি আরবে প্রতিবছর হজ মৌসুমে বিপুল সংখ্যক বিদেশি মুসল্লি আগমন করেন, ফলে অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে এ ধরনের সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আগে কখনও কখনও আরোপ করা হয়েছে।
এর আগেও একাধিকবার বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের জন্য সৌদি সরকার ওয়ার্ক ভিসা স্থগিত করেছিল। বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারির সময়, নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ, বা রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল। তবে এবার একসাথে ১৪টি দেশের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বের দাবিদার।
বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বহু সংখ্যক কর্মী সৌদি আরবে পাড়ি জমান। রেমিট্যান্স আয়ের অন্যতম বড় উৎস হলো মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটি। ফলে ওয়ার্ক ভিসা স্থগিত হওয়ায় বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মসংস্থান ব্যবস্থাপনায় অস্থিরতা দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টি গুরুত্বের সাথে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং সৌদি সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক পর্যায়ে যোগাযোগ করা হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হজ মৌসুম শেষে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তবে ততদিন পর্যন্ত ভিসা প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় ভুক্তভোগীদের জন্য অর্থনৈতিক ও সময়ের দিক থেকে ভোগান্তি তৈরি হবে, যা দ্রুত সমাধান কাম্য।
Please Share This Post in Your Social Media

বাংলাদেশসহ ১৪ দেশের নাগরিকদের জন্য সৌদির ‘ওয়ার্ক ভিসা’ স্থগিত, হজ মৌসুম পর্যন্ত বহাল থাকবে নিষেধাজ্ঞা

সৌদি আরব সরকার বাংলাদেশসহ মোট ১৪টি দেশের নাগরিকদের জন্য ‘ওয়ার্ক ভিসা’ প্রদান সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। সৌদি হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট মন্ত্রণালয়ের বরাতে আরব টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত আগামী মাস, অর্থাৎ জুন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। হজ মৌসুম শেষ হওয়ার পর এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
নতুন এই সিদ্ধান্তের ফলে হাজার হাজার বিদেশি কর্মী এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ীরা চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বহু বিদেশি শ্রমিক যারা ইতিমধ্যেই সৌদি আরবে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তাদের ভিসা কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যাওয়ায় অর্থনৈতিক ও পেশাগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সৌদিতে শ্রমনির্ভর নানা খাত ও বিদেশি বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম।
সৌদির নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা দেশগুলো হলো: বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, ইরাক, নাইজেরিয়া, জর্ডান, আলজেরিয়া, সুদান, ইথিওপিয়া, তিউনিসিয়া, ইয়েমেন এবং মরক্কো। এই দেশগুলো থেকে আসা নতুন কর্মীদের জন্য ওয়ার্ক ভিসা আপাতত প্রদান করা হবে না।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ মূলত হজ মৌসুমের সময় সৌদিতে অতিরিক্ত বিদেশি উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তাজনিত ও প্রশাসনিক কারণেই নেওয়া হয়ে থাকতে পারে। সৌদি আরবে প্রতিবছর হজ মৌসুমে বিপুল সংখ্যক বিদেশি মুসল্লি আগমন করেন, ফলে অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে এ ধরনের সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আগে কখনও কখনও আরোপ করা হয়েছে।
এর আগেও একাধিকবার বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের জন্য সৌদি সরকার ওয়ার্ক ভিসা স্থগিত করেছিল। বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারির সময়, নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ, বা রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল। তবে এবার একসাথে ১৪টি দেশের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বের দাবিদার।
বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বহু সংখ্যক কর্মী সৌদি আরবে পাড়ি জমান। রেমিট্যান্স আয়ের অন্যতম বড় উৎস হলো মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটি। ফলে ওয়ার্ক ভিসা স্থগিত হওয়ায় বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মসংস্থান ব্যবস্থাপনায় অস্থিরতা দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টি গুরুত্বের সাথে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং সৌদি সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক পর্যায়ে যোগাযোগ করা হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হজ মৌসুম শেষে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তবে ততদিন পর্যন্ত ভিসা প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় ভুক্তভোগীদের জন্য অর্থনৈতিক ও সময়ের দিক থেকে ভোগান্তি তৈরি হবে, যা দ্রুত সমাধান কাম্য।