সময়: বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

হজের সময় ঋতু শুরু হলে করণীয়: নারী হাজিদের জন্য একটি সহায়ক নির্দেশনা

সাজেদা আক্তার
  • Update Time : ০৩:০০:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
  • / ১৮০ Time View

women hajj 20230605181400

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

women hajj 20230605181400

ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ হজ মুসলিম জীবনের শ্রেষ্ঠ ইবাদত। প্রতিটি সক্ষম মুসলমানের জন্য জীবনে একবার হজ আদায় করা ফরজ। এটি এমন এক আত্মিক ও শারীরিক সাধনা, যা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে আত্মার পরিশুদ্ধি এবং আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের অসাধারণ সুযোগ এনে দেয়। তবে নারীদের জন্য একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় বিষয় হজের সময়ে নতুন কিছু জটিলতা তৈরি করতে পারে, আর সেটি হলো ঋতুস্রাব বা মাসিকের আগমন। হজের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এ ঘটনা তাদের মানসিকভাবে ভেঙে ফেলতে পারে, কারণ অনেকেই মনে করেন এতে তারা ইবাদতের একটি বড় অংশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই লেখায় আমরা জানব, হজের সময় ঋতু শুরু হলে কী করা উচিত, শরীয়তের দৃষ্টিভঙ্গি কী এবং কীভাবে এই সময়টিকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অর্থবহ করে তোলা যায়।

হজ নারীত্ব: পূর্বপ্রস্তুতি জরুরি

হজের পরিকল্পনার সময়ই নারীদের ঋতুস্রাবের সম্ভাবনা বিবেচনায় রাখা জরুরি। যাঁরা নির্দিষ্ট মাসে নিয়মিত মাসিক হয়ে থাকেন, তাঁরা ক্যালেন্ডার দেখে তা নির্ধারণ করতে পারেন। অনেক নারী পবিত্রতার সময় নিশ্চিত করতে ওরাল কন্ট্রাসেপটিভ পিল বা হরমোনাল ওষুধ ব্যবহার করে মাসিক বিলম্ব করার চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে আলেমদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও সাধারণভাবে যেহেতু এটি শরীয়তে নিষিদ্ধ নয়, তাই প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এটি গ্রহণ করা উচিত নয়। স্বাস্থ্যের ক্ষতি হলে তা গ্রহণ না করাই উত্তম। শরীয়তের অন্যতম নীতি হলো—ধর্মে কারও জন্য কষ্ট তৈরি করা উদ্দেশ্য নয় (সুরা বাকারা: ১৮৫)।

ঋতু চলাকালীন কী করা যাবে, আর কী নয়?

শরীয়তের দৃষ্টিতে ঋতুবতী নারীর জন্য তাওয়াফ, নামাজ এবং কুরআন তেলাওয়াত (মুখস্থ না হলে) নিষিদ্ধ, কারণ এই সময় নারী পবিত্র অবস্থায় থাকেন না। তবে হজের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা যেমন—

  • মিনায় অবস্থান
  • আরাফায় উপস্থিতি (যা হজের মূল অংশ)
  • মুজদালিফায় রাত যাপন
  • জামরাতে শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ
  • সাঈ (শর্ত সাপেক্ষে)
  • জিকির, দোয়া ও দরুদ

—সবই করা সম্ভব। অর্থাৎ আপনি ইবাদত থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন নন, বরং একটি নির্দিষ্ট রীতিমাত্রই বাদ দিতে বলা হয়েছে।

ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত: আয়েশা (রা.)-এর অভিজ্ঞতা

হাদিসে রয়েছে, আয়েশা (রা.) হজের ইচ্ছায় নবীজি (সা.)-এর সঙ্গে রওনা দেন। যাত্রাপথে তিনি ঋতুবতী হয়ে পড়েন এবং কাঁদতে শুরু করেন। তখন নবীজি (সা.) বলেন:

এটি এমন একটি বিষয় যা আল্লাহ আদমের কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন। তাই তুমি যা কিছু হজযাত্রীরা করে, তা করো, শুধু কাবার তাওয়াফ ব্যতীত।
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৯৪)

এই হাদিস নারী হাজিদের জন্য এক বিশাল স্বস্তির বাণী। এতে বোঝা যায় যে, ঋতু আল্লাহর সৃষ্টি এবং এতে গ্লানির কিছু নেই। এতে ইবাদত বন্ধ নয় বরং একটি নির্দিষ্ট আচার থেকে সাময়িক বিরতি মাত্র।

ঋতুকালেও ইবাদতের অব্যাহত ধারা

ঋতুর সময় আপনি নিজেকে আল্লাহর ঘর থেকে দূরে ভাবতে পারেন, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আপনি তাঁর রহমতের আরও কাছে আছেন। কারণ এই সময় বিরত থাকাও আল্লাহর হুকুম মানার একটি রূপ। এই সময়ে আপনি যা করতে পারেন:

  1. জিকির দরুদ: প্রতিনিয়ত ‘সুবহানাল্লাহ’, ‘আলহামদুলিল্লাহ’, ‘আল্লাহু আকবার’, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এসব পড়ে থাকুন। রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, আল্লাহ তার জন্য ক্ষমা ও পুরস্কার প্রস্তুত রেখেছেন।” (সুরা আহযাব: ৩৫)
  2. দোয়া ইস্তেগফার: আল্লাহর কাছে ব্যক্তিগত দোয়া করুন, আত্মবিশ্লেষণ করুন, জীবনের ভুলগুলোর জন্য ক্ষমা চেয়ে নিন।
  3. ইসলামী ইতিহাস জানা: নবীজি (সা.)-এর জীবনী, সাহাবিদের কাহিনি, হজের ইতিহাস—এসব পড়ার মাধ্যমে জ্ঞানের দ্বার খুলে দিন।
  4. ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন: যেমন—
    • জান্নাতুল মুয়াল্লা
    • আবু কুবাইস পাহাড়
    • হেরা গুহা ও সাওর গুহা
    • আয়েশা মসজিদ
    • বদরের যুদ্ধক্ষেত্র (ভ্রমণের সুযোগ থাকলে)

এই স্থানগুলো নবীজির (সা.) জীবনের অংশ, যা দেখলে আপনার ইমান আরও শক্তিশালী হবে।

মানসিক প্রস্তুতি আল্লাহর পরিকল্পনার প্রতি আস্থা

হজের সময় ঋতু শুরু হওয়া মানেই ইবাদত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া নয়, বরং এটি একটি পরীক্ষার সময়—আপনি কতটা ধৈর্য ধরতে পারেন, কতটা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আল্লাহর হুকুম মানতে পারেন। আল্লাহ বলেন:

হয়তো তোমরা যা অপছন্দ করো, তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর; আর যা পছন্দ করো, তা তোমাদের জন্য ক্ষতিকর। আল্লাহ জানেন, তোমরা জানো না।
(সুরা বাকারা, আয়াত: ২১৬)

ঋতু আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি স্বাভাবিক, জৈবিক প্রক্রিয়া। এটা কোনো অভিশাপ বা ইবাদত থেকে বঞ্চনার কারণ নয়। বরং এটিও একটি ইবাদত—আল্লাহর বিধান মেনে চলা, ধৈর্য ধারণ করা ও তাঁর সন্তুষ্টি কামনায় নিজেকে নিয়োজিত রাখাই সত্যিকারের হজের শিক্ষা।

শেষ কথা

হজের সময় ঋতু শুরু হলে মন খারাপ করবেন না। আল্লাহ আপনার মনোভাব, আপনার নিয়ত, আপনার আত্মার ইবাদত জানেন। আপনি নামাজ বা তাওয়াফ করতে না পারলেও, জিকির, দোয়া, দরুদ, ইতিহাস পাঠ, আত্মসমালোচনা ও ধৈর্যের মাধ্যমে হজকে অর্থবহ করে তুলতে পারেন। আল্লাহ আমাদের ইবাদত কবুল করুন, আমাদের অন্তরের ইবাদত দেখুন এবং হজের প্রতিটি পদক্ষেপে আমাদের জন্য বরকত দান করুন।

ইনশা আল্লাহ, আপনি সফল একজন হাজি হয়ে ফিরবেনঋতু হোক বা না হোক।

সূত্র:

  • সহিহ বুখারি
  • সুরা বাকারা, আয়াত: ২১৬
  • সুরা আহযাব, আয়াত: ৩৫
  • MuslimGirl.com

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Please Share This Post in Your Social Media

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
About Author Information

সাজেদা আক্তার

সাজেদা আক্তার একজন বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী এবং দক্ষ কলামিস্ট, যিনি সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বিডিবো নিউজে, তিনি সমাজ, পরিবার এবং জীবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লেখেন। একজন অভিজ্ঞ কলামিস্ট হিসেবে, তিনি বিভিন্ন পত্রিকায় সমাজিক বিষয়, পারিবারিক গতিশীলতা এবং বিভিন্ন জীবনধারা সম্পর্কিত ভাবনাপ্রসূত বিষয়গুলি নিয়ে লেখেন। সামাজিক প্রবণতাগুলি বিশ্লেষণ ও প্রকাশ করার ক্ষেত্রে তার দক্ষতা তাকে এই ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্থান দিয়েছে। সাজেদা আক্তারের কাজ শুধু পাঠকদের তথ্য প্রদান করে না, বরং তাদের অনুপ্রাণিতও করে, যা তাকে সাংবাদিকতা এবং সমাজবিজ্ঞানের জগতে সম্মানিত একটি কণ্ঠস্বর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

হজের সময় ঋতু শুরু হলে করণীয়: নারী হাজিদের জন্য একটি সহায়ক নির্দেশনা

Update Time : ০৩:০০:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
শেয়ার করুনঃ
Pin Share

women hajj 20230605181400

ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ হজ মুসলিম জীবনের শ্রেষ্ঠ ইবাদত। প্রতিটি সক্ষম মুসলমানের জন্য জীবনে একবার হজ আদায় করা ফরজ। এটি এমন এক আত্মিক ও শারীরিক সাধনা, যা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে আত্মার পরিশুদ্ধি এবং আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের অসাধারণ সুযোগ এনে দেয়। তবে নারীদের জন্য একটি স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় বিষয় হজের সময়ে নতুন কিছু জটিলতা তৈরি করতে পারে, আর সেটি হলো ঋতুস্রাব বা মাসিকের আগমন। হজের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এ ঘটনা তাদের মানসিকভাবে ভেঙে ফেলতে পারে, কারণ অনেকেই মনে করেন এতে তারা ইবাদতের একটি বড় অংশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই লেখায় আমরা জানব, হজের সময় ঋতু শুরু হলে কী করা উচিত, শরীয়তের দৃষ্টিভঙ্গি কী এবং কীভাবে এই সময়টিকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অর্থবহ করে তোলা যায়।

হজ নারীত্ব: পূর্বপ্রস্তুতি জরুরি

হজের পরিকল্পনার সময়ই নারীদের ঋতুস্রাবের সম্ভাবনা বিবেচনায় রাখা জরুরি। যাঁরা নির্দিষ্ট মাসে নিয়মিত মাসিক হয়ে থাকেন, তাঁরা ক্যালেন্ডার দেখে তা নির্ধারণ করতে পারেন। অনেক নারী পবিত্রতার সময় নিশ্চিত করতে ওরাল কন্ট্রাসেপটিভ পিল বা হরমোনাল ওষুধ ব্যবহার করে মাসিক বিলম্ব করার চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে আলেমদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও সাধারণভাবে যেহেতু এটি শরীয়তে নিষিদ্ধ নয়, তাই প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এটি গ্রহণ করা উচিত নয়। স্বাস্থ্যের ক্ষতি হলে তা গ্রহণ না করাই উত্তম। শরীয়তের অন্যতম নীতি হলো—ধর্মে কারও জন্য কষ্ট তৈরি করা উদ্দেশ্য নয় (সুরা বাকারা: ১৮৫)।

ঋতু চলাকালীন কী করা যাবে, আর কী নয়?

শরীয়তের দৃষ্টিতে ঋতুবতী নারীর জন্য তাওয়াফ, নামাজ এবং কুরআন তেলাওয়াত (মুখস্থ না হলে) নিষিদ্ধ, কারণ এই সময় নারী পবিত্র অবস্থায় থাকেন না। তবে হজের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা যেমন—

  • মিনায় অবস্থান
  • আরাফায় উপস্থিতি (যা হজের মূল অংশ)
  • মুজদালিফায় রাত যাপন
  • জামরাতে শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ
  • সাঈ (শর্ত সাপেক্ষে)
  • জিকির, দোয়া ও দরুদ

—সবই করা সম্ভব। অর্থাৎ আপনি ইবাদত থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন নন, বরং একটি নির্দিষ্ট রীতিমাত্রই বাদ দিতে বলা হয়েছে।

ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত: আয়েশা (রা.)-এর অভিজ্ঞতা

হাদিসে রয়েছে, আয়েশা (রা.) হজের ইচ্ছায় নবীজি (সা.)-এর সঙ্গে রওনা দেন। যাত্রাপথে তিনি ঋতুবতী হয়ে পড়েন এবং কাঁদতে শুরু করেন। তখন নবীজি (সা.) বলেন:

এটি এমন একটি বিষয় যা আল্লাহ আদমের কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন। তাই তুমি যা কিছু হজযাত্রীরা করে, তা করো, শুধু কাবার তাওয়াফ ব্যতীত।
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৯৪)

এই হাদিস নারী হাজিদের জন্য এক বিশাল স্বস্তির বাণী। এতে বোঝা যায় যে, ঋতু আল্লাহর সৃষ্টি এবং এতে গ্লানির কিছু নেই। এতে ইবাদত বন্ধ নয় বরং একটি নির্দিষ্ট আচার থেকে সাময়িক বিরতি মাত্র।

ঋতুকালেও ইবাদতের অব্যাহত ধারা

ঋতুর সময় আপনি নিজেকে আল্লাহর ঘর থেকে দূরে ভাবতে পারেন, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আপনি তাঁর রহমতের আরও কাছে আছেন। কারণ এই সময় বিরত থাকাও আল্লাহর হুকুম মানার একটি রূপ। এই সময়ে আপনি যা করতে পারেন:

  1. জিকির দরুদ: প্রতিনিয়ত ‘সুবহানাল্লাহ’, ‘আলহামদুলিল্লাহ’, ‘আল্লাহু আকবার’, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এসব পড়ে থাকুন। রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, আল্লাহ তার জন্য ক্ষমা ও পুরস্কার প্রস্তুত রেখেছেন।” (সুরা আহযাব: ৩৫)
  2. দোয়া ইস্তেগফার: আল্লাহর কাছে ব্যক্তিগত দোয়া করুন, আত্মবিশ্লেষণ করুন, জীবনের ভুলগুলোর জন্য ক্ষমা চেয়ে নিন।
  3. ইসলামী ইতিহাস জানা: নবীজি (সা.)-এর জীবনী, সাহাবিদের কাহিনি, হজের ইতিহাস—এসব পড়ার মাধ্যমে জ্ঞানের দ্বার খুলে দিন।
  4. ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন: যেমন—
    • জান্নাতুল মুয়াল্লা
    • আবু কুবাইস পাহাড়
    • হেরা গুহা ও সাওর গুহা
    • আয়েশা মসজিদ
    • বদরের যুদ্ধক্ষেত্র (ভ্রমণের সুযোগ থাকলে)

এই স্থানগুলো নবীজির (সা.) জীবনের অংশ, যা দেখলে আপনার ইমান আরও শক্তিশালী হবে।

মানসিক প্রস্তুতি আল্লাহর পরিকল্পনার প্রতি আস্থা

হজের সময় ঋতু শুরু হওয়া মানেই ইবাদত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া নয়, বরং এটি একটি পরীক্ষার সময়—আপনি কতটা ধৈর্য ধরতে পারেন, কতটা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আল্লাহর হুকুম মানতে পারেন। আল্লাহ বলেন:

হয়তো তোমরা যা অপছন্দ করো, তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর; আর যা পছন্দ করো, তা তোমাদের জন্য ক্ষতিকর। আল্লাহ জানেন, তোমরা জানো না।
(সুরা বাকারা, আয়াত: ২১৬)

ঋতু আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি স্বাভাবিক, জৈবিক প্রক্রিয়া। এটা কোনো অভিশাপ বা ইবাদত থেকে বঞ্চনার কারণ নয়। বরং এটিও একটি ইবাদত—আল্লাহর বিধান মেনে চলা, ধৈর্য ধারণ করা ও তাঁর সন্তুষ্টি কামনায় নিজেকে নিয়োজিত রাখাই সত্যিকারের হজের শিক্ষা।

শেষ কথা

হজের সময় ঋতু শুরু হলে মন খারাপ করবেন না। আল্লাহ আপনার মনোভাব, আপনার নিয়ত, আপনার আত্মার ইবাদত জানেন। আপনি নামাজ বা তাওয়াফ করতে না পারলেও, জিকির, দোয়া, দরুদ, ইতিহাস পাঠ, আত্মসমালোচনা ও ধৈর্যের মাধ্যমে হজকে অর্থবহ করে তুলতে পারেন। আল্লাহ আমাদের ইবাদত কবুল করুন, আমাদের অন্তরের ইবাদত দেখুন এবং হজের প্রতিটি পদক্ষেপে আমাদের জন্য বরকত দান করুন।

ইনশা আল্লাহ, আপনি সফল একজন হাজি হয়ে ফিরবেনঋতু হোক বা না হোক।

সূত্র:

  • সহিহ বুখারি
  • সুরা বাকারা, আয়াত: ২১৬
  • সুরা আহযাব, আয়াত: ৩৫
  • MuslimGirl.com

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share