সময়: বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক: কোরআন, হাদীস, সমাজ ও আমাদের করণীয়

সাজেদা আক্তার
  • Update Time : ১০:৫৩:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
  • / ৯৪ Time View

212134husband wife 1

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

212134husband wife 1

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক মানুষের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। এই সম্পর্কটি শুধু পারিবারিক জীবনের ভিত্তিই নয়, বরং একটি সুস্থ সমাজ ও সভ্য জাতি গঠনের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ। ইসলাম এই সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেছে এবং কোরআন ও হাদীসে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক দায়িত্ব, সম্মান, ভালোবাসা ও সহমর্মিতার বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা প্রদান করেছে। অথচ বর্তমান সমাজে আমরা প্রায়ই এই সম্পর্কের প্রকৃত রূপকে ভুলে গিয়ে দ্বন্দ্ব, অবিশ্বাস ও অন্যায়ের দিকে ধাবিত হচ্ছি। এই নিবন্ধে কোরআন ও হাদীসের আলোকে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক, বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপট এবং আমাদের করণীয় নিয়ে আলোচনা করা হলো।

কোরআনের আলোকে স্বামীস্ত্রীর সম্পর্ক

আল্লাহতায়ালা বলেন,
তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে একটি হলো, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের স্ত্রীগণকে সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের নিকট প্রশান্তি লাভ করো এবং তিনি তোমাদের মাঝে ভালবাসা দয়ার বন্ধন সৃষ্টি করেছেন।
(সূরা আর-রূম: ২১)

এই আয়াতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, দাম্পত্য সম্পর্কের মূল ভিত্তি শান্তি, ভালোবাসা ও দয়া। এটি কোনো প্রভু-ভৃত্য সম্পর্ক নয়, বরং পরস্পরকে সম্মান ও সহানুভূতির সঙ্গে দেখা এবং একে অপরকে জীবনের সহচর হিসেবে গ্রহণ করার সম্পর্ক।

আল্লাহ আরও বলেন:
“… নারীদের জন্য যেমন দায়িত্ব রয়েছে, তেমনি তাদের অধিকারও রয়েছে, প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী।
(সূরা আল-বাকারা: ২২৮)

এর দ্বারা বুঝা যায়, ইসলাম নারীর অধিকার ও মর্যাদার বিষয়ে অত্যন্ত সুসংহত ও ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে।

 হাদীসের দৃষ্টিতে দাম্পত্য সম্পর্ক

হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম, যে তার স্ত্রীর প্রতি উত্তম আচরণ করে। আর আমি তোমাদের মধ্যে আমার স্ত্রীর প্রতি সবচেয়ে উত্তম।
(তিরমিজি, হাদীস: ৩৮৯৫)

এ হাদীসে রাসূল (সা.) নিজেকে আদর্শ হিসেবে তুলে ধরেছেন। তিনি তাঁর স্ত্রীদের সঙ্গে ভালোবাসা, সহানুভূতি ও ধৈর্যের সঙ্গে আচরণ করতেন।

একটি অন্য হাদীসে তিনি বলেন:
নারীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করো, কেননা তারা তোমাদের জন্য আমানতস্বরূপ।
 (সহীহ মুসলিম, হাদীস: ১৪৬৮)

নারীদেরকে আমানত হিসেবে গণ্য করা মানে তাদের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করা, নির্যাতন বা অবহেলা নয়।

বর্তমান সমাজে স্বামীস্ত্রীর সম্পর্কের চিত্র

বর্তমান সমাজে দাম্পত্য সম্পর্ক অনেকাংশেই চ্যালেঞ্জের মুখে। অল্পতেই রাগ, সন্দেহ, মোবাইল-সোশ্যাল মিডিয়া, পরিবারের হস্তক্ষেপ, অর্থনৈতিক টানাপোড়েন — এসব কারণে সম্পর্ক ভেঙে যাচ্ছে।

অনেক সময় দেখা যায়, স্বামী নিজেকে কর্তৃত্বের একচ্ছত্র অধিকারী মনে করেন এবং স্ত্রীর মতামতকে গুরুত্ব দেন না। আবার কিছু নারী আধুনিকতার নামে সংসারের দায়িত্ববোধ ও পারস্পরিক সম্মানকে অবহেলা করছেন।

এছাড়া যৌতুক, পরকীয়া, গৃহনির্যাতন, অবিশ্বাস — এসবের প্রভাবে দাম্পত্য জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে, যা শুধু ব্যক্তিজীবন নয় বরং পরবর্তী প্রজন্মকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

আমাদের করণীয়

১. ইসলামি শিক্ষাকে জীবনের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করা: স্বামী-স্ত্রীর উভয়ের উচিত কোরআন-হাদীসের শিক্ষা অনুযায়ী জীবন গঠন করা। বিবাহের পূর্বেই উভয় পক্ষের সচেতনতা গড়ে তোলা উচিত।

২. পারস্পরিক সম্মান সহমর্মিতা: জীবনসঙ্গীকে শুধুই কর্তব্যের মানুষ নয়, বরং ভালোবাসার ও বিশ্বাসের মানুষ হিসেবে দেখা উচিত।

  1. সমঝোতা সংলাপ: বিবাদ হলে তা শান্তভাবে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা। অপরকে দোষারোপ না করে সমাধানমূলক মনোভাব গড়ে তোলা।
  2. পরিবার সমাজের সচেতনতা: মা-বাবা ও শ্বশুর-শাশুড়ির উচিত দাম্পত্য জীবনে অযাচিত হস্তক্ষেপ না করে, সহায়ক ভূমিকা পালন করা।
  3. আইন সামাজিক ব্যবস্থার কার্যকর প্রয়োগ: গৃহনির্যাতন, যৌতুকের দাবি ইত্যাদি প্রতিরোধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা।

শেষকথা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কেবল সামাজিক বা বৈবাহিক বিষয় নয়; এটি একটি ইবাদতের বিষয়ও বটে। এ সম্পর্কের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি দুনিয়া ও আখিরাত উভয়ই সুন্দর করতে পারে। কিন্তু এর জন্য চাই দ্বীনি জ্ঞান, পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা, সহানুভূতি, ধৈর্য ও দায়িত্ববোধ।

আমরা যদি কোরআন ও রাসূল (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করি এবং আধুনিক চ্যালেঞ্জগুলোকে ইসলামি মূল্যবোধ দিয়ে মোকাবিলা করি, তবে আমাদের পরিবারগুলো হবে সুখী, সমাজ হবে শান্তিপূর্ণ এবং আগামীর প্রজন্ম পাবে সুস্থ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিকভাবে স্বামীস্ত্রীর সম্পর্ক পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Please Share This Post in Your Social Media

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
About Author Information

সাজেদা আক্তার

সাজেদা আক্তার একজন বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী এবং দক্ষ কলামিস্ট, যিনি সমাজবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। বিডিবো নিউজে, তিনি সমাজ, পরিবার এবং জীবনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লেখেন। একজন অভিজ্ঞ কলামিস্ট হিসেবে, তিনি বিভিন্ন পত্রিকায় সমাজিক বিষয়, পারিবারিক গতিশীলতা এবং বিভিন্ন জীবনধারা সম্পর্কিত ভাবনাপ্রসূত বিষয়গুলি নিয়ে লেখেন। সামাজিক প্রবণতাগুলি বিশ্লেষণ ও প্রকাশ করার ক্ষেত্রে তার দক্ষতা তাকে এই ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্থান দিয়েছে। সাজেদা আক্তারের কাজ শুধু পাঠকদের তথ্য প্রদান করে না, বরং তাদের অনুপ্রাণিতও করে, যা তাকে সাংবাদিকতা এবং সমাজবিজ্ঞানের জগতে সম্মানিত একটি কণ্ঠস্বর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক: কোরআন, হাদীস, সমাজ ও আমাদের করণীয়

Update Time : ১০:৫৩:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
শেয়ার করুনঃ
Pin Share

212134husband wife 1

স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক মানুষের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। এই সম্পর্কটি শুধু পারিবারিক জীবনের ভিত্তিই নয়, বরং একটি সুস্থ সমাজ ও সভ্য জাতি গঠনের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ। ইসলাম এই সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেছে এবং কোরআন ও হাদীসে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক দায়িত্ব, সম্মান, ভালোবাসা ও সহমর্মিতার বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা প্রদান করেছে। অথচ বর্তমান সমাজে আমরা প্রায়ই এই সম্পর্কের প্রকৃত রূপকে ভুলে গিয়ে দ্বন্দ্ব, অবিশ্বাস ও অন্যায়ের দিকে ধাবিত হচ্ছি। এই নিবন্ধে কোরআন ও হাদীসের আলোকে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক, বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপট এবং আমাদের করণীয় নিয়ে আলোচনা করা হলো।

কোরআনের আলোকে স্বামীস্ত্রীর সম্পর্ক

আল্লাহতায়ালা বলেন,
তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে একটি হলো, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের স্ত্রীগণকে সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের নিকট প্রশান্তি লাভ করো এবং তিনি তোমাদের মাঝে ভালবাসা দয়ার বন্ধন সৃষ্টি করেছেন।
(সূরা আর-রূম: ২১)

এই আয়াতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, দাম্পত্য সম্পর্কের মূল ভিত্তি শান্তি, ভালোবাসা ও দয়া। এটি কোনো প্রভু-ভৃত্য সম্পর্ক নয়, বরং পরস্পরকে সম্মান ও সহানুভূতির সঙ্গে দেখা এবং একে অপরকে জীবনের সহচর হিসেবে গ্রহণ করার সম্পর্ক।

আল্লাহ আরও বলেন:
“… নারীদের জন্য যেমন দায়িত্ব রয়েছে, তেমনি তাদের অধিকারও রয়েছে, প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী।
(সূরা আল-বাকারা: ২২৮)

এর দ্বারা বুঝা যায়, ইসলাম নারীর অধিকার ও মর্যাদার বিষয়ে অত্যন্ত সুসংহত ও ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে।

 হাদীসের দৃষ্টিতে দাম্পত্য সম্পর্ক

হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম, যে তার স্ত্রীর প্রতি উত্তম আচরণ করে। আর আমি তোমাদের মধ্যে আমার স্ত্রীর প্রতি সবচেয়ে উত্তম।
(তিরমিজি, হাদীস: ৩৮৯৫)

এ হাদীসে রাসূল (সা.) নিজেকে আদর্শ হিসেবে তুলে ধরেছেন। তিনি তাঁর স্ত্রীদের সঙ্গে ভালোবাসা, সহানুভূতি ও ধৈর্যের সঙ্গে আচরণ করতেন।

একটি অন্য হাদীসে তিনি বলেন:
নারীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করো, কেননা তারা তোমাদের জন্য আমানতস্বরূপ।
 (সহীহ মুসলিম, হাদীস: ১৪৬৮)

নারীদেরকে আমানত হিসেবে গণ্য করা মানে তাদের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করা, নির্যাতন বা অবহেলা নয়।

বর্তমান সমাজে স্বামীস্ত্রীর সম্পর্কের চিত্র

বর্তমান সমাজে দাম্পত্য সম্পর্ক অনেকাংশেই চ্যালেঞ্জের মুখে। অল্পতেই রাগ, সন্দেহ, মোবাইল-সোশ্যাল মিডিয়া, পরিবারের হস্তক্ষেপ, অর্থনৈতিক টানাপোড়েন — এসব কারণে সম্পর্ক ভেঙে যাচ্ছে।

অনেক সময় দেখা যায়, স্বামী নিজেকে কর্তৃত্বের একচ্ছত্র অধিকারী মনে করেন এবং স্ত্রীর মতামতকে গুরুত্ব দেন না। আবার কিছু নারী আধুনিকতার নামে সংসারের দায়িত্ববোধ ও পারস্পরিক সম্মানকে অবহেলা করছেন।

এছাড়া যৌতুক, পরকীয়া, গৃহনির্যাতন, অবিশ্বাস — এসবের প্রভাবে দাম্পত্য জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে, যা শুধু ব্যক্তিজীবন নয় বরং পরবর্তী প্রজন্মকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

আমাদের করণীয়

১. ইসলামি শিক্ষাকে জীবনের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করা: স্বামী-স্ত্রীর উভয়ের উচিত কোরআন-হাদীসের শিক্ষা অনুযায়ী জীবন গঠন করা। বিবাহের পূর্বেই উভয় পক্ষের সচেতনতা গড়ে তোলা উচিত।

২. পারস্পরিক সম্মান সহমর্মিতা: জীবনসঙ্গীকে শুধুই কর্তব্যের মানুষ নয়, বরং ভালোবাসার ও বিশ্বাসের মানুষ হিসেবে দেখা উচিত।

  1. সমঝোতা সংলাপ: বিবাদ হলে তা শান্তভাবে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা। অপরকে দোষারোপ না করে সমাধানমূলক মনোভাব গড়ে তোলা।
  2. পরিবার সমাজের সচেতনতা: মা-বাবা ও শ্বশুর-শাশুড়ির উচিত দাম্পত্য জীবনে অযাচিত হস্তক্ষেপ না করে, সহায়ক ভূমিকা পালন করা।
  3. আইন সামাজিক ব্যবস্থার কার্যকর প্রয়োগ: গৃহনির্যাতন, যৌতুকের দাবি ইত্যাদি প্রতিরোধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা।

শেষকথা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কেবল সামাজিক বা বৈবাহিক বিষয় নয়; এটি একটি ইবাদতের বিষয়ও বটে। এ সম্পর্কের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি দুনিয়া ও আখিরাত উভয়ই সুন্দর করতে পারে। কিন্তু এর জন্য চাই দ্বীনি জ্ঞান, পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা, সহানুভূতি, ধৈর্য ও দায়িত্ববোধ।

আমরা যদি কোরআন ও রাসূল (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ করি এবং আধুনিক চ্যালেঞ্জগুলোকে ইসলামি মূল্যবোধ দিয়ে মোকাবিলা করি, তবে আমাদের পরিবারগুলো হবে সুখী, সমাজ হবে শান্তিপূর্ণ এবং আগামীর প্রজন্ম পাবে সুস্থ ও সুন্দর ভবিষ্যৎ।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিকভাবে স্বামীস্ত্রীর সম্পর্ক পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share