সময়: সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী আতাউর রহমান সরকার

বিল্লাল হোসেন
  • Update Time : ১২:২৫:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
  • / ১৮০ Time View

Your paragraph text

শেয়ার করুনঃ
Pin Share
ATAUR RAHMAN
 ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী মু. আতাউর রহমান সরকার

 

নির্বাচনী প্রস্তুতির প্রেক্ষাপটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে  মু. আতাউর রহমান সরকারের নাম ঘিরে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে তাকে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার, ১৭ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনুষ্ঠিত এক ইউনিয়ন ও দায়িত্বশীল সমাবেশে দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম এই ঘোষণা দেন।

আতাউর রহমান সরকার একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ, যিনি ছাত্রজীবন থেকেই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থেকে রাজনীতি করে আসছেন। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং পাশাপাশি প্রচার ও মিডিয়া সেক্রেটারির দায়িত্বও সামলাচ্ছেন। তার রাজনৈতিক জীবন কেবল সংগঠনভিত্তিক কর্মকাণ্ডেই সীমাবদ্ধ নয়; তিনি একই সঙ্গে লেখক, সাংবাদিক এবং সমাজকর্মী হিসেবেও সুপরিচিত।

শিক্ষাজীবনে তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক (অনার্স) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। শিক্ষা জীবন শেষে আতাউর রহমান সরকার পেশাগত জীবনে সাংবাদিকতা বেছে নেন। তার লেখনীতে যেমন সমাজ ও সময়ের প্রতিফলন ঘটে, তেমনি সংবাদ মাধ্যমে কাজের মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন সামাজিক ইস্যুতে জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন।

বর্তমানে তিনি একটি খ্যাতনামা অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার নেতৃত্বে সংবাদপত্রটি গণমাধ্যম জগতে একটি নির্ভরযোগ্য নাম হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। পেশাদারিত্ব, দায়িত্ববোধ এবং সততার সঙ্গে তিনি সাংবাদিকতা পেশায় আত্মনিয়োগ করেছেন, যা তাকে সমাজে একজন সম্মানিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে।

আসন্ন নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী তার প্রতি আস্থা রেখে প্রার্থী ঘোষণা করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের রাজনৈতিক মাঠে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। তার প্রার্থীতা ঘোষণার পর থেকেই কসবা ও আখাউড়ার স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার সাধারণ জনগণও তার কর্মোদ্দীপনা, সৎ জীবনযাপন ও শিক্ষাগত যোগ্যতার কারণে তাকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করছে।

আতাউর রহমান সরকারের নেতৃত্বে এ আসনে নতুন রাজনৈতিক চেতনা ও সমাজ পরিবর্তনের প্রত্যাশা করছেন অনেকেই। দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা, নির্লোভ ব্যক্তিত্ব এবং সমাজসেবামূলক কাজে সম্পৃক্ততা তাকে একজন যোগ্য সংসদ সদস্য হিসেবে গড়ে তুলেছে। ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে তিনি কী ভূমিকা রাখবেন, তা সময়ই বলে দেবে, তবে ইতোমধ্যেই তার নাম ঘিরে রাজনৈতিক মহলে আগ্রহ ও আলোচনার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছেন তিনি।

রাজনৈতিক পথচলার ইতিহাস

আতাউর রহমান সরকারের ছাত্রজীবন ছিল আদর্শ, আত্মপ্রত্যয় ও চেতনায় পরিপূর্ণ। শিক্ষা জীবনের শুরু থেকেই তিনি ইসলামী মূল্যবোধে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হন এবং ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে আত্মিকভাবে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। তার হৃদয়ে ইসলামের মর্মবাণী ও আদর্শিক চেতনার বীজ রোপিত হয় অতি অল্প বয়সেই। সময়ের সাথে সাথে তিনি উপলব্ধি করতে থাকেন যে, প্রচলিত রাজনীতি যেখানে ক্ষমতার পালাবদলই মুখ্য, সেখানে ইসলামী রাজনীতি এক সর্বাত্মক নৈতিক বিপ্লবের আহ্বান। এই উপলব্ধিই তার জীবনে এক গভীর বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে দেয়।

তিনি বিশ্বাস করেন, ইনসাফভিত্তিক ও ন্যায়পরায়ণ সমাজ গঠন করতে হলে ইসলামী রাজনীতির পথই একমাত্র কার্যকর পথ হতে পারে। সেই বিশ্বাসকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করিয়ে তিনি নিজের ব্যক্তিজীবন, শিক্ষাজীবন এবং রাজনৈতিক জীবনে ইসলামী নীতিমালার বাস্তব প্রয়োগের অনুশীলন শুরু করেন।

আতাউর রহমান সরকারের শিক্ষাগত জীবন ছিল বৈচিত্র্যময় ও বস্তুনিষ্ঠ। তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে বিএ (অনার্স) ও এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। পাশাপাশি তিনি ইসলামিক স্টাডিজে কামিল (সমমান মাস্টার্স), এলএলবি (অনার্স) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (PGDDS) সম্পন্ন করেন। এ সবগুলো পর্যায়েই তিনি নিজেকে শুধু একজন ছাত্র হিসেবে নয়, বরং একজন চিন্তাশীল কর্মী হিসেবে গড়ে তোলেন।

শিক্ষাজীবনের প্রতিটি ধাপেই আতাউর রহমান সরকার গঠনমূলক ছাত্ররাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের একজন দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে কাজ করেছেন এবং শিক্ষা, সাহিত্য, দাওয়াত, সমাজসেবা ও নেতৃত্ব বিকাশের নানা পর্যায়ে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন। তার নেতৃত্বগুণ, চিন্তাশীলতা ও আদর্শিক মজবুতির কারণে তিনি অল্প সময়ের মধ্যেই সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ স্তরে স্থান করে নেন।

এই পথচলায় তিনি বারবার উপলব্ধি করেছেন, কেবল পুঁথিগত বিদ্যাই নয়, বরং আত্মিক উন্নয়ন, নৈতিকতা এবং সমাজের কল্যাণে নিরলস শ্রমই একজন প্রকৃত শিক্ষিত নাগরিকের বৈশিষ্ট্য। তাই তিনি নিজের অর্জিত জ্ঞান ও আদর্শকে কাজে লাগিয়ে সমাজ ও জাতির কল্যাণে নিয়োজিত থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন সব সময়।

রাজনীতিকে তিনি কখনোই ক্ষমতা অর্জনের বাহন হিসেবে দেখেননি। বরং তিনি একে দায়িত্ব ও আমানত হিসেবে দেখেন, যার মাধ্যমে সমাজে ন্যায়ভিত্তিক পরিবর্তন আনা সম্ভব। শিক্ষা ও রাজনৈতিক জীবন মিলে আতাউর রহমান সরকার গড়ে তুলেছেন এক অনন্য আদর্শিক নেতৃত্ব, যা আজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের মানুষদের মাঝে নতুন সম্ভাবনার আলো জ্বালাচ্ছে।

সামাজিক কাজ জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড

রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় থাকার পাশাপাশি আতাউর রহমান সরকার সামাজিক ও মানবিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিবেদিত রেখেছেন সবসময়। তিনি বিশ্বাস করেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিক নেতৃত্ব নয়, বরং সমাজের প্রতিটি স্তরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য ব্যক্তিগত এবং সাংগঠনিকভাবে সমাজকল্যাণমূলক কাজে সম্পৃক্ত থাকা অপরিহার্য। সেই বিশ্বাস থেকেই তিনি আর্ত-মানবতার সেবায়, শিক্ষার প্রসারে এবং ধর্মীয় ও সামাজিক উন্নয়নে নীরব কিন্তু নিরলস অবদান রেখে চলেছেন।

সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ইতিবাচক প্রভাব তৈরির লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বর্তমানে তিনি কসবা মহিলা মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন, যেখানে নারী শিক্ষার উন্নয়ন ও ইসলামিক শিক্ষার বিস্তারে তিনি কার্যকর ভূমিকা রাখছেন। কসবার এই কৃতি সন্তান শুধু একটি মাদ্রাসা নয়, বরং বহু সামাজিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন ধারাবাহিকভাবে।

তিনি ঢাকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী কারওয়ান বাজার শাহী জামে মসজিদ মাদ্রাসার সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, যেখানে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতামূলক নানা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এছাড়া দারুল ইসলাম ট্রাস্ট, ফালাহ আম ট্রাস্ট এবং বিপিএল (বাংলাদেশ প্রফেশনাল লিগ)-এর নির্বাহী সদস্য হিসেবেও তিনি সমাজ ও মানবতার কল্যাণে কার্যকর ভূমিকা রেখে চলেছেন।

আতাউর রহমান সরকার একজন আজীবন সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাথেও যুক্ত, যা প্রমাণ করে তিনি দুর্যোগকালীন মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখতে সদা প্রস্তুত থাকেন। এছাড়া তিনি আব্দুল মান্নান মতি মেম্বার ফাউন্ডেশনআলোকিত সমাজ উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, যেখানে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নের বহু প্রকল্পে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন।

সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকার সুবাদে তিনি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য হিসেবেও সক্রিয় রয়েছেন। তিনি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও পেশাগত মর্যাদার পক্ষে সবসময় সোচ্চার।

প্রবাসী ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী ও শিক্ষার্থী সমাজের উন্নয়নেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। ঢাকাস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে প্রবাসী নাগরিকদের অধিকার ও সংহতির জন্য কাজ করেছেন। পাশাপাশি তিনি কুমিল্লাস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টুডেন্ট ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি হিসেবে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও নেতৃত্ব বিকাশে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন।

সমাজ ও মানবতার কল্যাণে আতাউর রহমান সরকারের এই নিরবচ্ছিন্ন কর্মপ্রবাহ তার নেতৃত্বগুণ ও দায়বদ্ধতাকে তুলে ধরে। রাজনীতির বাইরে সমাজসেবায় তার সক্রিয় অংশগ্রহণ তাকে শুধু একজন রাজনীতিক নয়, বরং একজন সমাজনির্মাতা হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করেছে।

ছাত্র জাতীয় রাজনীতিতে আতাউর রহমান সরকারের অবদান

আতাউর রহমান সরকারের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ছাত্রাবস্থা থেকেই, এবং সময়ের পরিক্রমায় তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন একজন সুদৃঢ় আদর্শিক নেতা হিসেবে। তিনি ছাত্ররাজনীতি থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ের রাজনীতিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন, যেখানে দেশ ও জনগণের স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছেন। প্রিয় জন্মভূমির কল্যাণে তিনি নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন প্রতিটি সংকটময় মুহূর্তে, দায়িত্বশীলতা ও নেতৃত্বগুণের সঙ্গে।

২০০০ সালে তিনি বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের কসবা উপজেলা পর্যায়ের সদস্য হিসেবে কাজ করে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে তার সক্রিয়তার প্রমাণ দেন। এরও আগে, ১৯৯৯ সালে কসবায় স্থানীয় জনগণের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণের লক্ষ্যে গ্যাস বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই ভূমিকার মধ্য দিয়ে তিনি স্থানীয় উন্নয়ন ও নাগরিক অধিকার আদায়ের প্রশ্নে আপসহীন নেতৃত্ব দেখান।

ছাত্র রাজনীতির সময়কালেও তিনি ছিলেন তৎপর এবং সুসংগঠিত ছাত্র ঐক্যের প্রবক্তা। তিনি ২০০৫-২০০৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের সদস্য সচিব হিসেবে কাজ করেন। এরপর ২০০৭-২০০৮ সালে কুমিল্লা জেলার সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ছাত্রসমাজে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং ন্যায়ের রাজনীতির চেতনা ছড়িয়ে দিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন।

তার রাজনীতিক ধারা ছাত্রজীবন পেরিয়ে জাতীয় পর্যায়ে আরও সুসংগঠিত ও কার্যকর হয়ে ওঠে। ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের হাতিরঝিল রমনা থানা শাখার আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি সংগঠন পরিচালনা, কর্মীদের নেতৃত্বদান এবং জনসংযোগ কার্যক্রমে ব্যাপক অবদান রাখেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য এবং প্রচার মিডিয়া সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, যেখানে তার অভিজ্ঞতা ও দূরদৃষ্টি দলীয় কর্মকাণ্ডকে আরও গতিশীল করে তুলছে।

রাজনীতির কঠিন বাস্তবতায় তিনি বহুবার সরকারবিরোধী আন্দোলনের সম্মুখভাগে ছিলেন এবং ন্যায়ের পক্ষে কথা বলার সাহস দেখিয়েছেন। ১৯৯৮ সালে কসবায়, এবং পরে ২০১০, ২০১৬ ও ২০২১ সালে ঢাকায় আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের কারণে তিনি দেড় বছরের বেশি সময় কারাবরণ করেন। তার এই কারাবরণ কেবলমাত্র একটি রাজনৈতিক মূল্য পরিশোধ নয়, বরং আদর্শের প্রতি অটল থাকার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

আতাউর রহমান সরকারের ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর অবদান সুদূরপ্রসারী ও গৌরবময়। তিনি রাজনীতিকে শুধুমাত্র ক্ষমতার রাজনীতি হিসেবে দেখেন না, বরং ন্যায়, ইনসাফ এবং জনগণের কল্যাণ সাধনের মাধ্যম হিসেবেই বেছে নিয়েছেন। তার এই নিরলস প্রচেষ্টা ভবিষ্যতের নেতৃত্বে তাঁর জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে নিঃসন্দেহে।

কসবাআখাউড়া জনগণের প্রতি আহ্বান

প্রিয় কসবা-আখাউড়ার জনগণের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন আপনাদের ভালোবাসা, বিশ্বাস ও সহযোগিতাই আমার রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনের মূল চালিকাশক্তি। আমি আতাউর রহমান সরকার—এই মাটি, এই মানুষের সন্তান। জীবনের প্রতিটি ধাপে, ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক অঙ্গনে, আমি চেষ্টা করেছি আপনাদের প্রত্যাশা ও স্বপ্নকে সামনে রেখেই কাজ করতে। আজ, যখন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আমাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, তখন আমি এই মহান দায়িত্বকে শুধু প্রার্থী হওয়ার সুযোগ হিসেবে নয়, বরং আপনাদের সেবক হওয়ার অঙ্গীকার হিসেবে নিচ্ছি।

আমার রাজনীতির মূল ভিত্তি হচ্ছে ইনসাফভিত্তিক সমাজ গঠন, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন, ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধভিত্তিক শাসনব্যবস্থা এবং সাধারণ মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা। আমি বিশ্বাস করি, কেবলমাত্র ইসলামি আদর্শের ভিত্তিতে পরিচালিত রাজনীতিই পারে একটি মানবিক, ন্যায়ভিত্তিক, মর্যাদাপূর্ণ সমাজ উপহার দিতে।

আমি আপনাদের সামনে হাত বাড়িয়ে বলছি—চলুন, আমরা একসঙ্গে একটি সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলি। যেখানে হিংসা নয়, হবে সহানুভূতি; বিভাজন নয়, হবে ঐক্য; উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নয়, হবে বাস্তবায়ন।

আমার প্রতি আপনাদের আস্থা ও সমর্থন আমাকে অনুপ্রাণিত করে আরও বেশি দায়িত্ববান হতে। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, নির্বাচিত হলে শুধু দল নয়, বরং সব মত ও পথের মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবো। এলাকার উন্নয়ন, যুব সমাজের কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার মানোন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করাই হবে আমার মূল লক্ষ্য।

আসুন, আমরা দল-মত-পথ নির্বিশেষে কসবা-আখাউড়াকে একটি মডেল নির্বাচনী এলাকা হিসেবে গড়ে তুলি। যেখানে সবাই শান্তিতে থাকবে, নিরাপদে থাকবে এবং সম্মানের সঙ্গে বসবাস করতে পারবে।

এই অঞ্চলের প্রতিটি মানুষ আমার আপনজন—আপনাদের ভালোবাসা, দোয়া সমর্থনই আমার বিজয়ের পথ তৈরি করবে।
আসুন, আগামী নির্বাচনে আমরা পরিবর্তনের পক্ষে, ইনসাফ ও সত্যের পক্ষে, উন্নয়নের বাস্তব পথে এক কণ্ঠে কথা বলি।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Please Share This Post in Your Social Media

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
About Author Information

বিল্লাল হোসেন

বিল্লাল হোসেন, একজন প্রজ্ঞাবান পেশাজীবী, যিনি গণিতের ওপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ, ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ হিসেবে একটি সমৃদ্ধ ও বহুমুখী ক্যারিয়ার গড়ে তুলেছেন। তার আর্থিক খাতে যাত্রা তাকে নেতৃত্বের ভূমিকায় নিয়ে গেছে, বিশেষ করে সৌদি আরবের আল-রাজি ব্যাংকিং Inc. এবং ব্যাংক-আল-বিলাদে বিদেশী সম্পর্ক ও করেসপন্ডেন্ট মেইন্টেনেন্স অফিসার হিসেবে। প্রথাগত অর্থনীতির গণ্ডির বাইরে, বিল্লাল একজন প্রখ্যাত লেখক ও বিশ্লেষক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন, বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে মননশীল কলাম ও গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করে। তার দক্ষতা বিস্তৃত বিষয় জুড়ে রয়েছে, যেমন অর্থনীতির জটিলতা, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, প্রবাসী শ্রমিকদের দুঃখ-কষ্ট, রেমিটেন্স, রিজার্ভ এবং অন্যান্য সম্পর্কিত দিক। বিল্লাল তার লেখায় একটি অনন্য বিশ্লেষণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আসেন, যা ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে অর্জিত বাস্তব জ্ঞানকে একত্রিত করে একাডেমিক কঠোরতার সাথে। তার প্রবন্ধগুলো শুধুমাত্র জটিল বিষয়গুলির উপর গভীর বোঝাপড়ার প্রতিফলন নয়, বরং পাঠকদের জন্য জ্ঞানপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে, যা তত্ত্ব ও বাস্তব প্রয়োগের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে। বিল্লাল হোসেনের অবদান তার প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করে যে, তিনি আমাদের আন্তঃসংযুক্ত বিশ্বের জটিলতাগুলি উন্মোচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের একটি বিস্তৃত এবং আরও সূক্ষ্ম বোঝাপড়ার দিকে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে।
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী আতাউর রহমান সরকার

Update Time : ১২:২৫:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
শেয়ার করুনঃ
Pin Share
ATAUR RAHMAN
 ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী মু. আতাউর রহমান সরকার

 

নির্বাচনী প্রস্তুতির প্রেক্ষাপটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে  মু. আতাউর রহমান সরকারের নাম ঘিরে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে তাকে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার, ১৭ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনুষ্ঠিত এক ইউনিয়ন ও দায়িত্বশীল সমাবেশে দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম এই ঘোষণা দেন।

আতাউর রহমান সরকার একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ, যিনি ছাত্রজীবন থেকেই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থেকে রাজনীতি করে আসছেন। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং পাশাপাশি প্রচার ও মিডিয়া সেক্রেটারির দায়িত্বও সামলাচ্ছেন। তার রাজনৈতিক জীবন কেবল সংগঠনভিত্তিক কর্মকাণ্ডেই সীমাবদ্ধ নয়; তিনি একই সঙ্গে লেখক, সাংবাদিক এবং সমাজকর্মী হিসেবেও সুপরিচিত।

শিক্ষাজীবনে তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক (অনার্স) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। শিক্ষা জীবন শেষে আতাউর রহমান সরকার পেশাগত জীবনে সাংবাদিকতা বেছে নেন। তার লেখনীতে যেমন সমাজ ও সময়ের প্রতিফলন ঘটে, তেমনি সংবাদ মাধ্যমে কাজের মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন সামাজিক ইস্যুতে জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন।

বর্তমানে তিনি একটি খ্যাতনামা অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার নেতৃত্বে সংবাদপত্রটি গণমাধ্যম জগতে একটি নির্ভরযোগ্য নাম হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। পেশাদারিত্ব, দায়িত্ববোধ এবং সততার সঙ্গে তিনি সাংবাদিকতা পেশায় আত্মনিয়োগ করেছেন, যা তাকে সমাজে একজন সম্মানিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে।

আসন্ন নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী তার প্রতি আস্থা রেখে প্রার্থী ঘোষণা করায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের রাজনৈতিক মাঠে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। তার প্রার্থীতা ঘোষণার পর থেকেই কসবা ও আখাউড়ার স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার সাধারণ জনগণও তার কর্মোদ্দীপনা, সৎ জীবনযাপন ও শিক্ষাগত যোগ্যতার কারণে তাকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করছে।

আতাউর রহমান সরকারের নেতৃত্বে এ আসনে নতুন রাজনৈতিক চেতনা ও সমাজ পরিবর্তনের প্রত্যাশা করছেন অনেকেই। দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা, নির্লোভ ব্যক্তিত্ব এবং সমাজসেবামূলক কাজে সম্পৃক্ততা তাকে একজন যোগ্য সংসদ সদস্য হিসেবে গড়ে তুলেছে। ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে তিনি কী ভূমিকা রাখবেন, তা সময়ই বলে দেবে, তবে ইতোমধ্যেই তার নাম ঘিরে রাজনৈতিক মহলে আগ্রহ ও আলোচনার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছেন তিনি।

রাজনৈতিক পথচলার ইতিহাস

আতাউর রহমান সরকারের ছাত্রজীবন ছিল আদর্শ, আত্মপ্রত্যয় ও চেতনায় পরিপূর্ণ। শিক্ষা জীবনের শুরু থেকেই তিনি ইসলামী মূল্যবোধে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হন এবং ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে আত্মিকভাবে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। তার হৃদয়ে ইসলামের মর্মবাণী ও আদর্শিক চেতনার বীজ রোপিত হয় অতি অল্প বয়সেই। সময়ের সাথে সাথে তিনি উপলব্ধি করতে থাকেন যে, প্রচলিত রাজনীতি যেখানে ক্ষমতার পালাবদলই মুখ্য, সেখানে ইসলামী রাজনীতি এক সর্বাত্মক নৈতিক বিপ্লবের আহ্বান। এই উপলব্ধিই তার জীবনে এক গভীর বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে দেয়।

তিনি বিশ্বাস করেন, ইনসাফভিত্তিক ও ন্যায়পরায়ণ সমাজ গঠন করতে হলে ইসলামী রাজনীতির পথই একমাত্র কার্যকর পথ হতে পারে। সেই বিশ্বাসকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করিয়ে তিনি নিজের ব্যক্তিজীবন, শিক্ষাজীবন এবং রাজনৈতিক জীবনে ইসলামী নীতিমালার বাস্তব প্রয়োগের অনুশীলন শুরু করেন।

আতাউর রহমান সরকারের শিক্ষাগত জীবন ছিল বৈচিত্র্যময় ও বস্তুনিষ্ঠ। তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে বিএ (অনার্স) ও এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। পাশাপাশি তিনি ইসলামিক স্টাডিজে কামিল (সমমান মাস্টার্স), এলএলবি (অনার্স) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (PGDDS) সম্পন্ন করেন। এ সবগুলো পর্যায়েই তিনি নিজেকে শুধু একজন ছাত্র হিসেবে নয়, বরং একজন চিন্তাশীল কর্মী হিসেবে গড়ে তোলেন।

শিক্ষাজীবনের প্রতিটি ধাপেই আতাউর রহমান সরকার গঠনমূলক ছাত্ররাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের একজন দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে কাজ করেছেন এবং শিক্ষা, সাহিত্য, দাওয়াত, সমাজসেবা ও নেতৃত্ব বিকাশের নানা পর্যায়ে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন। তার নেতৃত্বগুণ, চিন্তাশীলতা ও আদর্শিক মজবুতির কারণে তিনি অল্প সময়ের মধ্যেই সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ স্তরে স্থান করে নেন।

এই পথচলায় তিনি বারবার উপলব্ধি করেছেন, কেবল পুঁথিগত বিদ্যাই নয়, বরং আত্মিক উন্নয়ন, নৈতিকতা এবং সমাজের কল্যাণে নিরলস শ্রমই একজন প্রকৃত শিক্ষিত নাগরিকের বৈশিষ্ট্য। তাই তিনি নিজের অর্জিত জ্ঞান ও আদর্শকে কাজে লাগিয়ে সমাজ ও জাতির কল্যাণে নিয়োজিত থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন সব সময়।

রাজনীতিকে তিনি কখনোই ক্ষমতা অর্জনের বাহন হিসেবে দেখেননি। বরং তিনি একে দায়িত্ব ও আমানত হিসেবে দেখেন, যার মাধ্যমে সমাজে ন্যায়ভিত্তিক পরিবর্তন আনা সম্ভব। শিক্ষা ও রাজনৈতিক জীবন মিলে আতাউর রহমান সরকার গড়ে তুলেছেন এক অনন্য আদর্শিক নেতৃত্ব, যা আজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের মানুষদের মাঝে নতুন সম্ভাবনার আলো জ্বালাচ্ছে।

সামাজিক কাজ জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড

রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় থাকার পাশাপাশি আতাউর রহমান সরকার সামাজিক ও মানবিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিবেদিত রেখেছেন সবসময়। তিনি বিশ্বাস করেন, শুধুমাত্র রাজনৈতিক নেতৃত্ব নয়, বরং সমাজের প্রতিটি স্তরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য ব্যক্তিগত এবং সাংগঠনিকভাবে সমাজকল্যাণমূলক কাজে সম্পৃক্ত থাকা অপরিহার্য। সেই বিশ্বাস থেকেই তিনি আর্ত-মানবতার সেবায়, শিক্ষার প্রসারে এবং ধর্মীয় ও সামাজিক উন্নয়নে নীরব কিন্তু নিরলস অবদান রেখে চলেছেন।

সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ইতিবাচক প্রভাব তৈরির লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বর্তমানে তিনি কসবা মহিলা মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন, যেখানে নারী শিক্ষার উন্নয়ন ও ইসলামিক শিক্ষার বিস্তারে তিনি কার্যকর ভূমিকা রাখছেন। কসবার এই কৃতি সন্তান শুধু একটি মাদ্রাসা নয়, বরং বহু সামাজিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন ধারাবাহিকভাবে।

তিনি ঢাকার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী কারওয়ান বাজার শাহী জামে মসজিদ মাদ্রাসার সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, যেখানে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতামূলক নানা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এছাড়া দারুল ইসলাম ট্রাস্ট, ফালাহ আম ট্রাস্ট এবং বিপিএল (বাংলাদেশ প্রফেশনাল লিগ)-এর নির্বাহী সদস্য হিসেবেও তিনি সমাজ ও মানবতার কল্যাণে কার্যকর ভূমিকা রেখে চলেছেন।

আতাউর রহমান সরকার একজন আজীবন সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সাথেও যুক্ত, যা প্রমাণ করে তিনি দুর্যোগকালীন মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখতে সদা প্রস্তুত থাকেন। এছাড়া তিনি আব্দুল মান্নান মতি মেম্বার ফাউন্ডেশনআলোকিত সমাজ উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, যেখানে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে সমাজ উন্নয়নের বহু প্রকল্পে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন।

সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকার সুবাদে তিনি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য হিসেবেও সক্রিয় রয়েছেন। তিনি মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও পেশাগত মর্যাদার পক্ষে সবসময় সোচ্চার।

প্রবাসী ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী ও শিক্ষার্থী সমাজের উন্নয়নেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। ঢাকাস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে প্রবাসী নাগরিকদের অধিকার ও সংহতির জন্য কাজ করেছেন। পাশাপাশি তিনি কুমিল্লাস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টুডেন্ট ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি হিসেবে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও নেতৃত্ব বিকাশে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন।

সমাজ ও মানবতার কল্যাণে আতাউর রহমান সরকারের এই নিরবচ্ছিন্ন কর্মপ্রবাহ তার নেতৃত্বগুণ ও দায়বদ্ধতাকে তুলে ধরে। রাজনীতির বাইরে সমাজসেবায় তার সক্রিয় অংশগ্রহণ তাকে শুধু একজন রাজনীতিক নয়, বরং একজন সমাজনির্মাতা হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করেছে।

ছাত্র জাতীয় রাজনীতিতে আতাউর রহমান সরকারের অবদান

আতাউর রহমান সরকারের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ছাত্রাবস্থা থেকেই, এবং সময়ের পরিক্রমায় তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন একজন সুদৃঢ় আদর্শিক নেতা হিসেবে। তিনি ছাত্ররাজনীতি থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ের রাজনীতিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন, যেখানে দেশ ও জনগণের স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছেন। প্রিয় জন্মভূমির কল্যাণে তিনি নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন প্রতিটি সংকটময় মুহূর্তে, দায়িত্বশীলতা ও নেতৃত্বগুণের সঙ্গে।

২০০০ সালে তিনি বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের কসবা উপজেলা পর্যায়ের সদস্য হিসেবে কাজ করে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে তার সক্রিয়তার প্রমাণ দেন। এরও আগে, ১৯৯৯ সালে কসবায় স্থানীয় জনগণের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণের লক্ষ্যে গ্যাস বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই ভূমিকার মধ্য দিয়ে তিনি স্থানীয় উন্নয়ন ও নাগরিক অধিকার আদায়ের প্রশ্নে আপসহীন নেতৃত্ব দেখান।

ছাত্র রাজনীতির সময়কালেও তিনি ছিলেন তৎপর এবং সুসংগঠিত ছাত্র ঐক্যের প্রবক্তা। তিনি ২০০৫-২০০৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের সদস্য সচিব হিসেবে কাজ করেন। এরপর ২০০৭-২০০৮ সালে কুমিল্লা জেলার সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ছাত্রসমাজে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং ন্যায়ের রাজনীতির চেতনা ছড়িয়ে দিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন।

তার রাজনীতিক ধারা ছাত্রজীবন পেরিয়ে জাতীয় পর্যায়ে আরও সুসংগঠিত ও কার্যকর হয়ে ওঠে। ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের হাতিরঝিল রমনা থানা শাখার আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি সংগঠন পরিচালনা, কর্মীদের নেতৃত্বদান এবং জনসংযোগ কার্যক্রমে ব্যাপক অবদান রাখেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য এবং প্রচার মিডিয়া সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, যেখানে তার অভিজ্ঞতা ও দূরদৃষ্টি দলীয় কর্মকাণ্ডকে আরও গতিশীল করে তুলছে।

রাজনীতির কঠিন বাস্তবতায় তিনি বহুবার সরকারবিরোধী আন্দোলনের সম্মুখভাগে ছিলেন এবং ন্যায়ের পক্ষে কথা বলার সাহস দেখিয়েছেন। ১৯৯৮ সালে কসবায়, এবং পরে ২০১০, ২০১৬ ও ২০২১ সালে ঢাকায় আওয়ামী ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের কারণে তিনি দেড় বছরের বেশি সময় কারাবরণ করেন। তার এই কারাবরণ কেবলমাত্র একটি রাজনৈতিক মূল্য পরিশোধ নয়, বরং আদর্শের প্রতি অটল থাকার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

আতাউর রহমান সরকারের ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর অবদান সুদূরপ্রসারী ও গৌরবময়। তিনি রাজনীতিকে শুধুমাত্র ক্ষমতার রাজনীতি হিসেবে দেখেন না, বরং ন্যায়, ইনসাফ এবং জনগণের কল্যাণ সাধনের মাধ্যম হিসেবেই বেছে নিয়েছেন। তার এই নিরলস প্রচেষ্টা ভবিষ্যতের নেতৃত্বে তাঁর জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে নিঃসন্দেহে।

কসবাআখাউড়া জনগণের প্রতি আহ্বান

প্রিয় কসবা-আখাউড়ার জনগণের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন আপনাদের ভালোবাসা, বিশ্বাস ও সহযোগিতাই আমার রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনের মূল চালিকাশক্তি। আমি আতাউর রহমান সরকার—এই মাটি, এই মানুষের সন্তান। জীবনের প্রতিটি ধাপে, ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক অঙ্গনে, আমি চেষ্টা করেছি আপনাদের প্রত্যাশা ও স্বপ্নকে সামনে রেখেই কাজ করতে। আজ, যখন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আমাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, তখন আমি এই মহান দায়িত্বকে শুধু প্রার্থী হওয়ার সুযোগ হিসেবে নয়, বরং আপনাদের সেবক হওয়ার অঙ্গীকার হিসেবে নিচ্ছি।

আমার রাজনীতির মূল ভিত্তি হচ্ছে ইনসাফভিত্তিক সমাজ গঠন, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন, ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধভিত্তিক শাসনব্যবস্থা এবং সাধারণ মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা। আমি বিশ্বাস করি, কেবলমাত্র ইসলামি আদর্শের ভিত্তিতে পরিচালিত রাজনীতিই পারে একটি মানবিক, ন্যায়ভিত্তিক, মর্যাদাপূর্ণ সমাজ উপহার দিতে।

আমি আপনাদের সামনে হাত বাড়িয়ে বলছি—চলুন, আমরা একসঙ্গে একটি সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলি। যেখানে হিংসা নয়, হবে সহানুভূতি; বিভাজন নয়, হবে ঐক্য; উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি নয়, হবে বাস্তবায়ন।

আমার প্রতি আপনাদের আস্থা ও সমর্থন আমাকে অনুপ্রাণিত করে আরও বেশি দায়িত্ববান হতে। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, নির্বাচিত হলে শুধু দল নয়, বরং সব মত ও পথের মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবো। এলাকার উন্নয়ন, যুব সমাজের কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার মানোন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করাই হবে আমার মূল লক্ষ্য।

আসুন, আমরা দল-মত-পথ নির্বিশেষে কসবা-আখাউড়াকে একটি মডেল নির্বাচনী এলাকা হিসেবে গড়ে তুলি। যেখানে সবাই শান্তিতে থাকবে, নিরাপদে থাকবে এবং সম্মানের সঙ্গে বসবাস করতে পারবে।

এই অঞ্চলের প্রতিটি মানুষ আমার আপনজন—আপনাদের ভালোবাসা, দোয়া সমর্থনই আমার বিজয়ের পথ তৈরি করবে।
আসুন, আগামী নির্বাচনে আমরা পরিবর্তনের পক্ষে, ইনসাফ ও সত্যের পক্ষে, উন্নয়নের বাস্তব পথে এক কণ্ঠে কথা বলি।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share