সময়: বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে অসহযোগ কর্মসূচি: ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও বর্তমান পরিস্থিতি

ডিজিটাল ডেস্ক
  • Update Time : ০৩:৩০:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
  • / ১০৭ Time View

nbr inqilab wadud 20250521145912

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

nbr inqilab wadud 20250521145912

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামোর একটি কেন্দ্রবিন্দু। এ সংস্থাটি দেশের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণের প্রধান নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে আসছে স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে। এনবিআরের কার্যক্রম দেশের বাজেট বাস্তবায়ন, উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালনা ও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থসংস্থান নিশ্চিত করে। কিন্তু সম্প্রতি এনবিআর বিলুপ্তির উদ্দেশ্যে একটি অধ্যাদেশ জারি এবং এনবিআরের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনায় অনিয়মের অভিযোগ কেন্দ্র করে যে বিরোধ তৈরি হয়েছে, তা এখন একটি বৃহৎ আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭২ সালে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে। মূলত পাকিস্তান আমলে প্রচলিত কর ব্যবস্থার ভিত্তিতে এনবিআর গঠিত হলেও এটি স্বাধীন বাংলাদেশের বাস্তবতায় পর্যায়ক্রমে রূপান্তরিত হয়। এনবিআরের আওতায় তিনটি প্রধান শাখা কাজ করে—আয়কর, কাস্টমস, এবং মূসক (ভ্যাট)। সংস্থাটির কাজ হচ্ছে রাজস্ব আহরণ নিশ্চিত করা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমে সুশাসন ও স্বচ্ছতা বজায় রাখা।

এনবিআরের কার্যক্রম বিভিন্ন সময়ে নীতিগত সংস্কারের আওতায় এসেছে। যেমন, ভ্যাট আইন ২০১২ সালে পাস হওয়ার পরে দীর্ঘ সময় ধরে এর বাস্তবায়ন নিয়ে নানা বিতর্ক চলেছে। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন যে এনবিআরের ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে, আবার কর্মকর্তারা বলছেন যে প্রয়োজনীয় স্বাধীনতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা ছাড়া কাঙ্খিত রাজস্ব আদায় সম্ভব নয়।

বর্তমান পরিস্থিতি আন্দোলনের সূত্রপাত

২০২৫ সালের মে মাসে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ একটি বড় ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ২১ মে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের জাতীয় রাজস্ব ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে চার দফা দাবি তুলে ধরে তারা এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানকে অপসারণ এবং এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি জানায়।

তাদের অভিযোগ, এনবিআরের চেয়ারম্যান সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছে প্রকৃত তথ্য উপস্থাপন না করে সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, “প্রথম থেকেই আমাদের নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচির ব্যাপকতা ও যৌক্তিকতার বিষয়টি উপেক্ষিত হয়েছে। আমাদের ধারনা, ইচ্ছাকৃতভাবে প্রকৃত তথ্য গোপন করা হয়েছে।”

তাদের চারটি প্রধান দাবি হলো:

  1. এনবিআর বিলুপ্তির জন্য জারি করা অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে;
  2. বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানকে অপসারণ করতে হবে;
  3. রাজস্ব সংস্কার সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির সুপারিশ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে;
  4. সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনের মতামত নিয়ে একটি টেকসই রাজস্ব সংস্কার কাঠামো গড়ে তুলতে হবে।

কর্মসূচির ধরণ ব্যাপ্তি

প্রস্তাবিত কর্মসূচি অনুযায়ী:

  • ২২ মে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হবে এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে ঢাকার ভেতরে ও বাইরে এনবিআরের অধীনস্থ দপ্তরে;
  • ২৪ ২৫ মে ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট দপ্তরগুলোতে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি পালিত হবে (কাস্টমস হাউস ও এলসি স্টেশন ব্যতীত);
  • ২৬ মে থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ব্যতীত সকল দপ্তরে কর্মবিরতি কার্যকর হবে।

প্রসঙ্গত, রপ্তানি কার্যক্রম এবং আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা কর্মসূচির আওতার বাইরে রাখা হয়েছে, যাতে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে অচলাবস্থা তৈরি না হয়।

বিষয়টির গুরুত্ব বিশ্লেষণ

এই আন্দোলন এনবিআরের ভবিষ্যৎ কাঠামো এবং দেশের রাজস্ব নীতির ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। রাজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি বড় অংশ যখন অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আন্দোলনে অংশ নেন, তখন এটি শুধুমাত্র একটি প্রশাসনিক ইস্যু থাকে না; বরং এটি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।

এনবিআরের বিকেন্দ্রীকরণ, স্বশাসিত রাজস্ব কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব, কিংবা পুরোনো কাঠামো বাতিলের উদ্যোগ আগে বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় এলেও, কখনও তা এত বড় আকারে সংঘাত তৈরি করেনি। এটি দেখায়, একটি প্রতিষ্ঠানের কাঠামোগত পরিবর্তনের সময় সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মতামত, অংশগ্রহণ ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা কতটা জরুরি।

সরকার সংশ্লিষ্ট মহলের করণীয়

বর্তমানে সরকারের জন্য সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে একটি সমন্বিত ও আলোচনাভিত্তিক পন্থা গ্রহণ করা। পরামর্শক কমিটির সুপারিশ জনসম্মুখে প্রকাশ করলে স্বচ্ছতা বাড়বে। একইসঙ্গে, এনবিআরের গঠনতন্ত্র বা কাঠামোতে পরিবর্তন আনার আগে অংশীজনদের—বিশেষ করে রাজস্ব কর্মকর্তাদের, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর এবং সুশীল সমাজের—সাথে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।

চেয়ারম্যানের ভূমিকা নিয়ে যেহেতু সরাসরি অভিযোগ এসেছে, তা তদন্ত করে নিরপেক্ষভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তি করাও জরুরি। অন্যথায়, এনবিআরের কার্যক্রমে স্থবিরতা সৃষ্টি হবে, যা পুরো রাজস্ব ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। এ প্রতিষ্ঠানের সংস্কার প্রয়োজন হতে পারে, তবে সেটি হতে হবে অংশগ্রহণমূলক ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের আন্দোলন একটি গঠনমূলক বার্তা দিতে পারে—যদি তা ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা তুলে ধরে ইতিবাচক ও নীতিনির্ধারণী পরিবর্তনের পথ তৈরি করে। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে পরিস্থিতিকে সংঘাতে না ঠেলে আলোচনার মাধ্যমে একটি টেকসই সমাধানে পৌঁছানো। কারণ, একটি সুশৃঙ্খল ও কার্যকর রাজস্ব ব্যবস্থা ছাড়া অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক ন্যায্যতা অর্জন সম্ভব নয়।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Please Share This Post in Your Social Media

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে অসহযোগ কর্মসূচি: ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও বর্তমান পরিস্থিতি

Update Time : ০৩:৩০:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
শেয়ার করুনঃ
Pin Share

nbr inqilab wadud 20250521145912

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামোর একটি কেন্দ্রবিন্দু। এ সংস্থাটি দেশের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আহরণের প্রধান নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে আসছে স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে। এনবিআরের কার্যক্রম দেশের বাজেট বাস্তবায়ন, উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালনা ও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থসংস্থান নিশ্চিত করে। কিন্তু সম্প্রতি এনবিআর বিলুপ্তির উদ্দেশ্যে একটি অধ্যাদেশ জারি এবং এনবিআরের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনায় অনিয়মের অভিযোগ কেন্দ্র করে যে বিরোধ তৈরি হয়েছে, তা এখন একটি বৃহৎ আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭২ সালে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে। মূলত পাকিস্তান আমলে প্রচলিত কর ব্যবস্থার ভিত্তিতে এনবিআর গঠিত হলেও এটি স্বাধীন বাংলাদেশের বাস্তবতায় পর্যায়ক্রমে রূপান্তরিত হয়। এনবিআরের আওতায় তিনটি প্রধান শাখা কাজ করে—আয়কর, কাস্টমস, এবং মূসক (ভ্যাট)। সংস্থাটির কাজ হচ্ছে রাজস্ব আহরণ নিশ্চিত করা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমে সুশাসন ও স্বচ্ছতা বজায় রাখা।

এনবিআরের কার্যক্রম বিভিন্ন সময়ে নীতিগত সংস্কারের আওতায় এসেছে। যেমন, ভ্যাট আইন ২০১২ সালে পাস হওয়ার পরে দীর্ঘ সময় ধরে এর বাস্তবায়ন নিয়ে নানা বিতর্ক চলেছে। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন যে এনবিআরের ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে, আবার কর্মকর্তারা বলছেন যে প্রয়োজনীয় স্বাধীনতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা ছাড়া কাঙ্খিত রাজস্ব আদায় সম্ভব নয়।

বর্তমান পরিস্থিতি আন্দোলনের সূত্রপাত

২০২৫ সালের মে মাসে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ একটি বড় ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ২১ মে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের জাতীয় রাজস্ব ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে চার দফা দাবি তুলে ধরে তারা এনবিআরের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানকে অপসারণ এবং এনবিআর বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি জানায়।

তাদের অভিযোগ, এনবিআরের চেয়ারম্যান সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছে প্রকৃত তথ্য উপস্থাপন না করে সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, “প্রথম থেকেই আমাদের নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচির ব্যাপকতা ও যৌক্তিকতার বিষয়টি উপেক্ষিত হয়েছে। আমাদের ধারনা, ইচ্ছাকৃতভাবে প্রকৃত তথ্য গোপন করা হয়েছে।”

তাদের চারটি প্রধান দাবি হলো:

  1. এনবিআর বিলুপ্তির জন্য জারি করা অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে;
  2. বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানকে অপসারণ করতে হবে;
  3. রাজস্ব সংস্কার সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির সুপারিশ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে;
  4. সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনের মতামত নিয়ে একটি টেকসই রাজস্ব সংস্কার কাঠামো গড়ে তুলতে হবে।

কর্মসূচির ধরণ ব্যাপ্তি

প্রস্তাবিত কর্মসূচি অনুযায়ী:

  • ২২ মে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হবে এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে ঢাকার ভেতরে ও বাইরে এনবিআরের অধীনস্থ দপ্তরে;
  • ২৪ ২৫ মে ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট দপ্তরগুলোতে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি পালিত হবে (কাস্টমস হাউস ও এলসি স্টেশন ব্যতীত);
  • ২৬ মে থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ব্যতীত সকল দপ্তরে কর্মবিরতি কার্যকর হবে।

প্রসঙ্গত, রপ্তানি কার্যক্রম এবং আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা কর্মসূচির আওতার বাইরে রাখা হয়েছে, যাতে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে অচলাবস্থা তৈরি না হয়।

বিষয়টির গুরুত্ব বিশ্লেষণ

এই আন্দোলন এনবিআরের ভবিষ্যৎ কাঠামো এবং দেশের রাজস্ব নীতির ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। রাজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি বড় অংশ যখন অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আন্দোলনে অংশ নেন, তখন এটি শুধুমাত্র একটি প্রশাসনিক ইস্যু থাকে না; বরং এটি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।

এনবিআরের বিকেন্দ্রীকরণ, স্বশাসিত রাজস্ব কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব, কিংবা পুরোনো কাঠামো বাতিলের উদ্যোগ আগে বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় এলেও, কখনও তা এত বড় আকারে সংঘাত তৈরি করেনি। এটি দেখায়, একটি প্রতিষ্ঠানের কাঠামোগত পরিবর্তনের সময় সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মতামত, অংশগ্রহণ ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা কতটা জরুরি।

সরকার সংশ্লিষ্ট মহলের করণীয়

বর্তমানে সরকারের জন্য সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে একটি সমন্বিত ও আলোচনাভিত্তিক পন্থা গ্রহণ করা। পরামর্শক কমিটির সুপারিশ জনসম্মুখে প্রকাশ করলে স্বচ্ছতা বাড়বে। একইসঙ্গে, এনবিআরের গঠনতন্ত্র বা কাঠামোতে পরিবর্তন আনার আগে অংশীজনদের—বিশেষ করে রাজস্ব কর্মকর্তাদের, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর এবং সুশীল সমাজের—সাথে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।

চেয়ারম্যানের ভূমিকা নিয়ে যেহেতু সরাসরি অভিযোগ এসেছে, তা তদন্ত করে নিরপেক্ষভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তি করাও জরুরি। অন্যথায়, এনবিআরের কার্যক্রমে স্থবিরতা সৃষ্টি হবে, যা পুরো রাজস্ব ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। এ প্রতিষ্ঠানের সংস্কার প্রয়োজন হতে পারে, তবে সেটি হতে হবে অংশগ্রহণমূলক ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের আন্দোলন একটি গঠনমূলক বার্তা দিতে পারে—যদি তা ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা তুলে ধরে ইতিবাচক ও নীতিনির্ধারণী পরিবর্তনের পথ তৈরি করে। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে পরিস্থিতিকে সংঘাতে না ঠেলে আলোচনার মাধ্যমে একটি টেকসই সমাধানে পৌঁছানো। কারণ, একটি সুশৃঙ্খল ও কার্যকর রাজস্ব ব্যবস্থা ছাড়া অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক ন্যায্যতা অর্জন সম্ভব নয়।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share