সময়: মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

সংস্কার নির্বাচনে বিভক্তি: অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার মোড়কে জাতীয় রাজনীতি

বিল্লাল হোসেন
  • Update Time : ১১:১৮:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
  • / ১০৫ Time View

1745082862 96a648d9407a9e801c9d3625a36ca1be

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

1745082862 96a648d9407a9e801c9d3625a36ca1be

বাংলাদেশের রাজনীতিতে বর্তমানে যে অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে, তার কেন্দ্রে রয়েছে একটিই প্রশ্ন—প্রথমে নির্বাচন, নাকি প্রথমে সংস্কার? অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষণায়—কম সংস্কার চাইলে ডিসেম্বর, বেশি সংস্কার চাইলে জুনে নির্বাচন—একদিকে যেমন একটি সম্ভাব্য সমাধানের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, অন্যদিকে এটি আবার রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন বিভাজনের সূত্রপাত করেছে।

সংস্কার নিয়ে বিভাজন: মতবিরোধের শিকড় কোথায়?

দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান এখন দ্বিধান্বিত, দ্বিমুখী এবং একে অপরের থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এলডিপি, এনসিপি, এবি পার্টি—প্রত্যেকেই সংস্কার ও নির্বাচনের অনুপাত ও সময়কাল নিয়ে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে বিএনপির বক্তব্য অনুযায়ী, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, তা সম্পূর্ণ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করা যাবে না। তাদের মতে, যতটা সম্ভব তা সম্পন্ন করে, বাকিটা নির্বাচিত সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়ে ডিসেম্বরেই নির্বাচন দিতে হবে।

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলনের মতো দলগুলো বলছে—মূলগত দৃশ্যমান সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। এ অবস্থানে তারা অনড়, এবং নির্বাচনে অংশ নেওয়া হবে কিনা তা সরাসরি সংস্কারের অগ্রগতির ওপর নির্ভর করছে।

সুপারিশপত্রে মতবিরোধ: সংখ্যার

মধ্যে লুকিয়ে রাজনীতি

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংস্কার নিয়ে বিভিন্ন খাতে যেসব সুপারিশ দিয়েছে, সেখানে দলগুলো কেবল মতৈক্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ নয়, বরং এসব সংখ্যার পেছনে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তাদের রাজনৈতিক কৌশল ও আদর্শিক অবস্থান—

  • বিচার বিভাগ সংস্কার: ২৩ প্রস্তাবে বিএনপি একমত ২০টিতে, এলডিপি ২২টিতে।
  • দুর্নীতি দমন কমিশন: বিএনপি ১৯টিতে একমত বা আংশিক একমত, এলডিপি সবকটিতে একমত।
  • জনপ্রশাসন সংস্কার: এলডিপি একমত মাত্র ১১টিতে, ১৫টিতে একমত নয়।
  • সংবিধান সংস্কার: এলডিপি একমত ৫১টিতে (মোট ৭০ প্রস্তাব), এনসিপি একমত ১১৩টিতে।

এই পার্থক্য কেবল সংখ্যা নয়, বরং এটি রাজনৈতিক দলগুলোর রাষ্ট্রব্যবস্থা, বিচারিক কাঠামো, ও প্রশাসনের ভবিষ্যৎ রূপরেখা নিয়ে ভিন্ন চিন্তারই বহিঃপ্রকাশ।

রোডম্যাপ চাই, এখনই চাই: ডিসেম্বরেই নির্বাচন চান কেউ কেউ

বিএনপি ও তাদের নেতৃত্বাধীন জোট দৃঢ়ভাবে ডিসেম্বরেই নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তারেক রহমান নেতাকর্মীদের প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এসেছে। সিপিবি-বাসদ, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, জাতীয় পার্টি (জাফর) নেতৃত্বাধীন ১২ দলীয় জোটও একই দাবিতে সক্রিয়।

বিএনপির মুখপাত্র রিজভী আহমেদ বলেন, সরকার শুধু সময়ক্ষেপণ করছে। জুন না ডিসেম্বরএটাও পরিষ্কার করছে না। এমন অবস্থায় সাধারণ মানুষও হতাশ ও বিভ্রান্ত।

জুন নাকি ডিসেম্বর: অভ্যন্তরীণ ঐকমত্যের সংকট

একাংশ যেমন ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায়, তেমনি ইসলামী ঐক্যজোট, এবি পার্টি, জামায়াত ও এনসিপির মতো দলগুলো সংস্কারবিহীন নির্বাচনের বিরোধিতা করছে। জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সংস্কার বিচার নিশ্চিত না করে নির্বাচন হলে, প্রতিশ্রুতি রক্ষা হবে কি না, তা আল্লাহ ভালো জানেন। এনসিপির মুশফিক উস সালেহীন জানান, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন বিবেচনাধীন, এবং দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে এনসিপি অংশ নাও নিতে পারে।

ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ: সময়সীমা বিশ্বাসযোগ্যতার সঙ্কট

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক ও গণঅধিকার পরিষদের রাশেদ খান মনে করেন, নির্বাচন, বিচার ও সংস্কার—এই তিন প্রক্রিয়াকে একত্রে এগিয়ে নেওয়ার বিকল্প নেই। কিন্তু বাস্তবে এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা ঘোষণা করা হয়নি। ফলে রাজনৈতিক দলগুলো বিভ্রান্ত, এবং দেশের মানুষ অনিশ্চয়তায়।

এই অনিশ্চয়তা শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নয়, বরং রাষ্ট্রযন্ত্রের অভ্যন্তরেও প্রভাব ফেলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, মিডিয়া এমনকি ভোটাররাও যেন ধীরে ধীরে অবিশ্বাসের কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে।

রাষ্ট্রিক সংকট নিরসনে প্রয়োজন সময়োপযোগী উদ্যোগ

সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে চলমান রাজনৈতিক বিভক্তি এখন আর কেবল মতবিরোধ নয়, বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রিক সংকটে রূপ নিয়েছে। এই সংকট নিরসনে প্রয়োজন অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত ও দৃশ্যমান অগ্রগতি।

স্বচ্ছ সংলাপ, সুনির্দিষ্ট সময়সূচি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর অন্তত একটি ন্যূনতম ঐকমত্য ছাড়া সামনে এগোনো সম্ভব নয়। সরকার যদি এই সুযোগ হারায়, তবে সেই ব্যর্থতা শুধু একটি নির্বাচনের দায়ে সীমাবদ্ধ থাকবে না—বরং জাতির রাজনৈতিক ইতিহাসে আরেকটি বিতর্কিত অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে, যার মূল্য দিতে হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও।

 

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Please Share This Post in Your Social Media

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
About Author Information

বিল্লাল হোসেন

বিল্লাল হোসেন, একজন প্রজ্ঞাবান পেশাজীবী, যিনি গণিতের ওপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ, ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ হিসেবে একটি সমৃদ্ধ ও বহুমুখী ক্যারিয়ার গড়ে তুলেছেন। তার আর্থিক খাতে যাত্রা তাকে নেতৃত্বের ভূমিকায় নিয়ে গেছে, বিশেষ করে সৌদি আরবের আল-রাজি ব্যাংকিং Inc. এবং ব্যাংক-আল-বিলাদে বিদেশী সম্পর্ক ও করেসপন্ডেন্ট মেইন্টেনেন্স অফিসার হিসেবে। প্রথাগত অর্থনীতির গণ্ডির বাইরে, বিল্লাল একজন প্রখ্যাত লেখক ও বিশ্লেষক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন, বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে মননশীল কলাম ও গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করে। তার দক্ষতা বিস্তৃত বিষয় জুড়ে রয়েছে, যেমন অর্থনীতির জটিলতা, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, প্রবাসী শ্রমিকদের দুঃখ-কষ্ট, রেমিটেন্স, রিজার্ভ এবং অন্যান্য সম্পর্কিত দিক। বিল্লাল তার লেখায় একটি অনন্য বিশ্লেষণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আসেন, যা ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে অর্জিত বাস্তব জ্ঞানকে একত্রিত করে একাডেমিক কঠোরতার সাথে। তার প্রবন্ধগুলো শুধুমাত্র জটিল বিষয়গুলির উপর গভীর বোঝাপড়ার প্রতিফলন নয়, বরং পাঠকদের জন্য জ্ঞানপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে, যা তত্ত্ব ও বাস্তব প্রয়োগের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে। বিল্লাল হোসেনের অবদান তার প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করে যে, তিনি আমাদের আন্তঃসংযুক্ত বিশ্বের জটিলতাগুলি উন্মোচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের একটি বিস্তৃত এবং আরও সূক্ষ্ম বোঝাপড়ার দিকে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে।
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

সংস্কার নির্বাচনে বিভক্তি: অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার মোড়কে জাতীয় রাজনীতি

Update Time : ১১:১৮:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
শেয়ার করুনঃ
Pin Share

1745082862 96a648d9407a9e801c9d3625a36ca1be

বাংলাদেশের রাজনীতিতে বর্তমানে যে অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে, তার কেন্দ্রে রয়েছে একটিই প্রশ্ন—প্রথমে নির্বাচন, নাকি প্রথমে সংস্কার? অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘোষণায়—কম সংস্কার চাইলে ডিসেম্বর, বেশি সংস্কার চাইলে জুনে নির্বাচন—একদিকে যেমন একটি সম্ভাব্য সমাধানের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, অন্যদিকে এটি আবার রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন বিভাজনের সূত্রপাত করেছে।

সংস্কার নিয়ে বিভাজন: মতবিরোধের শিকড় কোথায়?

দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান এখন দ্বিধান্বিত, দ্বিমুখী এবং একে অপরের থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এলডিপি, এনসিপি, এবি পার্টি—প্রত্যেকেই সংস্কার ও নির্বাচনের অনুপাত ও সময়কাল নিয়ে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে বিএনপির বক্তব্য অনুযায়ী, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, তা সম্পূর্ণ হওয়ার জন্য অপেক্ষা করা যাবে না। তাদের মতে, যতটা সম্ভব তা সম্পন্ন করে, বাকিটা নির্বাচিত সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়ে ডিসেম্বরেই নির্বাচন দিতে হবে।

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলনের মতো দলগুলো বলছে—মূলগত দৃশ্যমান সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। এ অবস্থানে তারা অনড়, এবং নির্বাচনে অংশ নেওয়া হবে কিনা তা সরাসরি সংস্কারের অগ্রগতির ওপর নির্ভর করছে।

সুপারিশপত্রে মতবিরোধ:

সংখ্যার মধ্যে লুকিয়ে রাজনীতি

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সংস্কার নিয়ে বিভিন্ন খাতে যেসব সুপারিশ দিয়েছে, সেখানে দলগুলো কেবল মতৈক্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ নয়, বরং এসব সংখ্যার পেছনে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তাদের রাজনৈতিক কৌশল ও আদর্শিক অবস্থান—

  • বিচার বিভাগ সংস্কার: ২৩ প্রস্তাবে বিএনপি একমত ২০টিতে, এলডিপি ২২টিতে।
  • দুর্নীতি দমন কমিশন: বিএনপি ১৯টিতে একমত বা আংশিক একমত, এলডিপি সবকটিতে একমত।
  • জনপ্রশাসন সংস্কার: এলডিপি একমত মাত্র ১১টিতে, ১৫টিতে একমত নয়।
  • সংবিধান সংস্কার: এলডিপি একমত ৫১টিতে (মোট ৭০ প্রস্তাব), এনসিপি একমত ১১৩টিতে।

এই পার্থক্য কেবল সংখ্যা নয়, বরং এটি রাজনৈতিক দলগুলোর রাষ্ট্রব্যবস্থা, বিচারিক কাঠামো, ও প্রশাসনের ভবিষ্যৎ রূপরেখা নিয়ে ভিন্ন চিন্তারই বহিঃপ্রকাশ।

রোডম্যাপ চাই, এখনই চাই: ডিসেম্বরেই নির্বাচন চান কেউ কেউ

বিএনপি ও তাদের নেতৃত্বাধীন জোট দৃঢ়ভাবে ডিসেম্বরেই নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তারেক রহমান নেতাকর্মীদের প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এসেছে। সিপিবি-বাসদ, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, জাতীয় পার্টি (জাফর) নেতৃত্বাধীন ১২ দলীয় জোটও একই দাবিতে সক্রিয়।

বিএনপির মুখপাত্র রিজভী আহমেদ বলেন, সরকার শুধু সময়ক্ষেপণ করছে। জুন না ডিসেম্বরএটাও পরিষ্কার করছে না। এমন অবস্থায় সাধারণ মানুষও হতাশ ও বিভ্রান্ত।

জুন নাকি ডিসেম্বর: অভ্যন্তরীণ ঐকমত্যের সংকট

একাংশ যেমন ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায়, তেমনি ইসলামী ঐক্যজোট, এবি পার্টি, জামায়াত ও এনসিপির মতো দলগুলো সংস্কারবিহীন নির্বাচনের বিরোধিতা করছে। জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, সংস্কার বিচার নিশ্চিত না করে নির্বাচন হলে, প্রতিশ্রুতি রক্ষা হবে কি না, তা আল্লাহ ভালো জানেন। এনসিপির মুশফিক উস সালেহীন জানান, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন বিবেচনাধীন, এবং দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে এনসিপি অংশ নাও নিতে পারে।

ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ: সময়সীমা বিশ্বাসযোগ্যতার সঙ্কট

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক ও গণঅধিকার পরিষদের রাশেদ খান মনে করেন, নির্বাচন, বিচার ও সংস্কার—এই তিন প্রক্রিয়াকে একত্রে এগিয়ে নেওয়ার বিকল্প নেই। কিন্তু বাস্তবে এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা ঘোষণা করা হয়নি। ফলে রাজনৈতিক দলগুলো বিভ্রান্ত, এবং দেশের মানুষ অনিশ্চয়তায়।

এই অনিশ্চয়তা শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নয়, বরং রাষ্ট্রযন্ত্রের অভ্যন্তরেও প্রভাব ফেলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, মিডিয়া এমনকি ভোটাররাও যেন ধীরে ধীরে অবিশ্বাসের কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে।

রাষ্ট্রিক সংকট নিরসনে প্রয়োজন সময়োপযোগী উদ্যোগ

সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে চলমান রাজনৈতিক বিভক্তি এখন আর কেবল মতবিরোধ নয়, বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রিক সংকটে রূপ নিয়েছে। এই সংকট নিরসনে প্রয়োজন অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত ও দৃশ্যমান অগ্রগতি।

স্বচ্ছ সংলাপ, সুনির্দিষ্ট সময়সূচি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর অন্তত একটি ন্যূনতম ঐকমত্য ছাড়া সামনে এগোনো সম্ভব নয়। সরকার যদি এই সুযোগ হারায়, তবে সেই ব্যর্থতা শুধু একটি নির্বাচনের দায়ে সীমাবদ্ধ থাকবে না—বরং জাতির রাজনৈতিক ইতিহাসে আরেকটি বিতর্কিত অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে, যার মূল্য দিতে হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও।

 

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share