সময়: বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

ট্রাম্পের সঙ্গে পরামর্শ করেই গাজায় ব্যাপক আকারে নতুন হামলা: হোয়াইট হাউস

ডিজিটাল ডেস্ক
  • Update Time : ১১:৫১:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫
  • / ১১৯ Time View

Trump GAZA

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Trump GAZA

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পরামর্শ করেই ইসরায়েল ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নতুন করে ব্যাপক আকারে হামলা শুরু করেছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। এ হামলার ফলে ইতোমধ্যে বহু নিরীহ মানুষ হতাহত হয়েছেন, এবং পরিস্থিতি আরও সংকটময় হয়ে উঠছে।

যুদ্ধবিরতির ব্যর্থতা নতুন হামলার সূচনা

দ্বিতীয় দফা যুদ্ধবিরতি আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর ইসরায়েল গাজার ওপর নতুন করে সামরিক অভিযান চালায়। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, বিমান হামলাগুলো বেশ কয়েকটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় পরিচালিত হয়েছে, যার ফলে নারী ও শিশুসহ অসংখ্য নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নিহতের সংখ্যা প্রতি ঘণ্টায় বাড়ছে এবং আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

হোয়াইট হাউসের বক্তব্য

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “গাজায় সবশেষ আক্রমণ শুরুর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে পরামর্শ করেছে ইসরায়েল।”

তিনি আরও বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেমন স্পষ্ট করে বলেছেন, হামাস, হুথি, ইরান— যারা কেবল ইসরায়েলকে নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রকেও আতঙ্কিত করতে চায়— তাদের কঠোর মূল্য দিতে হবে এবং তাদের ওপর সমগ্র নরক ভেঙে পড়বে।”

লেভিট আরও বলেন, “হুথি, হিজবুল্লাহ, হামাস, ইরান ও ইরান-সমর্থিত প্রতিনিধিদের উচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে খুব গুরুত্ব সহকারে নেওয়া। কারণ ট্রাম্প বলছেন— তিনি আইন মেনে চলা মানুষের পক্ষে দাঁড়াতে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইসরায়েলের পক্ষে দাঁড়াতে ভয় পান না।”

ইসরায়েলের হামলার ফলাফল

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ইসরায়েলের এই হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

  • নিহত আহত সংখ্যা: রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ২০৫ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া, গুরুতর আহত হয়েছে শত শত মানুষ।
  • পরিকাঠামোগত ধ্বংস: ইসরায়েলের বোমা হামলায় গাজার বহু আবাসিক ভবন, হাসপাতাল ও স্কুল ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো, যেমন বিদ্যুৎ ও পানির সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
  • মানবিক সংকট: গাজায় খাদ্য, ওষুধ ও বিশুদ্ধ পানির অভাব তীব্র আকার ধারণ করেছে। জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো আশঙ্কা করছে, যদি দ্রুত সাহায্য পৌঁছানো না যায়, তবে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

গাজার এই হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে বলেন, “গাজায় চলমান সহিংসতা বন্ধ করা জরুরি। বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”

এদিকে, বেশ কয়েকটি মুসলিমপ্রধান দেশ, যেমন তুরস্ক, ইরান ও কাতার, ইসরায়েলের এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা এটিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধ বলে অভিহিত করেছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও কিছু পশ্চিমা দেশ ইসরায়েলের ‘আত্মরক্ষার অধিকার’ সমর্থন করছে।

গাজায় চলমান সংঘাতের ফলে পরিস্থিতি দিন দিন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলায় গাজার জনগণ মানবিক সংকটের মুখে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা দ্রুত কার্যকর না হয়, তবে এই সংঘাত আরও দীর্ঘস্থায়ী ও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

সূত্র: রয়টার্স, আল-জাজিরা।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Please Share This Post in Your Social Media

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

ট্রাম্পের সঙ্গে পরামর্শ করেই গাজায় ব্যাপক আকারে নতুন হামলা: হোয়াইট হাউস

Update Time : ১১:৫১:৩৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫
শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Trump GAZA

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পরামর্শ করেই ইসরায়েল ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নতুন করে ব্যাপক আকারে হামলা শুরু করেছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। এ হামলার ফলে ইতোমধ্যে বহু নিরীহ মানুষ হতাহত হয়েছেন, এবং পরিস্থিতি আরও সংকটময় হয়ে উঠছে।

যুদ্ধবিরতির ব্যর্থতা নতুন হামলার সূচনা

দ্বিতীয় দফা যুদ্ধবিরতি আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর ইসরায়েল গাজার ওপর নতুন করে সামরিক অভিযান চালায়। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, বিমান হামলাগুলো বেশ কয়েকটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় পরিচালিত হয়েছে, যার ফলে নারী ও শিশুসহ অসংখ্য নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নিহতের সংখ্যা প্রতি ঘণ্টায় বাড়ছে এবং আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

হোয়াইট হাউসের বক্তব্য

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “গাজায় সবশেষ আক্রমণ শুরুর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে পরামর্শ করেছে ইসরায়েল।”

তিনি আরও বলেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেমন স্পষ্ট করে বলেছেন, হামাস, হুথি, ইরান— যারা কেবল ইসরায়েলকে নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রকেও আতঙ্কিত করতে চায়— তাদের কঠোর মূল্য দিতে হবে এবং তাদের ওপর সমগ্র নরক ভেঙে পড়বে।”

লেভিট আরও বলেন, “হুথি, হিজবুল্লাহ, হামাস, ইরান ও ইরান-সমর্থিত প্রতিনিধিদের উচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে খুব গুরুত্ব সহকারে নেওয়া। কারণ ট্রাম্প বলছেন— তিনি আইন মেনে চলা মানুষের পক্ষে দাঁড়াতে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইসরায়েলের পক্ষে দাঁড়াতে ভয় পান না।”

ইসরায়েলের হামলার ফলাফল

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ইসরায়েলের এই হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

  • নিহত আহত সংখ্যা: রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ২০৫ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া, গুরুতর আহত হয়েছে শত শত মানুষ।
  • পরিকাঠামোগত ধ্বংস: ইসরায়েলের বোমা হামলায় গাজার বহু আবাসিক ভবন, হাসপাতাল ও স্কুল ধ্বংস হয়ে গেছে। এছাড়া, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো, যেমন বিদ্যুৎ ও পানির সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
  • মানবিক সংকট: গাজায় খাদ্য, ওষুধ ও বিশুদ্ধ পানির অভাব তীব্র আকার ধারণ করেছে। জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো আশঙ্কা করছে, যদি দ্রুত সাহায্য পৌঁছানো না যায়, তবে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

গাজার এই হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে বলেন, “গাজায় চলমান সহিংসতা বন্ধ করা জরুরি। বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”

এদিকে, বেশ কয়েকটি মুসলিমপ্রধান দেশ, যেমন তুরস্ক, ইরান ও কাতার, ইসরায়েলের এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা এটিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধ বলে অভিহিত করেছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও কিছু পশ্চিমা দেশ ইসরায়েলের ‘আত্মরক্ষার অধিকার’ সমর্থন করছে।

গাজায় চলমান সংঘাতের ফলে পরিস্থিতি দিন দিন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলায় গাজার জনগণ মানবিক সংকটের মুখে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা দ্রুত কার্যকর না হয়, তবে এই সংঘাত আরও দীর্ঘস্থায়ী ও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

সূত্র: রয়টার্স, আল-জাজিরা।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share