সময়: বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

সাফল্যের চাবিকাঠি: আল্লাহর স্মরণ ও পরিশ্রম

বিল্লাল হোসেন
  • Update Time : ১০:৪২:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৬০ Time View

RIJIK(1)

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

RIJIK(1)

সূরা আল-জুমুআহ (৬২:১০-১১) এর শিক্ষা

فَإِذَا قُضِيَتِ ٱلصَّلَوٰةُ فَٱنتَشِرُوا۟ فِى ٱلْأَرْضِ وَٱبْتَغُوا۟ مِن فَضْلِ ٱللَّهِ وَٱذْكُرُوا۟ ٱللَّهَ كَثِيرًۭا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ ۝ وَإِذَا رَأَوْا۟ تِجَـٰرَةً أَوْ لَهْوًا ٱنفَضُّوا۟ إِلَيْهَا وَتَرَكُوكَ قَآئِمًۭا ۚ قُلْ مَا عِندَ ٱللَّهِ خَيْرٌۭ مِّنَ ٱللَّهْوِ وَمِنَ ٱلتِّجَـٰرَةِ ۚ وَٱللَّهُ خَيْرُ ٱلرَّٰزِقِينَ

অতঃপর যখন সালাত শেষ হবে, তখন তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করো, আর আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফল হতে পারো। কিন্তু যখন তারা ব্যবসাবাণিজ্য বা ক্রীড়াচ্ছলে লিপ্ত হয়, তখন তোমাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে তারা সেদিকে ছুটে যায়। বলুন, আল্লাহর কাছে যা আছে, তা ক্রীড়াকৌতুক বাণিজ্যের চেয়েও উত্তম, আর আল্লাহ সর্বোত্তম রিজিকদাতা।

ইবাদত পরিশ্রমের সমন্বয়

এই আয়াতে আল্লাহ আমাদের স্পষ্টভাবে নির্দেশনা দিচ্ছেন যে, সালাত শেষ হওয়ার পর আমরা যেন অলস হয়ে না বসে থাকি; বরং বৈধ উপায়ে রিজিক অন্বেষণে মনোনিবেশ করি। এর অর্থ হলো, ইবাদত যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি জীবিকা অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা করাও আবশ্যক।

একজন মুমিনের জীবন হবে ব্যালান্সড—ইবাদত এবং দুনিয়াবি কাজের মধ্যে সঠিক সামঞ্জস্য থাকবে। একজন প্রকৃত সফল ব্যক্তি সেই ব্যক্তি, যে আল্লাহর স্মরণ বজায় রেখেও তার দৈনন্দিন কাজ করে।

প্রলোভনের ফাঁদ প্রকৃত সফলতা

পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ বলেন:

“কিন্তু যখন তারা ব্যবসা-বাণিজ্য বা ক্রীড়াচ্ছলে লিপ্ত হয়, তখন তোমাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে তারা সেদিকে ছুটে যায়। বলুন, আল্লাহর কাছে যা আছে, তা ক্রীড়া-কৌতুক ও বাণিজ্যের চেয়েও উত্তম, আর আল্লাহ সর্বোত্তম রিজিকদাতা।” (সূরা আল-জুমুআহ ৬২:১১)

এই আয়াতে সেই সমাজের চিত্র ফুটে উঠেছে, যারা মুহাম্মদ (সা.)-এর বক্তব্য শোনা অবস্থায়ই ব্যবসা-বাণিজ্য বা বিনোদনের দিকে আকৃষ্ট হয়ে যেত। আজকের সমাজেও আমরা প্রায়ই দুনিয়াবি প্রলোভনে পড়ে ইবাদতের গুরুত্ব কমিয়ে ফেলি। অথচ, আল্লাহর রহমত এবং প্রকৃত সাফল্য কেবলমাত্র তাঁর দিকে মনোযোগী হওয়াতেই রয়েছে।

আমাদের জন্য শিক্ষা

১. সালাত শেষে বৈধ রিজিকের সন্ধান করাই ইসলামের শিক্ষা। কর্মজীবনে সফল হতে হলে আল্লাহর সাহায্য কামনা করা জরুরি। ২. ইবাদত ও জীবিকার মধ্যে ভারসাম্য রাখতে হবে। দুনিয়াবি ব্যস্ততা যেন আমাদের আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফিল না করে। 3. প্রলোভন ও অনর্থক বিনোদনের ফাঁদে পা না দিয়ে, আল্লাহর দেওয়া নেয়ামতের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।

আসুন, আমরা আমাদের জীবনকে গঠন করি আল্লাহর নির্দেশিত পথে, যাতে ইহকাল ও পরকালে সফলতা অর্জন করতে পারি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে দীন ও দুনিয়ার কল্যাণ দান করুন। আমিন।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Please Share This Post in Your Social Media

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
About Author Information

বিল্লাল হোসেন

বিল্লাল হোসেন, একজন প্রজ্ঞাবান পেশাজীবী, যিনি গণিতের ওপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং ব্যাংকার, অর্থনীতিবিদ, ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ হিসেবে একটি সমৃদ্ধ ও বহুমুখী ক্যারিয়ার গড়ে তুলেছেন। তার আর্থিক খাতে যাত্রা তাকে নেতৃত্বের ভূমিকায় নিয়ে গেছে, বিশেষ করে সৌদি আরবের আল-রাজি ব্যাংকিং Inc. এবং ব্যাংক-আল-বিলাদে বিদেশী সম্পর্ক ও করেসপন্ডেন্ট মেইন্টেনেন্স অফিসার হিসেবে। প্রথাগত অর্থনীতির গণ্ডির বাইরে, বিল্লাল একজন প্রখ্যাত লেখক ও বিশ্লেষক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন, বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে মননশীল কলাম ও গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করে। তার দক্ষতা বিস্তৃত বিষয় জুড়ে রয়েছে, যেমন অর্থনীতির জটিলতা, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, প্রবাসী শ্রমিকদের দুঃখ-কষ্ট, রেমিটেন্স, রিজার্ভ এবং অন্যান্য সম্পর্কিত দিক। বিল্লাল তার লেখায় একটি অনন্য বিশ্লেষণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আসেন, যা ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে অর্জিত বাস্তব জ্ঞানকে একত্রিত করে একাডেমিক কঠোরতার সাথে। তার প্রবন্ধগুলো শুধুমাত্র জটিল বিষয়গুলির উপর গভীর বোঝাপড়ার প্রতিফলন নয়, বরং পাঠকদের জন্য জ্ঞানপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে, যা তত্ত্ব ও বাস্তব প্রয়োগের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে। বিল্লাল হোসেনের অবদান তার প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করে যে, তিনি আমাদের আন্তঃসংযুক্ত বিশ্বের জটিলতাগুলি উন্মোচন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের একটি বিস্তৃত এবং আরও সূক্ষ্ম বোঝাপড়ার দিকে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে।
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

সাফল্যের চাবিকাঠি: আল্লাহর স্মরণ ও পরিশ্রম

Update Time : ১০:৪২:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
শেয়ার করুনঃ
Pin Share

RIJIK(1)

সূরা আল-জুমুআহ (৬২:১০-১১) এর শিক্ষা

فَإِذَا قُضِيَتِ ٱلصَّلَوٰةُ فَٱنتَشِرُوا۟ فِى ٱلْأَرْضِ وَٱبْتَغُوا۟ مِن فَضْلِ ٱللَّهِ وَٱذْكُرُوا۟ ٱللَّهَ كَثِيرًۭا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ ۝ وَإِذَا رَأَوْا۟ تِجَـٰرَةً أَوْ لَهْوًا ٱنفَضُّوا۟ إِلَيْهَا وَتَرَكُوكَ قَآئِمًۭا ۚ قُلْ مَا عِندَ ٱللَّهِ خَيْرٌۭ مِّنَ ٱللَّهْوِ وَمِنَ ٱلتِّجَـٰرَةِ ۚ وَٱللَّهُ خَيْرُ ٱلرَّٰزِقِينَ

অতঃপর যখন সালাত শেষ হবে, তখন তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করো, আর আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফল হতে পারো। কিন্তু যখন তারা ব্যবসাবাণিজ্য বা ক্রীড়াচ্ছলে লিপ্ত হয়, তখন তোমাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে তারা সেদিকে ছুটে যায়। বলুন, আল্লাহর কাছে যা আছে, তা ক্রীড়াকৌতুক বাণিজ্যের চেয়েও উত্তম, আর আল্লাহ সর্বোত্তম রিজিকদাতা।

ইবাদত পরিশ্রমের সমন্বয়

এই আয়াতে আল্লাহ আমাদের স্পষ্টভাবে নির্দেশনা দিচ্ছেন যে, সালাত শেষ হওয়ার পর আমরা যেন অলস হয়ে না বসে থাকি; বরং বৈধ উপায়ে রিজিক অন্বেষণে মনোনিবেশ করি। এর অর্থ হলো, ইবাদত যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি জীবিকা অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা করাও আবশ্যক।

একজন মুমিনের জীবন হবে ব্যালান্সড—ইবাদত এবং দুনিয়াবি কাজের মধ্যে সঠিক সামঞ্জস্য থাকবে। একজন প্রকৃত সফল ব্যক্তি সেই ব্যক্তি, যে আল্লাহর স্মরণ বজায় রেখেও তার দৈনন্দিন কাজ করে।

প্রলোভনের ফাঁদ প্রকৃত সফলতা

পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ বলেন:

“কিন্তু যখন তারা ব্যবসা-বাণিজ্য বা ক্রীড়াচ্ছলে লিপ্ত হয়, তখন তোমাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে তারা সেদিকে ছুটে যায়। বলুন, আল্লাহর কাছে যা আছে, তা ক্রীড়া-কৌতুক ও বাণিজ্যের চেয়েও উত্তম, আর আল্লাহ সর্বোত্তম রিজিকদাতা।” (সূরা আল-জুমুআহ ৬২:১১)

এই আয়াতে সেই সমাজের চিত্র ফুটে উঠেছে, যারা মুহাম্মদ (সা.)-এর বক্তব্য শোনা অবস্থায়ই ব্যবসা-বাণিজ্য বা বিনোদনের দিকে আকৃষ্ট হয়ে যেত। আজকের সমাজেও আমরা প্রায়ই দুনিয়াবি প্রলোভনে পড়ে ইবাদতের গুরুত্ব কমিয়ে ফেলি। অথচ, আল্লাহর রহমত এবং প্রকৃত সাফল্য কেবলমাত্র তাঁর দিকে মনোযোগী হওয়াতেই রয়েছে।

আমাদের জন্য শিক্ষা

১. সালাত শেষে বৈধ রিজিকের সন্ধান করাই ইসলামের শিক্ষা। কর্মজীবনে সফল হতে হলে আল্লাহর সাহায্য কামনা করা জরুরি। ২. ইবাদত ও জীবিকার মধ্যে ভারসাম্য রাখতে হবে। দুনিয়াবি ব্যস্ততা যেন আমাদের আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফিল না করে। 3. প্রলোভন ও অনর্থক বিনোদনের ফাঁদে পা না দিয়ে, আল্লাহর দেওয়া নেয়ামতের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।

আসুন, আমরা আমাদের জীবনকে গঠন করি আল্লাহর নির্দেশিত পথে, যাতে ইহকাল ও পরকালে সফলতা অর্জন করতে পারি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে দীন ও দুনিয়ার কল্যাণ দান করুন। আমিন।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share