সময়: মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি, দাবি পুলিশের

ডিজিটাল ডেস্ক
  • Update Time : ০৭:০৫:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৬০ Time View

ae8936b112e422580d5605ff951cfa00 67b98acd5ce16 20250222161708

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

ae8936b112e422580d5605ff951cfa00 67b98acd5ce16 20250222161708

 

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে উত্তরবঙ্গগামী চলন্ত বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও কোনো ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন টাঙ্গাইলের জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান। তিনি জানান, প্রাথমিক তদন্তে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

পুলিশের বক্তব্য

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং ন্যক্কারজনক। আমরা দ্রুত অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।’

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাসে থাকা যাত্রীদের বক্তব্য ও সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এছাড়া, ডাকাতদের মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে তাদের অবস্থান চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।

গ্রেপ্তার তদন্ত

গ্রেপ্তার তিনজনের মধ্যে মুহিত নামে এক ব্যক্তির বাড়ি মানিকগঞ্জে, অন্য দুইজন শরীয়তপুরের সবুজ ও ঢাকার শরীফ। পুলিশ জানিয়েছে, তারা পূর্বে এ ধরনের অপরাধে জড়িত ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ সম্পর্কে পুলিশ সুপার বলেন, ‘গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। এছাড়া, এই ঘটনার সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত রয়েছে, যাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, ডাকাত দলের আরও সদস্য বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে আছে। তাদেরও গ্রেপ্তার করার জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।’

tangail chapai

ঘটনার বিবরণ

এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ সুপার বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে চলন্ত বাসে ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা-পয়সা লুটের সময় শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটতে পারে।’

পুলিশ সুপার আরও জানান, ‘বাসের নারী যাত্রীদের সঙ্গে কথা হয়েছে, তারা আমাদের কাছে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। অনেকেই আতঙ্কে ছিলেন, তাদের মানসিকভাবে স্বাভাবিক করতে আমরা মনোবিজ্ঞানীদের সহায়তা নিচ্ছি। আমরা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি এবং দ্রুতই পুরো ঘটনা উদঘাটন করতে পারব বলে আশা করছি।’

আইনি ব্যবস্থা মামলার অগ্রগতি

গত বৃহস্পতিবার রাতে ওমর আলী নামে এক বাসযাত্রী বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মামলাটির তদন্তের জন্য বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে।

এর আগে, সোমবার রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ইউনিক রোড রয়েলসের ‘আমরি ট্রাভেলস’ বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতরা প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে লুটপাট চালিয়ে ভোর ৪টার দিকে একই স্থানে বাসটি ফিরিয়ে দিয়ে নেমে যায়। যাত্রীরা অভিযোগ করেন যে, ডাকাতির সময় নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, বাসের চালক, সুপারভাইজার এবং সহকারীকে আটক করা হয়েছে এবং তাদের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় ৫৪ ধারায় আদালতে তোলা হলে তারা জামিনে মুক্তি পান।

প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি

পুলিশ সুপার আশ্বাস দিয়েছেন যে, অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে উন্নত থাকে, সে ব্যাপারে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালানো হবে। এছাড়া, বাস ও মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত নজরদারি চালানো হচ্ছে এবং নিয়মিত চেকপোস্ট বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

সাধারণ যাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে পুলিশ বলেছে, যদি কেউ কোনো অপরাধমূলক কার্যকলাপ সম্পর্কে তথ্য জানেন, তাহলে দয়া করে নিকটস্থ থানায় জানান। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Please Share This Post in Your Social Media

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি, দাবি পুলিশের

Update Time : ০৭:০৫:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
শেয়ার করুনঃ
Pin Share

ae8936b112e422580d5605ff951cfa00 67b98acd5ce16 20250222161708

 

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে উত্তরবঙ্গগামী চলন্ত বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও কোনো ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন টাঙ্গাইলের জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান। তিনি জানান, প্রাথমিক তদন্তে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

পুলিশের বক্তব্য

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং ন্যক্কারজনক। আমরা দ্রুত অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।’

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাসে থাকা যাত্রীদের বক্তব্য ও সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এছাড়া, ডাকাতদের মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে তাদের অবস্থান চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।

গ্রেপ্তার তদন্ত

গ্রেপ্তার তিনজনের মধ্যে মুহিত নামে এক ব্যক্তির বাড়ি মানিকগঞ্জে, অন্য দুইজন শরীয়তপুরের সবুজ ও ঢাকার শরীফ। পুলিশ জানিয়েছে, তারা পূর্বে এ ধরনের অপরাধে জড়িত ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ সম্পর্কে পুলিশ সুপার বলেন, ‘গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। এছাড়া, এই ঘটনার সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত রয়েছে, যাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, ডাকাত দলের আরও সদস্য বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে আছে। তাদেরও গ্রেপ্তার করার জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।’

tangail chapai

ঘটনার বিবরণ

এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ সুপার বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে চলন্ত বাসে ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা-পয়সা লুটের সময় শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটতে পারে।’

পুলিশ সুপার আরও জানান, ‘বাসের নারী যাত্রীদের সঙ্গে কথা হয়েছে, তারা আমাদের কাছে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। অনেকেই আতঙ্কে ছিলেন, তাদের মানসিকভাবে স্বাভাবিক করতে আমরা মনোবিজ্ঞানীদের সহায়তা নিচ্ছি। আমরা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি এবং দ্রুতই পুরো ঘটনা উদঘাটন করতে পারব বলে আশা করছি।’

আইনি ব্যবস্থা মামলার অগ্রগতি

গত বৃহস্পতিবার রাতে ওমর আলী নামে এক বাসযাত্রী বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মামলাটির তদন্তের জন্য বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে।

এর আগে, সোমবার রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ইউনিক রোড রয়েলসের ‘আমরি ট্রাভেলস’ বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতরা প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে লুটপাট চালিয়ে ভোর ৪টার দিকে একই স্থানে বাসটি ফিরিয়ে দিয়ে নেমে যায়। যাত্রীরা অভিযোগ করেন যে, ডাকাতির সময় নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, বাসের চালক, সুপারভাইজার এবং সহকারীকে আটক করা হয়েছে এবং তাদের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় ৫৪ ধারায় আদালতে তোলা হলে তারা জামিনে মুক্তি পান।

প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি

পুলিশ সুপার আশ্বাস দিয়েছেন যে, অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে উন্নত থাকে, সে ব্যাপারে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালানো হবে। এছাড়া, বাস ও মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত নজরদারি চালানো হচ্ছে এবং নিয়মিত চেকপোস্ট বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

সাধারণ যাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে পুলিশ বলেছে, যদি কেউ কোনো অপরাধমূলক কার্যকলাপ সম্পর্কে তথ্য জানেন, তাহলে দয়া করে নিকটস্থ থানায় জানান। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share