সময়: বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার

ডিজিটাল ডেস্ক
  • Update Time : ০৫:৩৩:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৭০ Time View

Tarek rahman

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Tarek rahman

 

উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক রফিকুল ইসলাম এ আদেশ দেন।

এর আগে গত ১ ডিসেম্বর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেন এই মামলার সব আসামিকে খালাস দেন।

দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুর রশীদ মোল্লা জানান, মামলায় তারেক রহমানসহ খালাস পাওয়া বেশ কয়েকজন আসামি পলাতক ছিলেন। রায়ে তাদের বিরুদ্ধে পূর্বে থাকা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের আদেশ দেন আদালত। হাইকোর্টের সেই আদেশ বিচারিক আদালতে আসলে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে তারেক রহমানসহ অন্যদের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত পরোয়ানা প্রত্যাহারের আদেশ দেন।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রেক্ষাপট

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলার লক্ষ্য ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই নারকীয় হামলায় ২৪ জন নিহত হন এবং ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভী রহমান।

এই হামলার ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়: একটি হত্যা মামলা ও অপরটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে। তদন্ত শেষে ২০০৮ সালে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়, যাতে তারেক রহমানসহ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরে ২০১৮ সালে দেওয়া রায়ে তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং আরও কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

হাইকোর্টের রায়ের প্রভাব

উচ্চ আদালতের সর্বশেষ রায়ে মামলার সকল আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এই রায়ের ফলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে থাকা পূর্বের সকল আইনি প্রতিবন্ধকতা দূর হলো। যদিও রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার ইঙ্গিত দিয়েছে, তবে আপাতত তারেক রহমানের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

এই রায় ঘোষণার পর রাজনৈতিক মহলে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারা এই রায় নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং তারা দাবি করেছেন যে, বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট হতে পারে। অন্যদিকে, বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি ন্যায়বিচারের জয় এবং সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার তাদের নেতারা অবশেষে মুক্তি পেলেন।

পরবর্তী পদক্ষেপ

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তারা সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অন্যদিকে, বিএনপি নেতারা তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়টি বিবেচনা করছেন।

এই মামলার ভবিষ্যৎ কী হবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতার এক ভয়াবহ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Please Share This Post in Your Social Media

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা: তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার

Update Time : ০৫:৩৩:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Tarek rahman

 

উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক রফিকুল ইসলাম এ আদেশ দেন।

এর আগে গত ১ ডিসেম্বর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেন এই মামলার সব আসামিকে খালাস দেন।

দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুর রশীদ মোল্লা জানান, মামলায় তারেক রহমানসহ খালাস পাওয়া বেশ কয়েকজন আসামি পলাতক ছিলেন। রায়ে তাদের বিরুদ্ধে পূর্বে থাকা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের আদেশ দেন আদালত। হাইকোর্টের সেই আদেশ বিচারিক আদালতে আসলে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে তারেক রহমানসহ অন্যদের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত পরোয়ানা প্রত্যাহারের আদেশ দেন।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রেক্ষাপট

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। হামলার লক্ষ্য ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই নারকীয় হামলায় ২৪ জন নিহত হন এবং ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভী রহমান।

এই হামলার ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়: একটি হত্যা মামলা ও অপরটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে। তদন্ত শেষে ২০০৮ সালে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়, যাতে তারেক রহমানসহ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরে ২০১৮ সালে দেওয়া রায়ে তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং আরও কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

হাইকোর্টের রায়ের প্রভাব

উচ্চ আদালতের সর্বশেষ রায়ে মামলার সকল আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এই রায়ের ফলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে থাকা পূর্বের সকল আইনি প্রতিবন্ধকতা দূর হলো। যদিও রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার ইঙ্গিত দিয়েছে, তবে আপাতত তারেক রহমানের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

এই রায় ঘোষণার পর রাজনৈতিক মহলে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারা এই রায় নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং তারা দাবি করেছেন যে, বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট হতে পারে। অন্যদিকে, বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি ন্যায়বিচারের জয় এবং সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার তাদের নেতারা অবশেষে মুক্তি পেলেন।

পরবর্তী পদক্ষেপ

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তারা সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অন্যদিকে, বিএনপি নেতারা তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়টি বিবেচনা করছেন।

এই মামলার ভবিষ্যৎ কী হবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতার এক ভয়াবহ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share