সময়: বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হোক, সেটাই চেয়েছি : হাসনাত আবদুল্লাহ

ডিজিটাল ডেস্ক
  • Update Time : ১০:৫২:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ৬৪ Time View

hasnat 20250215203418 20250215223030

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

hasnat 20250215203418 20250215223030

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ দাবি করেছেন যে, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা শেষ হয়ে গেছে এবং দলটিকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিষিদ্ধ করা উচিত। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির সামনে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।

নৌকা আর কখনো ভাসবে না

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট করেছি—যে নৌকা ডুবে গেছে, তা আর কখনো ভাসবে না। আওয়ামী লীগ পরবর্তী বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক। আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি, যেন আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়েছি। এক দলীয় শাসনের যে প্রভাব, তা দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে যে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার চালিয়েছে, তা ভবিষ্যতে বাংলাদেশ মেনে নিতে পারে না।”

BANED AWAMILIGUE 2

নিবন্ধন বাতিলের প্রস্তাব রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রথম ধাপ হিসেবে তাদের রাজনৈতিক নিবন্ধন বাতিল করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানান হাসনাত আবদুল্লাহ। তার মতে, এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে দলটি কার্যত রাজনৈতিকভাবে অচল হয়ে পড়বে। তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক শুদ্ধাচারের প্রতিপক্ষ। তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুধু দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও দমননীতির উপর নির্ভরশীল। তাই এ দলটির নিবন্ধন বাতিল করা একান্ত প্রয়োজনীয়।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “যে কোনো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আওয়ামী লীগ এই নীতির বিপরীতে গিয়ে বারবার স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছে। এই প্রবণতা রোধ করতে হলে রাজনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজন আছে।”

রাজনৈতিক ঐকমত্য এবং শুদ্ধাচারের আহ্বান

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই আহ্বায়ক বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, সব রাজনৈতিক দল এই বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করছে। রাজনৈতিক শুদ্ধাচারের যে চর্চা শুরু হয়েছে, তা অব্যাহত রাখতে হবে। এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, অপশাসনের পুনরাবৃত্তি আর কখনো না ঘটে।”

তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ যে অপশাসনের ধারা বজায় রেখেছিল, তা আমরা আর চাই না। আর অপশাসন দূরীকরণের যে সংস্কার, তা সব রাজনৈতিক দলকে বজায় রাখতে হবে। কারণ, বর্তমান প্রজন্মের কাছে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়ভার।”

নতুন বাংলাদেশের পথে

বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের দায়িত্ব হলো, দেশের রাজনৈতিক সংস্কারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “বর্তমান তরুণ সমাজের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হয়েছে, তারা অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার। তারা চায়, বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হোক।”

তিনি আরও যোগ করেন, “দেশের উন্নয়নের জন্য নতুন রাজনৈতিক কাঠামো প্রয়োজন, যেখানে জনগণের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে এবং কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারবে না। আওয়ামী লীগের মতো দলগুলোর রাজনীতি থেকে বিদায় নেওয়া উচিত, যাতে নতুন নেতৃত্ব আসতে পারে।”

সমাপ্তি

হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্য স্পষ্ট যে, বাংলাদেশে একটি নতুন রাজনৈতিক অধ্যায় শুরু হয়েছে, যেখানে আওয়ামী লীগের জায়গা নেই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও সংগঠন এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হলে ভবিষ্যতে কী ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তন আসতে পারে, তা সময়ই বলে দেবে।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Please Share This Post in Your Social Media

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হোক, সেটাই চেয়েছি : হাসনাত আবদুল্লাহ

Update Time : ১০:৫২:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
শেয়ার করুনঃ
Pin Share

hasnat 20250215203418 20250215223030

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ দাবি করেছেন যে, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা শেষ হয়ে গেছে এবং দলটিকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিষিদ্ধ করা উচিত। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির সামনে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।

নৌকা আর কখনো ভাসবে না

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট করেছি—যে নৌকা ডুবে গেছে, তা আর কখনো ভাসবে না। আওয়ামী লীগ পরবর্তী বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক। আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি, যেন আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়েছি। এক দলীয় শাসনের যে প্রভাব, তা দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে যে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার চালিয়েছে, তা ভবিষ্যতে বাংলাদেশ মেনে নিতে পারে না।”

BANED AWAMILIGUE 2

নিবন্ধন বাতিলের প্রস্তাব রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রথম ধাপ হিসেবে তাদের রাজনৈতিক নিবন্ধন বাতিল করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানান হাসনাত আবদুল্লাহ। তার মতে, এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে দলটি কার্যত রাজনৈতিকভাবে অচল হয়ে পড়বে। তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক শুদ্ধাচারের প্রতিপক্ষ। তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুধু দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও দমননীতির উপর নির্ভরশীল। তাই এ দলটির নিবন্ধন বাতিল করা একান্ত প্রয়োজনীয়।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, “যে কোনো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আওয়ামী লীগ এই নীতির বিপরীতে গিয়ে বারবার স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছে। এই প্রবণতা রোধ করতে হলে রাজনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজন আছে।”

রাজনৈতিক ঐকমত্য এবং শুদ্ধাচারের আহ্বান

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই আহ্বায়ক বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, সব রাজনৈতিক দল এই বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করছে। রাজনৈতিক শুদ্ধাচারের যে চর্চা শুরু হয়েছে, তা অব্যাহত রাখতে হবে। এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, অপশাসনের পুনরাবৃত্তি আর কখনো না ঘটে।”

তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ যে অপশাসনের ধারা বজায় রেখেছিল, তা আমরা আর চাই না। আর অপশাসন দূরীকরণের যে সংস্কার, তা সব রাজনৈতিক দলকে বজায় রাখতে হবে। কারণ, বর্তমান প্রজন্মের কাছে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়ভার।”

নতুন বাংলাদেশের পথে

বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের দায়িত্ব হলো, দেশের রাজনৈতিক সংস্কারকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “বর্তমান তরুণ সমাজের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হয়েছে, তারা অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার। তারা চায়, বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হোক।”

তিনি আরও যোগ করেন, “দেশের উন্নয়নের জন্য নতুন রাজনৈতিক কাঠামো প্রয়োজন, যেখানে জনগণের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে এবং কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারবে না। আওয়ামী লীগের মতো দলগুলোর রাজনীতি থেকে বিদায় নেওয়া উচিত, যাতে নতুন নেতৃত্ব আসতে পারে।”

সমাপ্তি

হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্য স্পষ্ট যে, বাংলাদেশে একটি নতুন রাজনৈতিক অধ্যায় শুরু হয়েছে, যেখানে আওয়ামী লীগের জায়গা নেই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও সংগঠন এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হলে ভবিষ্যতে কী ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তন আসতে পারে, তা সময়ই বলে দেবে।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share