সময়: বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন: যুক্তরাজ্যে জব্দ হবে টিউলিপ সিদ্দিকের অবৈধ সম্পদ

ডিজিটাল ডেস্ক
  • Update Time : ১২:১৫:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ১৪৪ Time View

1739158192 daeba39ef397d09eb5afd58ec28a243d

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

 

 

বাংলাদেশের বর্তমান সরকার অবৈধভাবে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবে, দেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বসবাসরত টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালাচ্ছে এবং তার অবৈধ সম্পদ জব্দ করার পদক্ষেপ নিচ্ছে। দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, টিউলিপ সিদ্দিকের লন্ডনে যে বিশাল সম্পত্তি পাওয়া গেছে, তা মূলত বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থ দিয়ে কেনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি লন্ডনে অবস্থিত বিলাসবহুল ফ্ল্যাটসহ অন্যান্য সম্পত্তি ক্রয় করেছেন, যা আসলে দুর্নীতির অর্থ থেকে এসেছে।

টিউলিপ সিদ্দিক, যিনি যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের লেবার পার্টির সদস্য, তার খালা শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশের দুর্নীতির সঙ্গে সম্পর্কিত হয়েছেন। টিউলিপ সিদ্দিক দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন এবং তিনি বর্তমানে লন্ডনের পার্লামেন্টের একজন সদস্য। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তার একাধিক বিলাসবহুল ফ্ল্যাট লন্ডনের অভিজ্ঞান অঞ্চলে রয়েছে, যার মধ্যে একটি ফ্ল্যাট তাকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ করা হচ্ছে, এই ফ্ল্যাটটি বাংলাদেশের অর্থে কেনা হয়েছিল, যা পাচার করা অর্থের সঙ্গে সম্পর্কিত।

বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়ে ব্যাপক তদন্ত শুরু করেছে, এবং এর মধ্যে রয়েছে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প থেকে প্রায় ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ডের দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ। অভিযোগ উঠেছে যে, এই অর্থের একটি অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে এবং টিউলিপ সিদ্দিকের পরিবার এই অর্থের ভাগ পেয়েছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দাবি করছে যে, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের অর্থের মাধ্যমে টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনে তার ফ্ল্যাটসহ অন্যান্য বিলাসবহুল সম্পত্তি কিনেছেন।

অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) এই দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত করছে। যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক সম্প্রতি তার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন, এবং তার পদত্যাগের পর তার সম্পত্তি এবং খালার শাসনামলে দুর্নীতির ব্যাপারে প্রশ্ন উঠেছে। দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, তার পরিবারসহ কয়েকটি সম্পত্তি রয়েছে, যার মধ্যে উত্তর লন্ডনের একটি ফ্ল্যাট ৬ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে কেনা হয়েছে। টিউলিপ সিদ্দিকের অন্যান্য সম্পত্তির মূল্য প্রায় ১৫ লাখ ৮০ হাজার পাউন্ড।

এই দুর্নীতির সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের শাসক দলের, অর্থাৎ আওয়ামী লীগের সম্পর্ক রয়েছে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন যে, শেখ হাসিনার শাসনামলে সরকারি অর্থের অপব্যবহার এবং দুর্নীতি বেড়ে গেছে, যার মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প একটি বড় উদাহরণ। এই প্রকল্পটি রাশিয়া থেকে অর্থায়িত হলেও অভিযোগ করা হচ্ছে, এর বিশাল অংকের অর্থ পাচার করা হয়েছে, এবং টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার পরিবারের সদস্যরা সেই অর্থের ভাগ পেয়েছেন।

বাংলাদেশের দুদক এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই দুর্নীতির তদন্ত অব্যাহত রেখেছে। তারা টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে এবং অবৈধ সম্পদ উদ্ধার করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পদক্ষেপ নিচ্ছে। যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়ে আরও তদন্ত করবে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার চেষ্টা করবে। এই তদন্তের ফলাফল বাংলাদেশে দুর্নীতি এবং অর্থপাচারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করবে, যা জনগণের মধ্যে আস্থা পুনরুদ্ধারে সহায়ক হতে পারে।

এই পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকেই দাবি করছেন যে, শেখ হাসিনার শাসনামলে শুধুমাত্র টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার পরিবারের সদস্যরা নয়, বরং অন্যান্য আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও পাচারের অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগগুলো তদন্তের জন্য আরও পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি উঠছে, যাতে দেশের অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Please Share This Post in Your Social Media

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদন: যুক্তরাজ্যে জব্দ হবে টিউলিপ সিদ্দিকের অবৈধ সম্পদ

Update Time : ১২:১৫:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
শেয়ার করুনঃ
Pin Share

 

 

বাংলাদেশের বর্তমান সরকার অবৈধভাবে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবে, দেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বসবাসরত টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালাচ্ছে এবং তার অবৈধ সম্পদ জব্দ করার পদক্ষেপ নিচ্ছে। দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, টিউলিপ সিদ্দিকের লন্ডনে যে বিশাল সম্পত্তি পাওয়া গেছে, তা মূলত বাংলাদেশ থেকে পাচার করা অর্থ দিয়ে কেনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি লন্ডনে অবস্থিত বিলাসবহুল ফ্ল্যাটসহ অন্যান্য সম্পত্তি ক্রয় করেছেন, যা আসলে দুর্নীতির অর্থ থেকে এসেছে।

টিউলিপ সিদ্দিক, যিনি যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের লেবার পার্টির সদস্য, তার খালা শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশের দুর্নীতির সঙ্গে সম্পর্কিত হয়েছেন। টিউলিপ সিদ্দিক দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন এবং তিনি বর্তমানে লন্ডনের পার্লামেন্টের একজন সদস্য। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে, তার একাধিক বিলাসবহুল ফ্ল্যাট লন্ডনের অভিজ্ঞান অঞ্চলে রয়েছে, যার মধ্যে একটি ফ্ল্যাট তাকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ করা হচ্ছে, এই ফ্ল্যাটটি বাংলাদেশের অর্থে কেনা হয়েছিল, যা পাচার করা অর্থের সঙ্গে সম্পর্কিত।

বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়ে ব্যাপক তদন্ত শুরু করেছে, এবং এর মধ্যে রয়েছে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প থেকে প্রায় ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ডের দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ। অভিযোগ উঠেছে যে, এই অর্থের একটি অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে এবং টিউলিপ সিদ্দিকের পরিবার এই অর্থের ভাগ পেয়েছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দাবি করছে যে, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের অর্থের মাধ্যমে টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনে তার ফ্ল্যাটসহ অন্যান্য বিলাসবহুল সম্পত্তি কিনেছেন।

অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) এই দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত করছে। যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক সম্প্রতি তার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন, এবং তার পদত্যাগের পর তার সম্পত্তি এবং খালার শাসনামলে দুর্নীতির ব্যাপারে প্রশ্ন উঠেছে। দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, তার পরিবারসহ কয়েকটি সম্পত্তি রয়েছে, যার মধ্যে উত্তর লন্ডনের একটি ফ্ল্যাট ৬ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে কেনা হয়েছে। টিউলিপ সিদ্দিকের অন্যান্য সম্পত্তির মূল্য প্রায় ১৫ লাখ ৮০ হাজার পাউন্ড।

এই দুর্নীতির সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের শাসক দলের, অর্থাৎ আওয়ামী লীগের সম্পর্ক রয়েছে। অনেকেই অভিযোগ করেছেন যে, শেখ হাসিনার শাসনামলে সরকারি অর্থের অপব্যবহার এবং দুর্নীতি বেড়ে গেছে, যার মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প একটি বড় উদাহরণ। এই প্রকল্পটি রাশিয়া থেকে অর্থায়িত হলেও অভিযোগ করা হচ্ছে, এর বিশাল অংকের অর্থ পাচার করা হয়েছে, এবং টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার পরিবারের সদস্যরা সেই অর্থের ভাগ পেয়েছেন।

বাংলাদেশের দুদক এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই দুর্নীতির তদন্ত অব্যাহত রেখেছে। তারা টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে এবং অবৈধ সম্পদ উদ্ধার করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পদক্ষেপ নিচ্ছে। যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ সরকার এই বিষয়ে আরও তদন্ত করবে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার চেষ্টা করবে। এই তদন্তের ফলাফল বাংলাদেশে দুর্নীতি এবং অর্থপাচারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করবে, যা জনগণের মধ্যে আস্থা পুনরুদ্ধারে সহায়ক হতে পারে।

এই পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকেই দাবি করছেন যে, শেখ হাসিনার শাসনামলে শুধুমাত্র টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার পরিবারের সদস্যরা নয়, বরং অন্যান্য আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও পাচারের অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগগুলো তদন্তের জন্য আরও পদক্ষেপ গ্রহণ করার দাবি উঠছে, যাতে দেশের অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share