সময়: বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

সারাদেশে শুরু হলো ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’

ডিজিটাল ডেস্ক
  • Update Time : ০৫:৩৯:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ১০৪ Time View

DEVIL HAT

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

 

 

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর অভিযান, সন্ত্রাসীদের দমনে যৌথ বাহিনীর তৎপরতা

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং সন্ত্রাসীদের দমনে সরকার অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে পরিচালিত এই বিশেষ অভিযানের লক্ষ্য হলো অপরাধীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সহিংসতা বন্ধ করা। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক ফয়সল হাসান স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

গাজীপুরের ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের জরুরি বৈঠক

সূত্র জানায়, গাজীপুরে আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়। ওই হামলায় বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় দেশজুড়ে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং অপারেশন

ডেভিল হান্ট’ পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া হয়।

অপারেশন ডেভিল হান্ট: কী থাকছে এই অভিযানে?

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী, অপারেশন ডেভিল হান্ট’ হবে একাধিক বাহিনীর সমন্বয়ে পরিচালিত একটি বিশেষ অভিযান, যার অধীনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সন্ত্রাসী ও সহিংস অপরাধীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

এই অভিযানে অংশ নিচ্ছে—

বাংলাদেশ পুলিশ
র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)
ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ (ডিবি)
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)

অভিযানের মূল লক্ষ্য:
🔹 রাজনৈতিক সহিংসতা ও নাশকতা দমন
🔹 অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার
🔹 সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা
🔹 জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
🔹 আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই অভিযান চলবে অনির্দিষ্টকালের জন্য এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে

অভিযান শুরু, সারাদেশে কড়া নজরদারি

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) থেকেই গাজীপুরসহ সারাদেশে অভিযান শুরু হয়েছে। বিভিন্ন শহর ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পুলিশ, র‍্যাব বিজিবি’অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে

প্রাথমিকভাবে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে। বিমানবন্দর, রেলস্টেশন, বাস টার্মিনালসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

পুলিশের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন,
যারা সহিংসতা ছড়িয়েছে, সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।”

রোববার ( ফেব্রুয়ারি) প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত ঘোষণা

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অপারেশন ডেভিল হান্ট’ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানাতে রোববার (ফেব্রুয়ারি) একটি প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হবে। এতে অভিযানের গতিপ্রকৃতি, সময়কাল এবং পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে জনগণকে জানানো হবে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া

সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সাধারণ মানুষ। তবে কিছু রাজনৈতিক মহল এই অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং দাবি করেছে যে, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে

বিরোধী দলের এক নেতার ভাষ্যমতে,
সরকার বিরোধী কণ্ঠস্বর দমনের জন্য এই অভিযান শুরু করেছে।”

অন্যদিকে সাধারণ নাগরিকরা আশা করছে যে, এই অভিযানের ফলে সন্ত্রাসী কার্যক্রম কমবে এবং তারা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারবে

শেষ কথা

দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় অপারেশন ডেভিল হান্ট’ কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে সরকার জানিয়েছে, এই অভিযানের মূল লক্ষ্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষা করা। আগামী কয়েক দিনে এই অভিযান কীভাবে পরিচালিত হয় এবং তার ফলাফল কী আসে, তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share

Please Share This Post in Your Social Media

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x

সারাদেশে শুরু হলো ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’

Update Time : ০৫:৩৯:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
শেয়ার করুনঃ
Pin Share

 

 

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর অভিযান, সন্ত্রাসীদের দমনে যৌথ বাহিনীর তৎপরতা

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং সন্ত্রাসীদের দমনে সরকার অপারেশন ডেভিল হান্ট’ পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে পরিচালিত এই বিশেষ অভিযানের লক্ষ্য হলো অপরাধীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সহিংসতা বন্ধ করা। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক ফয়সল হাসান স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

গাজীপুরের ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের জরুরি বৈঠক

সূত্র জানায়, গাজীপুরে আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়। ওই হামলায় বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় দেশজুড়ে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং অপারেশন

ডেভিল হান্ট’ পরিচালনার অনুমোদন দেওয়া হয়।

অপারেশন ডেভিল হান্ট: কী থাকছে এই অভিযানে?

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী, অপারেশন ডেভিল হান্ট’ হবে একাধিক বাহিনীর সমন্বয়ে পরিচালিত একটি বিশেষ অভিযান, যার অধীনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সন্ত্রাসী ও সহিংস অপরাধীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

এই অভিযানে অংশ নিচ্ছে—

বাংলাদেশ পুলিশ
র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)
ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ (ডিবি)
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)

অভিযানের মূল লক্ষ্য:
🔹 রাজনৈতিক সহিংসতা ও নাশকতা দমন
🔹 অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার
🔹 সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা
🔹 জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
🔹 আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই অভিযান চলবে অনির্দিষ্টকালের জন্য এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে

অভিযান শুরু, সারাদেশে কড়া নজরদারি

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) থেকেই গাজীপুরসহ সারাদেশে অভিযান শুরু হয়েছে। বিভিন্ন শহর ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পুলিশ, র‍্যাব বিজিবি’অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে

প্রাথমিকভাবে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে। বিমানবন্দর, রেলস্টেশন, বাস টার্মিনালসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

পুলিশের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন,
যারা সহিংসতা ছড়িয়েছে, সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।”

রোববার ( ফেব্রুয়ারি) প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত ঘোষণা

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অপারেশন ডেভিল হান্ট’ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানাতে রোববার (ফেব্রুয়ারি) একটি প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হবে। এতে অভিযানের গতিপ্রকৃতি, সময়কাল এবং পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে জনগণকে জানানো হবে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া

সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সাধারণ মানুষ। তবে কিছু রাজনৈতিক মহল এই অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং দাবি করেছে যে, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে

বিরোধী দলের এক নেতার ভাষ্যমতে,
সরকার বিরোধী কণ্ঠস্বর দমনের জন্য এই অভিযান শুরু করেছে।”

অন্যদিকে সাধারণ নাগরিকরা আশা করছে যে, এই অভিযানের ফলে সন্ত্রাসী কার্যক্রম কমবে এবং তারা নিরাপদে চলাফেরা করতে পারবে

শেষ কথা

দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় অপারেশন ডেভিল হান্ট’ কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে সরকার জানিয়েছে, এই অভিযানের মূল লক্ষ্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষা করা। আগামী কয়েক দিনে এই অভিযান কীভাবে পরিচালিত হয় এবং তার ফলাফল কী আসে, তা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।

 

শেয়ার করুনঃ
Pin Share