ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার মুখে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত

- Update Time : ১২:৩০:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ৯২ Time View
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। এই নিষেধাজ্ঞার কারণ আইসিসির যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত। ৬ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার, ট্রাম্প এই নির্বাহী আদেশ জারি করেন। তার দাবি, আইসিসির এই তদন্ত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের অবস্থানকে আরও দৃঢ় করেছে যে, তার নাগরিক ও সামরিক বাহিনীর ওপর আইসিসির কোনো অধিকার নেই।
আইসিসি তদন্তের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া
নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর ৭ ফেব্রুয়ারির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, আইসিসি যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরই যুক্তরাষ্ট্র এই কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ট্রাম্পের ভাষ্যমতে, এই তদন্ত আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী এবং যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি স্বরূপ।
নিষেধাজ্ঞার আওতায়, আইসিসি যুক্তরাষ্ট্রে কোনো সম্পদ ক্রয় করতে পারবে না, আদালতের কর্মকর্তারা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। পাশাপাশি, আইসিসির সাথে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক লেনদেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যা এর কার্যক্রমকে ব্যাপকভাবে সীমিত করতে পারে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বলেছেন যে আইসিসির এই কার্যক্রম রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং আদালত তার ক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে গেছে। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েন আরও বলেছেন যে, যদি আইসিসি যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলি নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে যায়, তবে যুক্তরাষ্ট্র আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা
হেগভিত্তিক আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) এই নিষেধাজ্ঞার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, এটি একটি স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ এবং আইনের শাসনের জন্য একটি বড় বাধা।
জার্মানি আইসিসির পক্ষে দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছে এবং বলেছে যে তারা আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের স্বার্থে আদালতের পাশে থাকবে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রধানও উল্লেখ করেছেন যে, আইসিসিকে তার কাজ নিরবিচারে চালিয়ে যেতে দিতে হবে, কারণ এটি আন্তর্জাতিক অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোও এই নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের জন্য হুমকি হিসেবে অভিহিত করেছে।
বিচার বিশ্লেষকদের মতে, এই নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কার্যকারিতা দুর্বল করতে পারে, বিশেষ করে ফিলিস্তিন, ইউক্রেন, সুদান এবং আফগানিস্তানের মতো সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। সমালোচকরা বলছেন, আইসিসিকে দুর্বল করা হলে যুদ্ধাপরাধীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার প্রচেষ্টা ব্যাহত হবে এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ দমনের জন্য এটি একটি বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
আইসিসির অতীত কর্মকাণ্ড ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ
এটি প্রথমবার নয় যে আইসিসি কোনো বিশ্বনেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এর আগে আদালত রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মিয়ানমারের সামরিক জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং-এর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল আইসিসির সদস্য নয়, তাই আদালতের রায় বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
আইসিসি দীর্ঘদিন ধরেই সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে, বিশেষ করে এর রায় কার্যকর করার সীমিত ক্ষমতা নিয়ে। যদিও এটি কিছু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে, তবে অনেক শক্তিশালী দেশ এর রায় মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। আদালতের ক্ষমতা সীমিত থাকায় অনেক বিশ্লেষক মনে করেন যে এটি বড় শক্তিগুলোকে দায়বদ্ধ করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট কার্যকর নয়।
বৈশ্বিক ন্যায়বিচারের জন্য বৃহত্তর প্রভাব
ট্রাম্পের এই নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক বিচারিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আরও দূরত্ব সৃষ্টি করতে পারে এবং যুদ্ধাপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়াকে দুর্বল করতে পারে। এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইনের কার্যকারিতা সম্পর্কে প্রশ্ন তুলছে, বিশেষ করে যখন শক্তিশালী দেশগুলো আইসিসির মতো আদালতকে অস্বীকার বা বাধাগ্রস্ত করে।
এই নিষেধাজ্ঞা এমন সময়ে এসেছে যখন ট্রাম্প প্রশাসন বহুপাক্ষিক সংস্থাগুলো থেকে নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, এবং ইরান পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার তার আন্তর্জাতিক সংযোগ হ্রাস করার কৌশলের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে এই পরিস্থিতি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে, বিশেষ করে যদি নিষেধাজ্ঞাগুলো আইসিসির কার্যক্রমে বড় প্রভাব ফেলে। এটি আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থাকে দুর্বল করতে পারে এবং অন্য দেশগুলোকে বৈশ্বিক আইনের বাধ্যবাধকতা অস্বীকার করার সুযোগ করে দিতে পারে। তবে, যদি ইউরোপীয় দেশ ও অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্র আইসিসিকে সমর্থন করে, তবে আদালত তার ন্যায়বিচারের মিশন অব্যাহত রাখতে সক্ষম হতে পারে।
এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে কিভাবে যুদ্ধাপরাধের জন্য দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা যায় এবং একই সঙ্গে বৈশ্বিক রাজনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখা যায়। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের জন্য এটি একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ যা আগামী দিনগুলোতে আরও গভীর হবে।
Please Share This Post in Your Social Media

ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার মুখে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। এই নিষেধাজ্ঞার কারণ আইসিসির যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত। ৬ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার, ট্রাম্প এই নির্বাহী আদেশ জারি করেন। তার দাবি, আইসিসির এই তদন্ত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের অবস্থানকে আরও দৃঢ় করেছে যে, তার নাগরিক ও সামরিক বাহিনীর ওপর আইসিসির কোনো অধিকার নেই।
আইসিসি তদন্তের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া
নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর ৭ ফেব্রুয়ারির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, আইসিসি যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরই যুক্তরাষ্ট্র এই কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ট্রাম্পের ভাষ্যমতে, এই তদন্ত আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী এবং যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি স্বরূপ।
নিষেধাজ্ঞার আওতায়, আইসিসি যুক্তরাষ্ট্রে কোনো সম্পদ ক্রয় করতে পারবে না, আদালতের কর্মকর্তারা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। পাশাপাশি, আইসিসির সাথে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক লেনদেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যা এর কার্যক্রমকে ব্যাপকভাবে সীমিত করতে পারে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বলেছেন যে আইসিসির এই কার্যক্রম রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং আদালত তার ক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে গেছে। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েন আরও বলেছেন যে, যদি আইসিসি যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলি নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে যায়, তবে যুক্তরাষ্ট্র আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা
হেগভিত্তিক আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) এই নিষেধাজ্ঞার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, এটি একটি স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ এবং আইনের শাসনের জন্য একটি বড় বাধা।
জার্মানি আইসিসির পক্ষে দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছে এবং বলেছে যে তারা আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের স্বার্থে আদালতের পাশে থাকবে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রধানও উল্লেখ করেছেন যে, আইসিসিকে তার কাজ নিরবিচারে চালিয়ে যেতে দিতে হবে, কারণ এটি আন্তর্জাতিক অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোও এই নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের জন্য হুমকি হিসেবে অভিহিত করেছে।
বিচার বিশ্লেষকদের মতে, এই নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কার্যকারিতা দুর্বল করতে পারে, বিশেষ করে ফিলিস্তিন, ইউক্রেন, সুদান এবং আফগানিস্তানের মতো সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। সমালোচকরা বলছেন, আইসিসিকে দুর্বল করা হলে যুদ্ধাপরাধীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার প্রচেষ্টা ব্যাহত হবে এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ দমনের জন্য এটি একটি বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
আইসিসির অতীত কর্মকাণ্ড ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ
এটি প্রথমবার নয় যে আইসিসি কোনো বিশ্বনেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। এর আগে আদালত রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মিয়ানমারের সামরিক জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইং-এর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল আইসিসির সদস্য নয়, তাই আদালতের রায় বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
আইসিসি দীর্ঘদিন ধরেই সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে, বিশেষ করে এর রায় কার্যকর করার সীমিত ক্ষমতা নিয়ে। যদিও এটি কিছু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে, তবে অনেক শক্তিশালী দেশ এর রায় মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। আদালতের ক্ষমতা সীমিত থাকায় অনেক বিশ্লেষক মনে করেন যে এটি বড় শক্তিগুলোকে দায়বদ্ধ করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট কার্যকর নয়।
বৈশ্বিক ন্যায়বিচারের জন্য বৃহত্তর প্রভাব
ট্রাম্পের এই নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক বিচারিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আরও দূরত্ব সৃষ্টি করতে পারে এবং যুদ্ধাপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়াকে দুর্বল করতে পারে। এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইনের কার্যকারিতা সম্পর্কে প্রশ্ন তুলছে, বিশেষ করে যখন শক্তিশালী দেশগুলো আইসিসির মতো আদালতকে অস্বীকার বা বাধাগ্রস্ত করে।
এই নিষেধাজ্ঞা এমন সময়ে এসেছে যখন ট্রাম্প প্রশাসন বহুপাক্ষিক সংস্থাগুলো থেকে নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, এবং ইরান পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহার তার আন্তর্জাতিক সংযোগ হ্রাস করার কৌশলের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আগামী কয়েক মাসে এই পরিস্থিতি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে, বিশেষ করে যদি নিষেধাজ্ঞাগুলো আইসিসির কার্যক্রমে বড় প্রভাব ফেলে। এটি আন্তর্জাতিক বিচার ব্যবস্থাকে দুর্বল করতে পারে এবং অন্য দেশগুলোকে বৈশ্বিক আইনের বাধ্যবাধকতা অস্বীকার করার সুযোগ করে দিতে পারে। তবে, যদি ইউরোপীয় দেশ ও অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্র আইসিসিকে সমর্থন করে, তবে আদালত তার ন্যায়বিচারের মিশন অব্যাহত রাখতে সক্ষম হতে পারে।
এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে কিভাবে যুদ্ধাপরাধের জন্য দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা যায় এবং একই সঙ্গে বৈশ্বিক রাজনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখা যায়। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের জন্য এটি একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ যা আগামী দিনগুলোতে আরও গভীর হবে।