গণঅভ্যুত্থানের ছয় মাস: সাবেক ৩৫ মন্ত্রী, ৪৩ এমপি, ২৮ পুলিশ গ্রেপ্তার

- Update Time : ০৫:১৬:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ১১১ Time View
২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের আন্দোলন থেকে সূচিত এই গণবিপ্লব সরকারের কঠোর দমননীতির কারণে আরও বেগবান হয় এবং ৫ আগস্ট তা চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। প্রায় ১৫০০ মানুষ হত্যার পর শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন এবং ভারতে পালিয়ে যান। ছয় মাস পরও সরকার পতনের পরবর্তী প্রতিক্রিয়াস্বরূপ গ্রেপ্তার ও বিচারের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট
এই অভ্যুত্থানের সূচনা হয় সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে ব্যাপক ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির বিপরীতে সরকার দমন-পীড়ন চালালে আন্দোলন ক্রমশ রাজনৈতিক রূপ নেয়। মধ্য-জুলাই থেকে সারাদেশে বিক্ষোভ, ধর্মঘট ও প্রতিবাদ আরও তীব্রতর হতে থাকে। সরকার কঠোর দমননীতি গ্রহণ করলে সাধারণ জনগণ, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন ও বিরোধী দলগুলো আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, পুলিশের গুলিতে কয়েকশো মানুষ নিহত হয় এবং হাজার হাজার আহত হয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার সম্পূর্ণরূপে পতন ঘটে।
ব্যাপক গ্রেপ্তার অভিযান
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, উচ্চপদস্থ আমলা ও পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক গ্রেপ্তার অভিযান শুরু হয়।
- আইনমন্ত্রী আনিসুল হক
- নৌমন্ত্রী শাজাহান খান
- শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু
- সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি
- বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান
- মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম
- গণপূর্তমন্ত্রী প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন
- পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান
- খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম
- বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি
- রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন
- কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক
- পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী
- এবং আরও অনেকে।
বিচারের মুখোমুখি ৪৩ জন সাবেক সংসদ সদস্য
বিচারের সম্মুখীন হওয়া ৪৩ জন সাবেক সংসদ সদস্যের মধ্যে রয়েছেন:
- সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ (পটুয়াখালী-২)
- হাজি সেলিম (ঢাকা-৭) ও তার ছেলে সোলাইমান সেলিম
- আবদুস সোবহান গোলাপ (মাদারীপুর-৩)
- সৈয়দ সায়েদুল হক (হবিগঞ্জ-৪)
- আহমদ হোসেন (নেত্রকোনা-৫)
- আবদুর রহমান বদি (কক্সবাজার-৪)
- এম এ লতিফ (চট্টগ্রাম-১১)
- তানভীর ইমাম (সিরাজগঞ্জ-৪)
- আব্দুল আজিজ (সিরাজগঞ্জ-৩)
- শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন (ঢাকা-১০)
- শাহে আলম তালুকদার (বরিশাল-২)
- সেলিম আলতাফ জর্জ (কুষ্টিয়া-৪)
- সাদেক খান (ঢাকা-১৩)
- রাগেবুল আহসান (বগুড়া-৬)
- এনামুল হক (রাজশাহী-৪)
- রাহেনুল হক রায়হান (রাজশাহী-৬)
- সিরাজুল ইসলাম (নরসিংদী-৩)
- আলী আজম মুকুল (ভোলা-২)
- জান্নাত আরা হেনরী (সিরাজগঞ্জ-২)
- রশীদুজ্জামান মোড়ল (খুলনা-৬)
- ইয়াহিয়া চৌধুরী (সিলেট-২)
- মহিবুর রহমান মানিক (সুনামগঞ্জ-৫)
- আব্দুস সালাম মুর্শেদী (খুলনা-৪)
- দবিরুল ইসলাম (ঠাকুরগাঁও-২)
- মাজহারুল ইসলাম (ঠাকুরগাঁও-২)
- আবু রেজা মুহাম্মদ নদভী (চট্টগ্রাম-১৫)
- ধীরেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ শম্ভু (বরগুনা-১)
- তাহজীব আলম সিদ্দিকী (ঝিনাইদহ-২)
- এম এ আউয়াল (লক্ষ্মীপুর-১)
- এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী (চট্টগ্রাম-৬)
- নায়েব আলী জোয়ার্দার (ঝিনাইদহ-১)
- গোলাম কিবরিয়া টিপু (বরিশাল-৩)
- আবুল কালাম আজাদ (জামালপুর-৫)
- মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন (ঢাকা-৭)
- আবুল কালাম আজাদ (রাজশাহী-৪)
- আসাদুজ্জামান আসাদ (রাজশাহী-৩)
- শাহজাহান ওমর (ঝালকাঠি-১)
- মাহবুব আরা বেগম গিনি (গাইবান্ধা-২)
- একরামুল করিম চৌধুরী (নোয়াখালী-৪)
- নাসিমুল আলম চৌধুরী (কুমিল্লা-৮)
- রানা মোহাম্মদ সোহেল (নীলফামারী-৩)
- আহমেদ নাজমীন সুলতানা (সংরক্ষিত মহিলা আসন)
- মোসা. সাফিয়া খাতুন (সংরক্ষিত মহিলা আসন)
ঢাকা মহানগর ও জেলার আদালতে বিপুল মামলা
পুলিশ ও আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ৫ আগস্টের পর থেকে গতকাল পর্যন্ত ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানা ও আদালতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, গুম ও অপহরণের অভিযোগে মোট ২৭৬টি মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা। এছাড়া, ঢাকা জেলার বিভিন্ন থানা ও আদালতে আরও অন্তত ২৭টি মামলা হয়েছে। ফলে ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলায় মোট মামলার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩০৩টি। এর মধ্যে দুই শতাধিক মামলা সরাসরি হত্যার অভিযোগ সংক্রান্ত।
ঢাকার বাইরের মামলার সংখ্যা আরও বাড়তে পারে
ঢাকার বাইরের থানাগুলোতে ও আদালতগুলোতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কতটি মামলা হয়েছে, তার নির্দিষ্ট তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে বিগত ছয় মাসে ঢাকার বাইরে অন্তত ২৫টি মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানা গেছে।
গণহত্যার অভিযোগ ও তদন্তের অগ্রগতি
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, জুলাই ও আগস্ট মাসে পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের সদস্যদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ছাত্র, জনতা এবং শিশু-কিশোরদের গুলি করে হত্যা করেছেন।
তদন্ত প্রতিবেদন দ্রুত আদালতে জমা দেওয়ার আশ্বাস
এসব হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলোর তদন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে। পিপি ওমর ফারুক ফারুকী জানিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব পুলিশ এসব মামলার তদন্ত শেষ করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ছয় মাস পরও গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিরা বিচারের সম্মুখীন হচ্ছেন। জনগণের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নতুন মোড় নিচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা চলছে, যা দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে পুনরুদ্ধার করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
Please Share This Post in Your Social Media

গণঅভ্যুত্থানের ছয় মাস: সাবেক ৩৫ মন্ত্রী, ৪৩ এমপি, ২৮ পুলিশ গ্রেপ্তার

২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের আন্দোলন থেকে সূচিত এই গণবিপ্লব সরকারের কঠোর দমননীতির কারণে আরও বেগবান হয় এবং ৫ আগস্ট তা চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে। প্রায় ১৫০০ মানুষ হত্যার পর শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন এবং ভারতে পালিয়ে যান। ছয় মাস পরও সরকার পতনের পরবর্তী প্রতিক্রিয়াস্বরূপ গ্রেপ্তার ও বিচারের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।
গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট
এই অভ্যুত্থানের সূচনা হয় সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে ব্যাপক ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির বিপরীতে সরকার দমন-পীড়ন চালালে আন্দোলন ক্রমশ রাজনৈতিক রূপ নেয়। মধ্য-জুলাই থেকে সারাদেশে বিক্ষোভ, ধর্মঘট ও প্রতিবাদ আরও তীব্রতর হতে থাকে। সরকার কঠোর দমননীতি গ্রহণ করলে সাধারণ জনগণ, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন ও বিরোধী দলগুলো আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, পুলিশের গুলিতে কয়েকশো মানুষ নিহত হয় এবং হাজার হাজার আহত হয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার সম্পূর্ণরূপে পতন ঘটে।
ব্যাপক গ্রেপ্তার অভিযান
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, উচ্চপদস্থ আমলা ও পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক গ্রেপ্তার অভিযান শুরু হয়।
- আইনমন্ত্রী আনিসুল হক
- নৌমন্ত্রী শাজাহান খান
- শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু
- সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি
- বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান
- মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম
- গণপূর্তমন্ত্রী প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন
- পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান
- খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম
- বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি
- রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন
- কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক
- পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী
- এবং আরও অনেকে।
বিচারের মুখোমুখি ৪৩ জন সাবেক সংসদ সদস্য
বিচারের সম্মুখীন হওয়া ৪৩ জন সাবেক সংসদ সদস্যের মধ্যে রয়েছেন:
- সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ (পটুয়াখালী-২)
- হাজি সেলিম (ঢাকা-৭) ও তার ছেলে সোলাইমান সেলিম
- আবদুস সোবহান গোলাপ (মাদারীপুর-৩)
- সৈয়দ সায়েদুল হক (হবিগঞ্জ-৪)
- আহমদ হোসেন (নেত্রকোনা-৫)
- আবদুর রহমান বদি (কক্সবাজার-৪)
- এম এ লতিফ (চট্টগ্রাম-১১)
- তানভীর ইমাম (সিরাজগঞ্জ-৪)
- আব্দুল আজিজ (সিরাজগঞ্জ-৩)
- শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন (ঢাকা-১০)
- শাহে আলম তালুকদার (বরিশাল-২)
- সেলিম আলতাফ জর্জ (কুষ্টিয়া-৪)
- সাদেক খান (ঢাকা-১৩)
- রাগেবুল আহসান (বগুড়া-৬)
- এনামুল হক (রাজশাহী-৪)
- রাহেনুল হক রায়হান (রাজশাহী-৬)
- সিরাজুল ইসলাম (নরসিংদী-৩)
- আলী আজম মুকুল (ভোলা-২)
- জান্নাত আরা হেনরী (সিরাজগঞ্জ-২)
- রশীদুজ্জামান মোড়ল (খুলনা-৬)
- ইয়াহিয়া চৌধুরী (সিলেট-২)
- মহিবুর রহমান মানিক (সুনামগঞ্জ-৫)
- আব্দুস সালাম মুর্শেদী (খুলনা-৪)
- দবিরুল ইসলাম (ঠাকুরগাঁও-২)
- মাজহারুল ইসলাম (ঠাকুরগাঁও-২)
- আবু রেজা মুহাম্মদ নদভী (চট্টগ্রাম-১৫)
- ধীরেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ শম্ভু (বরগুনা-১)
- তাহজীব আলম সিদ্দিকী (ঝিনাইদহ-২)
- এম এ আউয়াল (লক্ষ্মীপুর-১)
- এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী (চট্টগ্রাম-৬)
- নায়েব আলী জোয়ার্দার (ঝিনাইদহ-১)
- গোলাম কিবরিয়া টিপু (বরিশাল-৩)
- আবুল কালাম আজাদ (জামালপুর-৫)
- মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন (ঢাকা-৭)
- আবুল কালাম আজাদ (রাজশাহী-৪)
- আসাদুজ্জামান আসাদ (রাজশাহী-৩)
- শাহজাহান ওমর (ঝালকাঠি-১)
- মাহবুব আরা বেগম গিনি (গাইবান্ধা-২)
- একরামুল করিম চৌধুরী (নোয়াখালী-৪)
- নাসিমুল আলম চৌধুরী (কুমিল্লা-৮)
- রানা মোহাম্মদ সোহেল (নীলফামারী-৩)
- আহমেদ নাজমীন সুলতানা (সংরক্ষিত মহিলা আসন)
- মোসা. সাফিয়া খাতুন (সংরক্ষিত মহিলা আসন)
ঢাকা মহানগর ও জেলার আদালতে বিপুল মামলা
পুলিশ ও আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ৫ আগস্টের পর থেকে গতকাল পর্যন্ত ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানা ও আদালতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, গুম ও অপহরণের অভিযোগে মোট ২৭৬টি মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা। এছাড়া, ঢাকা জেলার বিভিন্ন থানা ও আদালতে আরও অন্তত ২৭টি মামলা হয়েছে। ফলে ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলায় মোট মামলার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩০৩টি। এর মধ্যে দুই শতাধিক মামলা সরাসরি হত্যার অভিযোগ সংক্রান্ত।
ঢাকার বাইরের মামলার সংখ্যা আরও বাড়তে পারে
ঢাকার বাইরের থানাগুলোতে ও আদালতগুলোতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কতটি মামলা হয়েছে, তার নির্দিষ্ট তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। তবে বিগত ছয় মাসে ঢাকার বাইরে অন্তত ২৫টি মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানা গেছে।
গণহত্যার অভিযোগ ও তদন্তের অগ্রগতি
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, জুলাই ও আগস্ট মাসে পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের সদস্যদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ছাত্র, জনতা এবং শিশু-কিশোরদের গুলি করে হত্যা করেছেন।
তদন্ত প্রতিবেদন দ্রুত আদালতে জমা দেওয়ার আশ্বাস
এসব হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলোর তদন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে। পিপি ওমর ফারুক ফারুকী জানিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব পুলিশ এসব মামলার তদন্ত শেষ করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ছয় মাস পরও গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিরা বিচারের সম্মুখীন হচ্ছেন। জনগণের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নতুন মোড় নিচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা চলছে, যা দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে পুনরুদ্ধার করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।